Deprecated: Function WP_Dependencies->add_data() was called with an argument that is deprecated since version 6.9.0! IE conditional comments are ignored by all supported browsers. in /home/amadersa/public_html/wp-includes/functions.php on line 6131
কাঁচা হলুদের উপকারিতা ও অপকারিতা, কাঁচা হলুদ ও মধু খাওয়ার উপকারিতা,

রোগ নিরাময়ে হলুদের প্রয়োগ, ভেষজ উপকারিতা ও সতর্কতা

হলুদ অলৌকিক ভেষজ খাদ্যের মধ্যে খুবই সুপরিচিত নাম । যা সুদূর প্রাচীনকাল থেকেই ব্যবহার হয়ে আসছে । হলুদ এর সক্রিয় উপাদান হল মধ্যে Curcumin। যা শুধু তক নয়,  বহুদিন ধরে এই মসলা তার ভেষজ বৈশিষ্ট্যের জন্য, ঔষধি হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে।

স্বাস্থ্যকর ভেষজ হলুদকে কেউ কেউ ‘ঔষধি ভেষজ’ নামে আখ্যায়িত করেন। শুধুমাত্র ভেষজ হলুদ দিয়েই রোগ নিরাময়ে বহুমাত্রিক ব্যবহার সম্ভব। নিম্নে সংক্ষেপে হলুদের রোগ নিরাময়ে হলুদের প্রয়োগ, ভেষজ উপকারিতা ও সতর্কতা তুলে ধরা হলো:-

রোগ নিরাময়ে হলুদের প্রয়োগ, ভেষজ উপকারিতা ও গুনাগুন:

শুধু মসলা কিংবা প্রসাধনে নয়, বিভিন্ন রোগের চিকিৎসাতেও হলুদের ব্যবহার হয়ে আসছে প্রাচীন কাল থেকে। ভেষজবিদের মতে, দেশে যতগুলো ওষুধি মূল আছে তার মধ্যে হলুদ খুবই সহজলভ্য। নিম্নে রোগ নিরাময়ে হলুদের  প্রয়োগ, ভেষজ উপকারিতা ও গুনাগুন সমূহ তুলে ধরা হলো।

ক্যান্সার প্রতিরোধে : এক আধুনিক গবেষণায় জানা গেছে, কাঁচা হলুদের কারকামিন নামক উপাদানের ক্যান্সার নিরোধী ক্ষমতা আছে। কারকামিন টিউমারের কোষকে বৃদ্ধিপ্রাপ্ত হতে বাধা প্রদান করে থাকে। প্রতিদিন অন্তত ২ বা এক টুকরা কাঁচা হলুদ খেলে উপকার পাবেন। হলুদ ক্যান্সার থেকে মুক্তির প্রাকৃতিক অন্যতম উপায়-গুলোর মধ্যে একটি।

Read more: রসুনের উপকারিতা ও ক্ষতিকর দিক সমূহ | কাঁচা রসুনের উপকারিতা

পেটের ক্রিমি দূর করতে : হলুদ ক্রিমিনাশকারী মহা ঔষধ। ছোটদের জন্য ১৫ ফোঁটা আর বড়োদের জন্য ২০ ফোঁটা কাঁচা হলুদের রস ছেঁকে নিয়ে তাতে সামান্য লবণ মিশিয়ে সকালে খালিপেটে ৭ দিন খেলে উপকার পাবেন।

লিভার বা যকৃতের দোষে : নিয়মিত ১ মাস ১ চামচ কাঁচা হলুদের রস (শিশুদের জন্য ৫-৬ ফোঁটা) সামান্য চিনি অথবা মধুসহ খেতে হবে ।

চুলকানি, অ্যালার্জি বা আমবাতে : অনেক সময় দেহের অনেক জায়গায় চাকা চাকা হয়ে ফুলে উঠে, চুলকায়, লাল বা গোলাপি রঙ ধারণ করে। এ ক্ষেত্রে কাঁচা হলুদ শুকানো গুঁড়া ২ ভাগ, নিমপাতার গুঁড়া ১ ভাগ এবং শুষ্ক আমলকী গুঁড়া ৩ ভাগ একসঙ্গে মিশিয়ে ১ গ্রাম মাত্রায় সকালে খালি পেটে ২ সপ্তাহ খেলে দ্রুত নিরাময় হয়। কাঁচা হলুদ ও নিমপাতা বেটে একসঙ্গে কয়েক ফোঁটা সরিষার তেল মিশিয়ে গোসলের পূর্বে শরীরে লাগিয়ে কিছুক্ষন অপেক্ষা করে ৩-৪ দিন নিয়মিত গোসল করলেই চুলকানি দূর হবে।

প্রমেহ রোগ নিরাময়ে: প্রস্রাবের জ্বালাপোড়া ও সঙ্গে পুঁজের মতো লালা নির্গত হলে, কাঁচা হলুদের রস ১ চা-চামচ একটু মধু অথবা চিনি মিশিয়ে ২-৩ সপ্তাহ নিয়মিত খেতে হবে। এর দ্বারা আরও অন্যান্য প্রকার প্রমেহ রোগেরও উপশম হয়ে থাকে।

গায়ের রঙ উজ্জ্বল করতে : নিয়মিত সপ্তাহে অন্তত ৩-৪ দিন কাঁচা হলুদ, নিমপাতা ও কমলালেবুর খোসা একসঙ্গে পানি দিয়ে বেটে গায়ে মেখে ১ ঘণ্টা পর ধুয়ে ফেলতে হবে। এতে গায়ের রঙ উজ্জ্বল হবে এবং চর্ম রোগ প্রতিরোধ করবে।

মুখের রঙ উজ্জ্বল্য করতে : হলুদের অপর নাম ‘হরিদ্রা’; অন্য নাম ‘বর্ণ বিধারণী’। মুখের সুন্দোর্য বাড়াতে মসুর ডাল ও কাঁচা হলুদ বেটে দুধের সর মিশিয়ে মুখে ও হাতে লাগাতে হবে এবং ২ ঘণ্টা পর ধুয়ে ফেলতে হবে। এভাবে ১ মাস ব্যবহার করলে অনেক উপকার পাবেন।

ব্রণ দূর করতে: নিয়মিত সকালে খালি পেটে ২ টুকরো কাঁচা হলুদ ও ২টা নিমপাতা একসঙ্গে (আখের গুড়সহ) মিশিয়ে খেলে ব্রণ সেরে যায় সাথে দেহের রঙও উজ্জ্বল হয়।

তোতলামি দূর করতে : অনেকের ছোটবেলায় কথা আটকে যায় আবার অনেকের তাড়াতাড়ি কথা বলার জন্য তোতলামি দেখা দেয়। এক্ষেত্রে কাঁচা হলুদ ভালোভাবে রোদে শুকিয়ে গুঁড়া করে ১ চামচ পরিমাণ নিয়ে ১ চামচ ঘিয়ে ভেজে সারা দিনে ২-৩ বার নিয়মিত ভাবে খেলে অনেক উপকার পাওয়া যাবে।

শরীরের দাগ উঠাতে : নিয়মিত কয়েক দিন কাঁচা হলুদ ও নিমপাতা একত্রে বেটে লাগালে শরীলে হাম বসন্ত বা চুলকানির দাগ উঠে যাবে ও শরীরের রঙ ফর্সা হবে।

স্বর ভঙে : অনেক সময় আমাদের গলা বসে স্বর রুদ্ধ হয়ে যায়। এতে ২ গ্রাম পরিমাণ হলুদ গুঁড়া ও  চিনি মিশিয়ে একটু গরম করে শরবত বানিয়ে ১ ঘণ্টা পরপর ৪-৫ বার খেলে চমৎকার উপকার পাওয়া যায় ।

চোখ উঠা দূর করতে : হটাৎ করে ওঠা দেখা যায়। এ সময় হলুদ থেঁতো করে পানিতে ভিজিয়ে ছেঁকে নিয়ে ওই রস দিয়ে চোখ ধুতে হবে এবং ওই রসে ছোপানো ন্যাকড়ায় চোখ মুছতে থাকলে চোখের লালাও কেটে যাবে এবং চোখ তাড়াতাড়ি ভালো হয়ে যাবে।

জোঁক ধরলে : গ্রামে অনেক সময় জোঁকে ধরার গটনা দেখা যায়। উল্লেখ্য, জোঁক গায়ে কামড় বসানোর সময় হায়াসিন নামক হরমোন প্রয়োগ করে যাতে করে রক্ত বন্ধ না হয়। এ সময় জোঁকের মুখে হলুদ গুঁড়া দিলে সঙ্গে সঙ্গে জোঁক পড়ে যাবে এবং রক্ত বন্ধ হয়ে যাবে।

যকৃত ও হৃৎপি-কে রক্ষা করতে : এক গবেষণায় জানা গেছে, হলুদের রয়েছে রক্ত জমাটবিরোধী উপাদান, যা রক্তনালির ভেতরের রক্ত জমাট বাধাদান করে। হলুদ রক্তের কোলস্টেরলের মাত্রা কমাতে খুবই গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখে। যাদের কোলেস্টেরলের মাত্রা খুব বেশি তারা অবশ্যই প্রত্যহ সকালে দুই টুকরো কাঁচা হলুদ খাবেন।

অতিরিক্ত পানি পিপাসায় : অনেকের অতিরিক্ত পানি পিপাসা হয়ে থাকে। এ সময়  ৫-৭ গ্রাম কাঁচা হলুদ থেঁতো করে পরিমাণ মতো পানিতে ৫-১০ মিনিট সেদ্ধ করতে হবে, এরপর ছেঁকে নিয়ে সেই পানিতে অল্প চিনি মিশিয়ে ১ চামচ করে কয়েকদিন মাঝে মাঝে খেলেই এ সমস্যা দূর হবে।

ফাইলোরিয়া বা গোদ রোগে : এটি মশাবাহিত পরজীবী দ্বারা এ রোগ ছড়ায়। এ সময় কাঁচা হলুদের রস ১ চামচ ও সমপরিমাণ আখের (ইক্ষু) গুড় মিশিয়ে প্রায় ১৫ দিন নিয়মিত ভাবে খেতে হবে। ফাইলোরিয়া বা গোদ রোগে দূর হবে।

পেটের গোলমালে : ১ টেবিল-চামচ হলুদ গুঁড়া; ১ চা-চামচ সরিষার তেল, একটি মাঝারি আকারের পেঁয়াজ ও প্রয়োজনমতো লবণ একত্রে ভাজি করতে হবে। গরম ভাতের সঙ্গে তৃপ্তি সহকারে খেতে হবে। প্রয়োজনে আরও একবার খেতে হবে। অন্য কোনো তরকারি খাওয়া চলবে না। এতেই পেটের গোলমাল চলে যাবে। এক গবেষণায় দেখা গেছে যে, হলুদ প্রোটোজোয়া নামক এককোষী পরজীবীর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে পারে।

হলুদের প্রয়োগ বা ব্যাবহারে সতর্কতাঃ

যাদের লিভারে সমস্যা আছে বা লিভারের রোগ হওয়ার ঝুঁকি আছে তারা ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী হলুদ খাবেন। বেশি হলুদ গ্রহণ তাদের জন্য বড় ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। ল্যাক্টোস ইনটলারেন্ট হলে দুধের সঙ্গে হলুদ মিশিয়ে খাওয়া যাবে না। সে ক্ষেত্রে দুধ বাদ দিয়ে মধু, সয়া দুধ অথবা শুধু হলুদ অল্প পরিমাণে খেতে পারেন। দুরারোগ্য কোনো লিভারের অসুখ হলে হলুদ যতটা পারা যায় এড়িয়ে চলতে হবে এবং চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। শরীরের ত্বকে সহ্য না হলে হলুদের ব্যবহার করা থেকে দূরে থাকুন। একাধারে দীর্ঘদিন কাঁচা হলুদ না খেয়ে মাঝে মধ্যে বিরতি দিতে হবে। মনে রাখবেন, অতিরিক্ত হলুদ স্বাস্থ্যের জন্য ভালো নয়।

আমাদের হলুদ নিয়ে পোস্টি বিভিন্ন স্বাস্থকর ওয়েবসাইট, উইকিপিডিয়া ও ইন্টারনেট থেকে নেওয়া।  পোস্টি উপকারী মনে হলে আপনার বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করবেন। হলুদের ব্যবহার সম্পর্কে কোনো প্রশ্ন থাকলে কমেন্টে মন্তব্য করবেন।

Read more: বিভিন্ন রোগ নিরাময়ে লেবু খাওয়ার উপকারিতা ও ব্যবহার

 

 

 

 

কাঁচা হলুদের উপকারিতা ও অপকারিতা, কাঁচা হলুদ ও মধু খাওয়ার উপকারিতা, মুখে কাঁচা হলুদের উপকারিতা, শুকনো হলুদের উপকারিতা, রূপচর্চায় দুধ ও কাঁচা হলুদের ব্যবহার, হলুদ বেশি খেলে কি হয়, হলুদের উপকারিতা ও খাওয়ার নিয়ম, চুন হলুদের উপকারিতা,

কাঁচা হলুদের অপকারিতা, নিমপাতা ও কাঁচা হলুদের উপকারিতা, দুধ হলুদের উপকারিতা, হলুদের উপকারিতা ও খাওয়ার নিয়ম, শুকনো হলুদের উপকারিতা, কালো হলুদের উপকারিতা, চুন হলুদের উপকারিতা, কাঁচা হলুদ ও মধু খাওয়ার উপকারিতা

Leave a Reply