বুয়েটে চান্স পাওয়া অদম্য শোভা নেটিজেনদের প্রশংসায় ভাসছেন

জীবনে বহু প্রতিকূলতা এসেছে শোভা রানীর। সৎবাবার অত্যাচারের শিকার হয়েছেন, দারিদ্র্যের সঙ্গে লড়াই করেছেন। তবু হাল ছাড়েননি। অনেক সংগ্রাম করো, বাধা পেরিয়ে অবশেষে শোভা রানীর ঠিকানা হয়েছে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বুয়েট)। গত ২৫ নভেম্বর প্রকাশিত বুয়েটের ফলাফলে মেধাতালিকায় ৭২২তম হয়ে পুরকৌশলে পড়ার সুযোগ পাচ্ছেন এই শিক্ষার্থী।

বহু প্রতিকূলতা জয় করে দেশের শীর্ষস্থানীয় প্রতিষ্ঠানে সফলতার সাথে জায়গা করে নেওয়ায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রশংসা ও অভিনন্দনে ভাসছেন শোভা। ফেসবুকে অনেকেই তার ছবি পোস্ট লিখেছেন, শত বাধা পেরিয়ে জীবনের কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছার ক্ষেত্রে শোভা জ্বলন্ত এক অনুপ্রেরণা।

শোভা রানী ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা শহরের মধ্যপাড়া এলাকার প্রতিমা রানী দাসের একমাত্র সন্তান। জন্মের পাঁচ–ছয় মাস আগেই বাবা বুলু চন্দ্র লোদকে হারান। সেই থেকে শোভাকে নিয়ে মায়ের সংগ্রাম শুরু। স্বজনদের কাছ থেকে বিতাড়িত হয়ে মা-মেয়ে নানা জায়গায় ঘুরেছেন।

শেষ পর্যন্ত মেয়ের চিন্তা করেই দ্বিতীয় বিয়ে করে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় চলে আসেন প্রতিমা। কিন্তু সেখানেও ভাগ্য সুপ্রসন্ন হয়নি। সহ্য করতে হয় স্বামীর নিয়মিত নির্যাতন। এমন প্রতিকূল পরিস্থিতির মধ্যেই জেএসসি, এসএসসি ও এইচএসিতে জিপিএ-৫ পান শোভা। এসএসসির ফল প্রকাশের কয়েক দিন পর সৎবাবা আবার শোভাকে ঘর থেকে বের করে দেন।

শোভার প্রশংসা করে নিশাত হোসাইন ফেসবুকে লিখেছেন, ‘‘মেধা কখনও লুকিয়ে থাকে না। যার প্রমাণ শোভা। শত প্রতিকূলতা পিছনে ফেলে ঠিক মত এসেছে প্রাপ্য জায়গাতে।’’

শুভ কামনা জানিয়ে মোঃ শাওন খান লিখেছেন, ‘‘এই বোনের জীবনী পড়ে চোখ ঝাপসা হয়ে গেছিলো। এগিয়ে যাও বোন। বাকি জীবনে সুখের হোক। ভালো থাকো আনন্দে বাঁচো। শুভকামনা নিরন্তর।’’

সৌরভ মজুমদার লিখেছেন, ‘‘পরিবেশ, প্রতিকূলতা, দরিদ্রতার উছিলা দিয়ে যারা পড়াশোনা বাদ দিয়ে দেয় তাদের জন্য এই বোনটি উজ্জ্বল এক দৃষ্টান্ত।’’

সুকুমার কণ্ডু লিখেছেন, ‘‘এই মেয়ের জন্য শুভ কামনা। আর পরিশেষে দেশের ও মানুষের জন্য নিজেকে উৎসর্গ করো। কারণ তুমি একজন আইডল।’’

বেলি রহমান লিখেছেন, ‘‘বড় হয়ে দেশ ও দশের মানুষের কল্যাণে নিজেকে উৎসর্গ করো –কেননা মানুষের ভালোবাসা আজ তোমার চলার পথকে সুগম করেছে । শুভ কামনা রইলো।’’

সুত্রঃ ইনকিলাব

Leave a Reply