Deprecated: Function WP_Dependencies->add_data() was called with an argument that is deprecated since version 6.9.0! IE conditional comments are ignored by all supported browsers. in /home/amadersa/public_html/wp-includes/functions.php on line 6131
জকিগঞ্জ-কানাইঘাটে পানি বৃদ্ধি অব্যাহত

জকিগঞ্জ-কানাইঘাটে পানি বৃদ্ধি অব্যাহত

টানা বর্ষণ ও ভারতের পাহাড়ি ঢলে সিলেটের জকিগঞ্জ ও কানাইঘাট উপজেলার সুরমা নদীর বাঁধ ভেঙে হঠাৎ বন্যা দেখা দিয়েছে। দুই উপজেলায় প্রায় ২ লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। সোমবার বিকাল ৪টা পর্যন্ত সুরমা-কুশিয়ারা নদীর পানি বিপৎসীমার ১৪৬ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। নতুন নতুন এলাকা ও নিম্নাঞ্চল বন্যার পানিতে প্লাবিত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। ভারতে উজানে বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকলে জকিগঞ্জ-কানাইঘাটে ভয়াবহ বন্যার আশঙ্কা রয়েছে। স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত এক সপ্তাহ থেকে ভারতের উজান থেমে নেমে আসা ঢলে কানাইঘাট উপজেলার প্রায় ৮টি স্থানে ডাইক ভেঙ্গে দেড় লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। সময় সময় পানি বেড়ে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ বাড়ছে। চালু করা হয়েছে বেশ কয়েকটি আশ্রয় কেন্দ্র। বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য বরাদ্দ দেয়া হয়েছে ১৯ মেট্রিকটন চাল। জকিগঞ্জের সুরমা-কুশিয়ারা নদীর বাঁধ ভেঙে ও উপচিয়ে পানি লোকালয়ে প্রবেশ করে বন্যা সৃষ্টি হয়েছে বারহাল, মানিকপুর, কাজলসার, বিরশ্রী ইউপিসহ বিভিন্ন এলাকায়।

প্লাবিত হয়েছে বেশ কয়েকটি গ্রাম। কৃষি ও মৎস্য খাতে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হচ্ছে। বন্ধ হয়ে পড়েছে বিভিন্ন এলাকার গ্রামীণ রাস্তাঘাট। মসজিদ, মাদ্রাসাসহ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পানি উঠেছে। পানিবন্দি প্রায় ৩০-৩৫ হাজার মানুষের কষ্ট চরম আকার ধারণ করেছে। সোমবার কানাইঘাট উপজেলার পৌর এলাকা, পূর্ব নোয়াবাজার, লোভাছড়াসহ বন্যায় প্লাবিত বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শন করেছেন সিলেট-৫ আসনের সংসদ সদস্য ড. হাফিজ আহমদ মজুমদার। প্লাবিত বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখে তিনি সরকারি ত্রাণ সহায়তা যথাযথভাবে বণ্টন করতে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দেন।

জকিগঞ্জ উপজেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, এ পর্যন্ত প্রায় ২০ হেক্টর জমির সবজি, ১০ হেক্টর জমির বীজতলা নষ্ট হয়েছে। বিভিন্ন পুকুর ও ফিশারির মাছ বন্যার পানিতে ভেসে গেছে। কাঁচা আধকাঁচা অনেক ঘরের ক্ষতি হয়েছে। পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় প্রস্তুত রাখা হয়েছে আশ্রয় কেন্দ্র। লোকজনকে আশ্রয় কেন্দ্রে আসার জন্য প্রস্তুতি নিতে জানানো হয়েছে। পানিবন্দি মানুষের জন্য সরকার ১৮ মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ করেছে। ৫ ইউপিতে ১২ মেট্রিকট ন চাল বণ্টন করা হয়েছে।

বন্যা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। সুরমা-কুশিয়ারার একাধিক স্থানের ঝুঁকিপূর্ণ ডাইকে পাউবো কাজ করছে। মঙ্গলবার জকিগঞ্জের প্লাবিত এলাকা ঘুরে দেখবেন সংসদ সদস্য ড. হাফিজ আহমদ মজুমদার। বারহাল ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোস্তাক আহমদ জানান, নোয়াগ্রাম, উত্তর খিলোগ্রাম, চকবারাকুলি, শরীফাবাদ, শাহগলী বাজার ও কচুয়া এলাকায় সুরমা নদীর বাঁধ ভেঙে বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত করেছে। তলিয়ে গেছে বোরো ধান। বেশ কয়েকটি গ্রামের মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। বিরশ্রী ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুস সাত্তার জানান, সুপ্রাকান্দি ও বড়চালিয়া গ্রামের বেড়িবাঁধ মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ। পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকলে যে কোনো সময় বাঁধ ভেঙে পানি লোকালয়ে প্রবেশ করার আশঙ্কা রয়েছে।

এছাড়াও মানিকপুর ইউনিয়নের বাল্লা, দাপনিয়া এলাকা দিয়েও সুরমা নদীর পানি লোকালয়ে প্রবেশ করছে। হাওরের পানি দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। ফলে জকিগঞ্জে ভয়াবহ বন্যার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। জকিগঞ্জের দায়িত্বপ্রাপ্ত ইউএনও পল্লব হোম দাস জানান, ভারতের উজানে বর্ষণ অব্যাহত থাকলে সুরমা-কুশিয়ারা নদীতে পানি বৃদ্ধি পাবে। এতে জকিগঞ্জের বন্যা পরিস্থিতি ভয়াবহ রূপ ধারণ করার আশঙ্কা রয়েছে। উপজেলা প্রশাসন ও পানি উন্নয়ন বোর্ড পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। পানিবন্দি মানুষকে আশ্রয় কেন্দ্রে নিয়ে আসার কথা বলা হয়েছে।

১৮ মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ পাওয়া গেছে। এর মধ্যে ১২ টন বণ্টন করা হয়েছে। পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার জন্য ৬ টন রাখা হয়েছে। জকিগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান লোকমান উদ্দিন চৌধুরী জানিয়েছেন, বন্যা পরিস্থিতির অবনতি ঘটলে লোকজনকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে আনার প্রস্তুতি রয়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের লোকজন সরেজমিন রয়েছেন। নতুন এলাকায় ভাঙন প্রতিরোধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

Leave a Reply