যুক্তরাজ্যে প্রায় ১০ লাখ মানুষ জানেন না, তাদের আসল বাবা কে? আর এই সংখ্যাটা প্রতি ৫০ জনে অন্তত একজন! জীবনে একবার তারা বাবার স্নেহ, ভালোবাসা কিংবা আদর পেতে মুখিয়ে থাকেন। কিন্তু অনেকেরই অপেক্ষায় থাকতে থাকতে সময় কেটে যায়। গোটা জীবনেও সেই কাঙ্খিত মুহূর্ত আসে না।
তবে সবার ভাগ্যে পিতৃস্নেহ লেখা না থাকলেও ‘অসম্ভব’কে সম্ভব করলেন ১৮ বছরের ক্যাটলিন ম্যাককিনি। বাবাকে খুঁজে পেলেন তিনি। আর বাবা-মেয়ের এই সেতুবন্ধন সম্ভব হলো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের কল্যাণে।
ছোট থেকেই ম্যাককিনিকে বুকে আগলে রেখেছেন তার মা। না চাইতেই তার হাতে এসেছে খেলনা, বই-খাতা। তবুও যেন ম্যাককিনির মনের কোণে থেকে গিয়েছিল বাবার অভাব। প্রতি বছর জন্মদিনে যখন বন্ধুবান্ধব, আত্মীয়-পরিজনদের সামনে কেক কেটে, ফুঁ দিয়ে মোমবাতি নিভিয়েছেন, মনে মনে একটাই প্রার্থনা করেছেন ম্যাককিনি, জীবনে যেন তিনি বাবাকে খুঁজে পান। অন্তত একবার তার সামনে গিয়ে দাঁড়াতে পারেন। তার সেই স্বপ্ন পূরণ হওয়ায় এখন আনন্দে বিভোর উত্তর আয়ারল্যান্ডের ডেরি’র ওই তরুণী।
প্রতিবন্ধী ভাতা ৫ হাজার টাকা করার দাবি
ম্যাককিনির বাবা বাচিরের আদি বাড়ি মরক্কো। তবে তিনি এখন থাকেন ডোভারে। দুই বছর আগে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ম্যাককিনির সঙ্গে পরিচয় হয় তার। এরপর বাড়তে থাকে কথোপকথন। একপর্যায়ে তাদের আসল পরিচয় সামনে আসে। ম্যাককিনি জানতে পারেন, বাচিরই তার বাবা। আর এটা জানতে পেরে বাচিরের সঙ্গে দেখা করতে উদগ্রীব হয়ে ওঠেন তিনি। শেষপর্যন্ত গত মাসে বাচিরের কর্মস্থলে গিয়ে তার সঙ্গে দেখা করেন ম্যাককিনি।
জীবনে প্রথমবার মেয়েকে সামনে দেখতে পেয়ে চোখের পানি ধরে রাখতে পারেননি বাচির। আবার ১৮ বছর বয়সে এসে বাবাকে খুঁজে পাওয়ায় আবেগে ভেসে যান ম্যাককিনি। তার কথায়, ‘বাবাকে কোনোদিন দেখতে পাব, এটা আমার জীবনে স্বপ্নের মতো ছিল। কিন্তু সত্যিই সেটা যে পূর্ণ হবে তা ভাবতে পারিনি।’
অর্ধশত তরুণীকে অপহরণ এবং ১৫০০ ছিনতাইয়ের ভিলেন গ্রেফতার
ম্যাককিনি জানান, বাবার খোঁজ পাওয়ার পর তাকে চমকে দিতে চেয়েছিলেন তিনি। গত মাসের ২৭ তারিখ ছেলেবন্ধু লিওনার্দো ম্যাকগ্লিনচিকে সঙ্গে নিয়ে বাবার কর্মস্থলে হাজির হন ম্যাককিনি। তখন মাত্রই দিনের কাজ শেষ করছেন বাচির।
বাবার সঙ্গে দেখা হওয়ার পর থেকে বেশ ভালোই সময় কাটছে ম্যাককিনির। তিনি জানতে পেরেছেন, তার আরও দু’টি ভাইবোন রয়েছে। এমনকি বাচিরের যিনি বর্তমান স্ত্রী, তিনি সন্তানসম্ভবা।
ম্যাককিনি জানান, তারা একটি পারিবারিক ভ্রমণের পরিকল্পনা করছেন। মরক্কোয় বাবার পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে যাওয়ার ইচ্ছে রয়েছে তার। তাদের ঐতিহ্য, পরম্পরা নিজের চোখে দেখতে চান তিনি। তার কথায়, ‘এতদিন সব থেকেও যেন একটা কিছুর খামতি ছিল। এতদিনে বুঝতে পারছি, সম্পূর্ণ হয়েছে পরিবারের বৃত্ত।’