ইউক্রেনের জন্ম কীভাবে হয়েছিল: কেন একে ‘প্রকৃত রাষ্ট্র নয়’ বলছেন পুতিন

ইউক্রেনকে কেন্দ্র করে রাশিয়া ও পশ্চিমা বিশ্বের মধ্যেকার উত্তেজনা এখন এক চরম নাটকীয় মোড় নিয়েছে- কারণ ভ্লাদিমির পুতিন সোমবার রাতে তার মোক্ষম চালটি চেলেছেন।

প্রথমত পূর্ব ইউক্রেনের বিদ্রোহী-নিয়ন্ত্রিত দোনেৎস্ক এবং লুহানস্ককে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছেন রুশ প্রেসিডেন্ট এবং তারপর সেখানে “শান্তি রক্ষার জন্য” রাশিয়ার সৈন্য পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন।

মার্কিন দৈনিক ওয়াশিংটন পোস্ট জানাচ্ছে, ভ্লাদিমির পুতিনের এই কৌশলী পদক্ষেপ যুক্তরাষ্ট্রকে এক অস্বস্তিকর দ্বিধায় ফেলে দিয়েছে, কারণ জো বাইডেনের প্রশাসনের কূটনৈতিক উপদেষ্টারা নিশ্চিত হতে পারছেন না যে রাশিয়া যা করেছে – তাকে ঠিক ‘ইউক্রেনে রুশ অভিযান’ বলা যায় কিনা – যার পূর্বাভাস তারা অনেক দিন ধরেই দিচ্ছিলেন।

সে কারণে যুক্তরাষ্ট্র আপাততঃ ‘আংশিক কিছু নিষেধাজ্ঞা’ আরোপ করেছে রাশিয়ার ওপর।

পাশাপাশি তুমুল আলোচনা-বিতর্ক-বিশ্লেষণের বিষয় হয়ে উঠেছে সোমবার রাতে দেয়া ভ্লাদিমির পুতিনের ভাষণটি।

এই ভাষণে তার “বহুদিনের চেপে রাখা ক্ষোভ, ক্রোধ, ধৈর্যচ্যুতি এবং হুমকির সুর” বেরিয়ে এসেছে – মন্তব্য করেছেন বিবিসির সারাহ রেইন্সফোর্ড।

রাশিয়া-ইউক্রেন বিবাদের শুরু থেকে যুদ্ধ পর্যন্ত সব খুঁটিনাটি তথ্য একনজরে

“ইউক্রেন প্রকৃতপক্ষে কোন রাষ্ট্র নয়”

যে কথাটি সবচেয়ে বেশি আলোড়ন তুলেছে তা হলো – মি. পুতিন বলেছেন – ইউক্রেন কোন দিনই প্রকৃত অর্থে একটা রাষ্ট্র ছিল না।

তিনি এর আগেও বলেছেন, এখন যা ইউক্রেন তা আসলে ‘প্রাচীন রুশ ভূখণ্ড।’

মি. পুতিনের কথায় – আধুনিক যুগের এই ইউক্রেন আসলে সম্পূর্ণতই বলশেভিক কমিউনিস্ট রাশিয়ার সৃষ্টি।

“১৯১৭ সালের বিপ্লবের পর এ প্রক্রিয়া শুরু হয়েছিল এবং লেনিন ও তার সহযোগীরা রাশিয়ার ঐতিহাসিক ভূখণ্ডকে ভাগ করে ছিঁড়েখুঁড়ে নিয়ে সবচেয়ে খারাপভাবে এ কাজটা করেছিলেন” – বলেন তিনি।

তিনি আরো বলেছেন, ১৯৯১ সালে সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেঙে পড়ার সময় মিখাইল গর্বাচেভের দুর্বল সরকারের কারণেই ইউক্রেন স্বাধীন হবার সুযোগ পেয়ে গিয়েছিল।

সত্যিই কি তাই? এ যুগের ইউক্রেন রাষ্ট্র কি আসলে একটা অবাস্তব কল্পনা – যেমনটা পুতিন বলছেন?

ইতিহাস কী বলে?

প্রকৃতপক্ষে রাশিয়া ও ইউক্রেনের ইতিহাস বহু শতাব্দী ধরেই এক সাথে জড়িয়ে আছে এবং সেই ইতিহাস অত্যন্ত জটিল।

রাশিয়া ও ইউক্রেন – উভয়েরই প্রধান ধর্ম অর্থোডক্স খ্রিস্টান। তাদের ভাষা, সংস্কৃতি এবং খাদ্য – এগুলো একে অপরের সাথে ঘনিষ্ঠভাবে সম্পর্কিত।

ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভ অতি প্রাচীন শহর, এবং রুস জনগোষ্ঠীর একসময়ের রাজধানী। এটি প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল রাশিয়ার বর্তমান রাজধানী মস্কোর চেয়েও কয়েক শতাব্দী আগে ।

রুশ এবং ইউক্রেনীয় – উভয় জনগোষ্ঠীই দাবি করে থাকে কিয়েভই হচ্ছে তাদের আধুনিক সংস্কৃতি, ধর্ম ও ভাষার মূল কেন্দ্র।

তবে এখন যা ইউক্রেন – তার ঐতিহাসিক বাস্তবতা হচ্ছে এই যে গত এক হাজার বছরে তাদের সীমান্ত, ধর্ম ও জনগোষ্ঠীর প্রকৃতি বার বার পরিবর্তিত হয়েছে।

‘কিয়েভের রুশ’

ইউক্রেন আর রাশিয়ার অভিন্ন উৎসের সবচেয়ে পুরোনো খোঁজ পাওয়া যায় ইউরোপের ওই অঞ্চলে স্লাভ জনগোষ্ঠীর প্রথম রাষ্ট্রের ইতিহাসে।

সেটা ছিল মধ্যযুগের এক সাম্রাজ্য – যার নাম ‘কিয়েভান রুস’ – আর এর প্রতিষ্ঠা হয়েছিল নবম শতাব্দীতে ।

ভলোদিমির ওলেকসান্দ্রোভিচ জেলেনস্কি এ জীবনী বায়োগ্রাফি,ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি সম্পর্কে ১০টি তথ্য,ভোলোদিমির জেলেনস্কি জীবনী – Volodymyr Zelensky Biography in Bangla
ছবির ক্যাপশান,ইউক্রেনের সীমান্তে লক্ষাধিক সৈন্য মোতায়েন করেছে রাশিয়া

বর্তমান ইউক্রেন, বেলারুস এবং রাশিয়ার অংশ নিয়ে গঠিত হয়েছিল এই কিয়েভান রুস। আজ পর্যন্ত এই তিন দেশই দাবি করে যে কিয়েভান রুসই হচ্ছে তাদের সাংস্কৃতিক পূর্বপুরুষ।

“কিয়েভান রুস” কথাটির সরল অর্থ হলো “কিয়েভের রুসদের আবাসভূমি।”

তাদের রাজধানী ছিল কিয়েভ, আর এই রাজ্যের অধিবাসীদের বলা হতো রুস।

এই কিয়েভান রুসের প্রতিষ্ঠাতা ছিল ভাইকিংরা – যারা এ যুগের উত্তর ইউরোপের স্ক্যান্ডিনেভিয়া বা সুইডেন-নরওয়ে-ডেনমার্ক অঞ্চলের জনগোষ্ঠীর লোক। রুশ জাতির আদি উৎস নিয়ে ইতিহাসবিদদের মধ্যে মতভেদ আছে, কেউ বলেন – রুশদের আদি পূর্বপুরুষরা ছিল সুইডেনের, আবার আরেক দল ইতিহাসবিদ মনে করেন এটা ঠিক নয়, রুশরা হচ্ছে স্লাভ জনগোষ্ঠীর বংশধর।

জটিল উত্থানপতনের ইতিহাস

কিয়েভ শহরটির অবস্থান এমন এক জায়গায় -যেখান দিয়ে নবম-দশম শতাব্দীতে অনেকগুলো প্রাচীন বাণিজ্যিক পণ্য চলাচলের পথ গড়ে উঠেছিল। ইউক্রেনের ভূ-প্রকৃতিরও আছে অনেক বৈচিত্র্য। এখানে আছে কৃষিজমি, বনভূমি আর কৃষ্ণসাগর হয়ে নৌচলাচলের পথ।

তাই বিভিন্ন সময় বহু যোদ্ধা জনগোষ্ঠীর দখলে ছিল এই এলাকাটি।

এটাও ঠিক যে আধুনিক ইউক্রেনের কিছু অংশ বহু শতাব্দী ধরে রুশ সাম্রাজ্যের অংশ ছিল।

কিন্তু ইউক্রেনের অন্য কিছু অঞ্চল আবার বিভিন্ন সময় অস্ট্রো-হাঙ্গেরিয়ান সাম্রাজ্য, পোল্যান্ড বা লিথুয়ানিয়ারও অংশ ছিল। ইউক্রেনের ভূখণ্ড অটোমান তুর্কদেরও দখলে ছিল কিছু সময়ের জন্য।

কিন্তু এর মধ্যে আবার বিভিন্ন সময় এমন কিছু দৃষ্টান্তও আছে যখন সাময়িকভাবে হলেও ইউক্রেন রাষ্ট্রের একটি স্বতন্ত্র অস্তিত্ব দেখা গিয়েছিল – যেমন সপ্তদশ শতাব্দীতে ইউক্রেনীয় কসাকদের স্বায়ত্বশাসিত রাজ্য।

ভলোদিমির ওলেকসান্দ্রোভিচ জেলেনস্কি এ জীবনী

ইউক্রেনীয় জাতীয়তাবাদ

যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্ক টাইমস দৈনিকের এক রিপোর্টে বলা হচ্ছে – ইউক্রেনকে অনেক রুশই দেখে থাকেন তাদের জাতির “ছোট ভাই” হিসেবে, এবং মনে করেন ইউক্রেনীয়দের আচরণও সেরকমই হওয়া উচিত।

কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে, রাশিয়ায় বলশেভিক বিপ্লবেরও অনেক আগে দেশটিতে যখন কয়েক শতাব্দী ধরে জারের শাসন চলছিল – তখন থেকেই ইউক্রেনীয়দের জাতীয়তাবাদ এবং স্বতন্ত্র পরিচয়ের রাজনীতি রাশিয়ায় নানা সমস্যা তৈরি করছিল।

সেন্ট পিটার্সবুর্গে ১৯১৭ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে যে বলশেভিক বিপ্লব হয় – তার পর ক্রাইমিয়াসহ ইউক্রেনের এক বড় অংশ রাশিয়া থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে স্বাধীন ইউক্রেন প্রজাতন্ত্র গঠনের কয়েকটি চেষ্টা করে । ১৯১৭ থেকে ১৯২০ সালের মধ্যে এক যুদ্ধবিক্ষুব্ধ এবং চরম বিশৃঙ্খল সময়ে সেই স্বাধীন ইউক্রেন গঠনের চেষ্টা দীর্ঘস্থায়ী হতে পারেনি।

বিবিসি বাংলায় সম্পর্কিত খবর:

ভলোদিমির ওলেকসান্দ্রোভিচ জেলেনস্কি এ জীবনী বায়োগ্রাফি,ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি সম্পর্কে ১০টি তথ্য,ভোলোদিমির জেলেনস্কি জীবনী – Volodymyr Zelensky Biography in Bangla
ভিডিওর ক্যাপশান,রাশিয়া-ইউক্রেন উত্তেজনার নেপথ্যে কারণ, সত্যি যুদ্ধের পরিস্থতি তৈরি হয়েছে?

লেনিনের নেতৃত্বাধীন সোভিয়েত সরকার স্বাধীন ইউক্রেন গঠনের চেষ্টাকে দমন করে। ইউক্রেনের বেশির ভাগ ভূখণ্ডই সোভিয়েত ইউনিয়নের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যায়। অন্যদিকে পশ্চিম ইউক্রেনের কিছু অংশ পোল্যান্ড, চেকোশ্লোভাকিয়া আর রোমানিয়ার মধ্যে ভাগাভাগি করা হয়।

সোভিয়েত ইউনিয়নের অংশ হিসেবে ইউক্রেনের নাম হয় ইউক্রেনিয়ান সোভিয়েত সোশালিস্ট রিপাবলিক।

বলা যায়, আজকের ইউক্রেনের মানচিত্র তৈরি হয়েছে রুশ বিপ্লব এবং সোভিয়েত ইউনিয়ন প্রতিষ্ঠার মধ্যে দিয়েই । কিন্তু ইউক্রেনীয় জাতীয়তাবাদ এবং নিজস্ব রাষ্ট্র পাবার আকাঙখা বা প্রয়াস তার অনেক আগেই সৃষ্টি হয়েছিল।

ইউক্রেনের এই বিচ্ছিন্নতাবাদী প্রবণতার ব্যাপারে সবসময়ই রুশ শাসকরা সচেতন ছিল। একে ঠেকানোর চেষ্টায় জারদের শাসনের সময় ইউক্রেনের রুশী-করণের জন্য নানারকম আইনও হয়েছিল।

সোভিয়েত শাসনের সময় সেখানকার স্কুলে ইউক্রেনীয় ভাষাও শেখানো হতো না।

অবশেষে সাত দশকেরও বেশি সময় পর সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেঙে যাবার মধ্যে দিয়ে ১৯৯১ সালে জন্ম হয় স্বাধীন ইউক্রেন রাষ্ট্রের।

ইউক্রেন আনুষ্ঠানিকভাবে স্বাধীনতা ঘোষণা করে আগস্ট মাসে, আর সে বছরের ডিসেম্বর মাসে অনুষ্ঠিত এক গণভোটে সেদেশের জনগণ বিপুলভাবে এর পক্ষে রায় দেয়।

ইউক্রেন ও রাশিয়ার বহু পুরোনো বৈরিতা

পূর্ব ইউক্রেনে বহু রুশভাষী এবং মস্কোর প্রতি অনুগত লোক বাস করেন, সেখানে রাশিয়ার প্রভাবও গভীর – কিন্তু ভ্লাদিমির পুতিন ইউক্রেন ও রাশিয়ার যে ভ্রাতৃপ্রতিম সম্পর্কের চিত্র আঁকতে চান – বাস্তবতা আসলে সেরকম নয়।

ভলোদিমির ওলেকসান্দ্রোভিচ জেলেনস্কি এ জীবনী বায়োগ্রাফি,ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি সম্পর্কে ১০টি তথ্য,ভোলোদিমির জেলেনস্কি জীবনী – Volodymyr Zelensky Biography in Bangla

ছবির উৎস,GETTY IMAGES

ছবির ক্যাপশান,ক্রাইমিয়ায় নৌবাহিনীর এক জাহাজের সামনে এক রুশ সেনা

বস্তুত ইউক্রেন ও রাশিয়ার মধ্যে বৈরিতা একসময় এমন ছিল যে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ইউক্রেনীয়দের একাংশ হিটলারের নাৎসী বাহিনীকে সমর্থন দিয়েছিল। তারা জার্মানদের ‘ত্রাণকর্তা’ ভেবে মনে করেছিল যে তারা এবার সোভিয়েত শাসন থেকে মুক্তি পাবে।

ইউক্রেনীয়দের আরেক অংশ সোভিয়েত ইউনিয়নের পক্ষে ছিল। তবে তৃতীয় আরেকটি জাতীয়তাবাদী অংশ আবার সোভিয়েত ইউনিয়ন ও নাৎসী বাহিনী উভয়ের বিরুদ্ধেই যুদ্ধ করেছিল।

“ইউক্রেন ঐতিহাসিকভাবেই রাশিয়ার অন্তর্ভুক্ত ছিল বলে ভ্লাদিমির পুতিন এখন যে যুক্তি দিচ্ছেন তা ঠিক নয়” – নিউ ইয়র্ক টাইমসকে বলেন ইউরেশিয়া গ্রুপ নামে একটি গবেষণা প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান ক্লিফ কাপচান।

সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেঙে পড়ার পর ইউক্রেন সেখানে মোতায়েন থাকার সব পারমাণবিক অস্ত্র পরিত্যাগ করে। এর বিনিময়ে তখন মস্কো ইউক্রেনের সার্বভৌমত্বকে সম্মান করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল।

কিন্তু মার্কিন বিশ্লেষকরা মনে করেন মি. পুতিন ২০১৪ সালে ক্রাইমিয়া দখলের মধ্যে দিয়ে স্পষ্ট করে দিয়েছেন যে তিনি সেই প্রতিশ্রুতিকে গুরুত্ব দেন না।

ভলোদিমির ওলেকসান্দ্রোভিচ জেলেনস্কি এ জীবনী বায়োগ্রাফি,ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি সম্পর্কে ১০টি তথ্য,ভোলোদিমির জেলেনস্কি জীবনী – Volodymyr Zelensky Biography in Bangla
স্ত্রী ওলেনা জেনেলস্কির সঙ্গে ভলোদিমির জেলেনস্কি।

সে বছরই কিয়েভে এক গণবিক্ষোভের পর ক্রেমলিন-সমর্থক সরকার উৎখাত হলে পূর্ব ইউক্রেনে রুশ-সমর্থিত বিচ্ছিন্নতাবাদী যুদ্ধ শুরু হয় এবং দোনেৎস্ক ও লুহানস্ক – এ দুটি ভূখণ্ড কার্যত ইউক্রেনের নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়।

মি. পুতিন সোমবার রাতের ভাষণে এই দুটি অঞ্চলকে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছেন, এবং সেখানে শান্তি রক্ষার কারণ দেখিয়ে রুশ সৈন্য পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন।

ডনবাস অঞ্চলটি কেন এই সংঘাতের কেন্দ্রবিন্দু?

দোনেৎস্ক এবং লুহানস্ক – এ দুটিই পূর্ব ইউক্রেনের ডনবাস অঞ্চলে। ২০১৪ সালের আগে এই এলাকাটি ছিল খনিজ সম্পদ এবং ইস্পাত উৎপাদননের ভারী শিল্পের কেন্দ্র । এখানে কয়লারও বড় মজুত আছে।

ভলোদিমির ওলেকসান্দ্রোভিচ জেলেনস্কি এ জীবনী বায়োগ্রাফি,ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি সম্পর্কে ১০টি তথ্য,ভোলোদিমির জেলেনস্কি জীবনী – Volodymyr Zelensky Biography in Bangla

ছবির উৎস,REUTERS

স্বাধীনতার পক্ষে রুশ স্বীকৃতির পর দোনেৎস্ক এবং লুহানস্ক এ আনন্দ মিছিল

দোনেৎস্ক এবং লুহানস্ক – দুটিরই কিছু অংশ কিয়েভের সরকারের নিয়ন্ত্রণে, আর বাকি অংশ রুশ-সমর্থক বিদ্রোহীদের নিয়ন্ত্রণে – যারা এ দুটিকে দুটি আলাদা ‘পিপলস রিপাবলিক’ হিসেবে ঘোষণা করেছে ।

দুটি অঞ্চলের মোট জনসংখ্যা ৩৮ লাখের মত এবং এদের একটি বড় অংশই রুশ অথবা রুশ-ভাষী। ২০১৪ সাল থেকে এখানে যুদ্ধে প্রায় ১৪ হাজার লোক নিহত হয়েছে।

ফ্রান্স ও জার্মানির মধ্যস্থতায় ২০১৫ সালে যে ‘মিনস্ক চুক্তি’ হয়েছিল – তাতে রাশিয়া ও ইউক্রেন একমত হয় যে দোনেৎস্ক ও লুহানস্ক অঞ্চলদুটিকে বিশেষ মর্যাদা দেয়া হবে – আর এর বিনিময়ে ইউক্রেন তার সীমান্তের নিয়ন্ত্রণ ফিরে পাবে। কিন্তু এ চুক্তির বাস্তবায়ন বার বার ঠেকে গেছে।

ইউক্রেনের “অসহিষ্ণু” আচরণের হাত থেকে ডনবাস এলাকার রুশ-ভাষী মানুষদের রক্ষার কথা বলে মস্কো সেখানকার বিদ্রোহীদের সামরিক সহায়তা দিচ্ছে বলে ইউক্রেন এবং পশ্চিমা দেশগুলো অভিযোগ করে – কিন্তু রাশিয়া তা অস্বীকার করে।

গত সপ্তাহে রাশিয়ার পার্লামেন্ট দুমা ভ্লাদিমির পুতিনের প্রতি দোনেৎস্ক ও লুহানস্ককে স্বীকৃতি দেবার আহ্বান জানিয়ে এক প্রস্তাব পাস করে। এর পর সোমবার এ দুই অঞ্চলের নেতারা ভ্লাদিমির পুতিনের প্রতি তাদের স্বীকৃতি এবং সামরিক সমর্থন দেবার আহ্বান জানান।

এর পরই মি. পুতিন আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃতি দেবার কথা জানালেন সোমবার রাতের ভাষণে।

বিশ্লেষকরা বলছেন, এর ফলে মস্কো বলতে পারবে যে তারা সেখানে সেনা পাঠানোর “আইনী বৈধতা পেয়েছে।”

Source : BBc

Leave a Reply