ঋষি সুনাকের নতুন মন্ত্রিসভার নাম প্রকাশ

ব্রিটেনের নতুন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে কাজ শুরু করলেন ঋষি সুনাক। যদিও গুরুত্বপূর্ণ পদগুলোতে কোনো পরিবর্তন আনা হয়নি।

প্রথম দিনেই তিনি নিয়োগ দিলেন নতুন মন্ত্রিসভার সদস্যদের। ঋষি সুনাকই প্রথম কোনো অশ্বেতাঙ্গ এবং অভিবাসী পরিবারের সন্তান যিনি একইসঙ্গে ব্রিটেনের প্রধান একটি রাজনৈতিক দলের নেতা এবং প্রধানমন্ত্রী হলেন।

মঙ্গলবারই সাবেক প্রধানমন্ত্রী লিজ ট্রাস ডাউনিং স্ট্রিট থেকে বিদায় নেন এবং এদিনই দায়িত্ব হাতে নেন সুনাক।

ডাউনিং স্ট্রিটে প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবনের সামনে দাঁড়িয়ে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তার প্রথম ভাষণে সুনাক আস্থা ও স্থিতিশীলতা পুনঃপ্রতিষ্ঠার অঙ্গীকার করেন।

তিনি সতর্ক করে দেন যে, ব্রিটেন এখন এক ‘গভীর অর্থনৈতিক সংকটের’ সম্মুখীন এবং তার পূর্বসুরীর কিছু ভুল তার সরকারকে সংশোধন করতে হবে। এ জন্য ‘কঠিন কিছু সিদ্ধান্ত’ নিতে হবে।

বিবিসি জানিয়েছে, তার নতুন সরকারের মন্ত্রিসভায় কারা থাকছেন তা নিয়ে নানা জল্পনা কল্পনা চলছিল। তবে সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ পদগুলোতে কোনো পরিবর্তন আনেননি সুনাক। চ্যান্সেলর পদে জেরেমি হান্টই থাকছেন।

তাছাড়া পররাষ্ট্রমন্ত্রী পদে জেমস ক্লেভারলি, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পদে সুয়েলা ব্রাভারম্যান এবং প্রতিরক্ষামন্ত্রী বেন ওয়ালেসও বহাল আছেন। তবে অন্য পদগুলোতে নতুন মন্ত্রী নিয়োগ দেয়া হয়েছে। এরমধ্যে স্টিভ বারক্লে হয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী।

এছাড়া গ্রান্ট শ্যাপস ব্যবসা বিষয়ক মন্ত্রী, পেনি মর্ডান্ট হাউস অফ কমন্সের নেতা, জিলিয়ান কিগান শিক্ষামন্ত্রী, নাদিম জাহাউই কনজারভেটিভ পার্টির চেয়ারম্যান, কেমি ব্যাডেনোচ বাণিজ্যমন্ত্রী, মেল স্ট্রাইড কর্ম ও পেনশন বিষয়ক মন্ত্রী, মিশেল ডনেলান সংস্কৃতি মন্ত্রী, থেরেসি কফি পরিবেশ মন্ত্রী, সাইমন হার্ট চিফ হুইপ, মার্ক হারপার পরিবহন মন্ত্রী, টম টুগেনধাত নিরাপত্তা মন্ত্রী এবং রবার্ট জেনরিক অভিবাসন মন্ত্রী।

ব্রিটেনের বিরোধীদলগুলো সুনাককে স্বাগত জানায়নি। তারা দেশে সাধারণ নির্বাচনের দাবি তুলেছে। কিন্তু সে দাবি প্রত্যাখ্যান করেছেন সুনাক।

ঋষি সুনাক এমন এসময় প্রধানমন্ত্রী হলেন যখন ব্রিটেন কয়েক দশকের মধ্যে সবচেয়ে গুরুতর অর্থনৈতিক সমস্যায় আক্রান্ত। স্থবির প্রবৃদ্ধি, ১০ শতাংশের বেশি মৃদ্রাস্ফীতি, ইউক্রেন যুদ্ধ, কোভিড মহামারি ও ব্রেক্সিটের কারণে ব্রিটেনের অর্থনীতি দুর্বল হয়ে পড়েছে। তার সাথে যোগ হয়েছে সরকারের অস্থিতিশীলতা।

এ কারণে লেবার পার্টি ও লিবারেল ডেমোক্র্যাটিক পার্টিসহ ব্রিটেনের বিরোধীদলগুলো বলছে, ব্রিটেনের সমস্যার সমাধান প্রধানমন্ত্রী বদল করে হবে না, তারা দাবি করছেন নতুন সাধারণ নির্বাচন।

তবে অনেকেই বলছেন, প্রধানমন্ত্রী হিসাবে একজন অশ্বেতাঙ্গ এবং অভিবাসী পরিবারের সন্তানকে নির্বাচন স্পষ্ট ইঙ্গিত দিচ্ছে যে, ব্রিটেনের সমাজ এবং রাজনীতিতে এক মৌলিক পরিবর্তনের সূচনা হয়েছে।

এদিকে ইউক্রেনের জন্য সাহায্য অব্যাহত রাখার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী সুনাক। তিনি বলেন, ভ্লাদিমির পুতিনের কারণে সারা বিশ্বের জ্বালানির বাজার এবং পণ্য সরবরাহ ব্যবস্থা অস্থিতিশীল হয়ে উঠেছে।

লিঙ্গ কীভাবে মোটা করবেন লিঙ্গ-মোটা- Dr. Sheuly Chowhan

অন্যদিকে ক্রেমলিন বলছে, সুনাকের প্রধানমন্ত্রিত্বের সময় ব্রিটেনের সাথে রাশিয়ার সম্পর্ক উন্নয়নের কোন সম্ভাবনা নেই। তবে চীন বলেছে ব্রিটেনের সাথে সম্পর্ক ভালো হওয়া সম্ভব বলে তারা আশা করে। যদিও এর আগে চীনকে ব্রিটেনের নিরাপত্তার জন্য এক নম্বর হুমকি বলে বর্ণনা করেছিলেন সুনাক।

প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব নিয়ে ১০ নম্বর ডাউনিং স্ট্রিটে আসার ঘণ্টার মধ্যেই মন্ত্রিসভা গঠনের কাজ শুরু করেছেন নতুন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক। লিজ ট্রাসের মন্ত্রিসভার কেউ কেউ তাতে স্থান পেয়েছেন।

অনেক জায়গাতেই এসেছেন নতুন মুখ বা দায়িত্বে হয়েছে রদবদল। বাদ পড়লেন যারা, তাদের মধ্যে প্রধানমন্ত্রী ঋষি নতুন মন্ত্রিসভা ঘোষণার আগেই পদত্যাগ করেন ব্যবসামন্ত্রী জ্যাকব রিস-মগ এবং বিচারমন্ত্রী ব্র্যান্ডন লুইস।

এরপর একে একে সরে দাঁড়ান শিক্ষামন্ত্রী কিট ম্যালথাস, ওয়েলস বিষয়ক মন্ত্রী রবার্ট বাকল্যান্ড, পরিবেশমন্ত্রী রনিল জয়াবর্ধনে এবং লেভেলিং আপ মন্ত্রী সাইমন ক্লার্ক।

পদত্যাগ করেছেন কর্ম ও পেনশন প্রতিমন্ত্রী ক্লোয়ি স্মিথ এবং উন্নয়ন প্রতিমন্ত্রী ভিকি ফোর্ডও। কনজারভেটিভ পার্টির চেয়ারম্যান জেক বেরি নিজের পদ থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন। পদত্যাগ করেছেন ব্রিটিশ পার্লামেন্টের চিফ হুইপ ওয়েন্ডি মর্টন।

 

 

Leave a Reply