বহেড়া খাওয়ার উপকারিতা ও ঔষধি গুনাগুন

বহেড়া
বহেড়া

আজকে বহেড়া খাওয়ার উপকারিতা ও এর ঔষধি গুনাগুন সম্পর্কে আলোচনা করবো। বহেড়ার ফল, বীজ ও বাকল মানুষের বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধে ও চিকিৎসা ক্ষেত্রে ব্যবহার হয়। আমাদের দেশে বেশির ভাগ অঞ্চলেই বহেড়া গাছ দেখা যায়। যেমনঃ – বগুড়া, দিনাজপুর, ভাওায়ালের অঞ্চল মধুপুর গড়, গাজীপুর, কুমিল্লা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, রামগড় ইত্যাদি এবং নিকটবর্তী ভারতের ছোটনাগপুর, বিহার, হিমাচল প্রদেশ ও মধ্যপ্রদেশে প্রধানত এ গাছ বেশি দেখা যায়।

বহেড়া একটি ত্রিফলা ফল। বহেড়ার বৈজ্ঞানিক নামঃ Terminalia bellirica এবং ইংরেজি: beleric or bastard myrobalan. তবে এই ফলের আরেকটি নাম বিভিতকি, কিন্তু বহেড়া নামেই বেশি পরিচিত। আজকে আমরা এই গাছ এবং ফলের উপকারিতা ও গুনাগুন সম্পর্কে জানবো। বহেড়া গাছের জন্ম স্থান ভারতে বিভিন্ন অঞ্চলে বা ভারতবর্ষে। এই গাছের গুড়ি বা শিকর অনেক বড় হয়।

বহেড়া ফল বেশির ভাগ শীত কালে এর ফল পরিপক্ক হয়। এই ফল পাকার পর নিজ থেকেই গাছ থেকে ফলের বুটা খসে পড়ে। তবে এই ফল দুই রকমের হয়, এক প্রকার ডিম্বাকৃতি, আরেকটি গোল। এই বহেড়া ফলের ছাল, গাছের পাতা, ও ফলের শাস বিভিন্ন অংশ ঔষধ হিসেবে ব্যবহার করা হয়।

বহেড়া গাছের বৈশিষ্ট্য (Characteristics of bahera tree)

আমাদের খুবই পরিচিত একটি গাছ বহেড়া। এই গাছের উচ্চতা(৬০-১০০) ফুট পর্যন্ত লম্বা হয়। এই শীতকালে ফল পুষ্ট হয়। এই ফল দুই রকমের হয়, এক প্রকার ডিম্বাকৃতি, আরেকটি গোল আকারের হয়। বহেড়া গাছ বা ফল বাংলাদেশের প্রায় সব অঞ্চলেই পাওয়া যায়। বাংলাদেশের যে সব অঞ্চলে পাওয়া যায় সেই সব অঞ্চল গুল তুলে ধরা হলোঃ গাজীপুর, বগুড়া, দিনাজপুর, রামগড়, কুমিল্লা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, ভাওায়ালের অঞ্চল মধুপুর গড়, এই ফল ভারতের ছোটনাগপুর, বিহার,
হিমাচল প্রদেশ ও ভারতের মধ্যপ্রদেশে প্রধানত এ গাছ বেশি পাওয়া যায়। ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বীরভূম, বাঁকুড়া ও বর্ধমানের শালবনেও বহেড়া গাছ অনেক জন্ম হয়।

আরো পড়ুন –:থানকুনি পাতা খাওয়ার উপকারিতা ও ব্যবহারবিধি

বহেড়ার খাওয়ার উপকারিতা ও গুনাগুন (Benefits and qualities of bahera)

আমরা আজকে বহেড়া গাছের ফল, গাছের ছাল এবং বিভিন্ন উপকারি অংশ নিয়ে আলোচনা করবো। চলুন জেনে নেয়া জাক মানব জীবনের জন্য কি? কি? উপকারী হিসাবে কাজ করে থাকে।

আমাশা ও ডায়রিয়া (Diarrhea): আমাদের দেশে প্রায় লোকের দেখা যায় এই রোগ তবে বহেড়ার চুর্ণ এর সাথে পানি মিশিয়ে খেলে দ্রুত্ব উপশম হয়।

হৃদপিণ্ড ও যকৃত: মানব জীবনের জন্য এই রোগ একটি মারাত্মক। আর এই রোগ নিরাময়ের জন্যে বহেড়ার ফল নিয়মিত খেলে হৃদপিণ্ড এবং যকৃতে রোগের সংক্রমণ কমায়। এই রোগের জন্য বহেড়া বিরাট ভূমিকা রাখে।

শ্বেতী রোগ: মানব সৃষ্টির মানুষের মধ্যে অনেক ধরনের হয়ে থেকে রাত মধ্যে শ্বেতী একটি রোগ। বহেড়ার তেল এই রোগের জন্য অনেক কার্যকারি। কেউ যদি বহেড়ার বিচির শাঁসের তেল বের করে শ্বেতী রোগীর উপর লাগালে গায়ের রং দ্রুত স্বাভাবিক হয়ে উঠে।

চুলের যত্নে বহেরা: বর্তমান সময়ে দেখা যায় যে অনেক মানুষের অল্প বয়সে চুল পড়ে এই বিষয় নিয়ে তারা খুবই চিন্তিত। তাদের আর চিন্তার কোন কারণ নেই। এই বহেড়ার ফলের ভিতরের বিচি বাদ দিয়ে শুধু ১০ গ্রাম ছাল নিয়ে পানি দিয়ে বেটে রশ করে এক কাপ পানিতে গুলে পানি ছেঁকে নিয়ে। তার পর সেই পানি দিয়ে চুল সুন্দর করে ধুয়ে ফেলুন। লাগাতারে কিছুদিন চুলে ম্যাসাজ করলে চুল ওঠা বন্ধ হয়।

কৃমি রোগ: যাদের কৃমি রোগ আছে তাদের জন্য বহেড়ার বিচির ছাল এর উপকারিতা কাজে লাগবে নিশ্চয়। তবে জেনে নিন এই বিচির কার্যকারিতা। কাহারো যদি কৃমি রোগ হলে বহেড়া ফলের বিচি বাদ দিয়ে শাঁসের গুঁড়া এবং ডালিমের পাতার রসের সাথে মিশিয়ে সেবন করলে কৃমি দূর হবে।

সর্দি: কম বেশি প্রায় মানুষের এই রোগ হয়ে থাকে। সে যদি বহেড়া চূর্ণ আধা চা-চামচ এবং সামান্য গরম ঘি মিশিয়ে পুনোরায় গরম করে মধু দিয়ে খেলে দ্রুত্ব স্ররদি নিরাময় হয়।

আরো পড়তে পারেন –

আয়ু বৃদ্ধি বা দীর্ঘায়ু: বহেড়ার আরো একটি বিশেষ গুন হলো কেউ যদি প্রতি দিন বহেড়া ভেজানো পানি এক কাপ করে নিয়মিত খেলে দীর্ঘায়ু লাভ করা যায়। ফোলা কমানোয়ঃ কেউ যদি আঘাত পেয়ে ফোলে যায় সেই ফোলা যায় গায় বহেড়ার গাছের ছাল বেটে একটু গরম করে ফোলা স্থানে প্রলেপ দিলে ফুলা কমে যায়।

অনিদ্রা রোগে : বর্তমান সময় প্রায় লোকের অনিদ্রা রোগে ভুগতেছে। অনিদ্রায় রাতের পর রাত নির্ঘুম কেটে যায়? এখন থেকে চমৎকার ঘুমের জন্য বহেড়া খাওয়ার অভ্যাস গড়ুন।

বিভিন্ন রোগে: বহেড়া বিভিন্ন রোগের কাজ করে থাকে, পুরাতন সর্দি-কাশি এবং জ্বর দূর কর‍তে সাহায্য করে থাকে। তার পর শ্বাসকষ্ট ও কোষ্ঠকাঠিন্য রোগের কাজ করে থাকে। কেউ যদি নিয়মিত খেলেবেশ উপকার হয়।

আরো পড়ুন –:চিরতা খাওয়ার উপকারিতা ও ভেষজ গুনাগুন

ত্রিফলার উপকারিতা

অধিক গুণমান সম্পন্ন ত্রিফলা হলো একটি ভেষজ ঔষধি। ত্রিফলা আমাদের দেহের ভারসাম্য বজায় রাখে, প্রয়োজনীয় ভিটামিন আর মিনারেলস দেয় সেই সাথে আমাদের দেহ পরিস্কার রাখে। এই ফল মানবদেহের একটি মহা ঔষধ। ত্রিফলা মানবদেহের বর্জ্য নিষ্কাশন করা আর ডিটক্সিফাই করে ও কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে ত্রিফলা কার্যকারী । এবং ত্রিফলা হজম প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করতে ও বদহজম জনিত সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে থাকে।

পরিশেষে আমরা বলতে পারি যে বহেড়া খাওয়ার উপকারিতা ও গুনাগুন অনেক বেশি। এই বহেড়ার গুনাগুন গুলো যদি সঠিক ভাবে ব্যবহার করতে পারলে অকেন রোগ থেকে রেহায় পাওয়া যেতে পারে।

তথ্যসূত্র: উইকিপিডিয়া

 

 

 

আমলকির উপকারিতা ও অপকারিতা, এিফলা খাওয়ার উপকারিতা, বহেরা খাওয়ার নিয়ম, হরীতকীর উপকারিতা, আমলকি হরিতকি বহেরার উপকারিতা, আমলকি খাওয়ার উপকারিতা, ত্রিফলার উপকারিতা, বয়রা ফলের উপকারিতা

Leave a Reply