বেসরকারি শিক্ষকদৃন্দের সকল দাবি যৌক্তিক। এই যৌক্তিক কাজগুলো করবে কে? ব্যক্তিগত ভাবে অনেকই যৌক্তিক দাবিগুলোর পক্ষে কথা বলেছেন। আমরা বেসরকারি শিক্ষকবৃন্দ তার প্রশংসা করেছি। আসলে কাজের কাজ কিছুই হয়নি।আমরা যেখানে ছিলাম সেখানেই আছি। শিক্ষকদের বদলি এর বিপক্ষে যাওয়ার কোন সুযোগ নেই।আমাদের সিকি ভাগ উৎসব ভাতাকে শতভাগ করার দাবি অনেক যৌক্তিক। অনেক দায়িত্বশীল মন্ত্রী এম.পি এর পক্ষে কথা বলেছেন কিন্তু কথা রাখেন নি।সরকারি কর্মচারী কর্মকর্তাদের ন্যায় বাড়ি ভাড়া প্রদানের দাবি কেউ অযৌক্তিক বলতে পারবে না।বাংলাদেশ মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রধান পরিষদের পক্ষ থেকে আমরা এ সকল দাবির সাথে একমত। আমরা এর সাথে যুক্ত করেছি শুধু সরকারি এবং বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধানের মধ্যকার যে গ্রেড বৈষম্য আছে তা নিরসনের। সরকারি স্কুলের প্রধানগন জাতীয় বেতন স্কেলের ষষ্ঠ গ্রেডে বেতন পাচ্ছে। আমরাও সমযোগ্যত,সমকর্ম সম্পাদন করে ঐ একই গ্রেডে বেতন চাচ্ছি।বেসরকারি সকল শিক্ষক কর্মচারী ২০২১ এর জনবল কাঠামো এবং এম.পি.ও নীতিমালা অনুযায়ী চাকরি জীবনে দুটো উচ্চতর গ্রেড চাচ্ছে কিন্তু শুধুমাত্র প্রতিষ্ঠান প্রধানগন এই সুযোগ থেকে বঞ্চিত।
আমরাও অন্যান্যদের ন্যায় দুটো উচ্চতর গ্রেড চাই। এই উচ্চতর গ্রেড না দেওয়ার কারণে বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে চেইন অফ কমান্ড ভেঙ্গে পড়েছে। সিনিয়র সহকারী শিক্ষকবৃন্দ বিধি মোতাবেক চাকরি জীবনে দুটো উচ্চতর গ্রেড পেয়ে সহকারী প্রধান শিক্ষকের গ্রেডে বেতন পাচ্ছে। অনেকই আবার ইনক্রিমেন্টর কারণে সহকারী প্রধান পরিষদের এর চেয়ে বেশি বেতন পাচ্ছে। যে কারণে অনেক ক্ষেত্রে একই গ্রেডের চাকরি করায় সহকারী প্রধান শিক্ষকদের কথা সহকারী শিক্ষকবৃন্দ শুনতে চায় না।যদি সরকারি স্কুলের প্রধান শিক্ষকদের ন্যায় বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষকদের ৬ষ্ট গ্রেডে উন্নীত করা হয় এবং সহ প্রধানদের ৭ম গ্রেডে উন্নীত করা হয়। তবে এই সমস্যার সমাধান হয়।দেখুন এক বেসামরিক শিক্ষকদের মধ্যে চাহিদা ভিন্ন ভিন্ন। যার যেটা জরুরী সে সেটা নিয়ে আন্দোলনের ডাক দেয়।শুরু হয় নিজেদের মধ্যে দ্বন্দ্ব।
আর এই দ্বন্দ্ব সৃষ্টি করাই প্রশাসনের কাজ।আমরা তাদের পাতা ফাঁদে পা দিচ্ছি। বদলি প্রর্থীরা আন্দোলন করলে অন্যরা আসি না বরং গালাগাল করি। বাড়ি ভাড়া নিয়ে আন্দোলনকারীরা প্রতিষ্ঠান প্রধানদের বিশ্বাস করি না।কেউ ই. এফ. টিতেবেতনের স্বপ্নে বিভোর। আমার মনে হয় সব সমস্যার সমাধান আছে বেসরকারি মাধ্যমিক শিক্ষা ব্যবস্থা জাতীয় করণ।এই জাতীয় করণের দাবি নিয়ে বিগত সরকারের সময়ে আন্দোলনে গেলে কিছু শিক্ষক সংগঠন আমাদের বি.এন. পি জামাত বা স্বাধীনতা বিরোধী বলে আখ্যা দিয়ে আন্দোলন বন্ধ করে দিয়েছে। তারা মুক্তি যুদ্ধের হোলসেলার হয়ে পরেছিল।আমরা শিক্ষক আমরা রাজনীতি করি না।আমরা আমাদের পেশার অধিকার নিয়ে কথা বলতেই পারি। এটা কোন সরকারকে বিব্রত করা নয়।আমাদের দাবিগুলো শুনুন। সাধ্যমতো সমাধান করুন। আমার মনে হয়।জাতীয় করণই আমাদের প্রধান দাবি হওয়া উচিত। অনেকই বলবেন কেবল অন্তবর্তীকালীন সরকার আসল এখনই জাতীয় করণ চাওয়া উচিত হবে না। কেন উচিত হবে না। এই দাবি আমরা হঠাৎ করছি না। এই দাবি আমাদের পূর্ববর্তী সরকারের সময় করেছি। এখন যিনি আছেন তার কাছে করছি। এটা নতুন দাবি নয় পুরাতন। এই দাবি করার জন্য তৎকালীন সরকারের দালালদের কাছে স্বাধীনতা বিরোধী তকমা পেয়েছি । এখন এই সরকারের কাছেও চাইছি। দয়া করে আমাদের কারো দালাল বলবেন না।এটা আমাদের পেশাগত দাবি। পূরণ করতে পারেন আবার নাও করতে পারেন।দয়া করে অবজ্ঞা করবেন না। আপনার সক্ষমতা নেই মানে রাষ্ট্রের সক্ষমতা নেই। মানে আমার সক্ষমতা নেই। পর্যায়ক্রমে জাতীয় করন করুন। একটা ক্রাইটরিয়া নির্ধারণ করে পাঁচ বছর সময় নিয়ে করুন। যদি শিক্ষা ব্যবস্থার উন্নয়ন চান তবে বেসরকারি মাধ্যমিক শিক্ষা জাতীয় করণ করতে হবে। এই সুবিধা শুধু আমি (শিক্ষক ) ভোগ করব না। সবাই ভোগ করবে।শিক্ষার্থীদের মাসিক বেতন কমবে।গ্রাম শহরের পার্থক্য কমবে।অনেকই বলতে পারেন শুধু বেসরকারি মাধ্যমিক শিক্ষা জাতীয় করণ কেন? শিক্ষা ব্যবস্থা জাতীয় করণ নয় কেন? সুন্দর দাবি এর সাথেও একমত। তবে সব কিছুরই ধারাবাহিকতা আছে।প্রাথমিক শিক্ষা জাতীয় করণ আছে। এর পরবর্তী ধাপ মাধ্যমিক শিক্ষা। তাই মাধ্যমিক শিক্ষা জাতীয় করণ চাই। তাই আসুন সবাই মিলে মাধ্যমিক পরীক্ষা জাতীয় করণের দাবিতে ঐক্যবদ্ধ হই।নিজের মধ্যে বিভেদ না করি।নিজেদের মধ্যে ঠকাঠকি বা ঠুকাঠুকি না করে মাধ্যমিক শিক্ষা জাতীয় করণ নিয়ে সোচ্চার হই।
শুভ কামনায়
দুলাল চন্দ্র চৌধুরী
সাংগঠনিক সম্পাদক
কেন্দ্রীয় কমিটি
বাংলাদেশ মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রধান পরিষদ।