কথা বলার জড়তা কাটাতে

অনেক মানুষের মাঝে কথা বলতে গিয়ে হাত ঘামে, গলা কাঁপে? রয়েছে সহজ সমাধান। মঞ্চে কিংবা কোনো অনুষ্ঠানে অনেক মানুষের মাঝে কথা বলতে গিয়ে হাঁটু কাঁপতেই পারে। হাত ঘামা, বুক ধড়ফড়, গলা কাঁপা, কথা আটকে যাওয়া ইত্যাদিসহ আরও নানান অভিজ্ঞতার স্বাদ নিতে হয় প্রথমবার কয়েকবার। কারও আবার গলার আওয়াজ পাল্টে যায়। বিজ্ঞানও বলে এসময় শরীর বাড়তি চাপ অনুভব করে যার কারণে স্বরতন্ত্র প্রভাবিত হয়। এই ধরনের পরিস্থিতিতে সচরাচর শ্বাস-প্রশ্বাস ও গলার স্বরে পরিবর্তন দেখা যায়। মানুষের শরীরের গঠনও এখানে অনেকটা দায়ী। চিকিৎসাবিজ্ঞানের তথ্যানুসারে স্বাস্থ্যবিষয়ক একটি ওয়েবসাইটে এই বিষয়ের ওপর প্রকাশিত প্রতিবেদনে জানানো হয়, ‘ভোকাল ফোল্ডস’ নামক এক ধরনের ত্বক-কোষ আমাদের বায়ুনালী পরিবেষ্টিত রাখে। যার কাজ হল এমন বিপজ্জনক পরিস্থিতি মোকাবিলা করা। যেমন শ্বাস-প্রশ্বাসের সমস্যা, বাতাসে চাপ, মানসিক চাপ এবং শ্বাস-প্রশ্বাসের সঙ্গে ফুসফুসে পানি নিয়ে নেওয়া থেকে সুরক্ষা দেয় এই ‘ভোকাল ফোল্ড’। জনসমাগমে কিছু বলতে গিয়ে যখন প্রচণ্ড চাপ অনুভব করলে স্বরতন্ত্রী সক্রিয় হয়। ‘ফাইট অর ফ্লাইট রেসপন্স’ অর্থা ‘মার কিংবা মর’ এই ধরনের পরিস্থিতিতে স্বরতন্ত্রীর চারপাশের পেশি সঙ্কুচিত হয়ে, হয় খুলে যেতে কিংবা বন্ধ হতে চাপ প্রয়োগ করে।

ফলে কথা বলা ও গলার স্বর প্রভাবিত হয়। যে কারণে কথা আটকে যায়, বলতে কষ্ট হয়, যা আরও মানসিক চাপ বাড়ায়। এই কারণে শরীর কাঁপে, ঘামতে থাকে। চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় এই পরিস্থিতিকে বলা হয় ‘স্প্যাজমোডিক ডিসফোনিয়া’। গলা কাঁপার কারণেও কথা বলায় সমস্যা দেখা দেয়। যে কারণে মানুষের আত্মবিশ্বাস কমে যায় এবং মানসিক অস্বস্তিজনীত সমস্যাগুলোও অনুভূত হতে শুরু করে। কারও ক্ষেত্রে এই সমস্যা অত্যন্ত গুরুতর হয়, কথা আটকে যেতে পারে প্রতিটি শব্দে। এই সমস্যাগুলো পুরোপুরি মানসিক নয়। করণীয় বিশেষজ্ঞরা এই সমস্যা এড়ানোর জন্য সহজ একটি অনুশীলন করার পরামর্শ দেন, যা আত্মবিশ্বাস বাড়াতে সাহায্য করে।

মাইক্রোসফট কিভাবে তৈরি হলো? মাইক্রোসফটের অজানা ইতিহাস

অনুশীলনটি হল যে কোনো এক হাতের তর্জনী মুখের কয়েক ইঞ্চি দুরে ধরে রাখতে হবে। এবার একটি লম্বা দম টানতে হবে। দম যখন ঠেলে বেরিয়ে আসতে চাইবে তখন দম ছাড়ার সময় পাঁচ থেকে ১০ সেকেন্ড সময় ধরে ‘উহ হু’ শব্দটি করতে হবে। সাধারণ সময় ছাড়াও জনসম্মুখে দাঁড়ানোর আগে তিন থেকে চার বার এই অনুশীলন করতে পারেন। অনুশীলনটির বর্ণণা শুনতে খামখেয়ালি মনে হলেও এর মাধ্যমে স্বরতন্ত্রী খুলে যাবে। আর লম্বা শ্বাস-প্রশ্বাসের কারণে ‘ভোকাল ফোল্ড’ শিথিল হবে। কথার বলার জড়তা কমবে, বায়ু চলাচল সুগম হবে, কণ্ঠ হবে বলিষ্ঠ। কথা বলার সময় জড়তা দেখা দিলে সেখানেও লম্বা দম নেওয়া উপকারী হবে। এতে হৃদস্পন্দন মন্থর হবে।

কথা বলার সময় কারো কারো উচ্চারণে সমস্যা হয়। এমনিতে হয়তো ঠিকই আছে তবে দ্রুত কথা বলতে গেলে আটকে যান কেউ কেউ। কারো আবার নির্দিষ্ট কোন কোন শব্দ উচ্চরণে সমস্যা হয়। এটি খুব জটিল কোনো সমস্যা নয়। একটু সচেতন হলেই এ থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব। এর জন্য প্রয়োজন কিছু ব্যায়ামের। ব্যায়ামগুলো মুখের। কীভাবে করবেন? চলুন জেনে নেয়া যাক- জিহ্বার ব্যায়াম:

মাইক্রোসফ্ট অফিস MS Office এর কাজ কি ?

১. একটি পরিষ্কার কাঠপেন্সিল মুখে নিন। দুই পাটির দাঁত দিয়ে সমান্তরালভাবে কামড়ে ধরে পড়া শুরু করুন, যতক্ষণ আপনার ভালো লাগে।

২. জিহ্বাকে সামনের দিকে টান টান করবেন, যতটা পারা যায়।

৩. ভেতরের দিকে টেনে নিয়ে যান, যতটা সম্ভব।

৪. মুখ হা করে জিহ্বাকে টান টান করে চারিদিকে ঘুরাতে থাকুন। প্রথমে ঘড়ির কাটার দিকে কিছুক্ষণ। পরে ঘড়ির কাটার বিপরীতে কিছুক্ষণ।

৫. মুখ বন্ধ করে চারিদিকে জিহ্বাকে ঘুরাতে থাকুন। প্রথমে ঘড়ির কাটার দিকে কিছুক্ষণ। পরে ঘড়ির কাটার বিপরীতে কিছুক্ষণ।

৬. জিহ্বাকে চুইংগাম-এর মত চিবোতে থাকুন। ডানে বায়ে ঘুড়িয়ে। যতক্ষণ ভাললাগে।

৭. জিহ্বাকে মুখের বাইরে তড়িৎ গতিতে ছুড়ে মারুন। এভাবে করতে থাকবেন কিছুক্ষণ।

৮. মুখ হা করুন, যত বড় করা যায়।

৯. মুখ গোল করে ঘড়ির কাঁটার দিকে এবং ঘড়ির কাঁটার বিপরীত দিকে ঘুরান। এভাবে প্রতিদিন কয়েকবার করে করবেন।

মুখের জড়তা দূর করার উপায় মুখের জড়তা দূর করার বাক্য, মুখের জড়তা কেন হয় কথা বলতে কষ্ট হওয়ার কারণ ,মুখের জড়তা দূর করার দোয়া মুখের জড়তা দূর করার, ঔষধ উচ্চারণ শুদ্ধ করার উপায়, মনের জড়তা দূর করার উপায়

Leave a Reply