Deprecated: Function WP_Dependencies->add_data() was called with an argument that is deprecated since version 6.9.0! IE conditional comments are ignored by all supported browsers. in /home/amadersa/public_html/wp-includes/functions.php on line 6131
নিয়োগ কমিটিতে সরকারের প্রতিনিধিরা আছেন তারা কেন এটা মেনে নিচ্ছেন?

নিয়োগ কমিটিতে সরকারের প্রতিনিধিরা আছেন তারা কেন এটা মেনে নিচ্ছেন?

এখানে তারা সভাপতি বা ম্যানেজিং কমিটির সাথে তাল মিলিয়ে নিয়োগও দিয়ে আসলে ধরে নিতে হবে নিয়োগে কোন রুপ স্বজন প্রীতি বা অনিয়ম হয়নি। যদি অনিয়ম হয় তবে তার দায় সবার উপরেই বর্তাবে।শুধু ম্যানেজিং কমিটির উপর কেন যাবে? এই কথাটা কেউ বলেনা।সব কাজ কী ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি করে? তাঁর কাছে প্রধান শিক্ষক বাঁধা থাকেতে পারে কিন্তু ডি.জি মহোদয়ের প্রতিনিধি ও মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার তো সভাপতির কাছে বাঁধা পরে নাই। তাদের বাঁধার কী ব্যবস্থা নিলেন ম্যানেজিং কমিটি? দোষ করলে সবাইকে নিয়েই করতে হয়েছে।কিন্তু শুধু ম্যানেজিং কমিটির কারণে অযোগ্য, নিম্নমানের শিক্ষক কর্মচারী নিয়োগ দেওয়া হয়। এর প্রিতিকারের প্রথমিক ব্যাবস্থা হিসাবে ২০০৫ খ্রি. বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ আইন, ২০০৫ (এন. টি. আর. সি. এ) তৈরি করা হল।এস,আর,ও নং ১৮৯- আইন ২০০৬।৩০ জুলাই ২০০৬ খ্রি.বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ আইন, ২০০৫ এর ২১ নং ধারায় প্রদত্ত ক্ষমতা বলে বেসরকারি শিক্ষক পরীক্ষা গ্রহণ, নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন বিধিমালা, ২০০৬ প্রনয়ন করা হয়। এই প্রবিধানমালা প্রনয়নের পরে বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কেউ নিবন্ধন ছাড়া আবেদন করতে পারে নি।নিবন্ধিত প্রর্থীদের মধ্য থেকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নিয়োগ পরীক্ষার মাধ্যমে যাচাই বাছাই করে শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া শুরু করলেন। এখন স্বজন প্রীতির কথা তো আর বলা যায় না।

 

কিন্তু সমালোচনা থেমে ছিল না। আবার শুরু হল শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে বানিজ্যের কথা। সহকারী শিক্ষক নিয়োগ দেওয়ার ক্ষেত্রে ম্যানেজিং কমিটি টাকা খেয়ে অযোগ্যকে নিয়োগ দেন।কোন কোন ক্ষেত্রে যে এটা হয়নি এমনটি নয়।তবে যে মাত্রায় প্রচার হয়েছে তত যে দূর্নীতি হয়েছে,তা আমার বিশ্বাস হয় না। এই অনিয়মের জন্য সবাই ম্যানেজিং কমিটি এবং প্রতিষ্ঠান প্রধানকে দায়ী করেন। কিন্তু যাদের ছাড়া কোন ভাবেই শিক্ষক কর্মচারী নিয়োগ দেওয়া যায় না তারা থেকে যায় ধরা ছোয়ার বাইরে। তাদের নাম কেই নেয় না। আর ম্যানেজিং কমিটির পক্ষ থেকেও কেউ এর প্রতিবাদ করেনি। যে কারণে এটা স্বতসিদ্ধ হয়ে যায় বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষক নিয়োগে অনিয়মের কারণে নিম্নমানের শিক্ষক দ্বারা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ভরে৷ গেছে। এদের দ্বারা গুনগত শিক্ষা দেওয়া সম্ভব নয়। যদিও শিক্ষক নিয়োগের দূর্নীতির দায়ে কোন ম্যানেজিং কমিটির বাতিল করা হয়েছে বা ভেঙ্গে দেওয়া হয়েছে এমন নজির নেই। অযোগ্য শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে এ বিষয়টির সাথে কোন ভাবেই এরকম নই।কাঙ্ক্ষিত শিক্ষাগত যোগ্যতা ছাড়া কেউ “এন,টি আর.সি এ এর মাধ্যমে বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষক নিয়োগের সমস্যা ও সমাধানের প্রস্তাবনা”

বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষ ম্যানেজিং কমিটি বা ক্ষেত্রেমত গর্ভনিং বডি। আমাদের মাধ্যমিক শিক্ষার ৯৭% শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বেসরকারি। বাকি ৩% সরকারি। সেগুলোর মধ্যে অধিকাংশ আবার বেসরকারি উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত পরবর্তীতে জাতীয় করন কৃত।এক কথায় বলা যায় আমাদের দেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে সরকারের চেয়ে বেসরকারি অবদান বেশি। সরকার বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বছরে একটা থোক বরাদ্দ দিতেন যা ছিল প্রয়োজনের তুলনায় অনেক কম।যে এ পেশা মেধাবীর ধরে রাখা যেত না।এভাবে আমাদের দেশে সমাজ হিতৈষী ব্যাক্তিবর্গের দ্বারা এ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো গড়ে উঠে। ১০ জানুয়ারী ১৯৮১ সালে বাংলাদেশ সরকার ও বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের সাথে এক চুক্তি সম্পাদিত হয়।চুক্তি ছিল বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক কর্মচারীবৃন্দ সরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক কর্মচারী সমমানের বেতনক্রমে বেতন পাবেনএবং তা ০১/০১/১৯৮০ খ্রি. থেকে কার্যকর হবে। ক.০১/০১/১৯৮০খ্রি.থেকে ৩০/০৬ ১৯৮২ খ্রি. পর্যন্ত কেবলমাত্র বেতনক্রমের প্রারম্ভিক স্তরের ৫০% প্রদান করেন।

খ.০১/০৭/১৯৮২ খ্রি.থেকে ২৮/০২/ ১৯৮৩ খ্রি.পর্যন্ত বেতনক্রমের প্রারম্ভিক স্তরের ৫০%এবং সৎসঙ্গে ১৫% মহার্ঘভাতা প্রদান করেন।

গ. ০১/০৩/১৯৮৩ খ্রি. থেকে ৩১/১২/১৯৮৩ খ্রি.পর্যন্ত বেতনক্রমের প্রারম্ভিক স্তরের ৫০% বেতনের অংশ বাবদ এবং ৩০% মহার্ঘতা প্রদান করেন।

ঘ.১/১/১৯৮৪ খ্রি.থেকে ২৮/০২/১৯৮৬ খ্রি.পর্যন্ত পূর্বোক্ত বেতন ভাতাদির অংশ বহাল রেখে সৎসঙ্গে চিকিৎসা ভাতা ৬০ টাকা বাড়ি ভাড়া ভাতা ১০০ টাকা এবং বার্ষিক প্রবৃদ্ধি সমমান সুবিধা যুক্ত করা হয়।

ঙ.০১/০৩/১৯৮৬ খ্রি.থেকে ৩০/০৬/১০৮৬ খ্রি. পর্যন্ত বেতনক্রমের প্রারম্ভিক স্তরের ৬০% বেতনের অংশ এবং চিকিৎসা ভাতা ১০০টাকায় উন্নীত করা হয়।

চ. ০১/০৭/১৯৮৬ খ্রি.থেকে ৩০/০৬ /১৯৮৯ খ্রি বেতনক্রমের ৭০% বেতনের অংশ প্রদান করেন।

ছ. ০১/০৭/১৯৮৯খ্রি. থেকে বেতনক্রমের প্রারম্ভিক স্তরের ৭০% বেতনের অংশ প্রদানসহ মূল বেতনের ১০% মহার্ঘভাতা প্রদান করে।

জ.০১/১২/১৯৯০ খ্রি.থেকে ৩০/০৬/১৯৯২খ্রি. পর্যন্ত অন্যান্য সুযোগ সুবিধা পূর্ববৎ বহাল রেখে বেতনক্রমের প্ররম্ভিক স্তরের ২০%মহার্ঘভাতা প্রদান করেন।

ঝ. নতুন ৩য় বেতন স্কেল হওয়ায় ০১/০৭/১৯৯২ খ্রি.থেকে ৩০/০৬/৯২ খ্রি.পর্যন্ত ৭০% বেতন দেওয়া হয়।মহার্ঘভাতা বাদ দেওয়া হয়।

ঞ.০১/০৭/১৯৯৪ খ্রি.থেকে ৩১/১২/১৯৯৪ খ্রি.অন্যান্য সুবিধাদি ব্হাল রেখে চিকিৎসা ভাতা ১৫০ টাকা উন্নীত করেন। উক্ত তারিখ থেকে টাইম স্কেল চালু করা হয়।

ট.০১/০১/১৯৯৫খ্রি. থেকে অন্যান্য সুবিধাদি ব্হাল রেখে সরকারি বেতনের অংশ ৮০% এ উন্নীত করেন।

ঠ.০১/০৭/২০০০ খ্রি. থেকে বেতন ক্রমের প্রারম্ভিক স্তরের ৯০% বেতন ধার্য করেন। ০১/০৭/২০০৬ খ্রি. থেকে বেতনক্রমের প্রারম্ভিক স্তরের ৯৫% প্রদান করেন।

০১/০৭/২০০৭ থেকে বেতনক্রমের প্রারম্ভিক স্তরের ১০০% বেতন হিসেবে প্রদান করেন।

বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক কর্মচারী বেতনক্রমের ১০০% প্রাপ্তির সাথে সাথে এটা অনেকটা লোভনীয় হয়ে উঠে। এখান থেকেই ম্যানেজিং কমিটির শিক্ষক কর্মচারী নিয়োগের ক্ষেত্রে বানিজ্য বা স্বজন প্রীতির বিষয় উঠে আসে । কলুষিত হতে থাকে বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজিং কমিটি বা গর্ভনিং বডি। যতটা দুর্নীতির অভিযোগ আসে ত পরীক্ষায় অংশ গ্রহণ করতে পারে না।

নিবন্ধন পরীক্ষায় অংশ গ্রহণ করতে পারে নাই।এন.টি. আর. সি.এ কাঙ্ক্ষিত শিক্ষাগত যোগ্যতা নিয়ে পরীক্ষায় অংশ গ্রহনের জন্য আবেদন করলেই যে কাউকে নিবন্ধন সার্টিফিকেট দিয়ে দেন নাই। এ জন্য আবেদনকারীকে বিষয় ভিত্তিক পরীক্ষা দিতে হয়েছে।

পরীক্ষায় যারা উত্তীর্ণ হয়েছে শুধু তাদেরকেই নিবন্ধন সার্টিফিকেট দিয়েছেন।তাহলে নিবন্ধন ধারী কাউকে অযোগ্য বলা যাবেনা। প্রথম তারা কাঙ্ক্ষিত শিক্ষাগত যোগ্যতা অর্জন করেছে।সেই শিক্ষাগত যোগ্যতা তারা তাদের পারিবারিক প্রতিষ্ঠান থেকে গ্রহণ করে নাই। স্নাতক ডিগ্রি তারা দেশের কোন স্বীকৃত বিশ্ব বিদ্যালয় থেকে বা কলেজ থেকে গ্রহণ করেছেন। সেই সার্টিফিকেট দিয়ে চাকুরী নেওয়ার পরেও তাকে স্বজন প্রীতির বদনাম নিতে হয়েছে। সেটাও তারা মুখ বুজে সহ্য করেছেন। তারপরে নিবন্ধিত হয়ে প্রতিযোগিতামুলক পরিক্ষায় অংশ নিয়ে সহকারী শিক্ষক হিসাবে চাকুরী নিয়েও স্বজন প্রীতি বা অবৈধ ভাবে চাকুরী নেওয়ার বদনাম থেকে বাঁচতে পারলেন না। ম্যানেজিং কমিটিও দূর্নীতি করার বদনাম থেকে বাঁচতে পারলেন না। প্রথম দিকে আমাদের এন. টি. আ. সি. এ এর উপর বদনাম চলে আসল যে নিবন্ধন সার্টিফিকেট নাকি টাকায় পাওয়া যায়? তাহলে কাউকে আর শতভাগ ভালো বলা যাবে না। এখন যারা এ প্রচারণাগুলো করে তাঁরা কতখানি স্বচ্ছ সেটাও দেখার বিষয়। ধরুন একটা স্কুলে একজন সহকারী শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হবে

নিবন্ধন সার্টিফিকেটধারী প্রার্থী হল ২৫ জন। তারা প্রত্যেকই যোগ্যতা সম্পন্ন কিন্তু এদের থেকে তাৎক্ষণিকভাবে বাছাই করে নিতে হবে একজন। এটা একটা অত্যন্ত ক্রিটিক্যাল কাজ। অনেক কষ্ঠে একজন বাছাই করে নিয়োগের জন্য মনোনীত করার সাথে সাথে অপর ২৪ জন বলবে নিয়োগ পরীক্ষায় অনিয়ম হয়েছে। যে চাকুরী পেল সে ছাড়া সবাই একই কথা বলবে।তাহলে সংখ্যা গরিষ্ঠের কথাই সবাই বিশ্বাস করে। নিয়মও তাই সংখ্যা গরিষ্ঠের কথাই মানতে হবে। আমি পূর্বেও বলেছি পাঁচ সদস্যের নিয়োগ বোর্ডের দুই জন সরকারি লোক। তাদের কেউ কিন্তু পদ মর্যাদায় কম নয়। শিক্ষা প্রশাসনের কর্মকর্তাদেরও বলতে শোনা যায় ম্যানেজিং কমিটি শিক্ষক নিয়োগ টাকা লেনদেনের মাধ্যমে নিম্নমানের শিক্ষক নিয়োগ দিয়ে থাকেন। ম্যানেজিং কমিটি নিয়োগ দেয় নিয়োগ কমিটির সুপারিশের উপর ভিত্তি করে। নিয়োগ কমিটির পাঁচ সদস্যের দুই সরকারি প্রতিনিধি যার একজন মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের প্রতিনিধি অন্যজন পদাধিকার বলে থান মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার। যদি নিয়োগ কমিটি অনৈতিক ভাবে শিক্ষক নির্বাচন করেন তার দায় ডি জির প্রতিনিধি ও থানা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারের উপর বর্তায়। এজন্য কোন থানা শিক্ষা অফিসার বা ডি. জির প্রতিনিধিকে শোকজ করেছে এমনও শোনা যায় নাই।তার পরেও মুখে মুখে বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজিং কমিটি বা গর্ভনিং বডি উপর নিয়োগ বানিজ্যের বদনা চলে আসে। এমন কী ২০১৫ সালে ডি সি সম্মেলনে সারা দেশের জেলা প্রশাসকবৃন্দ ম্যানেজিং কমিটি বা গর্ভনিং বডি শিক্ষিত নিয়োগে অবৈধ ভাবে টাকা পয়সার লেনদেন হওয়ার কথা উল্লেখ করে বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষক কর্মচারী নিয়োগের ক্ষমতা জেলা প্রশাসকের উপর ন্যস্ত করার প্রস্তাব করেন। তৎকালীন শিক্ষামন্ত্রী মহোদয় জেলা প্রশাসকদের প্রস্তাব গ্রহণ করেনি। কিন্তু তার পরের বছর অর্থাৎ ২০১৬ সালে ১২ অক্টোবর শিক্ষা মন্ত্রণালয় পরিপত্র জারি করে বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক নিয়োগের উপর স্থগিত আদেশে দেন।বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শূন্য পদে শিক্ষক নিয়োগ বন্ধ হয়ে যায়।শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে শিক্ষক নির্বাচন ক্ষমতা দেওয়া হয় এন. টি. আ. সি. এ. এর উপর। ২০০৫ সালে এন. ট. আর. সি. এ এর উপর শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন ক্ষমতা বৃদ্ধি পেয়েবেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্টানে শিক্ষক কর্মচারীদের জাতীয় বেতন ক্রমের শত ভাগ প্রাপ্তির ইতিবৃত্ত
প্রথম পর্ব
বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষ ম্যানেজিং কমিটি বা ক্ষেত্রমত গর্ভনিং বডি। আমাদের মাধ্যমিক শিক্ষার ৯৭% শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বেসরকারি। বাকি ৩% সরকারি। সেগুলোর মধ্যে অধিকাংশই আবার বেসরকারি উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত যা পরবর্তীতে জাতীয়করনকৃত। এক কথায় বলা যায় আমাদের দেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে সরকারের চেয়ে বেসরকারি অবদান বেশি। সরকার এক সময় বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বছরে একটা থোক বরাদ্দ দিতেন যা ছিল প্রয়োজনের তুলনায় অনেক কম। যে কারণে এই পেশায় মেধাবীদের ধরে রাখা যেত না। আমাদের দেশে সমাজ হিতৈষী ব্যাক্তিবর্গের দ্বারা বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো গড়ে উঠে। ১০ জানুয়ারী, ১৯৮১ সালে বাংলাদেশ সরকার ও বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের সাথে এক চুক্তি সম্পাদিত হয়। চুক্তি ছিল বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক কর্মচারীবৃন্দ সরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক কর্মচারীদের সমমানের বেতনক্রমে বেতন পাবেন এবং তা ০১/০১/১৯৮০ খ্রি. থেকে কার্যকর হবে। বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্টানের শিক্ষক কর্মচারী যে জাতীয় বেতন ক্রমের শত ভাগ পেয়েছে তার বিবরণ ক্রমে তুলে ধরা হলো – জাতীয় বেতন ক্রমের ধাপে ধাপে বেসরকারি
ক.০১/০১/১৯৮০খ্রি.থেকে ৩০/০৬ ১৯৮২ খ্রি. পর্যন্ত কেবলমাত্র বেতনক্রমের প্রারম্ভিক স্তরের ৫০% প্রদান করেন।
খ.০১/০৭/১৯৮২ খ্রি.থেকে ২৮/০২/ ১৯৮৩ খ্রি.পর্যন্ত বেতনক্রমের প্রারম্ভিক স্তরের ৫০%এবং তৎসঙ্গে ১৫% মহার্ঘ ভাতা প্রদান করেন।
গ. ০১/০৩/১৯৮৩ খ্রি. থেকে ৩১/১২/১৯৮৩ খ্রি.পর্যন্ত বেতনক্রমের প্রারম্ভিক স্তরের ৫০% বেতনের অংশ বাবদ এবং ৩০% মহার্ঘ ভাতা প্রদান করেন।
ঘ.১/১/১৯৮৪ খ্রি.থেকে ২৮/০২/১৯৮৬ খ্রি.পর্যন্ত পূর্বোক্ত বেতন ভাতাদির অংশ বহাল রেখে তৎসঙ্গে চিকিৎসা ভাতা ৬০ টাকা বাড়ি ভাড়া ভাতা ১০০ টাকা এবং বার্ষিক প্রবৃদ্ধি সমমান সুবিধা যুক্ত করা হয়।
ঙ.০১/০৩/১৯৮৬ খ্রি.থেকে ৩০/০৬/১৯৮৬ খ্রি. পর্যন্ত বেতনক্রমের প্রারম্ভিক স্তরের ৬০% বেতনের অংশ এবং চিকিৎসা ভাতা ১০০ টাকায় উন্নীত করা হয়।
চ. ০১/০৭/১৯৮৬ খ্রি.থেকে ৩০/০৬ /১৯৮৯ খ্রি. পর্যন্ত বেতনক্রমের ৭০% বেতনের অংশ প্রদান করেন।
ছ. ০১/০৭/১৯৮৯খ্রি. থেকে বেতনক্রমের প্রারম্ভিক স্তরের ৭০% বেতনের অংশ প্রদানসহ মূল বেতনের ১০% মহার্ঘ ভাতা প্রদান করেন।
জ.০১/১২/১৯৯০ খ্রি.থেকে ৩০/০৬/১৯৯২খ্রি. পর্যন্ত অন্যান্য সুযোগ সুবিধা পূর্ববৎ বহাল রেখে বেতনক্রমের প্ররম্ভিক স্তরের ২০%মহার্ঘ ভাতা প্রদান করেন।
ঝ. নতুন ৩য় বেতন স্কেল হওয়ায় ০১/০৭/১৯৯২ খ্রি.থেকে ৩০/০৬/৯২ খ্রি.পর্যন্ত ৭০% বেতন দেওয়া হয় এবংমহার্ঘ ভাতা বাদ দেওয়া হয়।
ঞ.০১/০৭/১৯৯৪ খ্রি.থেকে ৩১/১২/১৯৯৪ খ্রি.অন্যান্য সুবিধাদি বহাল রেখে চিকিৎসা ভাতা ১৫০ টাকা উন্নীত করেন। উক্ত তারিখ থেকে টাইম স্কেল চালু করা হয়।
ট.০১/০১/১৯৯৫খ্রি. থেকে অন্যান্য সুবিধাদি বহাল রেখে জাতীয় বেতন ক্রমের প্রারম্ভিক স্তরের ৮০% এ উন্নীত করেন।
ঠ.০১/০৭/২০০০ খ্রি. থেকে বেতন ক্রমের প্রারম্ভিক স্তরের ৯০% বেতন ধার্য করেন।
ড. ০১/০৭/২০০৬ খ্রি. থেকে বেতনক্রমের প্রারম্ভিক স্তরের ৯৫% প্রদান করেন।
ঢ. ০১/০৭/২০০৭ থেকে বেতনক্রমের প্রারম্ভিক স্তরের ১০০% বেতন হিসেবে প্রদান করেন। বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক কর্মচারী বেতনক্রমের ১০০% প্রাপ্তির সাথে সাথে এই চাকরি অনেকটা লোভনীয় হয়ে উঠে। এখান থেকেই ম্যানেজিং কমিটির শিক্ষক কর্মচারী নিয়োগের ক্ষেত্রে বানিজ্য বা স্বজন প্রীতির বিষয় উঠে আসে । কলুষিত হতে থাকে বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজিং কমিটি বা গর্ভনিং বডি। যতটা দুর্নীতির অভিযোগ আসে তার পুরোটা সত্য নয়। তবে একেবারেই জোর দিয়ে বলা যাবেনা যে, কোন ম্যানেজিং কমিটিই দূর্নীতির সাথে জড়িত নয়। একইভাবে এটাও বলা যাবেনা যে, সকল ম্যানেজিং কমিটি দূর্নীতির সঙ্গে যুক্ত। অধিকাংশই ভালো ছিল। এই বদনাম আসায় অনেক ভালো মানুষ এ সিষ্টেম থেকে নিজেকে সরিয়ে নিয়েছেন।

এই সুযোগে খারাপ লোকগুলো বেশি করে ঢুকে পড়েছে। দেশে শিক্ষিত বেকারের সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায়, বেকারত্ব সমস্যা সমাধানে নিজ উদ্যোগে কেউ জমি দান, কেউ অর্থ দিয়ে সম্মিলিত ভাবে যত্র তত্র শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছেন। এরা কিন্তু সত্যিকারের শিক্ষানুরাগী নন। নিজেদের চাকুরির স্বার্থে কয়েকজন বেকার মিলে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেন। তাদের উদ্দেশ্য চাকুরি। আর চাকুরীর নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষ পক্ষ ম্যানেজিং কমিটিকে নিজেদের আয়ত্বে রাখা। তাই নিজের চাকুরীর নিশ্চিতার জন্য ম্যানেজিং কমিটিতে ঢুকানো হয় নিজেদের আত্মীয়-স্বজন। এভাবেই কিছু ম্যানেজিং কমিটির মধ্যে দূর্নীতি প্রবেশ করে। যা পরবর্তীতে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে প্রবেশ করে। এই ধারা ক্রমান্নয়ে প্রায় অধিকাংশ স্কুলে স্থানান্তরিত হতে থাকে। প্রথমে আত্মীয় দিয়ে যাত্রা শুরু হলেও পরে সেটা অর্থের বিনিময়ে নিম্ন মানের শিক্ষক নিয়োগ দিতে থাকে। শিক্ষক কর্মচারীদের নিয়োগ দিয়ে অর্থ উপার্জন করা যায় জেনে তখন থেকে দুষ্টচক্র কমিটিতে আসার চেষ্টা করে এবং তারা এসে যায়। এ সমস্ত গুটি কয়েক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজিং কমিটির জন্য দুর্নাম ছড়িয়ে পরে সকল ম্যানেজিং কমিটির নামে। তখন কেউ এর প্রতিবাদ করেনি।

বিষয়টির ব্যাখ্যাও কেউ দেয় নি। এধরণের নতুন স্কুলগুলোর পাঠদান অনুমতি কে দিয়েছেন? এম.পি ও ভুক্ত হল কাদের মাধ্যমে? তারা কিন্তু ধরা ছোয়ার বাইরে থেকে গেল। যে সকল সরকারি কর্মকর্তারা নিয়ম নীতি উপেক্ষা করে বিধি ভঙ্গ করে পাঠদানের অনুমতি দিল, তা কী এমনি এমনিই দিয়ে দিল? না এর সাথে কোন কিছুর বিনিময় আছে। শিক্ষক নিয়োগে বানিজ্য করনের কথা বলে ম্যানেজিং কমিটির বদনাম করা হলো। হয়তো কিছু কিছু ম্যানেজিং কমিটি এ ধরনের অনৈতিক কাজের সাথে যুক্ত আছে। কিন্তু সব ম্যনেজিং কমিটি নয়। আমরা কেন শুধু ম্যানেজিং কমিটি বা প্রতিষ্ঠান প্রধানকে দায়ী করব? নিয়োগ প্রক্রিয়ার সাথে ডি.জি মহোদয়ের প্রতিনিধি হিসাবে সরকারি স্কুলের প্রধান শিক্ষক থাকেন, মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধি হিসাবে মাধ্যমিক থানা শিক্ষা অফিসার থাকেন , ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি এবং অন্য একজন সদস্য। নিয়োগ কমিটির পাঁচ সদস্যের মধ্যে দুজন সরকারি লোক, তারা ম্যানেজ হয় কী ভাবে? যদি তর্কের খাতিরে ধরে নেই ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি এবং অপর সদস্য তাদের আত্মীয় বা টাকার বিনিময়ে তুলনামূলক দূর্বল প্রার্থীকে নিয়োগ দিতে চায়। তা প্রতিরোধ করার জন্য নিয়োগ কমিটিতে সরকারের প্রতিনিধিরা আছেন, তারা কেন এটা মেনে নিচ্ছেন? এখানে তারা সভাপতি বা ম্যানেজিং কমিটির সাথে তাল মিলিয়ে নিয়োগ দিয়ে আসলে ধরে নিতে হবে নিয়োগে কোন রূপ স্বজনপ্রীতি বা অনিয়ম হয়নি। যদি অনিয়ম হয় তবে তার দায় সবার উপরেই বর্তাবে।

Meশুধু ম্যানেজিং কমিটির উপর কেন যাবে? এই কথাটা কেউ বলেনা। সব কাজ কী ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি করেন? তাঁর কাছে প্রধান শিক্ষক বাঁধা থাকেতে পারে কিন্তু ডি.জি মহোদয়ের প্রতিনিধি ও মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার তো সভাপতির কাছে বাঁধা পরে নাই। তাদের বাঁধার কী ব্যবস্থা নিলেন ম্যানেজিং কমিটি? দোষ করলে সবাইকে নিয়েই করতে হয়েছে। কিন্তু শুধু ম্যানেজিং কমিটির কারণে অযোগ্য, নিম্নমানের শিক্ষক কর্মচারী নিয়োগ দেওয়া হয়। এই বিষয়টির সাথে আমি একমত নয়।

 

আমি মনে করি, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বেসরকারি উদ্যোগকে ক্ষতি গ্রস্ত করা হয়েছে। ভারতীয় উপমহাদেশের শিক্ষা ব্যবস্থায় বেসরকারি উদ্যোগকে অস্বীকার করা হয়েছে।

Leave a Reply