দেবী শেঠীর সিরিয়াল নেবেন যেভাবে

ডা. দেবী শেঠী বিশ্বের অন্যতম সেরা হৃদরোগ চিকিৎসা কেন্দ্র ব্যাঙ্গালুরুর নারায়না ইনস্টিটিউট অব কার্ডিয়াক সায়েন্সেসের প্রতিষ্ঠাতা। এখানকার শতকরা ৮০ ভাগই বাংলাদেশি হার্টের রোগী। কিন্তু দেবী শেঠীর সঙ্গে দেখা করার সঠিক নিয়ম-কানুন না জেনে যাওয়ার কারণে দিনের পর দিন সময় ও টাকা নষ্ট করছেন। অনেকে বলছেন, আমরা সিরিয়াল নিয়ে এসেছি। কিন্তু ডাক্তার দেখানো যাচ্ছে না। যদি জানতে চাই, কিভাবে নিলেন? তারা বলেন, ই-মেইল করেছি বা ‘অমুকের’ রেফারেন্সে এসেছি ইত্যাদি।

মনে রাখা দরকার, ডা. দেবী শেঠী সরাসরি কোন রোগী দেখেন না। নারায়না হাসপাতালের বেজমেন্টে তার সিরিয়াল নেওয়ার জন্য আলাদা কাউন্টার আছে। সকাল ৮টার মধ্যে গেলে কাউন্টারে একটি ফর্ম পূরণ করতে হয়, যা আন্তর্জাতিক বা নতুন রোগীর জন্য। ৫শ’ রুপি জমা দিয়ে ফাইল করতে হয়। ফাইলটি নিয়ে পাশে আরেকটি কাউন্টারে গেলে তারা ফাইলটি চেক করে কিছু টেস্ট করতে বলবে (যদি লাগে)। পরে একজন কার্ডিওলোজিস্টের কাছে রেফার করবে।

ওই কার্ডিওলোজিস্ট যদি মনে করেন ডা. দেবী শেঠীর কাছে পাঠানোর প্রয়োজন আছে, তবে তিনি রেফার করবেন। সাধারণ সমস্যা হলে সেখান থেকেই সাজেশন দিয়ে দেবেন। মূলত ডা. দেবী শেঠী জটিল ও শিশুদের হার্টের সমস্যা দেখে থাকেন। সব ঠিক থাকলেও তাকে পেতে ১-৭ দিন লাগতে পারে। অনেক সময় জটিল অপারেশনে তিনি বাইরের রোগী দেখেন না। সময় নিয়ে যেতে হবে, আপনার রোগী যতই জটিল অবস্থায় থাকুক না কেন। তার কয়েকজন সেক্রেটারির মধ্যে দীপক খুবই আন্তরিক। কিন্তু তিনি বাংলা জানেন না। মিসেস তানিয়া বাংলা জানেন। কিন্তু খুব একটা হেল্প করেন না। ডা. দেবী শেঠী অনেক সময় দেশের বাইরে থাকেন, সেক্ষেত্রে খবর নিয়ে যাওয়া ভালো।

সবচেয়ে ভালো হয় সরাসরি ডা. দেবী শেঠীকে হোয়াটস অ্যাপ করলে। তিনি নিজেই তার রিপ্লাই দেন। তার হোয়াটস অ্যাপ নম্বর হচ্ছে +৯১৯৯৮০১৯৯৮০১। এ নম্বরে শুধু টেক্সট পাঠাবেন। কোন কল করা যাবে না। এছাড়া ই-মেইল করতে পারেন devishetty@narayanahealth.org ঠিকানায়। তবে বাংলাদেশে মিলু (ঢাকা: ০১৯৪৩২২২২২২) ও মৃণাল (চট্টগ্রাম: ০১৭৩১৪০৯৩৫২) সাহায্য করতে পারবেন।

তবে কিছু পরীক্ষা বাংলাদেশের ভালো হাসপাতাল বা ডায়াগনস্টিক সেন্টার থেকে করিয়ে নিলে সেখানে আর করতে হয় না। যেমন-

১. কমপ্লিট ব্লাড টেস্ট (সিবিসি)
২. কেএফটি র‌্যানডম
৩. ইসিজি
৪. লিপিড প্রোফাইল
৫. গ্লুকোজ টেস্ট বোথ ফাস্টিং অ্যান্ড আফটার ২ আওয়ারস
৬. এক্স-রে চেস্ট
৭. ইকো কালার ড্রপলার
৮. এনজিওগ্রাম (যদি লাগে)

এছাড়াও কিছু প্রস্তুতি নিয়ে রাখলে বেশি ভালো হয়। যেমন-

১. রোগীকে যদি এনজিওগ্রাম, রিং বা অপারেশন করতে হয়। তাহলে অবশ্যই মেডিকেল ভিসা লাগবে। তা না হলে বিপদে পড়ে যাবেন।
২. পাসপোর্ট ও ভিসার বেশ কয়েকটি ফটোকপি সাথে রাখতে হবে। কারণ কথায় কথায় এগুলো দরকার হয়।
৩. অবশ্যই ইউএস ডলারে পেমেন্ট করতে হবে। তাই দেশ থেকে ডলার নিয়ে যাওয়া ভালো। কারণ ওখানে রেট ভালো না।
৪. এনজিওগ্রামে ৩শ’ ডলার, রিং বা অপারেশনে ৪শ’ ডলার জমা রাখে। পরে যা লাগবে, তা রেখে বাকি টাকা ফেরত দেয়।
৫. টাকা জমা দিতে হলে ইন্টারন্যাশনাল ডেস্কের ভেরিফিকেশন লাগে। তাই পাসপোর্ট ও ভিসার ফটোকপির সাথে হোটেলের বিল কপি লাগবে।
৬. ইন্টারন্যাশনাল ডেস্কে মিস রূপসী নামে একজন কলকাতার বাঙালি আছেন, তিনি গাইড করে থাকেন।
৭. নরমাল পরীক্ষার জন্য ট্যুরিস্ট ভিসা ঠিক আছে।

Leave a Reply