বিদ্যুৎ বিল কমানোর ৬ কৌশল | বিদ্যুৎ বিল কমাতে ফ্রিজ ব্যবহারের নিয়ম | Electricity bill

বিদ্যুৎ বিলকমানোর ৬ কৌশল

শীতের সময়ে ফ্যান, এসি বন্ধ রাখলেও সমস্যা হয় না। যে কারণে বিদ্যুৎ বিল অনেকটা কমই আসে। কিন্তু গরমে? মাস শেষে বিদ্যুৎ বিল হাতে পেয়ে মাথা যেন আরও গরম হয়ে যায়!

তাই প্রয়োজন ব্যতীত অযথা এর অপচয় করা মোটেও ঠিক নয়। এতে করে দেশ হারায় সম্পদ আর নিজেদের গুণতে হয় টাকা। যেদিকটায় বিবেচনা করে অপচয় বন্ধ করুন না কেন লাভটা নিজেরই। এবার দেখে নেওয়া যাক বিদ্যুৎ অপচয় রোধে যে কৌশল ব্যবহার করলে বিদ্যুৎ কম খরচ হবে।

সুইচ বন্ধ রাখা: ফ্যান, বাতি, টিভি, কম্পিউটার ব্যবহার না করলে সব সময় এগুলোর সুইচ বন্ধ করে রাখা। অনেক সময় বাথরুম বা বারান্দার লাইট জ্বলে থাকে। সেটি যাতে না হয়, তা খেয়াল রাখা হলে বিদ্যুৎ বিল বেশ খানিকটা কমে আসে। মেশিন বা ইস্ত্রি ব্যবহার না করলে প্লাগ খুলে রাখা উচিত। কম্পিউটার বা টিভি ব্যবহার না করলে স্লিপ মুডে বা বন্ধ করে রাখুন।

বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী যন্ত্রপাতি ব্যবহার: প্রচলিত বাতির তুলনায় এনার্জি বাল্ব বা এলইডি বাতি ব্যবহার করা হলে বিদ্যুতের ব্যবহার অনেক কমে আসে। যেখানে প্রচলিত একটি বাতি একশো ওয়াট ব্যবহার করে, সেখানে একটি এনার্জি বাতি ব্যবহার করে মাত্র ২৫ ওয়াট।

প্রথমদিকে বাতির ক্রয় মূল্য বেশি হলেও এগুলো দীর্ঘদিন সেবা দেয় এবং বিলের হিসাবে অনেক বেশি সাশ্রয়ী হয়। এছাড়াও এখন ইনভার্টারযুক্ত ফ্রিজ, এসি, ওয়াশিং মেশিন পাওয়া যায়। এসব যন্ত্রপাতি ব্যবহার করলে বিদ্যুৎ বিল দুই তৃতীয়াংশ কমিয়ে আনা সম্ভব।

এসির নিয়ন্ত্রিত ব্যবহার: বাসাবাড়িতে এসি ব্যবহার এখন অনেক বেশি নিয়মিত ঘটনা। কিন্তু নিয়ন্ত্রিতভাবে এসি ব্যবহার করা গেলে এর বিল কমিয়ে আনা সম্ভব। এসির তাপমাত্রা সবসময় ২৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসে রাখতে হবে। নির্দিষ্ট মাত্রায় ঠাণ্ডা হয়ে যাওয়ার পর এসি বন্ধ করে ফ্যান চালানো যেতে পারে।

রাতে টাইমার দিয়ে রাখা ভালো, যাতে নির্দিষ্ট মাত্রায় ঠাণ্ডা হওয়ার পর এসি আপনা আপনি বন্ধ হয়ে যায়।

মানসম্মত তার ব্যবহার: বিদ্যুতের সংযোগ ও তারের ওপর বিদ্যুতের বিল অনেক সময় নির্ভর করে। খারাপ মানের তার হলে, সংযোগ দুর্বল বা নড়বড়ে হলে সেটি লো ভোল্টেজের সৃষ্টি করে, ফলে বিলও বেড়ে যায়।

বহুতল ভবনের সাব-স্টেশন পুরাতন হলে সেটি বেশি বিলের কারণ হতে পারে। বছরে অন্তত একবার এসব যন্ত্রপাতি পরীক্ষা করতে হবে। বাসার এসি ও ফ্রিজের ফিল্টার নিয়মিত সময় পরপর পরিষ্কার করানো হলে সেটি কম বিদ্যুৎ ব্যবহার করবে।

বিকল্প যন্ত্রপাতির ব্যবহার: বাসায় রান্না করা বা খাবার গরম করার ক্ষেত্রে মাইক্রো ওভেন ব্যবহার না করে চুলা ব্যবহার করতে পারেন। স্লো কুকার বা টোস্টার ব্যবহার করা যায়। মাইক্রো ওভেনে ডিফ্রস্ট না করে পানিতে রেখে খাবারের বরফ ছাড়িয়ে নেয়া যেতে পারে। ওয়াশিং মেশিনে গরম পানির সেটিং ব্যবহার না করলে বিদ্যুৎ বিল কমে আসবে।

প্রাকৃতিক শক্তির ব্যবহার: এখন বহুতল ভবনে সৌর বিদ্যুৎ ব্যবহার বাধ্যতামূলক করেছে বিদ্যুৎ বিতরণকারী সংস্থাগুলো। যেখানে বিদ্যুতের ঘাটতি রয়েছে বা বেশি লোডশেডিং হয়, তারাও সৌর বিদ্যুৎ ব্যবহার করতে পারেন। পাশাপাশি দিনের বেলায় ঘরের ভেতর বাতি না জ্বালিয়ে সূর্যের আলোর সুবিধা নেয়ার প্রবণতা তৈরি করা ভালো। সেটি আবাসিক বিদ্যুতের ব্যবহার অনেকটা কমিয়ে দিতে পারে।

বর্তমানে বেশিরভাগ মানুষের ঘরেই ফ্রিজ আছে। ফ্রিজ ছাড়া জীবনযাপন করা এখন অনেকটাই মুশকিল। কর্মব্যস্ত জীবনে ফ্রিজ যেন একটু হলেও স্বস্তি দেয়। বিশেষ করে ঘরে একটি ফ্রিজ থাকলে খাবার সংরক্ষণ করার বিষয়ে আর চিন্তা করতে হয় না।

 

Read More:পৃথিবীর সবচেয়ে বিষাক্ত পাঁচটি ফুল | বিষাক্ত ফুল This flower is poisonous

তবে ফ্রিজের কারণে অতিরিক্ত বিদ্যুৎ বিল গুনতে গিয়ে ঝামেলায় পড়েন অনেকেই। আসলে নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে ফ্রিজ ব্যবহার করলে বিদ্যুতের বিল অনেক কম আসে।

তবে অনেকেরই এ বিষয়ে তেমন ধারণা নেই! এ কারণেই মাসের পর মাস অতিরিক্ত বিদ্যুৎ বিল গুনতে হচ্ছে। চলুন তবে জেনে নেওয়া যাক অতিরিক্ত বিদ্যুৎ বিল কমাতে যা করণীয়-

>> প্রথমত ফ্রিজের চারপাশ খোলা রাখুন। অর্থাৎ ফ্রিজের উপরে ও এর আশেপাশে বিভিন্ন জিনিস রাখবেন না।

এতে ফ্রিজের ঠান্ডা করার প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্ত হয়। এক্ষেত্রে ফ্রিজ থেকে সৃষ্ট গরম বাতাস বের হতে পারে না, ফলে খাবার ঠান্ডা করার ক্ষেত্রে বেশি অ্যানার্জির প্রয়োজন হয়। এমনটি হলে আপনার বিদ্যুৎ বিলও বেড়ে যাবে।

>> নিয়মিত ফ্রিজের কনডেন্সার পরীক্ষা করুন। কনডেন্সাররের কয়েলে ময়লা জমে গেলে সঠিকভাবে সেটি তাপ বিকিরণ করতে পারে না। ফলে বেশি বিদ্যুৎ খরচ হতে পারে। তাই কনডেন্সার পরিষ্কার রাখুন।

এজন্য ফ্রিজ বন্ধ করে এর পেছনে বা নিচে কনডেন্সার কয়েল পরিষ্কার করুন। এক্ষেত্রে ব্যবহার করুন একটি ব্রাশ বা ভ্যাকুয়াম ক্লিনার। কনডেন্সার কয়েল বছরে ২-৩ বার পরিষ্কার করুন।

>> ফ্রিজের দরজা ঠিকমতো লাগছে কি না তা পরীক্ষা করুন। অনেক সময় বাইরে থেকে মনে হয় ফ্রিজের দরজা লাগানো আছে, তবে তা ঠিকমতো লাগে না।

এমন হলে ফ্রিজের ঠান্ডা বাতাস বেরিয়ে যায়। ফলে বিদ্যুৎ বেশি খরচ হয়। আবার খাবারও নষ্ট হতে পারে। তাই সেদিকে খেয়াল রাখুন।

>> ফ্রিজের তাপমাত্রা ঠিক রাখতে একটি বোতলে পানির সঙ্গে লবণ মিশিয়ে রাখুন। এক্ষেত্রে যদি কখনো বিদ্যুৎ চলেও যায় তাহলে খাবার নষ্ট হবে না।

>> কখনো গরম খাবার ফ্রিজে রাখবেন না। আর যদি গরম খাবার রাখেন তাহলে ফ্রিজ বেশি অ্যানার্জি খরচ করবে সেটি ঠান্ডা করতে। তাই যে কোনো খাবার ঠান্ডা হলে তবেই ফ্রিজে রাখুন।

>> ফ্রিজের রেগুলেটারের পাওয়ারের দিকে খেয়াল রাখুন। এর পাওয়ার যত কম থাকবে বিদ্যুৎ বিল তত কম উঠবে।

>> ফ্রিজ থেকে অপ্রয়োজনীয় থালা-বাটি, বক্স, বোতল ইত্যাদি সরিয়ে নিন। যখন দেখবেন ফ্রিজে রাখার মতো কোনো জিনিসই নেই তখন ফ্রিজ বন্ধ রাখাই ভালো।

>> ফ্রিজে বেশি খালি জায়গা থাকলে তাপমাত্রা ধরে রাখার ক্ষমতা কমে। তাই খালি ফ্রিজ বন্ধ রাখাই ভালো।> ঋতু পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে ফ্রিজের তাপমাত্রাও পরিবর্তন করুন। রেফ্রিজারেটরের তাপমাত্রা ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের কম রাখা উচিত নয়। অন্যদিকে ডিপ ফ্রিজের তাপমাত্রা ১৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে রাখবেন না।

গুগল লেন্স অ্যাপের দারুণ ৯টি সুবিধা জানুন

সূত্র: কার্বনট্র্যাক

 

জেএমএস/জিকেএস

 

 

 

বিদ্যুৎ বিল দেখার নিয়ম, বিদ্যুৎ বিল সংক্রান্ত অভিযোগ, বিদ্যুৎ বিল বেশি আসলে করণীয়, বিদ্যুৎ বিল ইউনিট কত ২০২১, ফ্রিজের বিদ্যুৎ বিল কমানোর উপায়, ডিজিটাল মিটারে বিল কমানোর উপায়, বিদ্যুৎ বিল কমানোর ডিভাইস, বিদ্যুৎ চুরি করার উপায়

electricity bill check bd, electricity bill in bangladesh, electricity bill payment, desco electricity bill, electricity bill online, electricity bill download, dpdc bill, electricity bill payment online bangladesh

Leave a Reply