দারিয়ে প্রস্রাব নয় বরং’উলঙ্গ হয়ে ঘুরতে বললেন তসলিমা নাসরিন’

আমাদের পূর্বপুরুষনারীরা ন্যাংটো থাকতো। বন্য পশু হত্যা করে খেতো। কাঁচা খেতো, এরপর আগুন জ্বালাতে শেখার পর আগুনে পুড়িয়ে খেতো। পশুর চামড়া গায়ে পরে শীত নিবারণ করতো। লক্ষ লক্ষ বছর আমাদের পূর্বপুরুষনারীরা ওভাবেই জীবন কাটিয়েছে। আমরা তাদের বংশধর। আমরা কাপড় আবিস্কার করেছি মাত্র কয়েক হাজার বছর আগে। আমরা ধর্মও আবিস্কার করেছি কয়েক হাজার বছর আগে। এক বা একাধিক সৃষ্টিকর্তাকে কল্পনা করেছি, তাদের নিয়ে গল্প রচনা করেছি।

এখন আমাদের রচিত সেই সৃষ্টিকর্তাকে দিয়ে আমরা বলাচ্ছি আমাদের যৌনাঙ্গ অশ্লীল, আমাদের স্তন অশ্লীল, আমাদের নিতম্ব অশ্লীল, আমাদের কেশ অশ্লীল, আমাদের সৌন্দর্য অশ্লীল , সেকারণে এসব আড়াল করে রাখতে হবে। শুধু তাই নয়, আমাদের এটা খাওয়া চলবে না, ওটা ছোঁয়া চলবে না। মোদ্দা কথা, স্বাধীনতায় আমাদের কোনও অধিকার নেই।

বাংলাদেশে আসছে ইলোন মাস্কের স্টারলিংক

বিশাল বিশ্ব ব্রহ্মাণ্ডে মানুষ নামক প্রজাতি অতি অল্পদিনের আয়ু নিয়ে জন্ম নেয়। এই স্বল্প আয়ুর মানুষ শুধু মানুষের নয়, পৃথিবীর আরও সব প্রাণীর জীবন দুর্বিষহ করে ছেড়েছে। হিংসে, দ্বেষ, ঘৃণা, বর্বরতা মানুষের চরিত্রে প্রবলভাবে উপস্থিত। বৈষম্যে ভরপুর এক সমাজ তৈরি করেছি আমরা। রাষ্ট্রও তৈরি করেছি আমরা, যেটি অনেক সময় আমাদের বিপক্ষে অবস্থান নেয়।

আমাদের জানতে তো বাকি নেই যে মানুষই মানুষের সবচেয়ে বড় শত্রু।

মানুষ উলঙ্গ ঘুরে বেড়াক। আর সব প্রাণীর মতো। যেদিন থেকে বস্ত্র পরিধান করেছে মানুষ, সেদিন থেকে কৃত্রিমতা আর কপটতা মানষের ছায়াসঙ্গী। মানুষের এখন সময় হয়েছে আর সব প্রাণীর মতো হওয়া। আর সব প্রাণী মানুষের চেয়ে সহানুভূতিতে, সহিষ্ণুতায়, সহজতায় সহস্র গুণ উন্নত।

সত্যি কথা বলতে, উলঙ্গ মানুষ দেখতে সবচেয়ে সুন্দর। সেটিই মানুষের আসল পরিচয়। মেকি একটি সমাজ তৈরি করে, সেই সমাজে মেকি একটি ধর্মকে দাঁড় করিয়ে , মানুষ যেভাবে ভয়ঙ্কর রকম মেকি হয়ে উঠেছে, বস্ত্রের মতো মেকি জিনিস নিয়ে বর্বরতা করছে, এর একটিই সমাধান বস্ত্র বাদ দেওয়া।

কপটতা ঝরে যাবে বস্ত্র ঝরে গেলে। তারপরও পুনশ্চতে বলবো, বস্ত্রহীনতার উৎসবে কেউ যদি বস্ত্র পরিধান করতে খুবই ইচ্ছুক, সেটা তার ‘চয়েজ’।

তথ্যসূত্র ফেসবুক থেকে সংগৃহীত তসলিমা নাসরিন

Leave a Reply