পায়ুপথে ফিস্টুলা হওয়ার লক্ষণ, কারণ ও চিকিৎসা

ফিস্টুলা বা ভগন্দর রোগটি চিকিৎসা বিজ্ঞানের আদি থেকেই ডাক্তারদের কাছে সুপরিচিত। ফিস্টুলার বিভিন্ন প্রকারভেদ রয়েছে। নালিটি মলদ্বারের কোনো কোনো স্তর ভেদ করেছে বা কতটা গভীরে প্রবেশ করেছে মূলত তার ওপর নির্ভর করেছে এর জটিলতা।

কী কারণে হয়

এ রোগটির উৎপত্তি হয় মলদ্বারের বিশেষ ধরনের সংক্রমণের কারণে। মলদ্বারের ভেতরে অনেকগুলো গ্রন্থি রয়েছে এগুলোর সংক্রমণের কারণে ফোড়া হয়। এই ফোড়া এক সময় ফেটে গিয়ে মলদ্বারের চর্তুদিকের, কোনো একস্থানে একটি ছিদ্র দিয়ে বের হয়ে আসে এবং পুঁজ নির্গত হতে থাকে। এ সংক্রমণের কারণে মলদ্বারে প্রচুর ব্যথা হয়। রোগী সারা দিন ব্যথায় কাতরাতে থাকে। পুঁজ বের হওয়ার পর ব্যথা কমতে থাকে। মলদ্বারে পার্শ্বস্থিত কোনো স্থানে এক বা একাধিক মুখ দিয়ে মাঝে মধ্যে পুঁজ বের হয়ে আসাকে আমরা ফিস্টুলা বা ভগন্দর বলে থাকি।

পেছাতে পারে প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা, সিদ্ধান্ত চলতি সপ্তাহে

মলদ্বারের ক্যান্সার এবং বৃহদান্ত্রের প্রদাহজনিত রোগে ও ফিস্টুলা হয়ে থাকে। মলদ্বারে যক্ষ্মার কারণেও ফিস্টুলা হতে পারে।

 

ফিস্টুলা কত প্রকার

 

সাধারণ ফিস্টুলা : এটি মলদ্বারের মাংশপেশি র খুব গভীরে প্রবেশ করে না বিধায় চিকিৎসা সহজসাধ্য।

 

জটিল ফিস্টুলা : এর বিভিন্ন প্রকার ভেদ রয়েছে এবং এবং তা নির্ভর করে এর নালটি মলদ্বারের মাংসের কতটা গভীরে প্রবেশ করেছে এবং কতটা বন্ধুর পথ পাড়ি দিয়ে এটি বাইরের মুখ পর্যন্ত এসেছে। এগুলোর চিকিৎসা সত্যিকার দুঃসাধ্য। তারপর যদি এ নালি একের অধিক হয় তাহলে তো আর কথাই নেই। এ রোগের অপারেশনের প্রধান প্রতিবন্ধকতা হল সঠিকভাবে অপারেশন সম্পাদন করতে ব্যর্থ হলে রোগী মল আটকে রাখার ক্ষমতা হারিয়ে ফেলতে পারে।

 

ফিস্টুলা বা ভগন্দরের লক্ষণ বা উপসর্গ

 

এ রোগের লক্ষণ মূলত তিনটি। যেমন- ১. ফুলে যাওয়া, ২. ব্যথা হওয়া এবং ৩. নিঃসরণ বা পুঁজ ও আঠাল পদার্থ বের হওয়া।

শিশুদের মধ্যে অটিজমের প্রথম লক্ষণগুলো কী | Autistic health care child

বেশিরভাগ রোগীই আগে মলদ্বারে ফোড়া হয়েছিল বলে জানান। ভেতরে ফোড়া হাওয়ার জন্য ফুলে যায় এবং ব্যথা হয়। যখন এগুলো ফেটে মুখ দিয়ে কিছুটা পুঁজ বের হয়ে যায় তখন ব্যথা এবং ফোলা কমে যায়। নিঃসরণ বা পুঁজ পড়া সাধারণত মাঝে মাঝে হয়। কখনও কখনও ২-৪ মাস রোগটি সুপ্ত থাকে।

 

কখনও কখনও মলের সঙ্গে পুঁজ ও আম পড়তে থাকে। সমস্যা একটানা না থাকার কারণে রোগীরা অনেক সময় ভাবেন যে সম্ভবত ভালো হয়ে যাব। কিন্তু দু’চার মাস পর আবার যখন একই সমস্যা দেখা দেয় তখন আবার আমাদের কাছে এসে বলে স্যার এখন কি করা যায়?

 

কী কী পরীক্ষা-নিরীক্ষা প্রয়োজন

 

* প্রক্টস্কপি, সিগময়ডসকপি

 

* কোলনস্কপি

 

* বেরিয়াম এক্সরে

 

* ফিস্টুলো গ্রাম : খুব একটা অবদান রাখতে পারে না। মলদ্বারের ভেতরে আঙ্গুল দিয়ে পরীক্ষা করাটা আমার কাছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মনে হয়।

সুন্দর করে কথা বলা শিখতে চাও, ১০টি উপায় জেনে নাও!

* এনাল এন্ডোসনোগ্রাফি।

 

লেখক : বঙ্গবন্ধু মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক ও বৃহদন্ত্র ও পায়ুপথ সার্জন ইডেন মাল্টিকেয়ার হাসপাতাল, ধানমণ্ডি, ঢাকা।

Leave a Reply