প্রমথ চৌধুরী যশোরে জন্মগ্রহণ করেন । তাঁর পৈত্রিক নিবাস ছিল পাবনা জেলার চাটমোহর উপজেলার হরিপুর গ্রামে । তিনি রবীন্দ্রনাথের অগ্রজ সত্যেন্দ্রনাথ ঠাকুরের কন্যা ইন্দিরা দেবীকে বিবাহ করেন । প্রমথ চৌধুরী রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে বাংলা গদ্যে চলিত রীতির ব্যবহারে উদ্বদ্ধ করেন । চলতি ভাষাকে তিনি জনপ্রিয় করে তোলেন । প্রমথ চৌধুরী মূলত একজন প্রাবন্ধিক ।
প্রমথ চৌধুরী প্রমথ চৌধুরীর জন্ম তারিখ কত – ৭ আগস্ট ১৮৬৮ । তিনি কোথায় জন্মগ্রহণ করেন – যশোর । কোন ছদ্মনামে পরিচিত – বীরবল ।
বাংলা সাহিত্যের এক উজ্জ্বল নক্ষত্রের নাম প্রমথ চৌধুরী। তিনি বাংলা সাহিত্যে চলিত গদ্যরীতির প্রবর্তক। বাংলা সাহিত্যে তাঁর অবদান অনস্বীকার্য। তিনি বাংলা সাহিত্যের গতিপথ ঘুরিয়ে দিয়ে নতুনত্ব এনেছিলেন। তাঁর সাহিত্য রচনার সুনিপুণতা, সৃষ্টিশীলতা, গাম্ভীর্য, যুক্তিনিষ্ঠা সাহিত্যের ভান্ডারকে সমৃদ্ধ করেছে। সাহিত্যাঙ্গনে প্রমথ চৌধুরীর ছদ্মনাম ছিল ‘বীরবল’। এ ছদ্মনামে পত্রিকার পাতায় লেখালেখি করে তিনি ব্যাপক পরিচিতি লাভ করেন। তাই তাঁকে বলা হতো বাংলা সাহিত্যের বীরবল।
সম্রাট আকবরের দরবারে নবরেত্নর একজন ছিলেন বীরবল। বাংলা সাহিত্যে প্রথম চৌধুরীও তেমনি এক রত্ন। প্রমথ চৌধুরীকে বাংলা সাহিত্যে বিংশ শতাব্দীর শ্রেষ্ঠ প্রাবন্ধিক ও সাহিত্য সমালোচক হিসেবে অভিহিত করা হয়। তিনি ছিলেন বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী। তিনি প্রবন্ধ রচনা ও সাহিত্য সমালোচনার পাশাপাশি কবিতা, গল্প, চুটকি রচনায় খুব পারদর্শী ছিলেন। ব্যঙ্গাত্মক রচনাতেও তাঁর জুড়ি নেই। তাঁর কবিতাগুলো ছিল খুবই বাস্তববাদী। ছোটগল্পগুলো ছিল অসাধারণ। ছোট গল্প লেখার ক্ষেত্রে তিনি বাস্তবতার নিরিখে সুগভীর উপলব্ধিকে সাবলীল ভাষায় লিখতেন, যেন সাধারণ পাঠক লেখাটি পড়তে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে। এই ধাঁচটি পরে তাঁর প্রবন্ধগুলোয়ও দেখতে পাওয়া যায়। তিনি মূলত সাধারণ পাঠকদের কথা মাথায় রেখে সাহিত্য রচনা করতেন। পাঠকের মনোভাব উপলব্ধি করে তাদের অব্যক্ত কথাগুলো তিনি তাঁর ছোট গল্প ও প্রবন্ধে লিখেছেন।
প্রমথ চৌধুরী বলেছিলেন, ‘ভাষা মানুষের মুখ থেকে কলমের মুখে আসে, কলমের মুখ থেকে মানুষের মুখে নয়।’ তিনি রবীন্দ্র যুগে নিজেকে অত্যন্ত সফলতার সঙ্গে স্বতন্ত্রভাবে উপস্থাপন করেছেন এবং প্রশংসিতও হয়েছেন। প্রথম চৌধুরী সেই সময়কার জনপ্রিয় ‘সবুজপত্র’ পত্রিকার সম্পাদক ছিলেন। এই পত্রিকার মাধ্যমে তিনি নতুন লেখকদের একটি শক্তিশালী সংঘ তৈরি করেছিলেন। এ পত্রিকার মাধ্যমে সাহিত্যের বিকাশে তিনি ব্যাপকভাবে অবদান রাখেন এবং তরুণ প্রজন্মের লেখক ও পাঠকদের কাছে খুব জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন।
প্রমথ চৌধুরী ১৮৬৮ সালের ৭ আগস্ট যশোরে জন্মগ্রহণ করেন। জমিদার তনয় তাঁর পৈতৃক বাড়ি ছিল পাবনা জেলার চাটমোহর উপজেলার হরিপুর গ্রামে। তাঁর বাবার নাম দুর্গাদাস চৌধুরী এবং মায়ের নাম মগ্নময়ী দেবী। প্রমথ চৌধুরী কলকাতার হেয়ার স্কুল থেকে এন্ট্রান্স, প্রেসিডেন্সি কলেজ থেকে দর্শনে প্রথম শ্রেণিতে বিএ পাস এবং ইংরেজিতে প্রথম শ্রেণিতে এমএ পাস করেন। তাঁর শিক্ষাজীবন ছিল অত্যন্ত কৃতিত্বপূর্ণ। ১৮৯৩ সালে ইংল্যান্ডে গিয়ে সেখান থেকে বার অ্যাট ল ডিগ্রি অর্জন করেন। কর্মজীবনে কিছুকাল তিনি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগে অধ্যাপনা ছাড়াও সরকারের উচ্চপদে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি সত্যেন্দ্রনাথ ঠাকুরের মেয়ে ইন্দিরা দেবীকে বিয়ে করেন। সত্যেন্দ্রনাথ ঠাকুর ছিলেন কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ভাই। সুতরাং সে হিসেবে রবীন্দ্রনাথের ভ্রাতুষ্পুত্রী-জামাতা ছিলেন প্রমথ চৌধুরী।
লেখালেখির প্রতি অতিরিক্ত আগ্রহের কারণে প্রমথ চৌধুরী সরকারি চাকরি ছেড়ে ‘সবুজপত্র’-এর সম্পাদকের দায়িত্ব নেন। বাংলা সাহিত্যকে তিনি নানাভাবে সমৃদ্ধ করেছেন। বাংলা সাহিত্যের তিনি অন্যতম শ্রেষ্ঠ একজন সমালোচক। বর্তমানে সমালোচনার নামে যদিও অনেকে নিন্দা করে, ব্যক্তিকে খাটো করে, প্রমথ চৌধুরী ছিলেন তার উল্টো স্রোতের যাত্রী। ব্যক্তিক আক্রমণ তাঁর সমালোচনায় ছিল না বললেই চলে। তিনি সাহিত্যের গঠনমূলক সমালোচনা করতেন, যা এখনো তাঁকে প্রথম শ্রেণির সমালোচকের আসনেই আসীন রেখেছে। ইউরোপীয় শিক্ষার প্রভাব পড়েছিল তাঁর সাহিত্যে। অনেকের মতে, পাশ্চাত্য শিক্ষার প্রভাবের কারণেই তাঁর প্রবন্ধগুলোতে অনেক উদ্ভট বিষয় স্থান পেয়েছে। নিঃসন্দেহে তাঁর লেখার ধাঁচটি বাংলা সাহিত্যের জন্য একটি মাইলফলক।
তিনি ছিলেন মননশীল ও প্রচণ্ড যুক্তিবাদী। তিনি বলেছেন, ‘জ্ঞানের প্রদীপ যেখানেই জ্বালো না কেন, তাহার আলোক চারিদিক ছড়াইয়া পড়িবে। মনোজগতে বাতি জ্বালানোর জন্যে সাহিত্যচর্চার বিশেষ প্রয়োজন।’ স্বদেশপ্রীতি সম্পর্কে তাঁর অভিমত, ‘আমরা স্বদেশে যাতে বিদেশি না হই, সে বিষয়ে প্রাণপণ চেষ্টা করতে হবে।’ তিনি মানসিক যৌবনকেই সমাজে প্রতিষ্ঠার প্রয়াস করেছেন। কাব্যসাধনা যেন কখনো ‘জোর-করা ভাব, আর ধার-করা ভাষা’য় পরিণত না হয়, সে বিষয়ে তিনি স্পষ্ট করে বলেছেন।
পাবনার বিখ্যাত চৌধুরী বংশের সন্তান প্রমথ চৌধুরী কেবল কুলে-মানেই অভিজাত ছিলেন না, মনের দিক থেকেও ছিলেন উদার। কোনো কোনো সমালোচক মনে করেন, প্রমথ চৌধুরীর লেখা ‘প্যারাডক্সে আক্রান্ত’; অর্থাৎ যে উক্তি আপাতদৃষ্টিতে স্ববিরোধী মনে হলেও সত্যবর্জিত নয়। কিন্তু সত্য হলো—তাঁর লেখার ধরন খুবই বুদ্ধিবৃত্তিক ও যুক্তিনিষ্ঠ। পারিবারিক সূত্রে রবীন্দ্রনাথের ভ্রাতুষ্পুত্রী-জামাতা এবং বয়োকনিষ্ঠ্য হয়েও গদ্য রচনারীতিতে রবী ঠাকুরকে প্রভাবিত করেছিলেন প্রমথ চৌধুরী, যা কবিগুরু নিজেই স্বীকার করেছিলেন। তিনি খুব উদার মানসিকতা থেকে বলেছিলেন, তাঁর গল্প ও সনেট বাংলা সাহিত্যে খুব একটা প্রভাব ফেলেনি। কিন্তু প্রমথ চৌধুরীর প্রবন্ধ ও ভাষাভঙ্গি আর ভাবনার ধারা পরবর্তী একটি গোষ্ঠীর ওপর বিশেষ ক্রিয়াশীল হয়েছে। বাংলায় কথ্যরীতি তাঁরই হাতে সাহিত্যিক স্বীকৃতি লাভ করে। রবীন্দ্রনাথের জোর সমর্থন ও ব্যক্তিগত চেষ্টায় সে রীতি সুপ্রতিষ্ঠিত হয়। বস্তুত, প্রমথ চৌধুরীর ‘সবুজপত্র’ পত্রিকাকে কেন্দ্র করেই এ দুজনের প্রচেষ্টাতে এই কথ্যরীতির পূর্ণতম প্রতিষ্ঠা ঘটে।
‘সবুজপত্র’ পত্রিকার মাধ্যমে প্রমথ চৌধুরী বাংলা গদ্যে নবরীতি প্রবর্তন করেন এবং তাঁর প্রবন্ধাবলীতে প্রমাণ করেন যে, চলিত ভাষায় লঘু-গুরু সব ধরনের ভাব ও ভাবনার প্রকাশ সম্ভব। নাগরিক বৈদগ্ধ্য, মননের তীক্ষ্ণতা, চমক, রোমান্টিক ভাবালুতার বিরুদ্ধতা, বুদ্ধির অতিচর্চা এবং কিঞ্চিৎ ব্যঙ্গ, কিঞ্চিৎ রঙ্গ-ব্যঙ্গের হাসি প্রমথ চৌধুরীর প্রবন্ধের ভাষায় বিধৃত। উইট এপিগ্রামের সুপ্রচুর ব্যবহারে তাঁর লেখা প্রবন্ধগুলো আজও পাঠকদের আকৃষ্ট করে। দর্শন, রাষ্ট্রনীতি, ভাষা, সাহিত্য, ইতিহাস ইত্যাদি নানা বিষয়ে তিনি যেসব প্রবন্ধ লিখেছেন, সেগুলোর সর্বত্রই তাঁর রচনায় তীক্ষ্ণ মৌলিকতার চিহ্ন রয়েছে। বিষয়ের অভ্যন্তরে বিতর্কের ভঙ্গিতে প্রবেশ করে তার প্রাণকেন্দ্রে আলোকপাত করতে প্রমথ চৌধুরীর জুড়ি নেই। সাহিত্য সমালোচক হিসেবেও তিনি সেভাবে খ্যাত। তাঁকে এককথায় সৃষ্টিশীল এবং রূপবাদী আখ্যা দেওয়া যেতে পারে।
প্রমথ চৌধুরীর মতে, সাহিত্যের উপাদান হচ্ছে মানবজীবন ও প্রকৃতি। মানব জীবনের সঙ্গে যার ঘনিষ্ঠ সম্বন্ধ নেই, তা সাহিত্য নয়। তবে সাহিত্য মানবজীবনের বস্তুগত রূপ নয়, আবার প্রকৃতির হুবহু অনুকরণও নয়। মানবজীবন ও প্রকৃতি থেকে গ্রহণ বর্জনের মাধ্যমে উপযুক্ত উপাদান নির্বাচন করে শিল্পী মনের রূপ-রস, সুখ-দুঃখ, আশা-আকাঙ্ক্ষা মিলিয়েই সৃষ্টি হয় প্রকৃত সাহিত্য। আমরা তাঁর রচনার প্রত্যেক পরতে পরতে দেখতে পাই মানবজীবন ও প্রকৃতির উপাদানের নির্যাসের পরিপূর্ণ অবয়বের চিত্র। মূলত সাহিত্যের দুটি দিক রয়েছে—বিষয় ও সৌন্দর্য। প্রমথ চৌধুরী সাহিত্যে বিষয় ও সৌন্দর্যকে সমমূল্যে বিচার করেছেন। প্রমথ চৌধুরী জীবনে একটি উপন্যাসও লেখেননি। বৃহদাকৃতি রচনার প্রতি তাঁর বিন্দুমাত্র আকর্ষণ ছিল না। তিনি ছোট লেখার প্রতি বেশি আগ্রহী ছিলেন। অল্প কথায় মূল বিষয়টি উপস্থাপন করতে পারার মধ্যেই সাহিত্য রচনায় সার্থকতা বলে বিশ্বাস করতেন।
বাংলা সাহিত্যে প্রমথ চৌধুরী ফারসি ছোটগল্পের আঙ্গিক রীতিকে প্রথম পরিচিত করিয়েছিলেন। তিনি বাংলা সাহিত্যে ইতালীয় সনেটের প্রবর্তক হিসেবে খ্যাত। বাংলা সাহিত্যে নিজস্ব ধারায় সনেট রচনাও করেছেন। বাংলা সাহিত্যে ‘চুটকি’ সাহিত্যের প্রচার, প্রসার, বাগ্বৈদগ্ধ্য ও সুনিপুণ বিন্যাসে, চুটকির নতুনত্বে প্রমথ চৌধুরীর ভূমিকা অনস্বীকার্য। সাহিত্যে সত্য অন্বেষণ ও চর্চা ছিল যেন তাঁর জীবনের ব্রত। অপ্রিয় হলেও সত্য যে, প্রমথ চৌধুরীর ভাষাদর্শের সঙ্গে সাহিত্যাদর্শের দ্বন্দ্ব ছিল। ভাষাদর্শে তিনি বিপ্লবী ও অগ্রবর্তী। কিন্তু সাহিত্যাদর্শে তিনি অতীতচারী গ্রিক, রোমান ও সংস্কৃত সাহিত্যাদর্শের উত্তরাধিকারী। তবে সাহিত্যাদর্শে তিনি প্রাণের, তারুণ্যের, যৌবনের উপাসক, ইন্দ্রিয়গ্রাহ্য রূপের উপাসক, সামাজিক মিথ্যার শত্রু, সৌন্দর্যের ভক্ত, সাহিত্যে স্বতন্ত্র মর্যাদার সমর্থক এবং সব ধরনের নীতিশাস্ত্রের বিরোধী। বস্তুত বাংলা সাহিত্যে তিনি মানসিক যৌবনের প্রতিষ্ঠা করতে চেয়েছিলেন। তিনি চেয়েছিলেন বাংলা সাহিত্যে প্রাণের প্রতিষ্ঠা হোক, যে প্রাণ সব বাসনামুক্ত, যে প্রাণ নিজের পথ সৃষ্টি করে নেয়।
প্রথম চৌধুরী ছিলেন একজন সত্যিকারের ভাষা শিল্পী। ভাষা নিয়ে সাহিত্য সাধনা তাঁর কাছে জীবন সাধনার নামান্তর। তিনি মনে করেন, মানব মনে দুটি আকাঙ্ক্ষা বিদ্যমান। একটি জীবন ধারণের আকাঙ্ক্ষা, অন্যটি আত্মধারণের ও আত্মবিস্মৃতির। এ দুটির সমন্বয়েই সৃষ্টিশীল সাহিত্য সৃষ্টি হয়। তিনি মনে প্রাণে বিশ্বাস করতেন, মানবজীবনে যৌবনই সৃজনশীল। ব্যক্তিগত জীবন ক্ষণস্থায়ী হলেও জাতির সমষ্টিগত জীবনপ্রবাহে নিজেকে সংযুক্ত রাখতে পারলে মানসিক জীবন বিনাশের আশঙ্কা থাকে না। তিনি তাঁর প্রায় রচনাতেই উল্লেখ করতেন, ‘আমাদের প্রধান চেষ্টার বিষয় হওয়া উচিত কথায় ও কাজে ঐক্য করা, ঐক্য নষ্ট করা নয়।’ তাঁর সবগুলো রচনা বিশ্লেষণ করলে আমরা তাঁর কথা ও কর্মের সংগতি স্পষ্ট দেখতে পাই।
প্রথম চৌধুরীর গ্রন্থের মধ্যে রয়েছে কাব্যগ্রন্থ: সনেট পঞ্চাশৎ (১৯১৯) ও পদচারণ (১৯২০); গল্পগ্রন্থ: চার ইয়ারি কথা (১৯১৬), আহুতি (১৯১৯), ঘোষালের ত্রিকথা (১৯৩৭), নীল লোহিত (১৯৩৯), অনুকথা সপ্তক (১৯৩৯), সেকালের গল্প (১৯৩৯), ট্র্যাজেডির সূত্রপাত (১৯৪০), গল্পসংগ্রহ (১৯৪১), নীল লোহিতের আদি প্রেম (১৯৪৪), দুই বা এক (১৯৪০); প্রবন্ধগ্রন্থ: তেল-নুন-লাকড়ি (১৯০৬), নানাকথা (১৯১১), বীরবলের হালখাতা (১৯১৭), আমাদের শিক্ষা (১৯২০), দুই ইয়ারির কথা (১৯২১), বীরবলের টিপ্পনী (১৯২৪), রায়তের কথা (১৯২৬), নানাচর্চা (১৯৩২), ঘরে বাইরে (১৯৩৬), প্রাচীন হিন্দুস্থান (১৯৪০), বঙ্গ সাহিত্যের সংক্ষিপ্ত পরিচয় (১৯৪০) এবং প্রবন্ধ সংগ্রহ ১ম ও ২য় খণ্ড (১৯৫২-১৯৫৩)।
প্রমথ চৌধুরী বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে যে অবদান রেখে গেছেন, তা সত্যিই অতুলনীয়। তিনি রবীন্দ্র যুগে আবির্ভূত হলেও তাঁর সাহিত্য আপন বৈশিষ্ট্যে সমুজ্জ্বল। বাংলা সাহিত্যের এই বিখ্যাত দিকপাল ১৯৪৬ সালের ২ সেপ্টেম্বর শান্তিনিকেতনে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন। বাংলা সাহিত্যে চলিত ভাষার প্রবর্তক ও বিদ্রূপাত্মক প্রাবন্ধিক হিসেবে তিনি চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবেন।
চলতি রীতিতে প্রকাশিত তাঁর প্রথম গদ্যরচনা – বীরবলের হালখাতা (ভারতী পত্রিকায় প্রকাশ ১৯০২) । কোন মাসিক পত্রিকাটি সম্পাদনা করে প্রভূত খ্যাতি অর্জন করেন – সবুজপত্র (১৯১৪) । বাংলা সাহিত্যে তিনি কি হিসেবে স্মরণীয় – চলিত ভাষার প্রবর্তক ও বিদ্রুপাত্মক প্রাবন্ধিক হিসেবে । ’সাহিত্যে খেলা’ প্রবন্ধটি কার রচনা – প্রমথ চৌধুরী । প্রমথ চৌধুরী রচিত ‘সাহিত্যে খেলা প্রবন্ধটি কোন প্রত্রিকায় প্রকশিত হয় – সবুজপত্র পত্রিকায় । ’সুশিক্ষিত ব্যক্তি মাত্রই স্বশিক্ষিত’ ।-উক্তিটি – প্রমথ চৌধুরীর ।
শিশুদের সামনে কোন কথা ভুলেও বলবেন না?
১৯১৪ সালে -প্রমথ চৌধুরীর ‘সাহিত্যে খেলা’ প্রবন্ধটি কোন সালে প্রকশিত হয় । কোন পত্রিকা সম্পাদনা করেন – ‘বিশ্বভারতী’ পত্রিকা । প্রমথ চৌধুরী প্রধান কি পদক লাভ করেন – কলকাতা বিশ্ববিদ্যায়ল থেকে জগত্তারিণী স্বর্ণপদক । ’ভাষা মানুষের মুখ থেকে কলমের মুখে আসে, উল্টোটা করতে গেলে মুখে শুধু কালিই পড়ে’ -এ উক্তিটি করেছেন – প্রমথ চৌধুরী । জীবনী ও সাহিত্যকর্ম ’তবে বস্তু যে কি, তার জ্ঞান অনুভূতি সাপেক্ষ, তর্ক সাপেক্ষ নয়’- ব্যকটির রচয়িতা – প্রমথ চৌধুরী । Video link
’কুশীলব’ প্রসঙ্গ কোন রচনার অন্তর্গত – ’সাহিত্যে খেলা’ । শাস্ত্রমতে কাব্যরস হল অমৃত- উক্তিটি কার – প্রমথ চৌধুরী । ’মন উচুঁতেও উঠতে চায়, নীচুতেও নামতে চায়’- এ বাক্যটি কোন লেখকের লেখায় আছে – প্রমথ চৌধুরী । ’পাথুরে কয়লা হীরার সবর্ণ না হলেও সগোত্র’- বাক্যটির রচয়িতা – প্রমথ চৌধুরী । ’সাহিত্যে মানবাত্মা খেলা করে এবং সেই খেলার আনন্দ উপভোগ করে।’- কে বলেছেন – প্রমথ চৌধুরী ।
প্রমথ চৌধুরী কবে মৃত্যুবরণ করেন – ২ সেপ্টেম্বর ১৯৪৬ (১৬ ভাদ্র ১৩৫৩), শান্তিনিকেতনে । ’তেল নূন লাকড়ি’ কার রচিত গ্রন্থ – প্রমথ চৌধুরী । ’বীরবলের হালখাতা’ গ্রন্থটি কোন ধরনের রচনা – প্রবন্ধ । ’জীবনে জ্যাঠামি ও সাহিত্যে ন্যাকামি’ সহ্য করতে পারতেন না – প্রমথ চৌধুরী ।
বাংলা সাহিত্যে চলিত ভাষায় রচিত প্রথম গ্রন্থ – ’বীরবলের হালখাতা’ । ’সবুজপত্র’ পত্রিকার সম্পাদক – প্রমথ চৌধুরী । প্রমথ চৌধুরী একজন – প্রাবন্ধিক । এর জীবনী ’চার ইয়ারী কথা’ গ্রন্থটি কে রচনা করেন – প্রমথ চৌধুরী । চলিত বাংলা গদ্যের সার্থক প্রবর্তন করেন – প্রমথ চৌধুরী । চলিত ভাষাকে জনপ্রিয় করেন – প্রমথ চৌধুরী ।
প্রমথ চৌধুরী কোন বিষয়ে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে প্রভাবিত করেছিলেন –চলতি ভাষার ব্যবহারে । ’বইপড়া’ প্রবন্ধটি কার লেখা – প্রমথ চৌধুরী । ’নীল লোহিত’ একটি – গল্পগ্রন্থ । রচিত প্রবন্ধগ্রন্থগুলোর নাম – ‘তেল নুন লকড়ি’ (১৯০৬), ‘বীরবলের হালখাত’ (১৯১৬), ’নানাকথা’ (১৯১৯), ’আমাদের শিক্ষা’ (১৯২০), ’রায়তের কথা’ (১৯২৬), ‘নানাচর্চা’ (১৯৩২), ’প্রবন্ধ সংগ্রহ’ (১ম খন্ড ১৯৫২ ও ২য় খন্ড ১৯৫৩) । রচিত কাব্যগ্রন্থগুলোর নাম – সনেট পঞ্চাশৎ (১৯১৩), পদচারণ (১৯১৯) । গল্পগ্রন্থগুলোর নাম – ‘চার ইয়ারী কথা’ (১৯১৬), ‘আহুতি’ (১৯১৯), নীল লোহিত ও গল্পসংগ্রহ (১৯৪১) ।
- প্রমথ চৌধুরীর জন্ম তারিখ কত – ৭ আগস্ট ১৮৬৮ ।
- তিনি কোথায় জন্মগ্রহণ করেন – যশোর ।
- কোন ছদ্মনামে পরিচিত – বীরবল ।
- চলতি রীতিতে প্রকাশিত তাঁর প্রথম গদ্যরচনা – বীরবলের হালখাতা (ভারতী পত্রিকায় প্রকাশ ১৯০২) ।
- কোন মাসিক পত্রিকাটি সম্পাদনা করে প্রভূত খ্যাতি অর্জন করেন – সবুজপত্র (১৯১৪) ।
- বাংলা সাহিত্যে তিনি কি হিসেবে স্মরণীয় – চলিত ভাষার প্রবর্তক ও বিদ্রুপাত্মক প্রাবন্ধিক হিসেবে ।
- ’সাহিত্যে খেলা’ প্রবন্ধটি কার রচনা – প্রমথ চৌধুরী ।
- প্রমথ চৌধুরী রচিত ‘সাহিত্যে খেলা প্রবন্ধটি কোন প্রত্রিকায় প্রকশিত হয় – সবুজপত্র পত্রিকায় ।
- ’সুশিক্ষিত ব্যক্তি মাত্রই স্বশিক্ষিত’ ।-উক্তিটি – প্রমথ চৌধুরীর ।
- ১৯১৪ সালে -প্রমথ চৌধুরীর ‘সাহিত্যে খেলা’ প্রবন্ধটি কোন সালে প্রকশিত হয় ।
- কোন পত্রিকা সম্পাদনা করেন – ‘বিশ্বভারতী’ পত্রিকা ।
- প্রমথ চৌধুরী প্রধান কি পদক লাভ করেন – কলকাতা বিশ্ববিদ্যায়ল থেকে জগত্তারিণী স্বর্ণপদক ।
- ’ভাষা মানুষের মুখ থেকে কলমের মুখে আসে, উল্টোটা করতে গেলে মুখে শুধু কালিই পড়ে’ -এ উক্তিটি করেছেন – প্রমথ চৌধুরী ।
জীবনী ও সাহিত্যকর্ম
- ’তবে বস্তু যে কি, তার জ্ঞান অনুভূতি সাপেক্ষ, তর্ক সাপেক্ষ নয়’- ব্যকটির রচয়িতা – প্রমথ চৌধুরী ।
- ’কুশীলব’ প্রসঙ্গ কোন রচনার অন্তর্গত – ’সাহিত্যে খেলা’ ।
- শাস্ত্রমতে কাব্যরস হল অমৃত- উক্তিটি কার – প্রমথ চৌধুরী ।
- ’মন উচুঁতেও উঠতে চায়, নীচুতেও নামতে চায়’- এ বাক্যটি কোন লেখকের লেখায় আছে – প্রমথ চৌধুরী ।
- ’পাথুরে কয়লা হীরার সবর্ণ না হলেও সগোত্র’- বাক্যটির রচয়িতা – প্রমথ চৌধুরী ।
- ’সাহিত্যে মানবাত্মা খেলা করে এবং সেই খেলার আনন্দ উপভোগ করে।’- কে বলেছেন – প্রমথ চৌধুরী ।
- প্রমথ চৌধুরী কবে মৃত্যুবরণ করেন – ২ সেপ্টেম্বর ১৯৪৬ (১৬ ভাদ্র ১৩৫৩), শান্তিনিকেতনে ।
- ’তেল নূন লাকড়ি’ কার রচিত গ্রন্থ – প্রমথ চৌধুরী ।
- ’বীরবলের হালখাতা’ গ্রন্থটি কোন ধরনের রচনা – প্রবন্ধ ।
- ’জীবনে জ্যাঠামি ও সাহিত্যে ন্যাকামি’ সহ্য করতে পারতেন না – প্রমথ চৌধুরী ।
- বাংলা সাহিত্যে চলিত ভাষায় রচিত প্রথম গ্রন্থ – ’বীরবলের হালখাতা’ ।
- ’সবুজপত্র’ পত্রিকার সম্পাদক – প্রমথ চৌধুরী ।
- প্রমথ চৌধুরী একজন – প্রাবন্ধিক ।
এর জীবনী
- ’চার ইয়ারী কথা’ গ্রন্থটি কে রচনা করেন – প্রমথ চৌধুরী ।
- চলিত বাংলা গদ্যের সার্থক প্রবর্তন করেন – প্রমথ চৌধুরী ।
- চলিত ভাষাকে জনপ্রিয় করেন – প্রমথ চৌধুরী ।
- প্রমথ চৌধুরী কোন বিষয়ে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে প্রভাবিত করেছিলেন –চলতি ভাষার ব্যবহারে ।
- ’বইপড়া’ প্রবন্ধটি কার লেখা – প্রমথ চৌধুরী ।
- ’নীল লোহিত’ একটি – গল্পগ্রন্থ ।
- রচিত প্রবন্ধগ্রন্থগুলোর নাম – ‘তেল নুন লকড়ি’ (১৯০৬), ‘বীরবলের হালখাত’ (১৯১৬), ’নানাকথা’ (১৯১৯), ’আমাদের শিক্ষা’ (১৯২০), ’রায়তের কথা’ (১৯২৬), ‘নানাচর্চা’ (১৯৩২), ’প্রবন্ধ সংগ্রহ’ (১ম খন্ড ১৯৫২ ও ২য় খন্ড ১৯৫৩) ।
- রচিত কাব্যগ্রন্থগুলোর নাম – সনেট পঞ্চাশৎ (১৯১৩), পদচারণ (১৯১৯) ।
- গল্পগ্রন্থগুলোর নাম – ‘চার ইয়ারী কথা’ (১৯১৬), ‘আহুতি’ (১৯১৯), নীল লোহিত ও গল্পসংগ্রহ (১৯৪১) ।