হিরো আলম বায়োডাটা
আসল নাম আশরাফুল আলম সাঈদ
ডাকনাম হিরো আলম
পেশা অভিনেতা,সঙ্গীত ভিডিও মডেল
বয়স ৩৪ বছর
জন্ম তারিখ ২০ জানুয়ারি ১৯৮৫
জন্মস্থান বাংলাদেশের বগুড়া
জাতীয়তা বাংলাদেশী
রাশিচক্র জানা নেই
আবির্ভাব জানা নেই
শারীরিক অবস্থা জানা নেই
প্রথম চলচ্চিত্র ২০১৭ সালের ১১ আগস্ট হিরো আলম অভিনীত প্রথম ছবি মার ছক্কা মুক্তি পায়।
সেন্টিমিটার উচ্চতা ১৪৬ সেমি, ১.৪৬ মিটার, ৪ ফুট ৮ ইঞ্চি
কিলোগ্রাম মধ্যে ওজন ৫৬ কিলো
শারীরিক পরিমাপ বুকের ছাতি- ৩৪ ইঞ্চি,
কোমর আকার- ৩০ ইঞ্চি
বাহু- ১২ ইঞ্চি
জুতা আকার ৮ (মার্কিন)
চোখের রঙ কালো
পিতা আব্দুর রাজ্জাক
মাতা আশরাফুন বেগম
ভাই জানা নেই
বোন জানা নেই
ধর্ম মুসলিম
বৈবাহিক তথ্য জানা নেই
বিবাহিত অবস্থা বিবাহিত
প্রেমিকার নাম সাবিহা আরক্তা সুমি
স্ত্রী সাবিহা আক্তার সুমি
সন্তান–সন্ততি তাদের দুটি মেয়ে এবং একটি ছেলে রয়েছে। যথাক্রমে- আলো ও আঁখি এবং কবির।
শিক্ষাগত তথ্য জানা নেই
স্কুল পরিচিত জানা নেই
কলেজ জানা নেই
শিক্ষাগত যোগ্যতা জানা নেই
প্রিয় জিনিস জানা নেই
প্রিয় অভিনেতা–অভিনেত্রি জানা নেই
প্রিয় শখ জানা নেই
আয় প্রতিবেদন জানা নেই
নেট মুল্য জানা নেই
বেতন জানা নেই
প্রথম দিকে নিজ গ্রামে এরুলিয়া সিটি বিক্রির কাজ করতে এবং পরবর্তীতে স্যাটেলাইট টিভি সংযোগের (কেবল পরিচালনা) ব্যবসা করেছিলেন। তিনি কেবল সংযোগের ব্যবসার পাশাপাশি শখের বশে সঙ্গীত ভিডিও নির্মাণ শুরু করেছেন।
অভিনয় জীবন
আশরাফুল আলম অভিনীত ছবি মার ছক্কা মুক্তি পায় ১১ আগস্ট ২০১৭ তারিখ। বাংলাদেশ বেশকিছু বিজ্ঞানপনচিত্র ও স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন। তিনি ২০১৮ সালে বিজু দ্য হিরো নামে একটি বলিউড চলচ্চিত্রে অভিনয়ের জন্য চুক্তিবদ্ধ হন।
হিরো আলমের দ্বিতীয় সিনেমা ‘সাহসী হিরো আলম’ নামে ১৬ অক্টোবর ২০২০ মুক্তি পায়। ‘সাহসী হিরো আলম’ সিনেমাটি পরিচালনা করেছেন এ আর মুকুল নেত্রবাদী এবং প্রযোজনা করেছেন হিরো আলম নিজেই। হিরো আলম এর বিপরীতে অভিনয় করেছেন তিন নায়িকা নুসরাত জাহান, শাকিরা মৌ ও রাবিনা বৃষ্টি।
রাজনৈতিক জীবন
হিরো আলম একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জাতীয় পার্টি থেকে বগুড়া-৪ আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার জন্য মনোনয়নপত্র কেনেন। তিনি দলটি থেকে মনোনয়ন নাপাবার পর বগুড়া-৪ আসন থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন।
তিনি নির্বাচনে পান ৬৩৮ ভোট এবং মোট প্রদত্ত ভোটের এক অষ্টমাংশ ভোট না পাবার তার জামানত বাজেয়াপ্ত করা হয়। তিনি ২০১৯ সালের মে মাসে জাতীয় পার্টি সাংস্কৃতিক অঙ্গসংগঠন জাতীয় সাংস্কৃতিক পার্টি কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক হিসেবে যোগ দেন ।
লেখক জীবন
হিরো আলম ২০১৯ সালে একুশে বই মেলায় তার আত্মজীবনী “দৃষ্টিভঙ্গি বদলান আমার সমাজকে বদলে দেবো “প্রকাশিত হয়। বইটি প্রকাশ করে তরফদার প্রকাশনী এবং বইটি সম্পাদনা করেন সৌরভ আলম সাবিদ।
হিরো আলমের জীবনী অবলম্বনে নির্মিত মঞ্চনাটক
২০১৯ সালের ৬ জানুয়ারি হিরো আলমের জীবনী অবলম্বনে মহেশ রূপরাও ঘোদেশ্বর কর্তৃক নির্মিত ও পরিচালিত হিরো আলম শিরোনামের একটি হাস্যরসাত্নক মঞ্চনাটক আহমেদাবাদে মঞ্চস্থ হয় । তিনি প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য নির্মিত এই মন্ত্র নাটকটি সমালোচকদের প্রশংসা অর্জন করেছেন।২০১৯ সালে মে মাসে মুম্বাইতে মঞ্চনাটকটি মঞ্চস্থ হয়।
ব্যক্তিগত জীবন
আশরাফুল আলম সাঈদ (হিরো আলম) তার ব্যক্তিগত জীবনে সাবিহা আক্তার সুমির সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন । এই দম্পতির কবির নামে এক ছেলে এবং আলো ও আখি নামে দুই মেয়ে রয়েছে। স্ত্রীর নির্যাতনের অভিযোগে ২০১৯ সালের মার্চে তিনি এক মামলায় গ্রেফতার হন। পরবর্তীতে এপ্রিল মাসের তারিখে জামিনে মুক্তি পান ।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে গত দুই দিনের সবচেয়ে চর্চিত বিষয়গুলোর মধ্যে একটি হলো হিরো আলম। ফেসবুক, ইউটিউবসহ বিভিন্ন মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ছে আলমের ভিডিও ও ছবি।
কিন্তু কে এই হিরো আলম?
সিডি বিক্রি করতেন আশরাফুল আলম। সেটা বেশ আগের ঘটনা। সিডি যখন চলছিল না তখনই মাথায় আসে ক্যাবল নেটওয়ার্ক ব্যবসার। ভাবলেন নিজ গ্রামেই সেটা করবেন, এবং করে ফেললেন। বগুড়ার এরুলিয়া ইউনিয়নের এরুলিয়া গ্রামেই শুরু হয় আলমের ডিশ ব্যবসা।
ছোটবেলা থেকেই অভাব-অনটনের সাথে চলা আলমের পরিবার তাকে আরেক পরিবারের হাতে তুলে দেয়। আলম চলে আসেন একই গ্রামের আব্দুর রাজ্জাকের বাসায়। আব্দুর রাজ্জাক তাকে ছেলের মতো করেই বড় করে তোলেন। স্নেহ করতেন। কিন্তু গ্রামে অভাব তো প্রায় মানুষের আছে। আলমের পালক পিতা আব্দুর রাজ্জাকের সংসারও অভাবের ছোঁয়া পায়। স্থানীয় স্কুলে সপ্তম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ে আলমকে নেমে পড়তে হলো জীবিকা নির্বাহের তাগিদে। সিডি বিক্রি থেকে আলম ডিশ ব্যবসায় হাত দিয়ে সফলতা অর্জন করেন। তার মাসে আয় ৭০-৮০ হাজার টাকা। স্ত্রী ও দুই সন্তান নিয়ে সুখেই আছেন আলম।
কালের কণ্ঠকে আলম বলেন, ”আমি আমার গ্রামের সবার ভালোবাসা পেয়েছি। এই ভালোবাসা আমাকে নিজের হাতে করে খেয়ে বাঁচতে শিখিয়েছে। এখন আমার স্ত্রী-সন্তান নিয়ে আল্লাহর রহমতে সুখেই আছি।”
সিডির ব্যবসা করতেন আলম। ক্যাসেটে দেখতেন মডেলদের ছবি। সেই থেকে মাথায় ঢোকে মডেল হওয়ার। ২০০৮ সালেই করে ফেলেন একটা গানের সাথে মডেলিং। সেটাই ছিল শুরু। এরপরে সেসব মাথা থেকে ঝেড়ে ফেলে সংসারে মনোযোগী হন। ২০০৯ সালে বিয়ে করেন পাশের গ্রামের সুমী নামের এক তরুণীকে। আলম সপ্তম শ্রেণি পর্যন্ত পড়লেও সুমী পড়েছেন এসএসসি পর্যন্ত। তাদের সংসারে আসে নতুন দুই অতিথি। নিজের নামের সাথে মিলিয়ে রাখেন সন্তানদের নাম। পুত্র আবির ও কন্যা আলো। এখন সংসার আর ব্যবসা নিয়েই ব্যস্ত আলম। পাশাপাশি নিজে কিছু মিউজিক ভিডিও করেন। সেগুলো নিজের ক্যাবল চ্যানেলেই প্রচার করেন। গ্রামের মানুষরাও তাকে বাহবা দেয়। আলম উৎসাহ পান।
আলম বলেন, আমার মডেল হওয়ার ইচ্ছে ছিল আগে। যখন সিডি বিক্রি করতাম। আমি জানি না এসব ইচ্ছে পূরণ হয় কি না, তবে লেগে ছিলাম। হয়েছে। অনেকে বলে বাজে হয়েছে আমি কান দেই না। অনেকে আবার বলে ভালোই হয়েছে। আমি গ্রামের ছেলে মন যা চায় করি। মানুষের কথায় কান দেওয়ার ইচ্ছে নেই।
বগুড়া সদরের এরুলিয়া ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আব্দুর রাজ্জাক আলম সম্পর্কে কালের কণ্ঠকে বলেন, ”আলম ছেলে খারাপ না। কষ্ট করে বড় হয়েছে আলম। সে গান গাইতে পারে না, নাচতেও পারে না। তবে তার মডেলিং এর শখ আছে এটা জানি।”
এরুলিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল লতিফ কালের কণ্ঠকে বলেন, ”আলম সম্পর্কে জানি সে ডিশ ব্যবসা করে। নির্বাচনও করে। দুইবার দাঁড়িয়েছিল। হেরে গেছে। তবে এলাকার মানুষজন তাকে পছন্দ করে। নির্বাচনে এবার সে দ্বিতীয় হয়েছে। ছেলে হিসেবে খারাপ না, তবে শুনছি মডেলিং-এর দিকে তার ঝোঁক।”
আশরাফুল আলম কালের কণ্ঠকে নির্বাচন সম্পর্কে বলেন, ”আমি এবার মাত্র ৭০ ভোটে হেরেছি। এর আগেরবারও হেরেছি অল্প ভোটে। তবে এলাকার মানুষের ভালোবাসার জন্য আমি আরেকবার নির্বাচন করবো। আমি বলেছিলাম আর দাঁড়াবো না, কিন্তু ভালোবাসার জন্য পরেরবার আরেকবার দাঁড়াবো।”
মডেলিং সম্পর্কে আলম বলেন, ”আমার ভিডিওগুলো ফেসবুক, ইউটিউবে ছড়িয়ে যাওয়ায় এখন অনেকেই আমার সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করছে। ইতিমধ্যে দুটি মিউজিক ভিডিও করার জন্য রাজি হয়েছি। আজ রাতে ঢাকা যাচ্ছি।” কার সাথে, কিসের মিউজিক ভিডিও এমন প্রশ্নের জবাবে আলম জানান, ‘কুসুম কুসুম প্রেম’ ছবির সজলের সাথে কাজ করার কথা। ”সজল ভাই আমাদের বগুড়ার ছেলে।”