রক্তের প্রয়োজন হলে সবার আগে চেষ্টা করতে হবে আত্মীয়স্বজন, বন্ধুবান্ধব বা চেনা মানুষজনের মধ্যে, এতে করে অনেকাংশে রক্ত দাতার শারীরিক অবস্থার ব্যাপারে নিশ্চিত থাকা যায়। তবে এই ক্ষেত্রে রক্তের যোগান না হলে সরকারি হাসপাতাল, ব্লাড ব্যাংক বা স্বেচ্ছাসেবী কিছু প্রতিষ্ঠান আছে, যাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে আপনি প্রয়োজনীয় গ্রুপের রক্ত পেতে পারেন। এমনি কিছু প্রতিষ্ঠানের নাম নিচে দেয়া হল যা আপনার আপনজনের জীবন বাঁচাতে সাহায্য করবে।
রেড ক্রিসেন্টঃ রক্ত সংগ্রহ ও রক্ত যোগানে রেড ক্রিসেন্ট প্রতিষ্ঠান একটি পরিচিত নাম। রক্তের প্রয়োজনে স্বল্পমূল্যের সার্ভিস চার্জ দিয়ে আপনারা কাঙ্ক্ষিত গ্রুপের রক্ত খুব সহজে পেতে পারেন। এই প্রতিষ্ঠানের নিয়মিত রক্তদাতা হলে আপনি যত বার রক্ত দিয়েছেন, ততবার কোনো রকম অর্থ ছাড়াই রক্তের প্রয়োজনে রক্ত সংগ্রহ করতে পারবেন এখান থেকে। এ ছাড়াও রক্ত দাতার আত্মীয়স্বজনদের জন্যও বিশেষ মূল্যহ্রাস পাওয়া যায়।
যোগাযোগের জন্য-৭/৫ আরঙ্গজেব রোড, মোহাম্মদপুর, ঢাকা, ফোনঃ ৮১২১৪৯৭।
সন্ধানীঃ বিভিন্ন মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থীদের দ্বারা সন্ধানী পরিচালিত হয়। রক্ত সংগ্রহের জন্য চিকিৎসকের অনুমতিপত্র দেখাতে হবে যেখানে প্রয়োজনীয় রক্তের গ্রুপ ও রক্তের ব্যাগের পরিমাণ উল্লেখ থাকতে হবে।
এখানে তিন ভাবে রক্ত দেওয়া হয়।
· রক্তদাতার পরিচয়পত্র দেখিয়ে রক্ত সংগ্রহ করা যায়।
· বিনিময় পদ্ধতিতে অর্থাৎ যে গ্রুপের রক্ত প্রয়োজন তা নিয়ে অন্য গ্রুপের রক্ত দেওয়া।
· অক্ষম বা দুস্থ ব্যক্তিকে বিনামূল্যে কোনো শর্ত ছাড়াই রক্ত দেওয়া হয়।
আরও পড়ুন:বক্ষব্যাধি বিশেষজ্ঞ ডাক্তার
ঢাকায় সন্ধানীর শাখাগুলো হলোঃ সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ ও মিটফোর্ড হাসপাতাল (ফোনঃ ৭৩১৯১২৩), ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল (ফোনঃ ৯৬৬৮৬৯০), মিরপুর ডেন্টাল কলেজ(ফোনঃ ৯০১১৮৮৭)।
স্বাধীন : ডিপ্লোমা সার্টিফিকেটধারী বা শিক্ষার্থীদের দ্বারা পরিচালিত স্বেচ্ছাসেবী একটি সংগঠন স্বাধীন। এদের নিজস্ব কোন ব্লাড ব্যাংক নেই, তবে রক্ত পেতে একটি ফোন কলই যথেষ্ট, স্বাধীন প্রতিনিধি রোগীর নির্ধারিত স্থানে গিয়ে রক্ত দিয়ে থাকে ।
কেন্দ্রীয় কার্যালয় : আধুনিক চক সুপার মার্কেট(৩য় তলা), চকবাজার, চট্টগ্রাম। ফোন: ০১৬৭০৩৭৭০২৫ বা ০১৮১৪৪৬৭০৫২।
কোয়ান্টামঃ এখানে রক্তদাতাকে নিজের জন্য বিনা খরচে এবং আত্মীয়স্বজনদের জন্য কিছু শর্তে রক্ত সরবরাহ করা হয়।
ঠিকানাঃ স্বেচ্ছা রক্তদান এবং কোয়ান্টাম ল্যাব ১১৯, শান্তিনগর, ঢাকা। ফোনঃ ০২- ৯৩৫১৯৬৯1, ০২-৮৩২২৯৮৭ ই-মেইল: bloodprogram@quanfey.org
বাঁধনঃ বাংলাদেশের প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয় ও অন্যান্য বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সাথে বাঁধনের সম্পৃক্ত। কোনো শর্ত ছাড়াই এই প্রতিষ্ঠান রক্ত সরবরাহ করে থাকে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসিতে এর একটি অফিস রয়েছে ।
যোগাযোগঃ টি.এস.সি(নিচতলা),(জোনাল অফিস), ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। ফোন- ০২-৮৬২৯০৪২ (সকাল ৬ টা থেকে রাত ৯ টা পর্যন্ত)।ই-মেইল- du@badhan.org
প্রয়োজনীয়ঃ
- বিরল রক্তের গ্রুপের ক্ষেত্রে যত আগে সম্ভব সন্ধান করতে হবে।
- পরিচিতদের মধ্যে সবার আগে খোঁজ করবেন।
- রক্ত দাতার শারীরিক সুস্থতা যাচাই করে নিন।
ঢাকায় ব্লাড ব্যাংক গুলোর নাম্বার(জরুরী প্রয়োজনে)
ফোনঃ ৯১১৬৫৬৩, ৮১২১৪৯৭, ৯১৩৯৯৪০
ফোনঃ ৭৩১৯১২৩
সন্ধানী ব্লাড ব্যাংক
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় শাখা
৮৬২১৬৫৮
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল শাখা
৯৬৬৮৬৯০, ৮৬১৬৭৪৪, ০১৮১৯-২৮৪৮৭৮
ঢাকা ডেন্টাল কলেজ শাখা
৯০১১৮৮৭, ৮০১৭১৪৬, ৯০০২০৩৫
বাংলাদেশ মেডিকেল কলেজ শাখা
৯১২৪৬১৯, ৯১১৮২০২; এক্স: ৪৩০
স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ শাখা
৭৩১৯১২৩, ৯৬৬৮৬৯০, ০১৮১৯-২৮৪৮৭৮
ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ শাখা
০৯১-৫৪৮২৯
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ শাখা
০৩১-৬১৬৬২৫
চট্টগ্রাম শাখা
৬১৬৬২৫
রংপুর মেডিকেল কলেজ শাখা
৫২১৬৫১৮০
বগুড়া জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ
৬৪৪-৫১০০২৯৫
দিনাজপুর মেডিকেল কলেজ শাখা
০৫৩১-৪৭৪৮
রাজশাহী মেডিকেল কলেজ শাখা
০৭২১-৫২১৬৫১৮০, ০১৭২১-৭৭৩০৮০
খুলনা মেডিকেল কলেজ শাখা
০৪১-৭৬১৫০৯
সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ শাখা
০৮২১-৭১০৮৮০
বাঁধন ব্লাড ব্যাংক
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, টিএসসি শাখা
৮৬২৯০৪২, ০১৭১১-০২৫৮৭৬
বুয়েট শাখা
০১৯১২-০৮২৯১৯
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় শাখা
০১৭১২-১৮০২৪৬
রেটিনা ব্লাড ব্যাংক
৯৬৬৩৮৫৩, ০১৬১৪-৬০৬৪১১
রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি
৯১১৬৫৬৩, ৮১২১৪৯৭
সন্ধানী ইন্টারন্যাশনাল আই ব্যাংক
৯১২৪৩৫৩, ০১১৯০-১৫১৪৮০
স্যার সলিমুল্লাহ কলেজ ব্লাড ব্যাংক
৭৩১৯১২৩
ইসলামী ব্যাংক হাসপাতাল ব্লাড ব্যাংক
৮৩১৭০৯০, ৮৩২১৪৯৫
কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশন
৯৩৫১৯৬৯, ৮৩২২৯৮৭, ৯৩৪১৪৪১, ৮৩১৯৩৭৭
সন্ধানী ন্যাশনাল আই ডোনেশন সোসাইটি
৮৬১৪০৪০
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ
৬১৬৮৯১-৯৪, ৯৪৬১৬১৯৯
ফাতেমা বেগম রেড ক্রিসেন্ট ব্লাড সেন্টার, চট্টগ্রাম
০৩১-৬২০৬৮৫, ৬১২৩৯৫, ৬২০৯২৬
পোর্ট হাসপাতাল, চট্টগ্রাম
৫০২০২৪
রেলওয়ে হাসপাতাল, চট্টগ্রাম
৭২০১২১-৩৯
বেগম তোয়েবা মজুমদার রেড ক্রিসেন্ট ব্লাড সেন্টার, দিনাজপুর
০৫৩১-৬৪০২১
ব্লাড ব্যাংক, খুলনা
৭৬২০০৬
আরও পড়ুন:ল্যাবএইড ক্যানসার হাসপাতাল এন্ড সুপার স্পেশালিটি সেন্টার
For Donation of Blood:
Dhaka Red Crescent Blood Bank 7/5, Aurongzeb Road, Mohammadpur, Dhaka. Contact No: 02 48121182, 01811 458537 Holy Family Red Crescent Blood Center 1st Floor, Out Door 1 Eskaton Garden Road, Dhaka Contact No: 01811 458536
Chattogram Fatema Begum Red Crescent Blood Center 395 Anderkilla, Chattogram Contact No: 031 620926, 01815 850533, 01819 353445
Jashore Ahad Red Crescent Blood Center Munshi Mehabullah Road, Jashore Contact No: 0421 68882, 01718 802794, 01939 109722
Dinajpur Begum Tayeeba Mojumder Red Crescent Blood Center 1 New Town, Dinajpur Contact No: 0531 61300, 01723 595972, 01717 184539
Sylhet Mujib Jahan Red Crescent Blood Center Chowhatta, Sylhet Contact No: 01611 300900, 0821 724098 Natore Natore Red Crescent Blood Center Hospital Road,
Natore Contact No: 01850 124225, 0771 66961
Rajshahi Rajshahi Red Crescent Blood Center Rajshahi District Road, Rajshahi Contact No: 01865 055075, 01556 333821
Magura Achia Khatun Memorial Red Crescent Blood Center Jhenidah Road, Stadium Para, Magura Contact No: 01941 989197, 01941 989198, 01680 547365
আরও পড়ুন:Doctor List of all Popular Diagnostic Center
রক্ত সংগ্রহ করে দেওয়া যাদের কাজ
মানুষকে ভালোবেসে যতগুলো ভাল কাজ করা যায়, তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে স্বেচ্ছায় রক্তদান। দিন দিন স্বেচ্ছায় রক্তদাতার সংখ্যা বাড়ছে। এই সব রক্তদাতাদের নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি প্লাটফর্ম তৈরি করছেন জুবায়ের মাহমুদ (মামুন)।মুমূর্ষ রোগীদের রক্তের প্রয়োজনে তিন বছর আগে ‘স্বেচ্ছায় রক্তদান ব্লাড ফাউন্ডেশন’ নামে ফেসবুক গ্রুপ খুলেছিলেন মামুন।যার মাধ্যমে নীরব-নিভৃতে ৩ বছর যাবত আর্তমানবতার সেবায়, মুমূর্ষ রোগীর প্রাণ বাঁচাতে নিরলস কাজ করে চলেছে। এই গ্রুপের বর্তমান সদস্যের সংখ্যা প্রায় ৭৩ হাজার। তিন বছরে এই গ্রুপে ২০হাজার ডোনার তৈরি হয়েছে এখন থেকে।
শরীরের রক্ত দিয়ে তারা অন্যের জীবন বাঁচাতে জাগরিত প্রাণ। সম্পূর্ণ নিজেদের উদ্যোগে গড়ে তুলেছেন অভিনব এই ব্লাড ব্যাংক। অন্যের রক্ত যোগাড় করে দেওয়ায় যাদের কাজ। রক্ত কোন ব্যাগে ভরে রাখা হয় না, থাকে ডোনারের শরীরে। আর ডোনারের নাম, ঠিকানা, রক্তের গ্রুপ ও ফোন নম্বর লেখা থাকে রেজিষ্ট্রারে। প্রায়োজনেই স্থানীয় হাসপাতাল, ক্লিনিক বা দেশের যে কোন স্থানে গিয়ে বিনামূল্যে রক্ত দান করেন ডোনাররা।
আর্তমানবতার সেবায় ২০১৬ সালের শেষের দিকে গ্রুপটি খোলা হয়। গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা জুবায়ের মাহমুদ (মামুন) এর সঙ্গে কথা হয় একুশে টিভি অনলাইন প্রতিবেদকের।তিনি বলেন, তার বাবা তিন বছর আগে রাজধানীর একটি হাসপাতালে হার্ট জড়িত সমস্যার নিয়ে ভর্তি হয়। তার বাবার জন্য রক্তের প্রয়োজন ছিল। তখন রক্তের যোগাড় করতে অনেক কষ্ট ও বেগ পোহাতে হয়। এমন পরিস্থিতির মধ্যে আর কোন মানুষের পড়তে না হয়। এই চিন্তা মাথায় রেখেই এই গ্রুপ খোলা হয়।
গ্রুপে পোস্ট দেওয়ার পর রক্ত না পাওয়া গেলে, তারা ডোনার লিস্ট থেকে ডোনারদের ফোন দিয়ে রক্তদানের জন্য সাহায্য প্রার্থনা করেন। এইসব রক্তদানে রক্তদাতা ও রক্তগ্রহিতা উভয়েই আমাদের অপরিচিত। রোগীর রক্ত যোগাড়ের ক্ষেত্রে আমাদের কোন প্রকার আর্থিক লেনদেন নেই।
আমাদের এখানে কেউ ছাত্র, কেউ ব্যবসায়ী, কেউ চাকুরীজীবী, কেউবা বেকার, সবাই নিজের সময়, অর্থ ও শ্রম দিয়ে শুধু মাত্র আত্মতৃপ্তি আর মনবতার জন্য এই কাজ গুলো করে থাকি। তবে বন্যার্তদের সাহায্য, শীতবস্ত্র ও ঈদে এতিম বাচ্চাদের জন্য আমরা সকলে মিলে সাহায্য দিয়ে ও পরিচিত মহলের সাহায্য নিয়ে মানুষের পাশে দাঁড়াতে চেষ্টা করি। জুবায়ের মাহমুদ (মামুন) আরো বলেন, প্রতিদিনই এই প্রুপ থেকে ৩ ০০ থেকে ৪০০ ব্লাড রিকুয়েস্ট আসে। গ্রুপ থেকে প্রায় ৭০ থেকে ৮০ জন ডনার জোগাড় করে দেওয়া হয়।
গ্রুপে মূল্য উদ্দেশ্য জানতে চাইলে তিনি জানান, মুলত রক্তের প্রয়োজনে সাধারণ মানুষের সাথে স্বেচ্ছায় রক্তদানকারীদের একটি সরাসরি সেতুবন্ধন করে দেয়াই এর কাজ! রক্তের জরুরি প্রয়োজনে কাউকে যেন দিশেহারা হয়ে এদিক সেদিক ছোঁটাছোটি করতে না হয়, অসহায় গরীব মানুষগুলোকে যেন উচ্চমূল্য দিয়ে রক্ত কিনতে না হয়, সেই ব্যবস্থাই করে দেয়।
আমরা অনেক সময়ই যে গ্রুপের রক্ত হন্যে হয়ে খুঁজে বেড়াই, সেই গ্রুপের কোন রক্তদাতা হয়ত আমাদের আশেপাশেই থাকে, কিন্তু না জানার অভাবে তার সাথে যোগাযোগ করতে পারিনা। সেই যোগাযোগটিই করে দেয় ‘স্বেচ্ছায় রক্তদান ব্লাড ফাউন্ডেশন’!
আমাদের পরবর্তী লক্ষ্য ব্লাড ডোনার আর্কাইভ টিকে ওয়েবসাইটে সীমাবদ্ধ না করে মোবাইল এসএমএস বেইসড করে ফেলা এবং জিপিএস এর ব্যাবহার (ডোনারদের বর্তমান অবস্থান নির্ণয় করা) সহ স্মার্টফোনের এপ্লিকেশনের সাথে একে ইন্টিগ্রেট করা। এতে করে যে কেউ জরুরি প্রয়োজনে, কোন প্রকার ইন্টারনেট সংযোগ ছাড়াই একটি সাধারণ মোবাইল ফোনের মাধ্যমেও তার চারপাশের ডোনারদের তথ্য পেয়ে পাবে।
আরও পড়ুন:বক্ষব্যাধি বিশেষজ্ঞ ডাক্তার Chest Diseases Specialist, Dhaka
অ্যাপে ফেসবুকে জরুরি রক্ত
যেকোনো সময় যে কারও প্রয়োজন হতে পারে এক ব্যাগ রক্তের। আর সে সময় তার বন্ধুবান্ধব, আত্মীয়স্বজন প্রয়োজনীয় গ্রুপের রক্তদাতা খুঁজতে গিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েন। এ সমস্যার ভালো একটা সমাধান ভার্চ্যুয়াল মাধ্যম। রক্তদাতা খোঁজার বেশ কিছু অ্যাপ এবং ফেসবুক গ্রুপ আছে। আবার বাংলাদেশে রক্তদাতা খোঁজার জন্য ফেসবুকের নিজস্ব সেবাও চালু হয়েছে। সেসব অ্যাপ এবং ফেসবুক গ্রুপের কথা থাকছে এখানে।
লাইফ প্লাস
অ্যাপটিতে মূলত রক্তদাতা ও রক্তগ্রহীতা—সবাই নিবন্ধন করতে পারেন। যাঁরা রক্ত দিতে আগ্রহী, তাঁদের রক্তদাতা হিসেবে নিবন্ধন করতে হবে। আর রক্তদাতার সন্ধানে রক্তসন্ধানীরা অ্যাপের সার্চ ট্যাবে গিয়ে রক্তের যে গ্রুপ দরকার, তা নির্বাচিত করতে পারবেন। জাতীয় পরিচয়পত্র ও রোগীর ব্যবস্থাপত্র যুক্ত করার ব্যবস্থা আছে। তারপর সাবমিট বোতামে চাপ দিলে একটি তালিকা দেখাবে, সেখানে কারা কারা ওই গ্রুপের রক্তদাতা আছেন তাঁদের নাম দেখাবে। রক্তগ্রহীতা থেকে রক্ত দিতে ইচ্ছুক কে, কত দূরে আছেন তা-ও জানা যায় এই অ্যাপে। গুগল প্লে স্টোর থেকে বিনা মূল্যে নামানো যায় অ্যাপটি। নামানোর ঠিকানা: http://bit.ly/2vONixh
এসো ব্লাড ফাইন্ডার
এই অ্যাপে শুধু একটি ফোন নম্বরের মাধ্যমে যাচাইসহ নিবন্ধন করা যায়। যাচাই করতে হবে যে নম্বর দিয়ে আপনি নিবন্ধন করছেন, সেই নম্বরে আসা কোডের মাধ্যমে। এতে কোন কোন দাতা এই মুহূর্তে রক্তদানের জন্য যোগ্য তার তালিকা আছে। চাইলেই আপনি তাৎক্ষণিক রক্তের জন্য নির্দিষ্ট দাতার কাছে আহ্বান জানাতে পারবেন। সার্চ ব্যবস্থার মাধ্যমে অনায়াসে আপনি আপনার চাহিদা অনুযায়ী নির্দিষ্ট জায়গার নির্দিষ্ট রক্তের গ্রুপের দাতাদের খুঁজে বের করতে পারবেন। আপনি যে জায়গায় অবস্থান করছেন, সেই জায়গার কাছাকাছি দাতাদের খুঁজে বের করতে পারবেন ম্যাপের মাধ্যমে। নামানোর ঠিকানা: http://bit.ly/2JsLyLZ
ব্লাড হিরো
জরুরি প্রয়োজনে রক্তদাতার তথ্য জানতে ‘ব্লাড হিরো’ খুবই কার্যকরী। অ্যাপটিতে রয়েছে নির্দিষ্ট গ্রুপের রক্ত সংগ্রহে রক্তদাতাদের গ্রুপ ও এলাকাভিত্তিক তথ্য। এতে জিপিএস যুক্ত থাকায় নির্দিষ্ট এলাকার প্রয়োজনীয় গ্রুপের রক্তদাতাদের খুব সহজেই খুঁজে পাওয়া যায়। রক্তদাতাদের সঙ্গে সরাসরি কথা বলা অথবা এসএমএসের মাধ্যমে যোগাযোগ করা যায়। নিরাপত্তার কারণে চাইলে রক্তদাতা নিজের মুঠোফোন নম্বরটি গোপন রাখতে পারেন। নামানোর ঠিকানা: http://bit.ly/2HsOzPS
রিভাইভ
এই অ্যাপে নিজের এবং অন্য যে কারও জন্য রক্তের অনুরোধ করা যায়। কোনো দাতা যদি রক্ত দিতে আগ্রহী হয় তাহলে দাতার মুঠোফোন নম্বর এতে স্বয়ংক্রিয়ভাবেই দেখায়। আশপাশের দাতাদের মুঠোফোন নম্বরে এসএমএস করা যায় যাতে কোনো দাতা যদি ইন্টারনেটে যুক্ত নাও থাকে, তাহলেও যেন সে তা জানতে পারে। অ্যাপটির ডোনার ইউজার ফিচারের মাধ্যমে আশপাশের হাসপাতালে রক্তের প্রয়োজন হলে তার নোটিফিকেশন পাওয়া যায়। কত দূর যেতে ইচ্ছুক তার ওপর নির্ভর করে এই নোটিফিকেশন আসবে। তবে একবার রক্ত দিলে পরবর্তী তিন মাসে আর কোনো নোটিফিকেশন আসবে না। নামানোর ঠিকানা: http://bit.ly/2r1kJqI
বর্তমানে রক্তদাতা এবং গ্রহীতার মধ্যে যোগাযোগ করিয়ে দিতে কাজ করে যাচ্ছে বেশ কিছু ফেসবুক গ্রুপ।
বিডি ব্লাড ব্যাংক
রক্তের প্রয়োজনে এই গ্রুপে পোস্ট করতে হলে আপনাকে যে তথ্যগুলো দিতে হবে তা হলো রোগীর সমস্যা, রক্তের গ্রুপ ও কত ব্যাগ রক্ত লাগবে, হাসপাতালের নাম ও ঠিকানা, কোন সময়ের মধ্যে রক্ত লাগবে এবং যোগাযোগের জন্য মুঠোফোন নম্বর। ঠিকানা: https://www.facebook.com/groups/BDBloodTeam
ব্লাড ডোনেশন বাংলাদেশ
বর্তমান সময়ে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় ই-ব্লাড ব্যাংক বলা যেতে পারে এই গ্রুপটিকে। রক্তের প্রয়োজনে গ্রুপটিতে অনুরোধ করতে হলে আপনাকে রোগীর সমস্যা, রক্তের গ্রুপ ও কত ব্যাগ লাগবে, হাসপাতালের নাম ও ঠিকানা, ব্লক বা ওয়ার্ড, কেবিন বা বেড নম্বর, (হাসপাতালে ভর্তি না হলে উল্লেখ করতে হবে ‘বহির্বিভাগ’) কবে ও কত সময়ের মধ্যে লাগবে, মুঠোফোন নম্বর এবং নাম জানাতে হবে। গ্রুপে যোগ দেওয়ার পর আপনার রক্তের গ্রুপ, নাম, ঠিকানা, মুঠোফোন, ই-মেইল ঠিকানা দিয়ে গ্রুপে রক্তের জন্য পোস্ট করা যায়। ঠিকানা: https://www.facebook.com/groups/ roktodhin
ফেসবুক
এ ছাড়া ফেসবুকের নিজস্ব একটি সুবিধার মাধ্যমে নিকটবর্তী রক্তদাতা এবং রক্তগ্রহীতারা যোগাযোগ করতে পারবেন।
https://www.facebook.com/donateblood ঠিকানার ওয়েবসাইটে গিয়ে যে কেউ রক্তদাতা হিসেবে নিবন্ধন করে রাখতে পারেন। আপনি ফেসবুকের একজন নিবন্ধিত রক্তদাতা হলে আপনার আশপাশের কারও রক্তের প্রয়োজন হলো ফেসবুক তখন আপনাকে নোটিফিকেশন পাঠাবে। একইভাবে নোটিফিকেশনে সাড়া দিয়ে জানানো যাবে যে আপনি রক্তদানে ইচ্ছুক।
রক্ত দান কর্মসূচি-মানবতার সেবায় আমরা পাশে থাকব
https://www.facebook.com/doner.bloodbank/groups/?ref=page_internal
রক্তদান: বদলাচ্ছে মানসিকতা
বাংলাদেশে এখন বছরে ৬ লাখ ব্যাগ রক্তের প্রয়োজন৷ এর ৯০ ভাগই পাওয়া যায় স্বেচ্ছায় রক্তদাতাদের কাছ থেকে৷ তাই পেশাদার রক্তদাতাদের দৌরাত্ম অনেকটাই কমে গেছে৷ আশা করা হচ্ছে, ৫ বছর পর পেশাদার রক্তদাতা আর থাকবে না৷
ঢাকার বিভিন্ন প্রাইভেট ব্লাড ব্যাংকে ৫ বছর আগেও বড় বড় অভিযানের খবর পাওয় যেতো৷ উদ্ধার করা হতো মানব শরীরে ব্যবহারের অনুপযোগী রক্ত৷ হাসপাতালগুলোতে গেলেই দেখা মিলত পেশাদার রক্তদাতাদের,যাঁদের প্রায় সবাই ছিলেন রক্ত দেয়ার অনুপযোগী৷ তাঁদের বড় একটি অংশই ছিলেন মাদকাসক্ত৷ তখন পেশাদার রক্তদাতাদের মাধ্যমে অনেক জটিল এবং কঠিন রোগ ছড়াতো৷
এখানো যে পেশাদার রক্তদাতা নেই, তা নয়৷ মাঝে মাঝে কথিত ব্লাড ব্যাংকে অভিযানও হয়৷ তবে দৌরাত্ম কমেছে৷ মানুষ সচেতন হয়েছে৷ চাইলে রক্ত পাওয়া যায় ভিন্ন সংগঠন থেকে৷ অনলাইনে স্বেচ্ছায় রক্তদাতাদের গ্রুপ আছে৷ আর সেখানে রক্তের চাহিদার সাথে ডোনারদের সম্মীলন ঘটিয়ে দেয়া হয়৷ ব্লাড ব্যাংকে সংরক্ষিত রক্ত লাগে না৷ সরাসরি ডোনারের কাছ থেকে রক্ত নিয়ে রোগীদের দেয়া হয়৷ বিভিন্ন সংগঠনের সাথে নিবন্ধিত এরকম সেচ্ছায় রক্তদাতা বিশ লাখের কম হবে না৷ নিন্ধনের বাইরেও প্রচুর মানুষ এখন নিয়মিত সেচ্ছায় রক্ত দেন৷
বাংলাদেশে এই রক্তদানের বিষয়ে সবচেয়ে বেশি এগিয়ে আছেন শিক্ষার্থীরা৷ তাঁদের রক্তদানের সংগঠনগুলোই এগিয়ে৷
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম পরিস্থিতি বদলে দিচ্ছে৷
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এই রক্তদানের ক্ষেত্রে এখন অনেক বড় ভূমিকা পালন করছে৷ স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলোর কাছ থেকে রক্ত পেতে হলে হাসপাতালের স্লিপ লাগে৷ কিন্তু সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে স্ট্যাটাস দিয়ে রক্ত পেতে তা লাগে না৷ বিরল কোনো গ্রুপের রক্ত হলেও ফেরায় না সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম৷ সেই অভিজ্ঞতার কথাই ডয়চে ভেলেকে বলেন নুরুজ্জামান লাবু নামে একজন৷ তিনি বলেন, ‘‘ ৪ মাস আগে আমার ১৩ বছর বয়সি ভাগ্নি রিফাত জাহানের হাঁটুতে অপারেশন হয় ঢাকার একটি প্রাইভেট হাসপাতালে৷ তার রক্তের গ্রুপ ছিল এবি পজিটিভ৷ আমি ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দেয়ার পরে অন্তত ১০ জন যোগাযোগ করেন৷ তাঁদের মধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন ছাত্র কাছাকাছি থাকায় তাঁর কাছ থেকে আমরা রক্ত নিই৷ এরপরও আরো অনেকে যোগাযোগ করেন৷ তখন আমি আপডেট ফেসবুকে জানিয়ে দেই৷” আরো কয়েকজনের সাথে কথা বলে জানা গেছে ফেসবুকের মাধ্যমে রক্ত চাইলে নিরাশ হতে হয় না৷”
যাঁরা রক্তের জন্য কাজ করেন:
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সংগঠন ‘বাঁধন’ গড়ে ওঠে ১৯৯৭ সালে৷ এখন ঢাকাসহ সারা দেশে ৫২টি জেলায় ১২৭টি ইউনিটের মাধ্যমে তাদের স্বেচ্ছায় রক্তদানের কাজ চলে৷ তাদের এই রক্তদান কার্যক্রম শুধু ঢাকায় নয়, সারা দেশের কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়েও ছড়িয়ে পড়েছে৷ তাদের সেন্টারগুলো করা হয়েছে হাসপাতালের কাছাকাছি৷ আর শিক্ষার্থীরা সেচ্ছাশ্রমে এইসব সেন্টারে পালা করে ২৪ ঘন্টা কাজ করেন৷
তাঁরা ব্লাড ব্যাংকে রক্ত সংগ্রহ করে রাখেন না৷ তাঁদের ডোনারদের অনলইন এবং অফলাইন তালিকা আছে৷ হাসাপতালের বৈধ স্লিপ নিয়ে এলে ওই তালিকা থেকে স্বেচ্ছা ডোনারদের সঙ্গে যোগাযোগ করিয়ে দেয়া হয়৷ তবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিক্যালে তাঁদের একটি ট্রান্সমিশন সেন্টার আছে৷ সেখানে সন্ধ্য ৬টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত ব্লাড নেয়া হয়৷
বাঁধনের সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের শেষ বর্ষের ছাত্র আহসান উল্লাহ পাঠান৷ তিনি ডয়চে ভেলেকে দাবি করেন, ‘‘গতবছর আমরা প্রায় ৬৮ হাজার ব্যাগ রক্ত দিয়েছি৷” তিনি বলেন, ‘‘রক্তদানের প্রতি ইতিবাচক মনোভাব গড়ে উঠছে৷ আমাদের কাছে কেউ এলে, তাঁর গ্রুপ একই হলে আমরা তাঁকেই প্রথম রক্তদানে উদ্বুদ্ধ করি৷ অনেক সময়ই তা সফল হয়৷ অথবা তাঁকেও আমরা ডোনারে পরিণত করি৷ আমরা রক্তের ফ্রি গ্রুপিং করে দিই৷ আর সচেতনতামূলক নানা কার্যক্রম চালাই৷” তাঁর মতে, ‘‘স্বেচ্ছায় রক্তদাতার সংখ্যা অনেক বেড়েছে৷ প্রফেশনাল রক্তদাতা এখন আর সেরকম নেই৷”
চিকিৎসকরা জানান, ১৮ বছর থেকে ৫৫ বছর বয়সি যে-কোনো সুস্থ মানুষ প্রতি চার মাস পরপর রক্ত দিতে পারেন৷ তবে তাঁকে হতে হবে নিরোগ৷ কিছু বিশেষ রোগ না থাকলেই হবে৷ আর স্বেচ্ছায় রক্তদাতারাই আসলে ভালো রক্তের উৎস৷ বাংলাদেশে এই কাজ প্রাতিষ্ঠানিকভাবে প্রথম ১৯৭৭ সালে শুরু করে মেডিকেল ও ডেন্টাল ছাত্রদের সংগঠন সন্ধানী৷ এখন এটি অনেক বড় প্রতিষ্ঠান৷ ঢাকায় একটি ৬ তলা ভবনে তারা কাজ করে৷ আর পুরো কাজই হয় স্বেচ্ছাশ্রমে৷ সন্ধানী বছরে গড়ে ৫০ হাজার ব্যাগ রক্ত সরবরাহ করে৷ তারা নানা কর্মসূচির মাধ্যমে এই রক্ত সংগ্রহ করে ব্লাড ব্যাংকে রাখে৷ আবার কেউ যদি তাদের রোগীর জন্য সেচ্ছায় রক্তদাতা নিয়ে আসে, সেই রক্ত সংগ্রহ করে রোগীকে পৌঁছে দেয় সন্ধানী৷
সন্ধানীর কেন্দ্রীয় উপদেষ্টা ও সাবেক সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ডা. মনি লাল আইচ লিটু ডয়চে ভেলকে বলেন, ‘‘রক্তদান নিয়ে মানুষের ভীতি এখন কমে গেছে৷ ৯০ ভাগই আসে স্বেচ্ছায় রক্তদানের মাধ্যমে৷ সংগঠনের বাইরেও এখন প্রচুর মানুষ স্বেচ্ছায় রক্ত দেন৷ আমার মনে হয় পেশাদার রক্তদাতাদের রক্ত নেয়া পুরেপুরি বন্ধ করে দেয়া উচিত৷ সরকার সংগঠনগুলোকে একটি সমন্বিত উদ্যোগের মধ্যে নিলে ওই ১০ ভাগও পুরণ করা যাবে৷ বিশেষ করে সরকারের প্রতিষ্ঠান রেডক্রিসেন্টকে এই কাজে আরো উদ্যোগী করতে হবে৷”
বাংলাদেশে এখন লায়ন ও রোটারি ক্লাব এই স্বেচ্ছায় রক্তদান কর্মসূচি পরিচালনা করে৷ রেডক্রিসেন্ট অনেক বড় কাজ করছে৷ কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশন পরে শুরু করলেও তাদের সাফল্যও উল্লেখ করার মতো৷ তারাই এখন সবচেয়ে বেশি রক্ত সংগ্রহ করে৷ বছরে এক লাখ ব্যাগ৷ আর সরকার ‘নিরাপদ রক্ত সঞ্চালন কর্মসূচি’ নামে একটি প্রকল্পের মাধ্যমে সন্ধানীসহ এইসব সংগঠনকে সহায়তা করে৷
২০ বছরে ৭২ বার রক্তদান
১৮ বছর বয়স থেকে রক্ত দেন নজরুল ইসলাম৷ কাজ করেন ঢাকার একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে৷ তাঁর বয়স এখন ৩৮ বছর৷ ২০ বছরে তিনি রক্ত দিয়েছেন ৭২ বার৷ প্রতি চার মাস পর রক্ত দেয়ার নিয়ম থাকলেও আধুনিক পদ্ধতিতে এখন শুধু প্লাটিলেট দেয়া যায়৷ আর এটা দেয়া যায় ১৫ দিন পরপর৷ রফিকুল সরাসরি রক্ত দেয়া ছাড়াও নিয়মিত প্লাটিলেটও দেন৷ রফিকুল ডয়চে ভেলেকে জানান, ‘‘আমরা এখন একটি কল সেন্টার স্থাপন করেছি, যার নাম ডোনেট ব্লাড বিডি৷ এটা একটা ফেসবুক গ্রুপ৷ আমাদের ২-৩ হাজার সদস্য আছেন, যাঁরা নিয়মিত রক্ত দেন৷ আমরা ফেসবুকের মাধ্যমেই চাহিদা জানি এবং স্বেচ্ছা ডোনার সংগ্রহ করে দিই৷” তিনি বলেন, ‘‘আমরা মূলত রক্ত দেয়ার জন্য সচেতনতা তৈরি করি৷ আর পরিবারের মধ্য থেকেই রক্ত দেয়ার ওপর জোর দেই৷ আমরা এই সচেতনতা কর্মসূচির অংশ হিসেবে টেকনাফ থেকে তেঁতুলিয়া বাইসাইকেলে ভ্রমণ করেছি৷” তিনি মনে করেন, ‘‘আরেকটু সচেতনতা বাড়লে বাংলাদেশে পেশাদার রক্তদাতার দরকার নেই৷”
এগিয়ে আসতে হবে সবাইকে
করোনাকালে মুমূর্ষু রোগীকে রক্ত দিতে জামালপুরের তরুণ ইসমাইল হোসেন ফেসবুকভিত্তিক একটি রক্তদান গ্রুপ গড়ে তুলেছেন। নাম ‘স্বেচ্ছায় রক্তদানে জামালপুর’। এর মাধ্যমে করোনাকালে প্রায় এক হাজার রোগীকে রক্ত দেওয়া হয়েছে। দুর্যোগকালে এমন সহযোগিতা পেয়ে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন রোগীর স্বজনেরা।
ইসমাইল হোসেন বলেন, প্রতিনিয়ত মানুষের প্রয়োজনে রক্ত দেওয়া ও সংগ্রহে আলাদা একটি ভালো লাগা কাজ করে। মুমূর্ষু রোগীর জন্য এক ব্যাগ রক্ত যেকোনো পরিবারের হাতে তুলে দেওয়ার মতো শান্তি ব্যক্ত করার নয়। রক্তের ব্যাগটা তুলে দেওয়ার পর পরিবারগুলোর মুখে কৃতজ্ঞতা আর পরিতৃপ্তির যে ছাপ দেখা যায়, তা অকৃত্রিম।
বাংলাদেশে এখনো কিছু কথিত ব্লাড ব্যাংক পেশাদার রক্তদাতাদের দিয়ে তাদের রক্তব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে বলে ডয়চে ভেলেকে জানান একটি বেসরকারি হাসপাতালের কর্মকর্তা মৃদুল দাস৷ আর এই পেশাদার রক্তদাতাদের বড় একটি অংশ মাদকাসক্ত এবং নানা জটিল রোগে আক্রান্ত৷ পেশাদার রক্তদাতারা এখন আগের মতো না থাকলেও ব্যবসার প্রয়োজনেই ওই ব্লাড ব্যাংকগুলো তাদের টিকিয়ে রাখছে৷ আর তাদের সঙ্গে সম্পর্ক আছে কিছু হাসপাতালের কর্মচারীর৷ এইসব ব্লাড ব্যাংকের রক্ত সংরক্ষণ পদ্ধতিও উন্নত নয় বলে জানান তিনি৷ তারা প্রতিব্যাগ রক্ত ১২শ’ থেকে ১৫শ’ টাকায় বিক্রি করে৷
তিনি বলেন, ‘‘এখন যেসব সংগঠন ব্লাড ডোনেশনের কাজ করে, তারা বিনিময় পদ্ধতি চালু করেছে৷ এক ব্যাগ নিলে অন্য যে-কোনো গ্রুপের আরেক ব্যাগ রক্ত দেয়া৷ এটা বাধ্যতামূলক নয়৷ উৎসাহিত করা হয়৷ এতে পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে৷” আর সন্ধানীর নীতি হচ্ছে কেউ যদি এক ব্যাগ রক্ত দেন, তাঁর মানে হলো তিনি একব্যাগ রক্ত জমা রাখলেন৷
জানা গেছে, যেসব রোগীর নিয়মিত বা প্রায় প্রতিদিন রক্তের প্রয়োজন হয়, তাঁদের রক্ত সংকট এখনো আছে৷ যেমন, থ্যালেসেমিয়া রোগী৷ আবার সড়ক দুর্ঘটনাসহ নানা দুর্ঘটনার শিকার যাঁরা হন, তাঁদের তাৎক্ষণিকভাবে রক্তের প্রয়োজন হয়৷ এর সুযোগ নেয় ওইসব ব্লাড ব্যাংক ও পেশাদার রক্তদাতারা৷ কিন্তু তাদের রক্ত জীবন বাঁচানোর পরিবর্তে জীবন বিপন্নের কারণ হতে পারে বলে ডা. মনি লাল আইচ লিটু জানান৷ রফিকুল ইসলাম মনে করেন, ‘‘পরিবারের সদস্যদের জন্য অন্য সদস্যদের রক্ত দেয়ার আগ্রহ যত বাড়বে ততই রক্তের সংকট কেটে যাবে৷ আর বিশেষ ধরনের রোগীদের জন্য সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে৷”
রক্তদান সহজ করতে বাংলাদেশে ফেসবুকের নতুন সেবা
বর্তমানে দেশে রক্তদানের ক্ষেত্রে এবং প্রয়োজনীয় গ্রুপের রক্ত সংগ্রহের ক্ষেত্রে ব্যাপক পরিসরে ব্যবহার করা হচ্ছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক। তবে এ প্রক্রিয়া আরও সহজ করতে আনুষ্ঠানিকভাবে নতুন একটি সেবা চালুর ঘোষণা দিয়েছে এ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমটি। আগামীকাল থেকে দেশে এ সেবাটি পাওয়া যাবে।
আজ রাজধানীর একটি হোটেলে আনুষ্ঠানিকভাবে এ সেবাটি চালুর ঘোষণা দেন ফেসবুক সাউথ এশিয়ার হেলথ প্রোডাক্ট ম্যানেজার হেমা বুদারাজু।
তিনি জানান, এ সেবাটি চালুর ক্ষেত্রে বাংলাদেশ দ্বিতীয়। এর আগে ভারতে প্রথম দেশ হিসেবে সেবাটি চালু করা হয়েছে। এর মাধ্যমে প্রয়োজনীয় মুহূর্তে রক্ত সংগ্রহ করা আরও সহজ হয়ে যাবে বলে মনে করেন তিনি।
এর মাধ্যমে রক্তদানের বিষয়ে মানুষের মাঝে সচেতনতা তৈরি করা সম্ভব হবে বলেও আশা প্রকাশ করেন ফেসবুকের এ কর্মকর্তা।
যেভাবে কাজ করবে ফেসবুকের এ সেবাটি
গত বছরের সেপ্টেম্বরে আনুষ্ঠানিকভাবে সেবাটি চালু করে ফেসবুক। এ বিষয়ে এক ব্লগ পোস্টে সেবাটির বিষয়ে বিস্তারিত তুলে ধরা হয় তখন। সেখানে জানানো হয়, রক্ত দাতারা এ ফিচারটি ব্যবহার করে ‘ব্লাড ডোনার’ হিসেবে নিবন্ধিত হতে পারবেন।
আগামীকাল এ সেবাটি চালু হওয়ার পর রক্তদাতা ফেসবুকের এই পেজ থেকে নিবন্ধন করতে পারবেন। রক্তের গ্রুপ এবং এর আগে কখনও রক্ত দান করেছেন কিনা, এসব তথ্য দিয়েই নিবন্ধিত হওয়া যাবে।
পরবর্তীতে কারো রক্তের প্রয়োজন হলে বিশেষায়িত পোস্ট করতে পারবেন তারা। এ পোস্টে রক্তগ্রহীতার রক্তের গ্রুপ, যোগাযোগের ঠিকানাসহ বিস্তারিত তথ্য উল্লেখ করা থাকবে। রক্ত চেয়ে পোস্ট দেওয়ার পর ফেসবুক একই গ্রুপের এবং স্বল্প দূরত্বের মধ্যে আছেন, এমন রক্তদাতাদের নোটিফিকেশনের মাধ্যমে জানিয়ে দেবে। পরবর্তীতে রক্তদাতা রক্ত দিতে চাইলে ওই পোস্টদাতার সাথে মেসেঞ্জার, হোয়াটসঅ্যাপ কিংবা সরাসরি ফোন করে যোগাযোগ করতে পারবেন।
রক্তদাতার রক্তের গ্রুপ ছাড়া অন্য কোনো ব্যক্তিগত তথ্য রক্তগ্রহীতা কিংবা অন্যদের সাথে শেয়ার করা হবে না বলেও জানিয়েছে ফেসবুক।
জীবন বাঁচাতে যারা রক্তের যোগান দেন
মানুষকে ভালোবেসে যতগুলো ভাল কাজ করা যায়, তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে স্বেচ্ছায় রক্তদান। দিন দিন স্বেচ্ছায় রক্তদাতার সংখ্যা বাড়ছে। এই সব রক্তদাতাদের নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি প্লাটফর্ম তৈরি করছেন মেহেরপুরের জুয়েল রানা, জান্নাতুল ফেরদৌস ঐশি, বিজনসহ কয়েকজন।
মেহেরপুরের তরুণ-তরুণীদের নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে গড়ে তোলা হয়েছে Blood donation group in meherpur নামের একটি গ্রুপ। প্রায় ১ হাজার সদস্য নিয়ে রক্তদান করে আসছে এই গ্রুপটি। ইতিমধ্যে বেশ সাড়া জাগিয়েছে এদের কর্মকাণ্ড।
গ্রুপটি পরিচালনা করার জন্য অন্যদের মধ্যে আছে, জাহিদ ইসলাম দোলন, রাকিব ইসলাম, মিলন, লালন, রাজন, তানিম মোহাম্মদ তুহিন, হাসিবুল, বাপ্পি ও মোডারেটর হিসেবে আছে, অনিক ইসলাম, আসিফ ইসলাম, বাপ্পি, স্বাধীন।
নীরব-নিভৃতে আর্তমানবতার সেবায় মুমূর্ষ রোগীর প্রাণ বাঁচাতে নিরলস কাজ করে চলেছে গ্রুপটি শরীরের রক্ত দিয়ে তারা অন্যের জীবন বাঁচাতে জাগরিত প্রাণ। সম্পূর্ণ নিজেদের উদ্যোগে গড়ে তুলেছেন অভিনব এই ব্লাড ব্যাংক। অন্যের রক্ত যোগাড় করে দেওয়ায় যাদের কাজ। রক্ত কোন ব্যাগে ভরে রাখা হয় না, থাকে ডোনারের শরীরে। আর ডোনারের নাম, ঠিকানা, রক্তের গ্রুপ ও ফোন নম্বর লেখা থাকে রেজিষ্ট্রারে। প্রায়োজনেই স্থানীয় হাসপাতাল, ক্লিনিক গিয়ে বিনামূল্যে রক্ত দান করেন ডোনাররা।
গ্রুপের এ্যাডমিন জুয়েল রানা বলেন, আমাদের চারি পাশে বিভিন্ন সময় দুর্ঘটনা ঘটে থাকে। হটাৎ করে যদি কারও রক্তের প্রয়োজন হয় তাহলে সে সময় যদি রক্ত না পাওয়া যায় তাহলে সে মৃত্যুবরণ করতে পারে।বা কোন গর্ভবতী মায়ের ক্ষেত্রে রক্ত বেশি প্রয়োজন হয়। এসময় রক্ত পাওয়া খুব কঠিন হয়ে পড়ে। এসব কথা মাথা রেখে আমরা কয়েকজন বন্ধু মিলে রক্তদাতাদের নিয়ে একটি ফেসবুক গ্রুপ খোলার সিদ্ধান্ত নিই। যেখানে রক্তদাতাদের আমরা একটি প্লাটফর্মে নিয়ে আসবো। যাতে করে যেকোন সময় কোন রোগীর জন্য আমরা রক্ত জোগাড় করে দিতে পারি।
গ্রুপে পোস্ট দেওয়ার পর রক্ত না পাওয়া গেলে, তারা ডোনার লিস্ট থেকে ডোনারদের ফোন দিয়ে রক্তদানের জন্য সাহায্য প্রার্থনা করেন। এইসব রক্তদানে রক্তদাতা ও রক্তগ্রহিতা উভয়েই আমাদের অপরিচিত। রোগীর রক্ত যোগাড়ের ক্ষেত্রে আমাদের কোন প্রকার আর্থিক লেনদেন নেই।
আমাদের এখানে কেউ ছাত্র, কেউ চাকুরীজীবী, কেউবা বেকার, সবাই নিজের সময়, অর্থ ও শ্রম দিয়ে শুধু মাত্র আত্মতৃপ্তি আর মানবতার জন্য এই কাজ গুলো করে থাকি।
গ্রুপে মূল্য উদ্দেশ্য জানতে চাইলে তিনি জানান, মুলত রক্তের প্রয়োজনে সাধারণ মানুষের সাথে স্বেচ্ছায় রক্তদানকারীদের একটি সরাসরি সেতুবন্ধন করে দেয়াই এর কাজ! রক্তের জরুরি প্রয়োজনে কাউকে যেন দিশেহারা হয়ে এদিক সেদিক ছোঁটাছোটি করতে না হয়। অসহায় গরীব মানুষগুলোকে যেন উচ্চমূল্য দিয়ে রক্ত কিনতে না হয়, সেই ব্যবস্থাই করে দেওয়া।
For Donation of Blood ‘স্বেচ্ছায় রক্তদানে জামালপুর’
স্বেচ্ছায় রক্তদানে জামালপুর নামের গ্রুপটি থেকে মুমূর্ষু রোগীদের জন্য রক্তদানের আহ্বান করা হয়। ইসমাইল হোসেনের রক্ত সংগ্রহ কার্যক্রমের সঙ্গে যুক্ত হয়ে যান দুরন্ত ইসলাম, মো. সজিব, মেহেদী হাসান, রবিউল ইসলাম, মুস্তাফিজুর রহমান, তুহিন আহমেদ, জামিল হোসেন, পারুল আক্তার, শামীম হোসাইনসহ অনেকেই। তাঁরা সবাই তরুণ শিক্ষার্থী। তাঁরা সবাই রক্ত দেন এবং সংগঠনের জন্য স্বেচ্ছায় কাজ করেন।
ইসমাইল জামালপুর সদর উপজেলার ঘোড়াধাপ ইউনিয়নের কুতুববাড়ি গ্রামের আবু তাহেরের ছেলে। তিনি জামালপুরের সরকারি আশেক মাহমুদ কলেজের অর্থনীতি বিভাগের অনার্স তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী। লেখাপড়ার জন্য থাকেন জামালপুর শহরের পাঁচ রাস্তা এলাকার একটি মেসে। কৃষক পরিবারের সন্তান ইসমাইল বাড়ি থেকে লেখাপড়ার তেমন খরচ পান না। টিউশনি করে নিজের খরচ জোগান। একই সঙ্গে কিছু টাকা বাঁচিয়ে এ সংগঠনের পেছনে ব্যয় করেন।
একজন রোগীকে বাঁচাতে রক্ত লাগার খবর আসে ইসমাইল হোসেনের কাছে। কিন্তু তাঁর কয়েক দিন আগেই তিনি অন্য এক রোগীকে রক্ত দিয়েছেন। ফলে তিনি রক্ত দিতে পারছিলেন না। করোনার কারণে রক্ত দেন, এমন কয়েকজন বাড়িতে চলে গেছেন।
আর যে দু-একজন ছিলেন, তাঁরা হাসপাতালে যেতে চাইছিলেন না। এ ব্যর্থতা তাঁকে স্বেচ্ছায় রক্তদানের একটি প্ল্যাটফর্ম গড়ে তোলার প্রেরণা জোগায়। গত বছরের ১৩ মে তিনি ‘স্বেচ্ছায় রক্তদানে জামালপুর’ গড়ে তোলেন। এ গ্রুপের সদস্যসংখ্যা প্রায় চার হাজার। তাঁদের মধ্য থেকে নিয়মিত রক্ত দেন, এমন ১৫০ জনের একটি তালিকাও করা আছে। তাঁরা ডাক পেলে মানুষকে রক্ত দিতে ছুটে যান।
এ গ্রুপের সদস্যরা বিভিন্ন এলাকায় বিনা মূল্যে ব্লাড গ্রুপ নির্ণয় ক্যাম্পেইন কার্যক্রম চালান। নানা শ্রেণি-পেশার মানুষকে রক্তদানে উৎসাহী করেন। এ ছাড়া থ্যালাসেমিয়া রোগ সম্পর্কেও মানুষকে সচেতন করার প্রচার-প্রচারণা চালান। এ কাজে যে অর্থ ব্যয় হয়, সেটা নিজেরাই দেন। এ ছাড়া নিজের খরচে রক্ত দিতে যান। সব মিলিয়ে এই উদ্যোগ চালিয়ে নিতে গিয়ে আর্থিকভাবে হিমশিম খেতে হয়।
ডেইলি নিউজ টাইমস বিডি ডটকম (Dailynewstimesbd.com)এর ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব ও ফেসবুক পেইজটি ফলো করুন করুন।
Tag:
রক্তদান নিয়ে স্ট্যাটাস, রক্তদান সংগঠনের নাম, জরুরি ভিত্তিতে রক্তের প্রয়োজন, রক্ত দানের উপকারিতা, রক্ত দানের স্লোগান, রক্তের গ্রুপ রক্তদান নিয়ে কিছু কথা, রক্তদান নিয়ে বক্তব্য
blood bank list in dhaka, blood bank dhaka, blood bank dhaka contact, all blood bank contact number, blood bank number sandhani, blood bank Blood, Bank Dhaka Blood donation rules,
রক্ত দাতা ডোনার গ্রুপগুলো, ব্লাড ব্যাংক রক্ত, কোথায় পাওয়া যায়, কিভাবে সংগ্রহ করবেন, একজন মুমূর্ষু রোগীর জন্য, Bella blood dono,r collection blood, bank of Bangladesh