‘আমাদের একজন চঞ্চল চৌধুরী আছেন’

একজন অভিনেতাকে ভালো ও সৃজনশীল অভিনেতা বলে থাকি। আমার কাছে মনে হয়েছে চঞ্চল একজন সৃজনশীল অভিনেতা। চরিত্রের রূপায়ণ বা তার যথার্থ প্রয়োগ করেন চঞ্চল। একটি চরিত্র থেকে আরেকটি চরিত্রে রূপায়ণে পার্থক্য থাকে। যে চরিত্র লেখা হয়, তা অভিনয়ের মাধ্যমে আরেকটি বৈচিত্র্য দিতে পারেন তিনি। সুতরাং তাঁকে একজন অসামান্য অভিনেতা হিসেবে আখ্যায়িত করতে পারি। অভিনয়ের ক্ষেত্রে, প্রতিটি চরিত্রে তিনি নতুন মাত্রা খোঁজার চেষ্টা করেন।

সম্প্রতি মুক্তিপ্রাপ্ত কয়েকটি ছবিতে তিনি দেখিয়েছেন অভিনয়ের মুনশিয়ানা। ভিন্নধর্মী কাজের প্রসঙ্গ এলে নির্মাতারা এখন চঞ্চলের কথাই ভাবেন। অভিনয়ের প্রতি ভালোবাসা ছিল বলেই সাফল্যের সঙ্গে এতটা পথ পাড়ি দেওয়া তাঁর জন্য সহজ হয়েছে। কাজ নিয়ে যখন তাঁর সমসাময়িকরা ব্যস্ত, তখন চঞ্চল হেঁটেছেন উল্টোপথে। একেবারে বুঝেশুনেই কাজ নির্বাচন করেছেন। সৈয়দ আহমেদ শাওকীর পরিচালনায় ‘কারাগার’ ওয়েব ছবিতে সবশেষ তিনি আমার সঙ্গে অভিনয় করেছেন। বসে যাওয়া গাঢ় লাল চোখ, কঙ্কালসার শরীরে চটের তৈরি প্রাচীনকালের কয়েদিদের পোশাক, ছোট ছাঁটা চুল- এমন লুকে আগে কখনও দেখা যায়নি তাঁকে। সেই সময় দেখেছি তাঁর অভিনয়।

ব্যাংকে চাকরি পেলেন সন্তোষ, খুশি মা কমলি রবিদাস

কিছুদিন আগে চঞ্চল অভিনীত ‘হাওয়া’ ছবিটি দেখেছি। সেখানে তাঁর অভিনয় দেখে আমি মুগ্ধ। প্রতি মূহূর্তে নিশ্চুপ থেকেছি বললে যথার্থ বলা হবে না; আমি বিস্মিত হয়েছি। চঞ্চল আমার সঙ্গে অভিনয় করেছেন হাতে গোনা। তবে আমার নির্দেশনায় বেশ কয়েকটি নাটক ও বিজ্ঞাপনে কাজ করেছেন।

এ ধরনের মানুষ বেশ ভালো হন। আমি তাঁকে যতটুকু চিনি-জানি, সাধারণ একজন মানুষ। তিনি বলেছেন- কোন পরিবার থেকে এসেছেন, কীভাবে ক্যারিয়ারের এতটা পথ পাড়ি দিয়েছেন।

সেই সময় দেখেছি, সব সময় একাগ্রতা নিয়ে নিবিষ্ট চিত্তে কাজ করেন তিনি। চঞ্চল তাঁর দীর্ঘ ক্যারিয়ারে নিজেকে প্রতি মূহূর্তে ভেঙেছেন। এই তো সেদিনের কথা। নুহাশ হুমায়ূনের পরিচালনায় লোককথা থেকে নির্মিত ‘ষ’-এর এপিসোড ‘মিষ্টি কিছু’ ওয়েব সিরিজে বহুদিন পর অভিনয় করলাম। পুরোনো দিনের কিছু স্মৃতি রোমন্থন করেছি দু’জনে। আমার সঙ্গে স্ট্ক্রিন শেয়ার করতে পেরে চঞ্চলও দারুণ খুশি ছিল।

পোশাক নিয়ে ধর্মান্ধদের রাজনীতি তসলিমা নাসরিন

ব্যক্তিমানুষ হিসেবে চঞ্চল একজন সাদামাটা মানুষ। এ ধরনের মানুষ বেশ ভালো হন। আমি তাঁকে যতটুকু চিনি-জানি, সাধারণ একজন মানুষ। তিনি বলেছেন- কোন পরিবার থেকে এসেছেন, কীভাবে ক্যারিয়ারের এতটা পথ পাড়ি দিয়েছেন। তা অত্যন্ত গৌরবের সঙ্গে বলেছেন। এই বলার সাহস খুব কম মানুষের আছে। একমাত্র যাঁর সততা আছে, তিনিই কেবল বলতে পারেন। তথ্যপ্রযুক্তির কল্যাণে আমাদের কাজ দেশের বাইরের দর্শক যে কোনো স্থান থেকেই দেখছেন। যেজন্য শুধু দেশেই নয়, দেশের গণ্ডি পেরিয়ে বিদেশের মাটিতেও সুনাম ছড়িয়ে পড়েছে তাঁর। চঞ্চলের অভিনয়ের জাদুতে বুঁদ হয়ে আছেন দর্শক। নাটক, সিনেমা, ওয়েব সিরিজ- সব জায়গাতেই সফল তিনি। বললেই পারি, আমাদের একজন চঞ্চল চৌধুরী আছেন। চঞ্চল তাঁর কাজ নিয়ে এগিয়ে যান। তাঁর জন্য শুভকামনা।

Leave a Reply