শেখ রাসেলের জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে রচনা প্রতিযোগিতা 2021 || ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণি রচনা | শেখ রাসেল আমাদের বন্ধু শব্দ সংখ্যা 800

শেখ রাসেলের জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে রচনা প্রতিযোগিতা 2021 ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণি ।

রচনা: শেখ রাসেল আমাদের বন্ধু

শব্দ সংখ্যা : 800

ভূমিকা: ইতিহাসের পাতা উল্টালে দেখা যাবে অনেক বড় বড় ব্যক্তির নাম কিন্তু সম্মানিত ব্যক্তির  নামের তালিকা জাতির জনক শেখ মুজিবুর রহমান সর্বাগ্রে। তিনি স্বাধীন বাংলার স্থাপত্য। তিনি মহিমাময় “রাজনীতির কবি” । বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান একটি নাম একটি আদর্শ। তাই বাঙালি জাতি তাকে ‘জাতির জনক” হিসেবে সর্বোচ্চ সম্মান দিয়েছে। তিনি বাংলাদেশ ও বাঙালির জাতির গর্ব ও অহংকারের প্রতীক তেমনি শেখ রাসেল ও আমাদের গর্ব ও অহংকার এর প্রতীক। শেখ রাসেল বঙ্গবন্ধু বংশের শুধু প্রদীপ নয় সে ছিল বাঙালি জাতির প্রদীপ এবং এই বাংলার একটি নক্ষত্র।

রাসেলের জন্ম: তখন হেমন্তকাল সময়টা 18 ই অক্টোবর 1964 সাল। নতুন ফসলের উৎসবে আগমন নতুন অতিথির। এ যেন বাঙালির আনন্দ, বাংলার আনন্দ। ধানমন্ডির সেই ঐতিহাসিক ও 32 নম্বর রোডের বাসায় শেখ হাসিনার রুমে রাত দেড়টার সময় শেখ রাসেলের জন্ম হয়। রাসেলের আগমনী পুরো বাড়ি জুড়ে আনন্দের জোয়ার। একটু বড়োসড়ো হয়েছিল শিশু রাসেল।  জন্মের কিছুক্ষণ পর পরিবারের সবাইকে রাসেলের কথা জানানো হয়। পরে শেখ হাসিনা এসে ওড়না  দিয়ে ভেজা মাথা পরিষ্কার করে দেয়।

রাসেলের নামকরণ : বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর এর ছিলেন বিখ্যাত নোবেল বিজয়ী দার্শনিক বাট্রান্ড রাসেল এর ভক্ত। তার অনেক বই তিনি পড়েছেন। বার্ট্রান্ড রাসেল কেবল মাত্র একজন দার্শনিক ছিলেন না বিজ্ঞানী ছিলেন । পরমানবিক যুদ্ধবিরোধী আন্দোলনের একজন বড় মাপের নেতাও। বিশ্ব শান্তি রক্ষার জন্য বার্ট্রান্ড রাসেল গঠন করেছিলেন- “কমিটি অফ হ্যান্ডয়েড”। রাসেলের জন্ম এর দুই বছর পূর্বেই 1962 সালে কিউবা কে কেন্দ্র করে আমেরিকার প্রেসিডেন্ট কেনেডি এবং সোভিয়েতের প্রধানমন্ত্রী  ক্রশেফ  এর মধ্যে কূটনৈতিক যুদ্ধ চলছিল। যেটি তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের দিকে এগিয়ে যাচ্ছিলো। ঠিক তখনই বিশ্ব মানবতার প্রতীক হয়ে অভিভূত ছিলেন বিখ্যাত দার্শনিক বাট্রান্ড রাসেল। আর তার আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে বঙ্গবন্ধু তার কনিষ্ঠপুত্র এর নামকরণ করেন রাসেল।

Read More: শেখ রাসেলের জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে রচনা প্রতিযোগিতা ২০২১

প্রাথমিক জীবন: তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে ঢাকা অঞ্চলের ধানমন্ডি 32 নম্বর বঙ্গবন্ধু ভবনে 18 ই অক্টোবর 1964 সালে জন্মগ্রহণ করেন। পাঁচ ভাইবোনের মধ্যে সর্বকনিষ্ঠ। ভাইবোনের মধ্যে অন্য একজন হলেন বাংলাদেশের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, 1971 সালের স্বাধীনতা যুদ্ধে মুক্তিবাহিনীর অন্যতম সংগঠক শেখ কামাল, বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর কর্মকর্তা শেখ জামাল এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের রাজনীতিবিদ শেখ রেহানা, শেখ রাসেল ইউনিভার্সিটি ল্যাবরেটরি স্কুল ও কলেজের চতুর্থ শ্রেণীর ছাত্র ছিলেন।

হত্যাকাণ্ড: 1975 সালের 15 ই আগস্ট প্রত্যুষে একদল তরুণ সেনা কর্মকর্তা ট্যাংক দিয়ে শেখ মুজিবুর রহমানের ধানমন্ডি 32 নম্বর বাসভবন ঘিরে ফেলে। শেখ মুজিব তার পরিবার এবং তার ব্যক্তিগত কর্মচারীদের সাথে শেখ রাসেলকে হত্যা করা হয়। শেখ মুজিবর এর নির্দেশে রাসেলকে নিয়ে পালানোর সময় ব্যক্তিগত কর্মচারীসহ রাসেলকে অভ্যুত্থানকারীরা তাকে আটক করে।

আমাদের বন্ধু শেখ রাসেল,শেখ রাসেল এর জীবন কাহিনী জেনে নিন। মানবতার প্রতীকি শিশু শেখ রাসেল

আতঙ্কিত হয়ে শিশু রাসেল কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেছিলেন আমি মায়ের কাছে যাব। পরবর্তীতে মায়ের লাশ দেখার পর অশ্রুসিক্ত করেছিলেন আমাকে হাসু আপা (শেখ হাসিনা) কাছে পাঠিয়ে দাও। ব্যক্তিগত কর্মচারী এ এফ এম মহিতুল ইসলাম এর ভাষ্যমতে দৌড়ে এসে আমাকে জাপটে ধরে। আমাকে বলল ভাইয়া আমাকে মারবে না তো? ওর কন্ঠ শুনে আমার  চোখ ফেটে পানি এসেছিল ।এক সে আমাকে রাইফেলের বাট দিয়ে ভীষণ মারলো। আমাকে মারতে দেখে রাসেল আমাকে ছেড়ে দিল। ও (শেখ রাসেল) কান্নাকাটি করছিল যে আমি মায়ের কাছে যাব আমি মায়ের কাছে যাব। এক ঘাতক এসে ওকে বলল চল তোর মায়ের কাছে দিয়ে আসি। বিশ্বাস করতে পারিনি যে ঘাতকরা এত নির্মমভাবে ছোট্ট শিশুটিকে হত্যা করবে। রাসেলকে ভিতর নিয়ে গেল এবং তারপর ব্রাশফায়ার।

মা, বাবা, দুই ভাই, ভাইয়ের স্ত্রী, চাচা সবার লাশের পাশ দিয়ে হাঁটিয়ে নিয়ে সবার শেষে নিষ্ঠুরভাবে হত্যা করল রাসেলকে। ওই ছোট্ট বুকটা কি তখন ব্যথায় কষ্টে বেদনায় স্তব্ধ হয়ে গিয়েছিল। যাদের সান্নিধ্যে স্নেহ-আদরে হেসে খেলে বড় হয়েছে তাদের নিথর দেহগুলো পড়ে থাকতে দেখে ওর মনের কী অবস্থা হয়েছিল- কী কষ্টই না ও পেয়েছিল!!’

শেখ রাসেল কেন আমাদের বন্ধু: বঙ্গবন্ধুর বাসায় একটি পোষা কুকুর ছিল ’টমি‘ নামে। ’টমি‘ সবার সঙ্গে খুব বন্ধুত্ব ছিল। ছোট রাসেলকে নিয়ে খেলতে খেলতে খেলতে হঠাৎ টমি ঘেউ ঘেউ করে ডেকে উঠে তখন রাসেল ভয় পেয়ে যান। কাঁদতে কাঁদতে শেখ রেহানার কাছে এসে বলে টমি আমাকে বকা দিয়েছে। তার কথা শুনে বাসার সবাই তো  আত্মহারা টমি আবার কিভাবে বকা দিলো। কিন্তু রাসেলের বিষয়টা খুব গভীরভাবে নিয়েছিলেন। টমি তাকে বকা দিয়েছিলেন এটা সে কিছুতেই মেনে নিতে পারছে না কারণ টমিকে সে খুব ভালোবাসত, হাতে করে খাবার দিত। সে নিজের পছন্দমত খাবারগুলো টমিকে ভাগ করে দেবেই কাজেই সেই টমি বকা দিলে রাসুলের দুঃখ তো পাবেই।

শেখ রাসেল কুইজ প্রতিযোগিতার প্রশ্ন উত্তর

এরইমধ্যে জন্ম হয় শেখ হাসিনা পুত্র জয়ের। রাসেল জয়কে পেয়ে মহাখুশি সে তার নতুন একসঙ্গী পেয়েছে । সারাটা সময় জুড়ে জয়ের সাথে মিশে থাকতো রাসেল। এরই মধ্যে যুদ্ধ শুরু হয়ে যায় কিন্তু রাসেল তার নিজেকে নিয়ে চিন্তা নেই। তার সমস্ত চিন্তা জয়কে নিয়ে কারণ তাদের বাসার ছাদে ব্যাংকারের মেশিন বসানো ছিল। ফলে দিনরাত গোলাগুলিতে প্রচন্ড আওয়াজ হয় বারবার কেঁপে কেঁপে উঠত। আর এ ব্যাপারে রাসেল খুবই সচেতন ছিল যখন আকাশ মেঘের মতো আওয়াজ হত রাসেল তুলা নিয়ে এসে জয়ের কানে গুঁজে দিতে। সবসময় পকেট তুলা  নিয়ে রাখতো।রাসেলের মাছ ধরার খুব শখ ছিল কিন্তু সে মাছ ধরে আবার তা পুকুরে ছেড়ে দিত। উদ্দেশ্যে মজা। আসলেই এটা তার খেলা।সুতরাং পরিশেষে বলা যায় যে তার সকল প্রাণী যার মনের ভাব বুঝতে পারা না পারা এমন প্রাণীর প্রতি অফুরন্ত ভালবাসায় তাকে করেছে আমাদের সকলের বন্ধু।

Read More : শেখ রাসেল এর জীবন কাহিনী জেনে নিন। sheikh rasel biography

শেখ রাসেল ছিলেন ভীষণ দুরন্ত। তার দুরন্তপনার সঙ্গী ছিল বাই-সাইকেল। তিনি রাষ্ট্রীয় প্রটোকল ছাড়াই সাইকেলে করে স্কুলে যেতেন। পাড়ার আর দশজন সাধারণ ছেলের মতো।

বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিব: ভালো মানুষ হয়ে বেড়ে ওঠার পেছনে পরিবার একটি বড় ধরনের ভূমিকা পালন করে থাকে। বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিব ছিলেন একজন আদর্শ মাতা। তিনি তার সন্তানদের নৈতিক শিক্ষায় মানুষ করেছেন, দিয়েছেন মানবিক গুণাবলিও। ঠিক তেমনিভাবে শেখ হাসিনার মাঝে অনুরূপ গুণাবলি প্রতীয়মান। তিনি তার সন্তানকে নৈতিক শিক্ষা আর মানবিক গুণাবলি দিয়ে জয়-পুতুলকে গড়ে তুলেছেন। শিশু রাসেল বেঁচে থাকলে আজকের ৫৫ বছরের মানুষটিও হতেন এক অন্যন্য গুণাবলির ব্যক্তিত্ব। বঙ্গবন্ধুর আত্মস্বীকৃত খুনিরা শুধু জাতির পিতাকে হত্যা করেই ক্ষ্যান্ত যায়নি, বঙ্গবন্ধুর রক্তের উত্তরাধিকার চিহ্নটুকুও নিশ্চিহ্ন করতে চেয়েছিল। আর তাদের ওই ঘৃণ্য অপচেষ্টা যে শতভাগ ব্যর্থতায় পর্যবসিত হয়েছে- এটি আজ প্রমাণিত।

উপসংহার: রাসেল তার বাবাকে কাছে পাবার সুযোগ খুব কমই হয়েছে। তাই বাবাকে যখন কাছে পেতে সারাক্ষণ তার পাশে ঘোরাঘুরি করতো। খেলার ফাঁকে ফাঁকে বাবাকে এক পলকের জন্য হলেও দেখে আসত। রাসেল যদি শিশু বয়সে মৃত্যু না হতো তাহলে বঙ্গবন্ধুর মতো বাঙালি জাতির পিতা হিসেবে রাসেলের স্থান পেত। সুতরাং রাসেলের বাল্য জীবন থেকে শিখাপেতে পারি যে আমাদের রাসেল ছিল প্রকৃত বন্ধু এবং বাঙালি জাতির মহানায়ক।

ডেইলি নিউজ টাইমস বিডি ডটকম (Dailynewstimesbd.com)এর ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব ও ফেসবুক পেইজটি ফলো করুন করুন।

ভূমিকা শেখ রাসেলের জন্ম প্রাথমিক জীবন হত্যাকাণ্ড শেখ রাসেল কেন আমাদের বন্ধু প্রশংসার উপসংহার উপসংহার

শেখ রাসেল একটি স্বপ্নের মৃত্যু। মানবতার প্রতীক ভালবাসার নাম আমাদের বন্ধু প্রবন্ধ রচনা

শেখ রাসেলের জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে রচনা প্রতিযোগিতা 2021 ,ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণি রচনা ,শেখ রাসেল একটি স্বপ্নের মৃত্যু রচনা, শেখ রাসেল এর স্বপ্ন, শেখ রাসেল রচনা, শেখ রাসেল এর পছন্দ, শেখ রাসেল ও বঙ্গবন্ধু শেখ রাসেলের ভ্রমণ, শেখ রাসেল কে লিখেছেন, খেলাধুলায় শেখ রাসেল রচনা,sheikh hasina facebook, sheikh hasina age, sheikh hasina son, bangladesh president sheikh, hasina father sheikh, hasina family ,sheikh hasina wikipedia ,sheikh hasina net worth ,sheikh rasel er jiboni, sheikh rasel essay in bangla, about sheikh rasel, sheikh rasel date of birth, sheikh rasel er rochona, sheikh rasel life story, bangla sheikh rasel kobita, sheikh rasel website,শেখ রাসেল আমাদের বন্ধু, শব্দ সংখ্যা 800,শেখ রাসেল রচনা, শেখ রাসেল এর জন্মদিন, খেলাধুলায় শেখ রাসেল, রচনা শেখ রাসেলের প্রিয় খাবার, শেখ রাসেল কুইজ ,শেখ রাসেল বই, শেখ রাসেলের শিক্ষা, জীবন শেখ রাসেলের মৃত্যু

One thought on “শেখ রাসেলের জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে রচনা প্রতিযোগিতা 2021 || ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণি রচনা | শেখ রাসেল আমাদের বন্ধু শব্দ সংখ্যা 800

Leave a Reply