কেনেডি পরিবারের ট্র্যাজেডি || Kennedy Family Tragedie

মার্কিন রাজনীতিতে ঐতিহ্যবাহী কেনেডি পরিবারের সদস্যদের অস্বাভাবিক মৃত্যু যেন ভাগ্যের লিখন। ১৯৪০-এর দশক থেকেই কঠিন রোগ আর দুর্ঘটনাজনিত মৃত্যুর পাশাপাশি রাজনৈতিক হত্যাকান্ডের শিকার হয়ে মারা গেছেন যুক্তরাষ্ট্রের এই ঐতিহ্যবাহী রাজনৈতিক পরিবারের অনেক সদস্য। যুক্তরাষ্ট্রের ৩৫তম প্রেসিডেন্ট জন এফ কেনেডি নিজেও ১৯৬৩ সালের ২২ নভেম্বর প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের মাত্র তিন বছরের মাথায় আততায়ীর গুলিতে প্রাণ হারান।  তাঁর ছোট ভাই রবার্ট এফ কেনেডিও ১৯৬৮ সালে প্রেসিডেন্ট পদে মনোনয়ন প্রার্থী হওয়ার পরই আততায়ীর হাতে নিহত হয়েছিলেন। কেনেডি পরিবারের এ দুর্ভাগা পরিণতির কারণে বিশ্বজুড়ে একে ‘কেনেডি ফ্যামিলি কার্স’ বা কেনেডি পরিবারের অভিশাপ নামে ডাকা হয়।  কেনেডি পরিবারের সেসব ট্র্যাজিক ঘটনা নিয়ে আমাদের এ আয়োজন।

পুলিৎজার জয়ী মার্কিন প্রেসিডেন্ট
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ৩৫তম প্রেসিডেন্ট জন এফ কেনেডি ১৯১৭ সালের ২৯ মে ম্যাসাচুসেটসের ব্রুকলিনে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৬১ থেকে ১৯৬৩ সালের ২২ নভেম্বর আততায়ীর গুলিতে নিহত হওয়ার আগ পর্যন্ত তিনি যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট পদে ছিলেন। তাঁর বাবা জোসেফ প্যাট্রিক কেনেডি এবং মা রোজ ফিটজেরাল্ড। কেনেডির বাবা ছিলেন একজন সফল ব্যবসায়ী। পরবর্তী সময়ে অর্থাৎ ১৯৩৭ থেকে ১৯৪০ সাল পর্যন্ত তিনি ইংল্যান্ডে যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছিলেন। জন এফ কেনেডি তাঁর জীবনের প্রথম ১০ বছর কাটান জন্মস্থান ব্রুকলিনেই। ১৯২৭ সালের সেপ্টেম্বরে সপরিবারে নিউইয়র্ক সিটির রিভারডেলে জন এফ কেনেডির নতুন ঠিকানা হয়। এর দুই বছর পর ব্রোঙ্কসভিলে। ১৯৩৬ সালের সেপ্টেম্বরে হার্ভার্ড কলেজে ভর্তির পর ১৯৪০ সালে কেনেডি গ্র্যাজুয়েশন সম্পন্ন করেন। পরের বছর তিনি ইউএস নেভিতে ইন্টিলিজেন্স অফিসার হিসেবে যোগ দেন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় তিনি গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেন। সম্মুখ সমরে একবার তিনি  মারাত্মক আহত হয়েছিলেন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ১৯৪৫ সালের মার্চে তিনি সামরিক জীবন থেকে অবসর নিয়ে সাংবাদিকতা পেশায় নিযুক্ত হন। মেধাবী কেনেডি অল্প সময়ের মধ্যেই সাংবাদিক হিসেবে ব্যাপক পরিচিতি অর্জন করেন। এর কিছু দিন পর যুক্তরাষ্ট্রের ডেমোক্র্যাটিক দলে যোগ দেন এবং ১৯৪৬ সালে ‘হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভ’ হিসেবে জয়লাভ করেন। পরের দুই বছরের মধ্যেই তিনি যুক্তরাষ্ট্রের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট হ্যারি এস ট্রুম্যানের কাছের মানুষে পরিণত হন। ১৯৫২ সালে কেনেডি সিনেটের সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পর যুক্তরাষ্ট্রের রাজনীতিতে তাঁর অবস্থান আরও সুসংহত হয়ে ওঠে। ক্যারিয়ারের এ উত্থানের প্রাক্কালে ১৯৫৩ সালের ১২ সেপ্টেম্বর জ্যাকুলিন লি বেভিয়ার নামের এক মহিলা সাংবাদিককে বিয়ে করেন কেনেডি। বিয়ের ঠিক পরপরই যুদ্ধের সময়ের পুরনো ব্যথাটি মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে। সেই ব্যথার কারণে দুবার অপারেশন করাতে হয়েছিল তাঁকে। হাসপাতালে চিকিৎসারত অবস্থায় তিনি ‘প্রোফাইলস ইন ক্যারিজ’ নামে একটি বই লেখেন এবং ১৯৫৬ সালে এ বইটির জন্য পুলিৎজার পুরস্কার লাভ করেন।

১৯৬০ সালের ২ জানুয়ারি আনুষ্ঠানিকভাবে ডেমোক্র্যাটিক দল থেকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রার্থী হিসেবে নিজেকে ঘোষণা দেন কেনেডি। ১৯৬০ সালের সেই প্রেসিডেনসিয়াল নির্বাচনে তিনি রিপাবলিকান পার্টির শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বী রিচার্ড নিক্সনকে পরাজিত করে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন। একজন রোমান ক্যাথলিক হিসেবে কেনেডিই ছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম প্রেসিডেন্ট। একমাত্র পুলিৎজার পুরস্কার জয়ী প্রেসিডেন্টও তিনি। বে অব পিগস ইনভেশন [কিউবার ব্যর্থ সামরিক অভিযান], কিউবার মিসাইল সংকট, বার্লিন প্রাচীর নির্মাণ, স্পেসরেস, আফ্রিকান-আমেরিকান সিভিল রাইটস মুভমেন্ট তাঁর সংক্ষিপ্ত শাসনামলের উল্লেখযোগ্য ঘটনাবলি। পাশাপাশি তিনি কম বয়সে যুক্তরাষ্ট্রের  প্রেসিডেন্ট হওয়ার ক্ষেত্রে দ্বিতীয় অবস্থান অর্জন করেন। মাত্র ৪৩ বছর বয়সে কেনেডি যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন। তাঁর আগে থিওডোর রুজভেল্ট ৪২ বছর বয়সে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছিলেন।  প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার মাত্র তিন  বছর পর ১৯৬৩ সালের ২২ নভেম্বর টেক্সাস স্টেটের ডালাসে সরকারি সফরকালে আততায়ীর গুলিতে নিহত হন কেনেডি।

আরও পড়ুন: মহানায়ক উত্তম কুমারের জীবন কাহিনী |

আততায়ীর হাতে খুন

প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার মাত্র তিন বছর পর ১৯৬৩ সালের ২২ নভেম্বর টেক্সাস স্টেটের ডালাসে সরকারি সফরকালে আততায়ীর গুলিতে নিহত হন কেনেডি। জন এফ কেনেডি তাঁর গোপন নিরাপত্তা বাহিনীর এক সদস্যের ছোড়া গুলিতে খুন হন। অস্ট্রেলিয়ার এক অবসরপ্রাপ্ত তদন্ত কর্মকর্তা এমন দাবি করেছেন। কেনেডির জীবনের ওপর নির্মিত তথ্যচিত্র ও প্রামাণ্যচিত্রে সাক্ষাৎকার দেওয়ার সময় এ কথা বলেন অস্ট্রেলিয়ার ওই তদন্ত কর্মকর্তা কলিন ম্যাকলরেন।

‘জেএফকে : দ্য স্মকিং গান’ এবং ‘মরটাল এরর : দ্য শ্যুট দ্যাট কিলড জেএফকে’ শিরোনামে তৈরি প্রামাণ্যচিত্রে এ তথ্যের অবতারণা রয়েছে। কেনেডি হত্যার বিস্ফোরক আলামত নিয়ে লেখা হোয়ার্ড ডোনাহুর বই থেকে তারা দুজনেই একমত যে, জর্জ হিকি নামক এক গোপন নিরাপত্তাকর্মীর ছোড়া গুলিতে মৃত্যু হয় কেনেডির। তবে ওই নিরাপত্তাকর্মী ইচ্ছাকৃতভাবে তাঁকে গুলি করেনি, ভুলবশত গুলিটি গিয়ে তাঁর শরীরে বিদ্ধ হয়। তবে কেনেডির পরিকল্পিত গুপ্তঘাতক হারভে অসওল্ড প্রথম গুলি করেছিল। সেই গুপ্তঘাতককে লক্ষ্য করে কেনেডির নিরাপত্তাকর্মীর ছোড়া গুলিটিও লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়ে কেনেডিকে আঘাত করে। আর এতেই তাঁর মৃত্যু নিশ্চিত হয় বলে ম্যাকলরেনের বিশ্বাস।

রোজমেরি কেনেডি

রোজমেরি কেনেডি [১৩ সেপ্টেম্বর ১৯১৮- ৭ জানুয়ারি, ২০০৫] ছিলেন জোসেফ প্যাট্রিক কেনেডি সিনিয়রের তৃতীয় সন্তান এবং প্রথম মেয়ে। তিনি ছিলেন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট জন এফ কেনেডির প্রথম বোন। মাত্র ২৩ বছর বয়সে ‘প্রি ফ্রন্টাল লোবোটমি’ তাঁকে শারীরিক ও মানসিকভাবে অক্ষম করে দেয়। এ অসুস্থতাকেই কেনেডি পরিবারের প্রথম অভিশাপ মানা হয়। রোজমেরি কেনেডির মৃত্যু ২০০৫ সালে হলেও তাঁর অসুস্থতার ঘটনাটি ঘটে ১৯৪১ সালে। যেটি শেষ পর্যন্ত অক্ষম জীবনের অনেক ভোগান্তি দিয়ে মৃত্যুর কাছে পৌঁছে দেয়।

জোসেফ পি. কেনেডি জুনিয়র

লেফটেন্যান্ট জোসেফ পেট্রিক জো কেনেডি [২৫ জুলাই ১৯১৫- ১২ আগস্ট ১৯৪৪] ছিলেন আমেরিকান নেভির একজন জুনিয়র অফিসার। তিনি মূলত আমেরিকান নেভির বোম্বিং প্লেনের পাইলট ছিলেন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ চলাকালীন তাঁর প্লেনটি ইংলিশ চ্যানেলে পতিত হয় এবং মাত্র ২৯ বছর বয়সে তাঁর মৃত্যু হয়। জোসেফ পি কেনেডি ছিলেন তৎকালীন হবু প্রেসিডেন্ট জন এফ কেনেডির বড় ভাই। মজার ব্যাপার হলো- বাবা জোসেফ প্যাট্রিক কেনেডি সিনিয়র চেয়েছিলেন ভাইদের মধ্যে জো কেনেডিই যেন প্রেসিডেন্ট হন। কিন্তু যুদ্ধ চলাকালীন তাঁর হত্যাকাণ্ডের পর সব আশা-আকাঙ্ক্ষা গিয়ে পড়ল জন এফ কেনেডির ওপর।
প্যাট্রিক বলিভিয়ার কেনেডি

এই মৃত্যুটি অন্য সব মৃত্যুর চেয়ে আলাদা। বলা চলে, এ তালিকায় থাকা ব্যক্তিদের মধ্যে সবচেয়ে অখ্যাত প্যাট্রিক বলিভিয়ার। অবশ্য অখ্যাত হওয়ার পেছনে যথেষ্ট কারণ রয়েছে। যে ছেলেটি পৃথিবীর আলো ভালোমতো দেখতেই পায়নি সে কী করে খ্যাতি অর্জন করবে? এমনটাই ঘটেছিল দুর্ভাগা প্যাট্রিক বলিভিয়ার ভাগ্যে। প্যাট্রিক ছিলেন প্রেসিডেন্ট জন এফ কেনেডির ছেলে। কিন্তু অপরিণত অবস্থায় জন্মগ্রহণ করা প্যাট্রিক মাত্র দুই দিন বয়সে মৃত্যুবরণ করেন। আর ঘটনাটি ঘটেছিল তাঁর বাবার গুপ্ত হত্যার মাত্র তিন মাস আগে।


রবার্ট এফ কেনেডি

চেয়েছিলেন বড় ভাই জন এফ কেনেডির শূন্যস্থান দখল করবেন। আমেরিকার পরবর্তী প্রেসিডেন্ট হওয়ার লড়াইয়ে অনেক দূর এগিয়ে গিয়েছিলেন জন এফ কেনেডির ছোট ভাই রবার্ট এফ কেনেডি। ডেমোক্র্যাটদের হয়ে পরবর্তী প্রেসিডেন্ট হিসেবে মনোনয়ন পেয়েছিলেন রবার্ট এফ কেনেডি। আর ভাইয়ের গুপ্তহত্যা তাঁর জনপ্রিয়তায় সবচেয়ে বেশি সহায়ক হয়েছিল। কিন্তু ভাগ্যের লিখন না যায় খন্ডন। ৪৬ বছর বয়সে লস অ্যাঞ্জেলেসে আততায়ীর গুলিতে প্রাণ হারান তিনিও।


ডেভিড কেনেডি

রবার্ট এফ কেনেডির চতুর্থ ছেলে ডেভিড কেনেডি মাত্র ২৮ বছর বয়সেই পৃথিবীকে বিদায় জানিয়েছেন। তাঁর মৃত্যু হয়েছিল অতিরিক্ত ওষুধ সেবনের কারণে। পাম বিচের একটি হোটেল কক্ষে ওষুধের ওভারডোজের কারণে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন ডেভিড কেনেডি। ফলে আরও একটি ট্র্যাজেডির শিকার হয় কেনেডি পরিবার।
প্যাট্রিক জে কেনেডি

এডওয়ার্ড কেনেডির ছেলে প্যাট্রিক জে কেনেডিও অপঘাতের শিকার। তিনি অবশ্য অন্যদের মতো দুর্ঘটনা বা বড় কোনো আঘাতের শিকার হননি। তিনি কিশোর বয়সেই ড্রাগসে আসক্ত হয়ে পড়েন, যা পরবর্তী সময়ে ভয়ানক আকার ধারণ করে এবং তাঁকে দীর্ঘদিন রিহ্যাব কাটাতে হয়।

এডওয়ার্ড এম কেনেডি

অভিশপ্ত কেনেডি পরিবারের আরেকটি দুর্ভাগ্যের নমুনা এডওয়ার্ড এম কেনেডির দুঃখজনক মৃত্যু। এডওয়ার্ড এম কেনেডি ছিলেন প্রেসিডেন্ট জন এফ কেনেডি ও রবার্ট এফ কেনেডির ভাই। তিনি ম্যাসাচুসেটস অঙ্গরাজ্যের নির্বাচিত সিনেটর ছিলেন। এডওয়ার্ড এম কেনেডির মৃত্যু হয়েছিল গাড়ি দুর্ঘটনায়। চাপ্পাকুইড্ডিক দ্বীপের একটি ব্রিজ থেকে তাঁর গাড়িটি ছিটকে পানিতে পড়ে যায়। ১৯৬৯ সালের ১৮ জুলাই এ ঘটনাটি ঘটে। পরবর্তীতে ডুবে যাওয়া গাড়ি থেকে এডওয়ার্ড এম কেনেডিকে মৃত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। তাঁর মৃত্যুর মধ্য দিয়ে কেনেডি পরিবারের পরপর তিন ভাইয়ের অস্বাভাবিক মৃত্যু হয়। যা তৎকালীন আমেরিকানদের মনে দারুণ দাগ কেটে গিয়েছিল।

আরও পড়ুন: সুচিত্রা সেন শৈশব, ক্যারিয়ার এবং ব্যক্তিগত জীবন | সুচিত্রা সেনের স্মৃতিঘেরা পাবনা

মাইকেল কেনেডি

তিনি ছিলেন রবার্ট এফ কেনেডির ষষ্ঠ সন্তান। রবার্ট এফ কেনেডির অন্যান্য সন্তানের মতো তাঁর ভাগ্যেও স্বাভাবিক মৃত্যু জোটেনি। তিনি পৃথিবীর আলোয় বেঁচে ছিলেন ৩৯ বছর। অন্যদের মতো তাঁর মাঝেও আমেরিকানরা সম্ভাবনা আর আশার আলো খুঁজে পেয়েছিলেন। কিন্তু দুর্ভাগ্য যে পরিবারের নিত্য সঙ্গী, সেই পরিবারের হয়ে কি আর আশার ফুল হয়ে ফোটা যায়? আর তাই আশার ফুল হয়ে ফোটার আগেই ১৯৯৭ সালের ৩১ ডিসেম্বর ৩৯ বছর বয়সে এক দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয় মাইকেল কেনেডির। স্পেনের কোলোতে একটি স্কি ইং এক্সিডেন্টের শিকার হয়ে মৃত্যুবরণ করেন মাইকেল কেনেডি।

উইলিয়াম কেনেডি স্মিথ

কেনেডি পরিবারের দুর্ভাগা তালিকার আরও একটি নাম উইলিয়াম কেনেডি স্মিথ। তবে তাঁর অপঘাতটি নিয়তির নয়। বরং তিনি নিজেই এমন একটি ন্যক্কারজনক কাণ্ড ঘটিয়েছেন যার ফলে কেনেডি পরিবারের রীতিমতো নাক-কান কাটা যাওয়ার অবস্থা হয়েছিল। ঘটনাটি ১৯৯১ সালের। ওই বছরের ডিসেম্বর মাসের ১১ তারিখে পাম বিচে একটা ন্যক্কারজনক ঘটনা ঘটিয়ে বসেন উইলিয়াম কেনেডি স্মিথ। সেখানে তিনি ৩০ বছর বয়সী এক নারীকে ধর্ষণ করেন; যা কেনেডি পরিবারের ঐতিহ্য, শিক্ষা আর আভিজাত্যের সঙ্গে কোনোভাবেই খাপ খায় না।

মেরি রিচার্ডসন কেনেডি

যুক্তরাষ্ট্রের রবার্ট এফ কেনেডির (জুনিয়র) স্ত্রী মেরি রিচার্ডসন কেনেডি (৫২) মারা যাওয়ার পর এটিকে স্বাভাবিক মৃত্যু বলে চাপানোর চেষ্টা করা হলেও পরবর্তী সময়ে জানা যায় নিউইয়র্কের নিজের বাড়িতে তিনি আত্মহত্যা করেছেন। এর মধ্য দিয়ে কেনেডি পরিবারের আরেক সদস্যের ক্ষেত্রেও আরও একটি অপমৃত্যু ঘটল। মাত্র তিন বছর আগে রবার্ট এফ কেনেডির ছোট চাচা টেড কেনেডি মস্তিষ্কের ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন।

টেড কেনেডি

বোনের মৃত্যুর মাত্র দুই সপ্তাহ পর মৃত্যুবরণ করেন এডওয়ার্ড এম টেড কেনেডি। তাঁর মৃত্যুটি অপঘাতে না হলেও স্বাভাবিক ছিল না। তিনি মূলত মস্তিষ্কের ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। তিনি ছিলেন ডেমোক্র্যাটদের আরও একজন বিখ্যাত রাজনীতিক এবং প্রেসিডেন্ট জন এফ কেনেডির সবচেয়ে ছোট ভাই।

জন এফ কেনেডি জুনিয়র

তিনি আমেরিকার ৩৫তম প্রেসিডেন্ট জন এফ কেনেডির একমাত্র ছেলে। জন এফ কেনেডি জুনিয়র [২৫ নভেম্বর ১৯৬০-১৬ জুলাই ১৯৯৯]। বাবার মতো আততায়ীর হাতে নিহত না হলেও জন এফ কেনেডি জুনিয়রের মৃত্যুও সাধারণ ছিল না। তিনি আমেরিকার একজন আইনবিদ, সমাজকর্মী এবং ম্যাগাজিন প্রকাশক হিসেবে খ্যাত ছিলেন। ১৯৯৯ সালের ১৬ জুলাই একটি বিমান দুর্ঘটনায় প্রাণ হারান এই প্রেসিডেন্টপুত্র। একই দুর্ঘটনায় তাঁর স্ত্রী, শ্যালিকাও প্রাণ হারান। এর মাধ্যমে কেনেডি পরিবারের অভিশাপের আরেকটি ঘটনা দেখল বিশ্ব।

কারা কেনেডি

সিনিয়র এডওয়ার্ড এম টেড কেনেডির কন্যা কারা কেনেডির মৃত্যু হয় ২০১১ সালে। তিনি অবশ্য ৫১ বছর বেঁচেছিলেন। তবে স্বাভাবিক মৃত্যু জোটেনি তাঁর ভাগ্যেও। ২০০২ সালে তাঁর ফুসফুসে ক্যান্সার ধরা পড়ে। এরপর দীর্ঘদিন অসুস্থতায় ভোগেন তিনি। চিকিৎসা চলছিল ঠিকমতোই। কিন্তু এরপরও শেষ রক্ষা হয়নি। দুর্ভাগ্য পিছু ছাড়েনি। অবশেষে ২০১১ সালে হার্ট অ্যাটাকের কারণে পৃথিবীকে বিদায় জানাতে বাধ্য হন কারা কেনেডি।

আরও পড়ুন: সেরা পুরুষদের ত্বকের যত্নের রুটিন | ঘুমানোর আগে পুরুষের ত্বকের যত্ন

#AccessHollywood #Kennedys #MaeveKennedyMcKean Kennedy Family Tragedies Through The Decadesaccess,kennedy,kennedy curse,tragedy,death,maeve kennedy mckean,gideon mckean,jfk jr,john f. kennedy jr.,saoirse kennedy hill,jfk,rfk,robert f. kennedy,access hollywood,history,kennedy tragedies,accident,tragic accident,loss,memory,remembering,memorial,রুজভেল্ট লিন্ডন বি জনসন, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের মেয়াদকাল কত, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জনক কে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কোন প্রেসিডেন্ট প্রথম আততায়ীর গুলিতে নিহত হন, বারবারা বুশ আইজেনহাওয়ার মতবাদ, আব্রাহাম লিংকন,কেনেডি পারিবারিক ট্র্যাজেডি, দশকের মাধ্যমে,অভিশপ্ত কেনেডি পরিবার!,দুর্ভাগা কেনেডি পরিবার কি সত্যিই অভিশপ্ত,কেনেডি পরিবারে আরেকটি মৃত্যু

Leave a Reply