Deprecated: Function WP_Dependencies->add_data() was called with an argument that is deprecated since version 6.9.0! IE conditional comments are ignored by all supported browsers. in /home/amadersa/public_html/wp-includes/functions.php on line 6131
dailynewstimesbdনারীদের পকেট কেন এত ছোট?

নারীদের পকেট কেন এত ছোট?

পোশাকে পকেট নিয়ে বিতর্ককে প্রায়ই লিঙ্গ সমতার সাথে জড়িত একটি বিষয় হিসেবে দেখা হয়। কারণ নারীদের পোশাকে পকেটের আকার ছোট হয়ে আসায় তাদেরকে হ্যান্ডব্যাগের মধ্যে মূল্যবান জিনিস নিয়ে ঘুরতে হয়। এদিকে পুরুষদের নিজের পকেট থেকে টাকাপয়সা চুরি করার চেয়ে নারীদের ব্যাগ ছিনিয়ে নেওয়া সহজ।

যুগ পরিবর্তনের সাথে সাথে নারীদের পোশাকে এসেছে অসংখ্য পরিবর্তন, বদলেছে পোশাকের কাটছাঁট, নকশা ও সেলাইয়ের ধরন। কিন্তু একটি প্রশ্ন আজও যেন অমীমাংসিতই রয়ে গেছে, তা হলো ‘নারীদের পোশাকের পকেট এত ছোট থাকে কেন?’

 

এ বিতর্কের ইতি টানার জন্য আমাদের ফিরে যেতে হবে পোশাকে জুড়ে থাকা ছোট্ট পকেটের ইতিহাসের দিকে।

 

নারীদের পোশাকে পকেটের উৎপত্তি

 

বর্তমানে নারীদের নানা পোশাকের সাথেই জুড়ে দেওয়া হয় ছোটবড় নানা আকৃতির পকেট। কিন্তু একদম শুরুতে কি পোশাকের মধ্যে এরকমই পকেট ছিল?

 

উত্তর হচ্ছে, না। বিশেষত নারীদের পোশাকে গোড়া থেকেই পকেট জুড়ে দেওয়ার প্রচলন ছিল না বললেই চলে। তখন পকেট ছিল আলাদা সেলাই করা এক টুকরো কাপড় যা একাধিক পোশাকের সাথে মিলিয়ে পড়া যেত।

১৭ শতক থেকে ১৯ শতকের শেষ দিকে নারীদের স্কার্টের নিচে এবং আন্ডার-পেটিকোটের উপরে পকেট থাকার চল ছিল। পেটিকোটের পাশের এক ভাঁজ সরিয়ে নারীরা এই পকেটগুলো খুঁজে নিতে পারতো।

 

অন্যদিকে পুরুষদের পকেট আধুনিক সময়ের মতোই তাদের প্রতিটি পোশাকের সাথেই সেলাই করা থাকতো।

 

পকেট কেন ব্যবহার হতো?

পকেটের ধরন-নকশায় পরিবর্তন এলেও পকেটের উপযোগিতা প্রায় একই থেকে গেছে। আমরা এখন যেমন নিজেদের টাকাপয়সা, চাবি, কলম, হালকা খাবারের প্যাকেট, প্রসাধনীসহ খুচরা জিনিসগুলো জামার পকেটে রাখি, তেমনই পুরনো আমলেও প্রয়োজনীয় জিনিস রাখার জন্যই পকেট ব্যবহৃত হতো।

 

নারীদের পোশাকের পকেটেও তখন আধুনিক হ্যান্ডব্যাগের সমান জায়গা থাকতো।

 

পকেট এবং চুরি!

১৮ এবং ১৯ শতকে চোরেরা নারীদের পকেট ছিড়ে টাকাপয়সা চুরি করে নিয়ে যেত। সেখান থেকেই ‘পিকপকেট’ বা পকেটমার শব্দটি এসেছে।

পোশাকে পকেট নিয়ে বিতর্ককে প্রায়ই লিঙ্গ সমতার সাথে জড়িত একটি বিষয় হিসেবে দেখা হয়। কারণ নারীদের পোশাকে পকেটের আকার ছোট হয়ে আসায় তাদেরকে হ্যান্ডব্যাগের মধ্যে মূল্যবান জিনিস নিয়ে ঘুরতে হয়। এদিকে পুরুষদের নিজের পকেট থেকে টাকাপয়সা চুরি করার চেয়ে নারীদের ব্যাগ ছিনিয়ে নেওয়া সহজ।

১৯৫৪ সালে খ্যাতনামা ফ্যাশন ব্র্যান্ড ডায়োর এর প্রতিষ্ঠাতা ক্রিস্টিয়ান ডায়োর বলেন, “পুরুষদের পকেট হচ্ছে প্রয়োজনীয় জিনিস রাখার জন্য, আর নারীদেরটা সৌন্দর্য্যের জন্য।”

একসময় পকেটও ছিল ‘আউট অব ফ্যাশন’?

নারীদের পকেটকে স্রেফ নকশার খাতিরে রাখার কথা বললেও, আপনি জেনে অবাক হবেন যে ১৭৯০ সালের দিকে এই পকেটের ফ্যাশনও হারিয়ে যেতে থাকে। ফলে নারীরা প্রয়োজনীয় জিনিস বহনের জন্য হ্যান্ডব্যাগের দিকে ঝুঁকে পড়েন। যদিও এখনও বহু নারী পকেটসহ জামা পরতেই পছন্দ করেন।

এরপর ১৮০০ সালের দিকে ফ্যাশন জগতে আবারও পরিবর্তন আসে এবং ছোট পকেটের প্রচলন শুরু হয়।

তাছাড়া স্লিমিং সিলুয়েট ব্যবহারের কারণে বড় পকেটগুলোও সংকুচিত হতে থাকে এবং এদের উপযোগিতা কমে ফ্যাশনের জিনিস হয়ে দাঁড়ায়।

পুরুষদের পোশাকে এখনও পকেট একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হলেও নারীরা বিশের দশক পর্যন্ত হ্যান্ডব্যাগের উপরেই ভরসা করে ছিল।

আবার ফিরে এলো পকেট

বিশের দশকেই আবারও পকেটের প্রত্যাবর্তন ঘটে! পুরুষদের পোশাক থেকে অনুপ্রেরণা নিয়ে তারাও পোশাকে পকেট যুক্ত করে, যদিও তখনো মূলধারায় ফিরে আসতে পারেনি।

১৯৩৩ সালে একটি ‘ওমেনস অয়্যার ডেইলি’ আর্টিকেল প্রকাশিত হয়, যেখানে নারীদেরও পুরুষদের প্রথাগত পোশাকের মতো পোশাক পড়ার সুযোগ আছে উল্লেখ করা হয়। এর পরপরই দলে দলে নারীরা তাদের ফ্যাশনে পরবর্তন আনার আগ্রহ প্রকাশ করে এবং তারই হাত ধরে নারীদের পোশাকে পকেটের অংশটি রয়ে যায়; কিন্তু প্রয়োজন হিসেবে নয়, বরং স্টাইল হিসেবে।

জিন্স কিভাবে পকেটের ধারণাকে প্রভাবিত করে?

নারীদের পোশাকের পকেট ছোট হওয়ার আরও একটি কারণ হলো, অনেকেরই ধারণা, নারীদের পোশাক চাপা হতে হবে।

 

পকেট থাকলে পোশাকে বাড়তি কাপড় যোগ করতে হয় যা সেই স্লিম ফিটের ব্যাঘাত ঘটায়।

 

কিন্তু জিন্স বাজারে আসায় সমাজে এক ধরনের ‘উভয় সংকট’ তৈরি হয়। জিন্সের কাপড় বেশ টেকসই হওয়ায় মানুষ এতে বড় পকেট থাকার সুবিধা বুঝতে পারে। তাই আধুনিক অনেক পোশাকেই আমরা আজকাল বড় পকেট খুঁজে পাই।

 

এখনকার পকেটের আকার কেমন?

বিশ্বের বৃহত্তম রিটেইলারদের বানানো ৮০টি জিন্স মেপে একটি গবেষণার ফলাফলে দেখা যায়, পুরুষদের পকেটের তুলনায় নারীদের পোশাকের পকেট ৬.৫% চাপা এবং সব মিলিয়ে ৪৮% খাটো থাকে।

 

প্যান্টের পেছনের পকেট মেপেও প্রায় একই ধরনের পার্থক্য দেখা গেছে তা গড়ে ৫% খাটো।

 

পকেটের এই দুর্দশার কারণেই বর্তমানে নারীরা যেসব জিনিস তাদের চাপা পকেটে জায়গা নেওয়াতে পারে না, তা নিজেদের হ্যান্ডব্যাগে নিয়ে থাকে।

 

 

 

 

 

Leave a Reply