হিজাব নিয়ে গুজব ছড়ানোর ঘটনায় দুইজন গ্রেপ্তার

নওগাঁর মহাদেবপুরে সনাতন ধর্মাবলম্বী এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে হিজাব নিয়ে গুজব ছড়িয়ে সাম্প্রদায়িক হাঙ্গামা সৃষ্টির অপচেষ্টা চালানোর অভিযোগে গুজব চক্রের মূলহোতাসহ দুইজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার (১৪ এপ্রিল) রাতে উপজেলার শহরের লাইব্রেরী পট্টি ও কুশারসেন্টার পাড়া এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন- মহাদেবপুর উপজেলা সদরের বাসিন্দা কিউএম সাঈদ টিটো ও কুশারসেন্টার পাড়া এলাকার বাসিন্দা কাজী সামছুজ্জোহা মিলন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মহাদেবপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আজম উদ্দিন মাহমুদ। তিনি জানান, শুক্রবার দুপুরে গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের নওগাঁ কোর্টে পাঠানো হয়েছে। এর আগে বৃহস্পতিবার রাতে দাউল বারবাকপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক আমোদিনী পাল বাদী হয়ে থানায় পাঁচজনের নাম উল্লেখ করে মামলা দায়ের করেন।

মামলার আসামিরা হলেন, ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ধরণী কান্ত বর্মণ, কিউএম সাঈদ টিটো, কাজী সামছুজ্জোহা মিলন, বিদ্যালয়ের সভাপতি মাহমুদুল হাসান সুমন ও জেলার পোরশা উপজেলার গহেরপুর গ্রামের বাসিন্দা সালাউদ্দিন আহমেদ। এছাড়াও আরো অজ্ঞাত ২০-২৫ জনকে আসামি করা হয়েছে। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মহাদেবপুর থানার উপপরিদর্শক শামিনুল ইসলাম জানান, মামলার অন্য আসামিরা পলাতক থাকায় তাদের গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি। তবে তাদের খুঁজতে অভিযান চলছে।

কিশোরকে একাধিকবার ধর্ষণ, ওসির গাড়িচালক গ্রেফতার

জানা গেছে, নির্ধারিত পোশাক (স্কুল ড্রেস) পরে না আসার কারণে গত ৬ এপ্রিল দাউল বারবাকপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক আমোদিনী পাল ছাত্রীদের ও শরীরচর্চার শিক্ষক বদিউল আলম ছাত্রদের শাসন করেন। এরপর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে গুজব ছড়ানো হয় যে, হিজাব পরায় শিক্ষার্থীদের শাস্তি দিয়েছেন হিন্দু শিক্ষক। এদিকে, ঘটনার পরদিন ৭ এপ্রিল বিদ্যালয়ে দেড়শ’ থেকে দুইশ’ জন ব্যক্তি হামলা চালিয়ে বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের লাঞ্ছিত ও আসবাবপত্র ভাংচুর করেন। তদন্তের পর জানা যায়, কথিত এ হিজাব বিতর্কের অন্তরালে রয়েছে স্কুল ম্যানেজিং কমিটি দ্বন্দ্ব ও অনিয়ম-দুর্নীতি।

আরও পড়ুন: জামিন পেতে কারাগারে বিয়ে করলেন ধর্ষক

জয় মহাদেবপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মিজানুর রহমান মিলন জানান, ঘটনাটি তদন্তে কমিটির প্রধান মহাদেবপুর উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা আব্দুল মালেকসহ তিন সদস্যবিশিষ্ট কমিটি গত সোমবার রাতে চার পৃষ্ঠার তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেন। প্রতিবেদনে ‘হিজাব পরার জন্যে নয়; শিক্ষার্থীদের স্কুল ড্রেস না পরায় পেটানো’র সত্যতা পায় তদন্ত কমিটি। এছাড়া বিদ্যালয়ের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বের কারণে কিছু শিক্ষক ও ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্য গুজব ছড়িয়ে শিক্ষক আমোদিনী পালের বিরুদ্ধে স্থানীয় মানুষজনকে উসকে দেয়ারও প্রমাণ পেয়েছে তদন্ত কমিটি। ওসি আজম উদ্দিন মাহমুদ আরো জানান, জড়িতদের আইনের আওতায় আনতে পুলিশ তৎপর রয়েছে। দ্রুত জড়িতদের গ্রেপ্তার করা হবে।

Leave a Reply

%d bloggers like this: