Deprecated: Function WP_Dependencies->add_data() was called with an argument that is deprecated since version 6.9.0! IE conditional comments are ignored by all supported browsers. in /home/amadersa/public_html/wp-includes/functions.php on line 6131
ধর্ম অবমাননার গুজব ছড়িয়ে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের

ধর্ম অবমাননার গুজব ছড়িয়ে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই হিন্দু শিক্ষককে ফাঁসানোর চক্রান্ত

এবার  ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের গুজব ছড়িয়ে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই হিন্দু শিক্ষককে হয়রানি ও লাঞ্ছিত করার অপচেষ্টায় মেতে উঠেছে ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল ধর্মীয় উগ্রপন্থী শিক্ষার্থীরা। বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের চেয়ারম্যান সঞ্জয় সরকার এবং সহকারী অধ্যাপক উন্মেষ রায়ের বিরুদ্ধের গুজব ছড়িয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে সাম্প্রদায়িক অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টির  প্রচেষ্টা চলছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। 

 

এ  উন্মাদনার অংশ হিসেবে বৃহস্পতিবার (২৩ জুন) বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মোঃ ছাদেকুল আরেফিনের কাছে ৩৯ জন  উগ্রপন্থী শিক্ষার্থী  নিজেদেরকে  সাধারণ শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধি দাবি করে একটি অভিযোগ পত্র বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. মোঃ খোরশেদ আলমের কাছে জমা দিয়েছে দিয়েছে বলে জানা গেছে। পোস্ট-দুটোতে-কোন-ধর্ম-কিংবা-ধর্মীয়

অভিযোগ পত্রে উল্লেখ করা হয়, “গত ২১-০৬-২২ তারিখে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের চেয়ারম্যান সঞ্জয় সরকার এবং সহকারী অধ্যাপক উন্মেষ রায় তাদের ব্যক্তিগত ফেইসবুক একাউন্টে ইসলাম ধর্মের মৌলিক বিষয়কে কটাক্ষ করে কুরুচিপূর্ণ ও উস্কানিমূলক স্টাটাস পোস্ট করে। তাদের এমন গর্হিত কাজের প্রেক্ষিতে সাধারণ শিক্ষার্থীদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ ও অসন্তোষ সৃষ্টি করে। যা আমাদের অসাম্প্রতিক চেতনার পরিপন্থী”।

 

অভিযোগ পত্রের শেষ অংশে ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষার্থে’ অভিযুক্ত শিক্ষকদ্বয়ের শাস্তির দাবি জানানো হয়। এদিকে পরিকল্পিতভাবে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও শিক্ষক সঞ্জয় সরকার এবং উন্মেষ রায়ের বিরুদ্ধে বিষোদগার ও ঘৃণার বিষবাষ্প ছড়ানো হচ্ছে। এতে বিশ্ববিদ্যালয়টির ধর্মান্ধ উগ্রপন্থী শিক্ষার্থীরা যেমন যোগ দিয়েছে, কয়েকজন মৌলবাদী শিক্ষকও এই অপপ্রচারের সাথে যুক্ত হয়েছেন বলে জানা গেছে। বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি ড. আব্দুল কাইয়ুম তাঁর ফেসবুক প্রোফাইল থেকে একটি পোস্টে লিখেছেন, “যারা অন্যের ধর্ম নিয়ে প্রতিনিয়ত কটুক্তি করে তারা পক্ষান্তরে নিজেদের ধর্মকেও ছোট করে। ধর্ম নিয়ে যারা কটুক্তি করে তাদের উদ্দেশ্য হলো শান্ত পরিবেশকে অশান্ত করা এবং সাম্প্রদায়িকতা ছড়িয়ে দেয়া। এটা দুঃখজনক ঘটনা এবং আমি আহ্বান জানাচ্ছি, কটূক্তিকারীরা যেন ভবিষ্যতে এইরূপ কার্যকলাপ থেকে বিরত থাকে”। বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজী বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মিজানুর রহমান ফেসবুক পোস্টে লিখেছেন, “দুর্জন বিদ্যান হলেও পরিত্যাজ্য”। ফেসবুকে কী লিখেছিলেন অভিযুক্ত শিক্ষকদ্বয়?

পোস্ট-দুটোতে-কোন-ধর্ম-কিংবা-ধর্মীয়

Jahangirnagar University – Admission Test নামের  একটি ফেসবুক পেজ থেকে উগ্র ধর্ম প্রচারক আহমাদুল্লাহর ছবিযুক্ত একটি পোস্ট  পাবলিশ করা হয় যাতে লেখা ছিল, “অনুগ্রহ করে এবার বন্যার্তদের জন্য অবৈজ্ঞানিকভাবে ঢাকায় কেউ মোম প্রজ্বালন করবেন না। পারলে সে মোমগুলো দুর্গতদের জন্য পাঠিয়ে দিন।”

শিক্ষক সঞ্জয় সরকার এই পোস্টটি শেয়ার করে ক্যাপশনে লিখেছিলেন, ” আমাদের রন্ধ্রে রন্ধ্রে মৌলবাদ ঢুকিয়ে দেওয়া হচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম দিয়ে পেজ খুলে সেসব প্রচার করা হচ্ছে। এসবের দায় একদিন আমরা কেউ এড়াতে পারবো না।”

 

অন্যদিকে শিক্ষক উন্মেষ রায়ের শেয়ার করা পোস্টের ক্যাপশনে লেখা ছিলঃ

“বিশ্ববিদ্যালয়ের থাকছি,পড়ছি ৫ বছরের মতো। বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াই প্রায় সাত বছর।  সত্যি বলতে কি,  এরকম মানসিকতার লোকজনও বেশি দেখছি। এরাই তো পড়ায় আজকাল কলেজে, স্কুলে,  বিশ্ববিদ্যালয়ে। গাব গাছে কখনও আম ফলে কি? অথচ বইবেচা তাত্ত্বিক কুতুবরা (পড়িয়ে, বুদ্ধিবেচিরা) সমাজের এই পরিবর্তন সম্বন্ধে জানতেও পারে নি। তা তারা সমাজের কি উপকার সাধন করিবে।”

পোস্ট-দুটোতে-কোন-ধর্ম-কিংবা-ধর্মীয়

শিক্ষক সঞ্জয় সরকার ও উন্মেষ রায়ের এই পোস্ট দুটোতে  কোন ধর্ম  কিংবা ধর্মীয় মহাপুরুষদের সমালোচনা উল্লেখ না থাকলেও, তাঁদের বিরুদ্ধে ধর্ম অবমাননা এবং ধর্মীয় বিদ্বেষের মিথ্যা অভিযোগ তোলা হয়েছে।

অভিযোগের বিষয়ে বাংলা বিভাগের শিক্ষক সঞ্জয় সরকার জানান, “এটা ধর্মীয় বিদ্বেষমূলক কোন কথা না। কেউ যদি বলে থাকে তাহলে সেটা ভুল বুঝেছে। স্টুডেন্টরা কেউ যদি ভুল বুঝে আমাকে কিছু বলে থাকে সেটাতে আমার কোন কথা বলার নেই”।

উল্লেখ্য,  সাম্প্রতিক বছরগুলোতে  ইসলাম ধর্ম অবমাননা এবং ইসলাম ধর্মের প্রবর্তক নবী মুহাম্মদকে  নিয়ে কটূক্তির  গুজব ছড়িয়ে বেশ কয়েকজন ধর্মীয় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের শিক্ষক এবং শিক্ষার্থীদের হয়রানি ও লাঞ্চিত করার ঘটনা ঘটেছে।  ভিকটিম শিক্ষক এবং শিক্ষার্থীদের  পাশে না দাঁড়িয়ে,  রাষ্ট্র ও  প্রশাসন উল্টো তাঁদেরকে গ্রেফতার করে, বিনা বিচারে জেল খাঁটিয়ে তাঁদের  সাংবিধানিক অধিকারকে খর্ব করেছে।  মানবাধিকার কর্মীদের অভিযোগ,  সরকারের মৌলবাদ তোষণ ও  প্রকৃত অপরাধীদের গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি না দেওয়ার কারণে এ ধরনের ঘটনা ধারাবাহিকভাবে ঘটছে।

Source: anweshan.news

Leave a Reply