পিরিয়ড স্বাভাবিক হচ্ছে কিনা তা বুঝবেন কিভাবে? এই লক্ষণ দেখে বোঝা যাবে যে আপনার পেরিমেনোপজ চলছে

মেনোপজ আর কিছুই নয়, একটি স্বাভাবিক শারীরবৃত্তীয় প্রক্রিয়া যা প্রত্যেক মহিলার জীবনেই আসবে। সাধারণত 40 বছরের আশেপাশে এলেই মেয়েদের শরীরে মেনোপজের কিছু লক্ষণ ফুটে উঠতে থাকে। এই অবস্থাকেই পেরিমেনোপজ বলা হয়। ঠিক কতদিন এই পরিস্থিতি থাকবে, তা আগে থেকে বলা যায় না — তবে আপনার মা, মাসি বা দিদিমাকে জিগ্যেস করে একটা আন্দাজ পেতে পারেন। চিকিৎসাবিজ্ঞান এই একটা ব্যাপারে মোটামুটিভাবে একমত যে মেনোপজ বা পেরিমেনোপজ কবে হবে বা কতদিন পর্যন্ত চলবে, তা বংশগতির ধারার উপর নির্ভর করে। তবে আপনি যদি খুব ফিট হন, তা হলে প্রক্রিয়াটি খানিক পিছিয়ে দেওয়া সম্ভব। উলটোদিকে আবার যাঁরা আনফিট বা হরমোনের সমস্যা আছে, তাঁদের ক্ষেত্রে ব্যাপারটা ঘটতে পারে সময়ের আগেই।

আপনার পিরিয়ড কি অনিয়মিত হয়ে গিয়েছে?
অনিয়মিত পিরিয়ড বলতে আমরা অত্যধিক বেশি বা কম দু’ ধরনের স্রাবকেই বোঝাচ্ছি। কারও কারও মাসে একাধিকবার ব্লিডিং শুরু হয়ে যায়, কারও খুব কম ব্লিডিং হয়। কারও ক্ষেত্রে আবার তিন-চার মাস দেখাই মেলে না পিরিয়ডের। টানা 12 মাস ঋতুস্রাব না হলে বুঝতে হবে যে আপনার ঋতুবন্ধ হয়ে গিয়েছে। তবে পিরিয়ড না হলে একবার ডাক্তারের সঙ্গে কথা বলুন এবং প্রেগন্যান্সি টেস্ট করিয়ে নিশ্চিত হয়ে নিন যে আপনি গর্ভবতী নন। অতিরিক্ত রক্তপাত হলে কিন্তু শরীর দুর্বল হয়ে পড়তে পারে, তাই ডাক্তারের সঙ্গে কথা বলুন নিয়মিত।

অর্জুন গাছের যত গুন

রাতে ঘাম হয়ে ঘুম ভেঙে যাচ্ছে কী?
মাঝরাতে আচমকা ঘামে ভিজে ঘুম ভেঙে গেল, এমন কখনও হয়েছে কী? বা হঠাৎ করেই প্রবল গরমে কান, মাথা জ্বলতে আরম্ভ করে? এটাও পেরিমেনোপজের লক্ষণ এবং এটা মেনোপজের পরও চলতে পারে।

ত্বক আর চুল ক্রমশ শুকনো হয়ে যাচ্ছে কী?
নিয়মিত যত্ন নেওয়ার পরেও যদি ত্বক আর চুলের স্বাস্থ্যের বিন্দুমাত্র উন্নতি না হয়, তা হলে বুঝতে হবে যে আপনার শরীরে স্ত্রী হরমোনের যে ঘাটতি হচ্ছে, তার কারণেই চুল যাচ্ছে শুকনো হয়ে। ত্বক হারাচ্ছে লালিত্য। আপনি নিয়মিত ব্যায়াম করতে আরম্ভ করুন, ফল পাবেন। হয়তো হরমোন তৈরি হবে না, কিন্তু ব্যায়ামের ফলে ত্বক-চুল ভালো থাকে, এ কথাও ঠিক। আর ব্যায়াম করলে কমবে ওজন বাড়ার হারও।

ভ্যাজাইনার শুষ্কতা ভোগাচ্ছে?
পেরিমেনোপজ স্তরে অনেকেই ভ্যাজাইনার আশপাশ শুকনো হয়ে গিয়েছে এমন অভিযোগ করেন। হয়তো যৌন মিলনের সময় অসুবিধে হতে পারে, সেক্ষেত্রে লুব্রিক্যান্ট ব্যবহার করতে হবে। তবে অনেকেই এই অসুবিধে টের পান না এবং মিলনের আনন্দ চুটিয়ে উপভোগ করেন, এ কথাও ঠিক।

pixabay gynecologist
top view of red paper cut female reproductive

মুড বদলাচ্ছে ঘন ঘন?
মেনোপজের সময় বা তার আশপাশে যে মন খারাপের একটা সমস্যা হয়, এ কথা পরীক্ষিত ও প্রমাণিত। যদিও অনেকেই তার কিছুমাত্র টের পান না, তবু বহু মহিলা ডিপ্রেশনের শিকার হন। তাই মনের কোণে মেঘ জমছে মনে হলেই ডাক্তারের সঙ্গে কথা বলুন।

মনে রাখবেন, মেনোপজের পর আপনি স্রেফ প্রজননক্ষমতা হারাবেন — তার মানে জীবনের গতি স্তব্ধ হয়ে যাওয়া নয় কিন্তু! চুটিয়ে বাঁচুন, নিজের খেয়াল রাখুন, পেটে, কোমরে চর্বি জমতে দেবেন না, তাতে অন্য নানা জটিলতা এড়ানো সম্ভব।সাধারণত প্রতি ২৮ থেকে ৩৫ দিন পর পর একজন নারীর পিরিয়ড বা মাসিক হয়ে থাকে। ১২ বছর থেকে ৫৫ বছর বয়সী নারীদের ক্ষেত্রে এমনটিই হয়ে থাকে।

প্রাপ্তবয়স্ক একজন নারীর নিয়মিত ও সময়মতো মাসিক হওয়াটা সুস্বাস্থ্যের লক্ষণ। তা যদি অনিয়মিত হয়ে পড়ে, তার মানে হয়তো শারীরিক কোনো সমস্যা আছে।

এ ক্ষেত্রে কোনো অসুস্থতা শরীরে ভর করেছে কিনা বা জীবনচর্চায় কোনো ক্ষতিকর অভ্যাস যুক্ত হয়েছে কিনা, তার দিকে নজর দেয়া উচিত। পিরিয়ড দেরি হওয়ার পেছনে সাধারণত যে বিষয়গুলো দায়ী তা জেনে রাখুন-

মাসিক কতটা দেরি হলে তাকে ‘লেট’ বলা যায়?

বেশিরভাগ নারীর মাসিকের চক্র একই থাকে। তবে এক সপ্তাহ দেরি হওয়াটা স্বাভাবিক বলেই ধরা যায়। যেমন একজন নারীর মাসিক হয় ২৫ দিন পর পর। কোনো এক মাসে ৩০ দিন বা ৩১ দিন পর তার মাসিক হতেই পারে। আট দিন বা তার বেশিদিন দেরি হলে তাকে ‘লেট’ বলে গণ্য করতে পারেন।

দেরি হওয়ার কারণ

বেশ কিছু কারণে পিরিয়ড সাময়িকভাবে বন্ধ থাকতে পারে বা দেরি হতে পারে। যেমন-

গর্ভাবস্থা: পিরিয়ড দেরি হলে প্রথমেই নিশ্চিত হোন আপনি অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েছেন কিনা।

বয়স: টিনেজ বয়সী ও মধ্যবয়সী নারীদের মধ্যে অনিয়মিত পিরিয়ডের সমস্যা দেখা দিতে পারে। এর পেছনের কারণটি হল হরমোন।

স্ট্রেস: লম্বা সময় স্ট্রেসে থাকলে অনেকেরই মাসিক দেরিতে হতে পারে।

আর্লি প্রেগন্যান্সি লস: একজন নারী গর্ভবতী হয়ে পড়েছিলেন, কিন্তু তা জানতেন না। এর পর নিজে থেকেই তার মিসক্যারিজ বা গর্ভপাত হয়ে যেতে পারে। এ ঘটনায় সাধারণ পিরিয়ডের তুলনায় কিছু দিন পর ভারী রক্তপাত হতে পারে, যাকে অনেকেই দেরিতে মাসিক হওয়া বলে ধরে নেন।

কম ওজন: ওজন কম হলে সময়মতো পিরিয়ড নাও হতে পারে। এমনকি কিছু দিন বন্ধও থাকতে পারে।

ফাইব্রয়েডস: জরায়ুতে টিউমার ধরনের এক ধরনের বৃদ্ধি হল ফাইব্রয়েডস। এগুলো পিরিয়ডের স্বাভাবিক চক্রকে বাধা দিতে পারে।

হরমনাল বার্থ কন্ট্রোল: জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি ব্যবহার করা। যেমন- পিল, প্যাচ, ইনজেকশন, আইইউডি। এগুলো ব্যবহার করলে পিরিয়ড লেট হওয়া বা পরিবর্তন হওয়াটা স্বাভাবিক।

স্বাস্থ্য সমস্যা: মনোনিউক্লিওসিস, ঠাণ্ডা, সর্দি, গলার ইনফেকশন- এ ধরনের সমস্যায় পিরিয়ড লেট হতে পারে। তবে বড় কোনো স্বাস্থ্য সমস্যা যেমন থাইরয়েডের সমস্যা বা পলিসিস্টিক ওভারি সিনড্রোমের কারণেও পিরিয়ড লেট হতে দেখা যায়।

নারীর যে ৭ গুণে মুগ্ধ হয় পুরুষ, নারীর যেসব গুণে মুগ্ধ হয় পুরুষ

ঋতুস্রাব দেখে শরীরের অবস্থা আন্দাজ করা সম্ভব। অন্যভাবে বলতে গেলে ঋতুস্রাব স্বাভাবিক হচ্ছে বুঝবেন কীভাবে? ঋতুস্রাব নারী শরীরের একটি স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। কখনো কখনো এর কিছু জটিলতা দেখা যায়। তবে কিছু বিষয় দেখলে বোঝা যায় ঋতুস্রাব স্বাভাবিকভাবে হচ্ছে। জীবনধারা বিষয়ক ওয়েবসাইট বোল্ডস্কাইয়ের স্বাস্থ্য বিভাগে প্রকাশিত হয়েছে এই সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন। নারী শরীরে প্রথম ঋতুস্রাবটি সাধারণত শুরু হয় ১২ থেকে ১৩ বছর বয়সে।

অনেক মেয়েরই আবার এর আগেই অর্থাৎ আট থেকে নয় বছরের মধ্যে ঋতুস্রাব শুরু হয়ে যায়। অনেকের ক্ষেত্রে আবার প্রথম ঋতুস্রাবটিই অনেক দেরি করে শুরু হতে পারে; ১৫ থেকে ১৬ বছর বয়সে গিয়ে ঠেকতে পারে এটি। পুরো জীবনে প্রায় পাঁচশ বারের ওপরে ঋতুস্রাব হয়ে থাকে।

প্রত্যেক নারীই আলাদা। ঋতুস্রাবের বিষয়টিও একজন থেকে অন্য জনের ক্ষেত্রে আলাদা।তাই চিন্তিত হওয়ার কারণ নেই যদি ঋতুস্রাব তিন থেকে সাতদিন থাকে। অনেকেই ভাবেন ঋতুস্রাব প্রতি মাসেই ঠিক নির্দিষ্ট তারিখেই হবে। তারা অনেক সময় চিন্তায় পড়ে যান যদি ঋতুস্রাব নির্দিষ্ট তারিখে না হয় বা হতে কয়েকদিন দেরি হয়। এতে আসলে চিন্তার তেমন কোনো কারণ নেই। ২১ দিন থেকে ২৫ দিনের মধ্যে এই চক্র শুরু হয়।

তবে ২১ দিনের আগে হলে অথবা ৩৫ দিনের পরে হলে বিষয়টি চিন্তার। ঋতুস্রাবের সময় রক্তের চাকা বের হওয়া খুব স্বাভাবিক। রক্তপাত কখনো বেশি বা কম হতে পারে। একেক জনের ক্ষেত্রে বিষয়টি একেক রকম হয়। তাই এটা নিয়ে চিন্তার কিছু নেই। ঋতুস্রাবের আগে ও পরে সাদাস্রাবের নিঃসরণও বেশ স্বাভাবিক বিষয়। ঋতুস্রাবের সময় ব্যথা হওয়া খুব স্বাভাবিক। এ সময় কিছুটা দুর্বল ও অস্বস্তি বোধ হতে পারে। তবে যদি তীব্র ব্যথা হয়, বমি বা বমি বমি ভাব হয়, তবে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নেবেন। এটা মোটেই ভালো লক্ষণ নয়। এটা অনেক সময় সিস্টের লক্ষণ হতে পারে। তাই এ রকম সমস্যা হলে সচেতন হোন।

সূত্র: হাফিংটন পোস্ট

পিরিয়ড বন্ধ হওয়ার কারণ, পিরিয়ড ১০ দিনের বেশি হলে পিরিয়ড সমস্যা, পিরিয়ড বন্ধ হওয়ার লক্ষণ, পিরিয়ড হলে কি হয়, ১৫ দিন পর পর মাসিক হওয়ার কারণ কি, পিরিয়ড না হলে করনীয়, পিরিয়ড এর সময়সীমা,এই 5টি লক্ষণ দেখে বোঝা যাবে যে আপনার পেরিমেনোপজ চলছে,Periods নিয়ে অবশ্যই এই ৫টি তথ্য জেনে রাখুন

 

Leave a Reply