প্রতিবন্ধী বিদ্যালয় শিক্ষক ফোরামের ৬ দাবি ও প্রতিবন্ধী শিশুদের স্কুল এমপিওভুক্তির দাবি

২০২০ সালে অনলাইনে আবেদন করা প্রতিবন্ধী শিশুদের স্কুলগুলোকে চলতি মাসেই এমপিওভুক্ত করার ব্যবস্থা নেওয়াসহ ছয় দফা দাবি জানিয়েছেন এসব স্কুলের শিক্ষকেরা। রবিবার (৪ সেপ্টেম্বর) জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বাংলাদেশ প্রতিবন্ধী বিদ্যালয় শিক্ষক-কর্মচারী ও অভিভাবক ফোরাম আয়োজিত মানববন্ধনে এসব দাবি তোলা হয়।

প্রতিবন্ধীদের মাসিক ভাতা ৫ হাজার টাকা করা, শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করা, তাদের পুনর্বাসনসহ ছয় দফা দাবিতে মানববন্ধন করেছে বাংলাদেশ প্রতিবন্ধী বিদ্যালয় শিক্ষক-কর্মচারী ও অভিভাবক ফোরাম।

রোববার (৪ সেপ্টেম্বর) দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন কর্মসূচি শেষে সমাজকল্যাণ মন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছে সংগঠনটি।

প্রতিবন্ধী শিশুদের স্কুল
সংগঠনের সভাপতি জাকির হোসেন
মানববন্ধনে সংগঠনের সভাপতি জাকির হোসেন বলেন, প্রতিবন্ধী ভাতা হিসেবে প্রতিবন্ধীরা মাসে মাত্র ৭৫০ টাকা পেয়ে থাকে, যা প্রস্তাবিত বাজেটে ১০০ টাকা বেড়ে ৮৫০ টাকা হওয়ার কথা। তবে এটি এখনো কার্যকর হয়নি। একজন স্বাভাবিক মানুষের তুলনায় একজন প্রতিবন্ধীর খরচ বেশি। কারণ প্রতিবন্ধীকে স্বাভাবিক খরচের পাশাপাশি চিকিৎসা খরচ করতে হয় নিয়মিত। ৭৫০ টাকা দিয়ে বর্তমানে এক সপ্তাহও চলা সম্ভব নয়। সেখানে একজন প্রতিবন্ধী কীভাবে বেঁচে থাকবে? তাই অবিলম্বে প্রতিবন্ধী ভাতা ৫০০০ টাকা করার দাবি বাস্তবায়নের জন্য অনুরোধ করছি।

তিনি বলেন, সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় কর্তৃক বিশেষ শিক্ষা বিদ্যালয় অনলাইনে এমপিওভুক্তির গৃহীত আবেদন মোট ১৭৭২টি। আবেদন গ্রহণের দীর্ঘ ২ বছর ৯ মাস অতিবাহিত হলেও এখন পর্যন্ত সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় কোনো প্রকার পদক্ষেপ নেয়নি। দীর্ঘদিন যাবত শিক্ষক কর্মচারীরা বিনা বেতনে মানবেতর জীবনযাপন করছেন।

প্রতিবন্ধী শনাক্তকরণ জরিপ অনুযায়ী প্রায় ২৭ লাখ ব্যক্তিকে প্রতিবন্ধী হিসেবে শনাক্ত করা হয়েছে। এটি একটি চলমান প্রক্রিয়া। ধারাবাহিকভাবে এই শনাক্তকরণ কার্যক্রম চলবে। শনাক্তকরণ প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের মধ্যে প্রায় ১৬ লাখ জীবনব্যাপী শিক্ষাপোযোগী।

প্রতিবন্ধী শিশুদের স্কুল

জাকির হোসেন বলেন, প্রত্যেকটি ইউনিয়নে কমপক্ষে একটি প্রতিবন্ধী বিদ্যালয় স্থাপন করা না হলে বুদ্ধি প্রতিবন্ধী ও অটিস্টিকসহ স্নায়ু বিকাশ ও শারীরিক প্রতিবন্ধীদের শিক্ষাদান সম্ভব নয়। তাই তাদের জন্য প্রতিবন্ধী বিদ্যালয় অবশ্যই প্রয়োজন। একই সঙ্গে উক্ত বিদ্যালয়সমূহের বেতন-ভাতা অন্যান্য বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের মতো করা প্রয়োজন। বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী এবং অন্যান্য প্রতিবন্ধী ব্যক্তিরা এ সমাজে সবচেয়ে অসহায়, নিজের ভালোমন্দ ও করণীয় তাঁরা নির্ধারণ করতে পারে না।

তিনি আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রীর কাছে আবেদন, দেশের লাখ লাখ অবহেলিত ও সুবিধা বঞ্চিত প্রতিবন্ধী শিশুদের ভাগ্যোন্নোয়ন এবং শিক্ষক-কর্মচারীদের কর্মসংস্থান ও রুটি রুজির ব্যবস্থা করতে প্রতিবন্ধী বিদ্যালয়গুলো স্বীকৃতি ও এমপিওভুক্তির পদক্ষেপ গ্রহণ করুন।

প্রতিবন্ধী শিশুদের স্কুল

প্রতিবন্ধী ভাতা ৫ হাজার টাকা করার দাবি

সংগঠনের পক্ষে দেওয়া ৬ দফা দাবি হলো:
১. প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের সাধারণ বিদ্যালয়ের ন্যায় শিক্ষা উপবৃত্তি দিতে হবে ও প্রতিবন্ধী ভাতা ৫০০০ টাকা পর্যন্ত বৃদ্ধি করতে হবে।
২. অটিজম ও প্রতিবন্ধী শিশুদের স্বাস্থ্য সেবাসহ শিক্ষা কারিকুলাম নিশ্চিত করতে হবে।
৩. অভিভাবকহীন প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের পুনর্বাসন করার আশ্বাস দিতে হবে।
৪. চলতি মাসের মধ্যেই ২০২০ সালে অনলাইনে আবেদনকৃত প্রতিবন্ধী বিদ্যালয়সমূহ স্বীকৃতি প্রদানপূর্বক এমপিওভুক্তকরণের ব্যবস্থা নিতে হবে। আবেদনের সময় থেকে প্রতিবন্ধী বিদ্যালয়ের স্বীকৃতি দিয়ে এমপিওভুক্ত করতে হবে।
৫. প্রতিবন্ধী ব্যক্তির অধিকার ও সুরক্ষা আইন ২০১৩ পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়ন করতে হবে।
৬. প্রতিবন্ধী ব্যক্তির জন্য প্রতিবন্ধী উন্নয়ন অধিদপ্তর অবিলম্বে বাস্তবায়নের উদ্যোগ নিতে হবে।

প্রতিবন্ধী শিশুদের স্কুল

সংগঠনটির পক্ষ থেকে বেশ ক‌য়েক‌টি দা‌বি তু‌লে ধরা হয়। দা‌বিগু‌লো হ‌লো- প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের সাধারণ বিদ্যালয়ের মতো শিক্ষা উপবৃত্তি দিতে হবে। প্রতিবন্ধী ভাতা ৫ হাজার টাকা পর্যন্ত বাড়াতে হবে। অটিজম ও প্রতিবন্ধী শিশুদের স্বাস্থ্য সেবাসহ শিক্ষা কারিকুলাম নিশ্চিত করতে হবে। অভিভাবকহীন প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের পুনর্বাসন করার আশ্বাস দিতে হবে। চলতি মাসের মধ্যেই ২০২০ সালে অনলাইনে আবেদন করা প্রতিবন্ধী বিদ্যালয়গুলো স্বীকৃতি প্রদানপূর্বক এমপিওভুক্তকরণের ব্যবস্থা নিতে হবে। আবেদনের সময় থেকে প্রতিবন্ধী বিদ্যালয়ের স্বীকৃতি দিয়ে এমপিওভুক্ত করতে হবে। প্রতিবন্ধী ব্যক্তির অধিকার ও সুরক্ষা আইন ২০১৩ পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়ন করতে হবে। প্রতিবন্ধী উন্নয়ন অধিদপ্তরকে অবিলম্বে বাস্তবায়নের উদ্যোগ নিতে হবে।

মানববন্ধনে বক্তব্য দেন- সংগঠনের সভাপতি জাকির হোসেন, সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম, এসএম ফেরদৌসসহ শিক্ষক ও অভিভাবকরা।

প্রতিবন্ধী ব্যক্তির ভাতা বৃদ্ধি ও বিদ্যালয়ে বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও কর্মচারীদের ও এমপিওভুক্তির দাবিতে মানববন্ধন ও স্মারকলিপি প্রদান

প্রতিবন্ধী শিশুদের স্কুল

স্থান: জাতীয় প্রেসক্লাব, তারিখ 04/09/2022 রোজ রবিবার সময় সকাল ৯ ঘটিকা

ওরা মানুষ, ওদের বেঁচে থাকার অধিকার রয়েছে।

Leave a Reply