নারীই চেনেন না বাস্তবের এই ‘টারজান’ | ভিয়েতনামের হো ভ্যান লাংয়ের মানবসভ্যতা

ভিয়েতনামের হো ভ্যান লাংয়ের মানবসভ্যতা নিয়ে কোনো ধারণা নেই। এমনকি পৃথিবীতে যে নারী থাকতে পারে, সেটাও তার অজানা।

লাং ৪১ বছর জঙ্গলে কাটিয়ে পৃথিবীকে এখন নতুন করে চিনছেন। তার বর্তমান বয়স ৪৯ বছর।

জানা গেছে, বাবার সঙ্গে ভিয়েতনামের ছোট্ট এক গ্রামে থাকতেন। আট বছর আগে বনবাস থেকে মুক্তি মেলে তাদের। লাং এবং তার পরিবার ১৯৭২ সালের ভিয়েতনাম যুদ্ধের সময় জঙ্গলে পালিয়ে যায়। সেদিন যুক্তরাষ্ট্রের বোমার আঘাতে তার মা মারা যান।

ভাই ত্রি এবং বাবা হোকে নিয়ে লাং সেই থেকে জঙ্গলে। মানুষের সমাজে ফিরে আসার ব্যাপারে তার বাবার ফোবিয়া কাজ করত। ভাবতেন, যুদ্ধ কোনো দিন শেষ হবে না। তাই গাছের ছাল-বল্কল পরে জঙ্গলে ঘুরে শিকার করে পেট চালাতেন।

এ ঘটনা একদম যেন সেই এডগার রাইজ বারোজের পূর্ব আফ্রিকার পটভূমির জল-জঙ্গলের আদিমানব! যার প্রথম পরিচিতি ‘টারজান অব দ্য এপস’ নামের কালজয়ী কমিকসে। সামাজিক জীবন থেকে পুরোপুরি বিচ্ছিন্ন অবস্থায় ছিলেন লং।

বনবাসের দিনগুলোতে খাবার বলতে মধু, ফল ও জঙ্গলের প্রাণী আর কিছু কিছু গাছের পাতা। ছোট ভাই ট্রাই ও বাবার জন্য বন থেকে খাবার জোগাড় করার দায়িত্ব নেন লং। পরে এডগার রাইজ বারোজের মতো এই ভিয়েতনামি টারজানকে আবিষ্কার করেন আলভেরো সেরেজো নামে এক আলোকচিত্রী।

সেরেজোর ভাষ্য, অবাক করার মতো তথ্য হলো লং নারী ও পুরুষ আলাদা করতে পারলেও তাদের মধ্যেকার পার্থক্যটাই তার জানা নেই। এ-ও সম্ভব? লং অন্তত তাই বলছেন। নারীর প্রসঙ্গ উঠতেই তার উত্তর, আমার বাবা এ সম্পর্কে কখনও কিছু বলেননি।

উল্লেখ্য, ২০১৫ সালে ওই জঙ্গলে ছবি তুলতে গিয়ে এই পরিবারটির খোঁজ পান সেরেজো। প্রথমে মানুষ দেখলেই তারা লুকিয়ে পড়তেন। ধীরে ধরে তাদের সঙ্গে ভাব জমান। বুঝিয়ে-সুঝিয়ে জঙ্গল লাগোয়া একটি গ্রামে তাদের নিয়ে আসেন সেরেজো।

সেখানেই প্রথম লংয়ের নারী পুরুষের পার্থক্য বুঝতে পারা। তবে জঙ্গল ছেড়ে গ্রাম্য জীবন মানিয়ে নিতে সমস্যা কম হয়নি। প্রথম দিকে বাইরের পৃথিবীর শব্দ সহ্য করতে পারতেন না লং। নানা রোগে আক্তান্তও হয়েছিলেন।

সূত্র: দ্য মিরর ও এই সময়।

নারীই চেনেন না বাস্তবের এই ‘টারজান’ , ভিয়েতনামের হো ভ্যান লাংয়ের মানবসভ্যতা

Leave a Reply