কিশিমিশের পানি খেলে যে উপকার পাবেন | খালি পেটে পানি খাওয়ার ৯ উপকারিতা

কিশমিশের পানি – রক্তস্বল্পতায় কিশমিশ যে উপকারী, সেটা অনেকেই জানেন। কারণ, কিশমিশ শরীরে নতুন রক্ত তৈরি করে। কিন্তু, এটা জানা আছে কি, আপনার লিভার বা যকৃত্ পরিষ্কার করতেও কিশমিশের জুরি নেই? হ্যাঁ, নিয়মিত কিশমিশের পানি লিভার সাফ হয়।

গবেষণায় দেখা গিয়েছে, কিশমিশের পানি খেলে লিভারে জৈব রাসায়নিক প্রক্রিয়া শুরু হয়। যার দরুন শরীরের অভ্যন্তরে দ্রুত রক্ত পরিশোধন হতে থাকে। অন্তত টানা চার দিন কিশমিশের পানি পান করলে, পেট একদম পরিষ্কার হয়ে যাবে। পেটের গন্ডগোল থাকবে না। সেইসঙ্গে ভরপুর এনার্জি পাবেন। অনেক ডাক্তারও রোগীকে ওষুধের পাশাপাশি কিশমিশ প্রেসক্রাইব করেন। কারণ, কিশমিশ হার্টকে ভালো রাখে। সেইসঙ্গে শরীরের পক্ষে ক্ষতিকারক যে কোলেস্টেরল রয়েছে, তা দূর করে।

কিশমিশে রয়েছে নানা ধরনের ভিটামিন ও মিনারেল। কিশমিশ না-খেয়ে শুধু কিশমিশের পানি খেলেও সেই ভিটামিন ও মিনারেল শরীরে ঢোকে। পানিতে ভেজানোর আর একটা কারণ শর্করার মাত্রা কমে। রক্ত পরিষ্কার করতে কিডনির পাশাপাশি লিভারকেও ভালোভাবে কাজ করতে হবে। তাই লিভার ও কিডনির সমস্যা হলে, ক্ষতিকারক পদার্থ শরীরে জমতে শুরু করে আমাদের অসুস্থ করে তোলে। তাই লিভার ও কিডনিকে সবসময় চাঙ্গা রাখতে হবে। কিশমিশ ভেজানো পানি সেই কাজটাই ভালোভাবে করে। যার দরুণ হজমশক্তিও বাড়ে।

যেভাবে কিশমিশের পানি তৈরি করবেনঃ

২ কাপ পানি (৪০০ এমএল) ও ১৫০ গ্রাম কিশমিশ লাগবে। কী ধরনের কিশমিশ কিনছেন, সেটা খুব গুরুত্বপূর্ণ। খুব চকচক করছে, এমন কিশমিশ কিনবেন না। তাতে কেমিক্যাল মেশানো থাকে। চেষ্টা করুন গাঢ় রঙের কিশমিশ কিনতে। তা-ও এমন কিশমিশ নিতে হবে, যা খুব শক্তও না আবার একদম নরম তুলতুলেও না।

কিশমিশগুলোকে ভালো করে কয়েক বার ধুয়ে নিন। এরপর একটি পাত্রে দু-কাপ পানি দিয়ে রাতভর কিশমিশ ভিজিয়ে রাখুন। সকালে কিশমিশ ছেকে নিয়ে, সেই পানিটা হালকা গরম করে সকালে খালি পেটে খেয়ে নিন। ৩০ থেকে ৩৫ মিনিট অন্য কিছু খাবেন না।

কিশিমিশের

পানির অপর নাম জীবন। টিকে থাকতে প্রত্যেক জীবের পানি গ্রহণ অত্যাবশ্যক। যখন আমরা তৃষ্ণার্ত হই বা ঝালজাতীয় খাবার গ্রহণের পর তৎক্ষণাৎ এক গ্লাস পানি খুঁজি। শরীরের বর্জ্য বের হতে, শরীরের তাপমাত্রা রক্ষায়, সংবেদনশীল টিস্যু সুরক্ষাসহ বহু কারণে পানি দরকার।

কিন্তু, আপনি কি জানেন, খালি পেটে পানি পান করলে কী স্বাস্থ্য উপকারিতা মেলে? ভারতের জীবনধারা ও স্বাস্থ্যবিষয়ক ওয়েবসাইট বোল্ডস্কাইয়ের এক প্রতিবেদনে এ সম্পর্কে বিস্তারিত বলা হয়েছে। আসুন, এক ঝলকে দেখে নিই—

ঘুম থেকে ওঠার পর শরীরের রিহাইড্রেশনের জন্য পানি দরকার। কারণ, রাতে আপনি যখন ঘুমান, ছয় থেকে আট ঘণ্টা আপনার শরীর পানি পায় না। তাই ঘুম থেকে উঠে এক গ্লাস পানি পান করলে শরীর রিহাইড্রেট হবে।

ওজন কমায়
পানি ও ওজন কমার মধ্যে সম্পর্ক রয়েছে। খালি পেটে পানি পান বিপাকক্রিয়ার উন্নতি সাধন করে। ফলে ওজন কমে।

দূষিত পদার্থ বের করে

সকালে খালি পেটে পানি খেলে শরীর থেকে দূষিত পদার্থ বের হয়ে যায়। বর্জ্য বের করতে কিডনির পানি দরকার হয়। পানি খেলে প্রস্রাবের সঙ্গে বর্জ্য বের হয়ে যায়।

ক্যালোরি কমায়
নাশতা খাবার আগে পানি পান করলে ক্যালোরি কমাতে সাহায্য করে। পানি পানের কারণে পেট ভরা অনুভব হয়, এতে অতিরিক্ত খাবার গ্রহণ হয় না। সকালে নাশতা খাওয়ার ৩০ মিনিট আগে পানি পান করুন।

মানসিক স্বাস্থ্যে
ঘুম থেকে উঠে এক গ্লাস পানি পান করলে তা মানসিক বিকাশে সাহায্য করে। যেমন—স্মরণশক্তি বাড়ে, নতুন কিছু শেখা বাড়ে।

হজমে সহায়তা
সকালে ঘুম থেকে উঠে হালকা গরম পানি খেলে তা হজমে সাহায্য করবে। গরম পানি খাদ্য উপাদানকে ভাঙতে সাহায্য করে। এভাবে হজমপ্রক্রিয়ার উন্নতি হয়।

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়
খালি পেটে পানি খেলে শরীরের সংক্রমণের বিরুদ্ধে লড়াই করে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। বর্জ্য ও অন্যান্য ব্যাকটেরিয়া দূর করতে সাহায্য করে পানি, যা থেকে সংক্রমণ ও অসুস্থতা হয়।

ভেতরের অঙ্গকে সুস্থ রাখে
খালি পেটে পানি পান করলে শরীরের অভ্যন্তরের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ সুস্থ থাকে। শরীরের লিম্ফ্যাটিক সিস্টেমকে উন্নত করে এবং শরীরের তরলে ভারসাম্য আনে।

ত্বক উজ্জ্বল করে
সকালে খালি পেটে পানি পান করলে ত্বকের স্বাস্থ্য ভালো থাকে। এতে ব্রণ কমে। ত্বকের শুষ্কভাব দূর করে আর্দ্রভাব এনে দেয়।

শক্তি জোগায়
সকালে পানি পান করলে তাৎক্ষণিকভাবে শক্তির মাত্রা বাড়ে। কারণ, সকালে যদি আপনার শরীর ডিহাইড্রেটেড থাকে, তাহলে আপনি ক্লান্তিবোধ করবেন।

সকালে ঘুম থেকে উঠে চার গ্লাস পানি পান করা দরকার। কিন্তু প্রথম দিকে যদি কঠিন মনে হয়, তাহলে এক গ্লাস পানি দিয়ে শুরু করতে পারেন। ধীরে ধীরে পানির পরিমাণ বাড়ান।

কিশমিশ ভেজানো পানি তৈরি করতে লাগবে ২ কাপ পানি ও ১৫০ গ্রাম কিশমিশ। কিশমিশগুলোকে ভালো করে কয়েকবার ধুয়ে নিন। এরপর একটি পাত্রে দুই কাপ পানি দিয়ে রাতভর কিশমিশ ভিজিয়ে রাখুন। সকালে কিশমিশ ছেকে নিয়ে সেই পানিটা হালকা গরম করে সকালে খালি পেটে খেয়ে নিন। ৩০ থেকে ৩৫ মিনিট অন্য কিছু খাবেন না।

কিশমিশে রয়েছে নানা ধরনের ভিটামিন ও মিনারেল। কিশমিশ না খেয়ে শুধু কিশমিশের পানি খেলেও সেই ভিটামিন ও মিনারেল শরীরে ঢোকে। পানিতে ভেজানোর আর একটা কারণ শর্করার মাত্রা কমে। চলুন জেনে নেয়া যাক কিশমিশের আরও কিছু উপকারিতা-

 

রক্তশূন্যতা দূর: রক্তে লৌহের পরিমাণ কম হলে অবসাদ, দুর্বলতা, হতাশায় ভুগতে পারেন, ব্যহত হতে পারে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও। কিশমিশে প্রচুর পরিমাণে লৌহ আছে যা রক্তশূণ্যতার রোগীর জন্য খুব উপকারী। এছাড়া রক্ত ও লোহিত কণিকা তৈরি জন্য দরকার ভিটামিন বি কমপ্লেক্স ও কপার, যা কিশমিশে থাকে।

হাড় ভালো রাখে: অস্টিওপোরোসিস নামক হাড়ের রোগে অনেকেই ভুগে থাকেন। এই রোগ প্রতিরোধ করতে বোরন নামের খনিজ পদার্থ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। আর কিশমিশ বোরনের অন্যতম উৎস। বোরনে রয়েছে ক্যালসিয়াম, ফসফরাস, ম্যাগনেসিয়াম- যা হাড় গঠনের পাশাপাশি শরীরে টেসটোসটেরন এবং ইস্ট্রোজেনের মাত্রা ঠিক রাখতে সাহায্য করে।

 

রক্ত পরিষ্কার করে: রক্ত দূষিত হওয়াকে বলে অ্যাসিডোসিস, যা থেকে আরথ্রাইটিস, চামড়া রোগ, হৃদরোগ এবং ক্যান্সার হতে পারে। অ্যান্টাসিডস হিসেবে পরিচিতি দুটি উপাদান ম্যাগনেসিয়াম এবং পটাশিয়াম শরীরের ক্ষরীয়ভাব স্বাভাবিক করে অ্যাসিডোসিসের হাত থেকে বাঁচায়। আর এই উপাদানগুলো কিশমিশে রয়েছ।

চোখ ভালো রাখে: নিয়মিত কিশমিশ খেলে বৃদ্ধ বয়সে দৃষ্টিহীন হওয়ার সম্ভবনা কমে যায়। পাশাপাশি কিশমিশে থাকা পলিফেনল উপাদান ক্ষতিকারক ফ্রি-রেডিকেলস ধ্বংস করে চোখকে বিভিন্ন রোগ থেকে রক্ষা করে।

 

স্মৃতিশক্তি বাড়ায়: কিশমিশে থাকা বোরন মস্তিষ্কের খাদ্য হিসেবে কাজ করে। তাছাড়া বোরন মনোযোগ বৃদ্ধি, চোখের সঙ্গে হাতের সামঞ্জস্য বাড়ানো ও স্মৃতিশক্তি তীক্ষ্ণ করতে সাহায্য করে। একশ গ্রাম কিশমিশ থেকে ২.২ মিলি গ্রাম বোরন পাওয়া যায়।

রক্তচাপ কমায়: রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করে কিশমিশ। মূলত কিশমিশে থাকা পটাসিয়াম রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করে। সাধারণত উচ্চ মাত্রার সোডিয়াম শরীরে রক্তচাপ বাড়ায়। কিশমিশ শরীরে সোডিয়ামের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে পারে।

গরম পানি খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা, সকালে খালি পেটে লেবু গরম পানি খাওয়ার উপকারিতা, সকালে বাসি মুখে পানি খেলে কি হয়, রাতে বেশি পানি খেলে কি হয়, নিরাপদ পানি কি, পানি বেশি খাওয়ার উপকারিতা,খালি পেটে পানি খাওয়ার ৯ উপকারিতা,পানি উপকারিতা পানি পান

Leave a Reply