বৃত্তিমূলক বা কর্মমুখী শিক্ষা রচনা | Vocational education (৫টি রচনা)

বৃত্তিমূলক বা কর্মমুখী শিক্ষা রচনা

ভূমিকা:

ছাত্রজীবনের সফল সমাপ্তি ঘটিয়ে সকলেই একটি সম্মানজনক কাজের সঙ্গে যুক্ত হতে চায়। শিক্ষার্জনের অর্জিত ধারণাকে জীবিকার্জনের কাজে প্রয়ােগ করতে চায়। জীবিকার জন্যই প্রতিটি মানুষকে যােগ্য শিক্ষা অর্জন করতে হয়। তবে কেবল জীবিকাই শিক্ষার একমাত্র উদ্দেশ্য নয়। কোন জীবিকা বা বৃত্তি মানুষ নির্বাচন করবে তার সঙ্গে শিক্ষার একটি সংযােগ বিদ্যমান থাকে। জীবিকা বা বৃত্তি যেটি হবে তার সঙ্গে পূর্ব প্রস্তুতির প্রয়ােজন হয়। বৃত্তিমূলক শিক্ষা তারই পূর্ব শিক্ষার ব্যবস্থাপত্র।

বৃত্তিমূলক শিক্ষা কী:

‘বৃত্তি’ কথাটির অর্থ হলাে জীবিকা নির্বাহের জন্য কর্ম বা পেশা । আমাদের দেশে বৃত্তিমূলক শিক্ষা বলতে
সাধারণ কারিগরি শিক্ষাকেই বােঝায়। ইলেক্ট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং, গাড়ি মেরামত, ড্রাইভিং, দর্জি বিদ্যা, কাঠমিস্ত্রির শিক্ষা, বই বাঁধাই, টাইপ রাইটিং ও শর্টহ্যান্ড শিক্ষা ইত্যাদি শিক্ষা বৃত্তিমূলক শিক্ষার মধ্যে পড়ে। এ বিষয়ে পাঠগ্রহণের জন্য একজন ছাত্রকে উচ্চশিক্ষায় শিক্ষিত হবার প্রয়ােজন পড়ে না। নবম-দশম থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত পড়ুয়া যে কেউ বৃত্তিমূলক শিক্ষাকে খুব সহজেই গ্রহণ করতে পারে। এ শিক্ষাগ্রহণে ব্যক্তি যেমন কর্মমুখী হতে পারে তেমনি দেশও লাভবান হবার সুযােগ থাকে। আধুনিক চেতনা থেকে মনে করা হয় যে, শিক্ষা যদি আত্মপ্রতিষ্ঠার সহায়ক না হয় তাহলে সে শিক্ষা নিরর্থক।’ সে দিক থেকে বিচার করতে গেলে বৃত্তিমূলক শিক্ষাকেই সর্বাগ্রে মূল্যায়ন করতে হয়।

উদ্দেশ্যহীন শিক্ষা:

আমাদের দেশের প্রচলিত শিক্ষাব্যবস্থা কর্মমুখী শিক্ষাব্যবস্থা নয়। ব্যতিক্রম হিসেবে কারিগরি শিক্ষা ব্যবস্থা নামে একটি শিক্ষাপদ্ধতি আমাদের দেশে আছে, যা দেশের সামগ্রিক শিক্ষা চিত্র নয়। বৃত্তিমূলক শিক্ষাগ্রহণ না করার কারণেই যে শিক্ষক হলে ভালাে হতাে সে হয়ত হয়েছে সৈনিক, যার ডাক্তার হবার কথা সে হয়ত হয়ে ওঠে আইন ব্যবসায়ী। উদ্দেশ্যহীন শিক্ষাগ্রহণ করে প্রথমে কেবল সার্টিফিকেট সংগ্রহের কাজ চলে তারপর যে যেমনটি জোটাতে পারল সেটিই তার বৃত্তি বা পেশা। ফলে জাতি দক্ষ পেশাজীবী জনবল পাচ্ছে না। অথচ মানুষ যদি তার ইচ্ছেমতাে বা যােগ্যতা মতাে বৃত্তি গ্রহণ করতে পারত, তাহলে দেশ হতে দক্ষ কর্মজীবীতে ভরপুর। আর আমাদের পক্ষে সম্ভব হতাে কল্যাণকামী দেশ পাওয়া ।।

বৃত্তিমূলক বা কর্মমুখী শিক্ষার গুরুত্ব :

আমাদের দেশের মতাে উন্নয়নশীল দেশে বৃত্তিমূলক শিক্ষার প্রয়ােজন অনেক বেশি। বেকারত্ব লাঘবের একটি মহামন্ত্র হতে পারে বৃত্তিমূলক বা কারিগরি শিক্ষা কৃষিকর্ম, বাঁশ ও বেতের কাজ, প্লাস্টিকের কাজ, তাঁতের কাজ, ক্ষুদ্র যন্ত্রপাতি তৈরির কাজ ইত্যাদি কাজে দক্ষতা অর্জনের জন্য দরকার বৃত্তিমূলক শিক্ষা। বৃত্তিমূলক শিক্ষাগ্রহণ করে সামান্য পুঁজিতে একজন মানুষ তার বেকারত্ব ঘােচাতে উদ্যোগী হতে পারে। যেকোনাে শিল্পকারখানাতে অতি সহজে কাজ জুটিয়ে নিতে পারে। তাই আত্ম-উন্নয়ন এবং বেকারত্ব দূরীকরণে এ শিক্ষার রয়েছে অধিক গুরুত্ব।

দ্বিমুখী শিক্ষা ও বৃত্তিমূলক শিক্ষা:

আমাদের দেশের শিক্ষা ব্যবস্থাপনায় বহুমুখী শিক্ষা কার্যক্রম প্রচলিত আছে। প্রশ্ন উঠতে পারে,
বৃত্তিমূলক শিক্ষাকে এত গুরুত্ব দিলে দেশে কি শুধু কারিগরই হবে প্রধান জনবল? প্রকৃতপক্ষে এ প্রশ্নের উত্তর থেকেই সূত্রপাত ঘটেছে দ্বিমুখী শিক্ষা বা বহুমুখী শিক্ষার। একজন ছাত্রের মেধা ও মনন অন্য ছাত্রটি থেকে আলাদা। মেধার দিক থেকে যে ছাত্রের

অবস্থান অত্যন্ত নিম্ন পর্যায়ের তার পক্ষে মহাকাশ বিজ্ঞান বা সমুদ্র বিজ্ঞান বুঝে ওঠার কথা নয়। তেমনিভাবে পদার্থ বিজ্ঞানে মেধা এবং প্রবল আগ্রহ আছে এমন ছাত্র নে যাবে কাঠমিস্ত্রি হবার জন্য। সেজন্যেই মেধা ও যােগ্যতার নিরিখে পছন্দ মােতাবেক পাঠ গ্রহণের সুযােগ আছে আমাদের দেশে। অপেক্ষাকৃত কম মেধাবীদের বাঁচতে হবে, তাদেরও চাই কর্ম, চাই জবিকার নিশ্চয়তা। তাই বহুমুখী শিক্ষা পরিবেশের মধ্য থেকে কেউ কেউ বৃত্তিমূলক শিক্ষায় নিজেকে দক্ষ করে জীবিকা নির্বাহ করবে সেটাই স্বাভাবিক। শিক্ষাগ্রহণে অর্থনৈতিক বিষয়টিও ম গুরুত্বপূর্ণ নয়। অর্থ না থাকলে আজকাল উচ্চশিক্ষা গ্রহণও সহজসাধ্য ব্যাপার নয়। তাই অপেক্ষাকৃত কম খরচে বৃত্তিমূলক শিক্ষাগ্রহণ করে দেশ ও জাতির জন্য দক্ষ জনশক্তি হওয়াও কম গৌরবের বিষয় নয়।

বৃত্তিমূলক শিক্ষার মূল্যায়ন:

বৃত্তিমূলক শিক্ষা গ্রহণের মধ্য দিয়ে একজন ছাত্র কেবল পুঁথিগত দিক থেকেই অভিজ্ঞতা অর্জন করে না। বরং ব্যবহারিক বিষয়েও তার দক্ষতা অর্জনের সুযােগ থাকে। দেশীয় শিল্পকারখানাতে ব্যবহারিক কাজে দক্ষ জনশক্তির অনেক চাহিদা রয়েছে। ফলে আত্মকর্মসংস্থান নিয়ে তাকে ভাবতে হচ্ছে না। পাশাপাশি দেশের বাইরেও রয়েছে কারিগরি জ্ঞানের দক্ষ জনশক্তির ব্যাপক চাহিদা। উন্নত বিশ্বে সাধারণ একজন ইলেক্ট্রিশিয়ানের বেতনও সন্তোষজনক। বিদেশে দক্ষ জনশক্তি পাঠিয়ে দেশ আজ প্রচুর রেমিটেন্স পাচ্ছে প্রকৃতপক্ষে দেশের বাইরে বৃত্তিমূলক বা কারিগরি শিক্ষার যথাযথ মূল্যায়ন হচ্ছে বলেই ।

বৃত্তিমূলক শিক্ষার বিস্তার:

যুগ বাস্তবতার কথা বিবেচনা করে বৃত্তিমূলক শিক্ষার সম্প্রসারণ জরুরি। প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষার স্তরে কুটিরশিল্প ও সুপ্রচলিত হস্তশিল্পের শিক্ষা দান আবশ্যিক করা প্রয়ােজন যেন তার মাধ্যমে ছাত্ররা এক একটি বৃত্তিতে আত্মনিয়ােগের পথ পায় । বর্তমানে মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের জন্য কিঞিৎ পাঠ ব্যবস্থা থাকলেও তা সন্তোষজনক নয় কারু কলেজ, টেকনিক্যাল কলেজ, কমার্শিয়াল কলেজসহ বৃত্তিমূলক নানা প্রতিষ্ঠান সম্প্রসারণ করা প্রয়ােজন। সেই সাথে প্রয়ােজন। কলকারখানায় কর্মরত অদক্ষ জনবলকে আধুনিক প্রশিক্ষণে প্রশিক্ষিত করে তাদের পেশাগত মানােন্নয়ন করা।

উপসংহার:

বাংলাদেশের মতাে একটি জনবহুল দরিদ্র দেশে বৃত্তিমূলক শিক্ষাকে সর্বাগ্রে অগ্রাধিকার দেয়া দরকার। ব্যক্তির বেকার সমস্যা দূরীকরণ এবং কল্যাণকামী রাষ্ট্র গঠনে বৃত্তিমূলক বা কারিগরি শিক্ষাকে উৎসাহিত করার বিকল্প নেই।

কর্মমুখী শিক্ষা বা বৃত্তিমূলক শিক্ষা

ভূমিকা: ‘কর্মশালার প্রবেশের দ্বার অতিক্ষুদ্র, রাজপ্রাসাদের সিংহদ্বারের ন্যায় ইহা অভ্রভেদী নহে; কিন্তু গৌরবের বিষয় এই যে, এখানে নিজের শক্তি সম্বল করিয়া প্রবেশ করিতে হয়, ভিক্ষাপাত্র লইয়া নহে।’

                    -রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

মানুষের মৌলিক চাহিদার মধ্যে শিক্ষা একটি। আর এই শিক্ষা মানুষের জীবন ও জীবিকার জন্য গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। কেননা শিক্ষাই মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ করে দেয়। বিজ্ঞানের নতুন নতুন আবিষ্কার এবং সামাজিক, অর্থনৈতিক, সাংস্কৃতিক উন্নতির ফলে কর্মসংস্থানের ধারণা ধীরে ধীরে পাল্টে যাচ্ছে। নতুন নতুন কাজের দ্বার উন্মোচিত হচ্ছে। যার সাথে বিশেষ শিক্ষা অপরিহার্য হয়ে পড়ছে। ফলে সাধারণ শিক্ষার চেয়ে কর্মমুখী শিক্ষাই অধিক গুরুত্ব পাচ্ছে।

Introduction: ‘The entrance to the workshop is very small, not as impenetrable as the gateway to the palace; But the pride is that you have to enter here with your own strength, not with a beggar. ‘

                     -Rabindranath Tagore

Education is one of the basic human needs. And this education is important for human life and livelihood. Because education provides employment opportunities to people. The concept of employment is slowly changing as a result of new discoveries in science and social, economic, cultural development. New doors of work are being opened. With which special education is becoming essential. As a result, vocational education is gaining more importance than general education.

কর্মমুখী শিক্ষা: কর্মমুখী শিক্ষা এমন এক ধরণের শিক্ষাব্যবস্থা, যা গ্রহণ করলে শিক্ষার্থীরা ঘরে-বাইরে, ক্ষেতে-খামারে, কলে-কারখানায় যেকোনো কাজে বা পেশায় অতি দক্ষতার সঙ্গে কাজ করার যোগ্যতা লাভ করে। কর্মমুখী শিক্ষার ধারণা মূলত পেশাগত কর্মের সাথে সম্পৃক্ত। এই শিক্ষা এক ধরণের বিশেষায়িত শিক্ষা, যা শিক্ষার্থীর কর্মদক্ষতা সৃষ্টি করে এবং শিক্ষার্থীকে সৃজনশীল ও উৎপাদনমুখী করে তোলে।

Career-oriented education: Career-oriented education is a type of education system which, when adopted, enables the students to work very efficiently in any work or profession at home, outside, in the field, on the farm or in the factory. The concept of career oriented education is mainly related to professional work. This education is a kind of specialized education, which builds the efficiency of the student and makes the student creative and productive.

বৃত্তিমূলক শিক্ষা কী:
‘বৃত্তি’ কথাটির অর্থ হলাে জীবিকা নির্বাহের জন্য কর্ম বা পেশা । আমাদের দেশে বৃত্তিমূলক শিক্ষা বলতে
সাধারণ কারিগরি শিক্ষাকেই বােঝায়। ইলেক্ট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং, গাড়ি মেরামত, ড্রাইভিং, দর্জি বিদ্যা, কাঠমিস্ত্রির শিক্ষা, বই বাঁধাই, টাইপ রাইটিং ও শর্টহ্যান্ড শিক্ষা ইত্যাদি শিক্ষা বৃত্তিমূলক শিক্ষার মধ্যে পড়ে। এ বিষয়ে পাঠগ্রহণের জন্য একজন ছাত্রকে উচ্চশিক্ষায় শিক্ষিত হবার প্রয়ােজন পড়ে না। নবম-দশম থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত পড়ুয়া যে কেউ বৃত্তিমূলক শিক্ষাকে খুব সহজেই গ্রহণ করতে পারে। এ শিক্ষাগ্রহণে ব্যক্তি যেমন কর্মমুখী হতে পারে তেমনি দেশও লাভবান হবার সুযােগ থাকে। আধুনিক চেতনা থেকে মনে করা হয় যে, শিক্ষা যদি আত্মপ্রতিষ্ঠার সহায়ক না হয় তাহলে সে শিক্ষা নিরর্থক।’ সে দিক থেকে বিচার করতে গেলে বৃত্তিমূলক শিক্ষাকেই সর্বাগ্রে মূল্যায়ন করতে হয়।

What is vocational education:
The word ‘scholarship’ means work or occupation for making a living. To say vocational education in our country
It teaches general technical education. Vocational education includes electrical engineering, car repair, driving, tailoring, carpentry, bookbinding, typewriting and shorthand education. A student does not need to be educated in higher education to study this subject. Anyone studying from ninth-tenth to twelfth class can easily get vocational education. In this education, just as an individual can be career-oriented, there is also an opportunity for the country to benefit. From the modern consciousness, it is thought that if education is not conducive to self-establishment, then that education is futile. ‘

কর্মমুখী শিক্ষার প্রকারভেদ : কর্মমুখী শিক্ষা যান্ত্রিক শিক্ষা নয়। জীবনমুখী শিক্ষার পরিমণ্ডলেই তার অবস্থান। তাই পরিপূর্ণ ও সামগ্রিক জীবনবােধের আলােকে কর্মমুখী শিক্ষা দুই ভাগে বিভক্ত। একটি হলাে – উচ্চতর কর্মমুখী শিক্ষা। এটিতে যারা বিজ্ঞান বিষয়ে পারদর্শী তারা – বিভিন্ন কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় থেকে উচ্চতর ডিগ্রি অর্জন করে ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, কৃষিবিদ ইত্যাদি স্বাধীন পেশা গ্রহণ করতে পারে। চাকরির আশায় বসে থাকতে হয় না। আরেকটি হলাে – সাধারণ কর্মমুখী শিক্ষা। এর জন্য কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ের উচ্চশিক্ষার দরকার হয় না। প্রাথমিক বা মাধ্যমিক শিক্ষাই যথেষ্ট। সাধারণ কর্মমুখী শিক্ষার মধ্যে পড়ে কামার, কুমার, তাঁতি, দর্জি, কলকারখানার কারিগর, মােটরগাড়ি মেরামত, ঘড়ি-রেডিও-টিভি-ফ্রিজ মেরামত, ছাপাখানা ও বাঁধাইয়ের কাজ, চামড়ার কাজ, গ্রাফিক্স আর্টস, ইলেকট্রিক মিস্ত্রি, কাঠমিস্ত্রি, রাজমিস্ত্রি, মৎস্য চাষ, হাঁসমুরগি পালন, নার্সারি, ধাত্রীবিদ্যা ইত্যাদি। এ শিক্ষায় শিক্ষিত হলে কারােরই বেঁচে থাকার জন্য ভাবতে হয় না।

Types of career-oriented education: Work-oriented education is not mechanical education. His position is in the realm of lifelong learning. Therefore, work-oriented education is divided into two parts in the light of full and overall life. A hall – higher career oriented education. Those who are proficient in science can pursue independent professions like doctors, engineers, agriculturists, etc. after obtaining higher degrees from various colleges and universities. You don’t have to sit in the hope of a job. Another hall – general career oriented education. It does not require higher education in college or university. Primary or secondary education is enough. General vocational education includes blacksmith, potter, weaver, tailor, factory maker, car repair, watch-radio-tv-fridge repair, printing and binding work, leather work, graphics arts, electrician, carpenter, mason, carpenter Rearing, Nursery, Obstetrics etc. If one is educated in this education, one does not have to think for survival.

উদ্দেশ্যহীন শিক্ষা:

আমাদের দেশের প্রচলিত শিক্ষাব্যবস্থা কর্মমুখী শিক্ষাব্যবস্থা নয়। ব্যতিক্রম হিসেবে কারিগরি শিক্ষা ব্যবস্থা নামে একটি শিক্ষাপদ্ধতি আমাদের দেশে আছে, যা দেশের সামগ্রিক শিক্ষা চিত্র নয়। বৃত্তিমূলক শিক্ষাগ্রহণ না করার কারণেই যে শিক্ষক হলে ভালাে হতাে সে হয়ত হয়েছে সৈনিক, যার ডাক্তার হবার কথা সে হয়ত হয়ে ওঠে আইন ব্যবসায়ী। উদ্দেশ্যহীন শিক্ষাগ্রহণ করে প্রথমে কেবল সার্টিফিকেট সংগ্রহের কাজ চলে তারপর যে যেমনটি জোটাতে পারল সেটিই তার বৃত্তি বা পেশা। ফলে জাতি দক্ষ পেশাজীবী জনবল পাচ্ছে না। অথচ মানুষ যদি তার ইচ্ছেমতাে বা যােগ্যতা মতাে বৃত্তি গ্রহণ করতে পারত, তাহলে দেশ হতে দক্ষ কর্মজীবীতে ভরপুর। আর আমাদের পক্ষে সম্ভব হতাে কল্যাণকামী দেশ পাওয়া ।।

Purposeless education:
The conventional education system of our country is not a work oriented education system. As an exception, we have an education system called technical education system, which is not the overall education picture of the country. The teacher who is better off because he did not have a vocational education may have become a soldier, whose doctor he may have become a lawyer. After receiving a purposeless education, first only the work of collecting certificates is done and then the only thing he can get is his scholarship or profession. As a result, the nation is not getting skilled professional manpower. But if people could accept scholarships according to their will or ability, then the country is full of skilled workers. And it is possible for us to get a benevolent country.

কর্মমুখী শিক্ষার প্রয়ােজনীয়তা : মানুষের মেধা ও মননকে বিকশিত করার জন্য প্রয়ােজন শিক্ষার। তাই মানুষকে সেই শিক্ষাই গ্রহণ করা উচিত, যে শিক্ষা তার অর্থনৈতিক ও সামাজিক জীবনধারার উন্নয়নে কার্যকরী ভূমিকা রাখতে সক্ষম হয়। বাংলাদেশের অশিক্ষা ও অপরিকল্পিত পুঁথিগত শিক্ষাব্যবস্থার কারণে প্রায় দেড় কোটি লােক কর্মহীন। এ দুরবস্থা থেকে মুক্তি পেতে পরিকল্পিত ও বৈজ্ঞানিক উপায়ে জীবন সম্পৃক্ত ও উপার্জনক্ষম কর্মমুখী শিক্ষাব্যবস্থা প্রবর্তন জরুরি। কর্মমুখী শিক্ষা আত্মকর্মসংস্থানের নানা সুযােগ সৃষ্টি করে। ব্যক্তিকে বাবলম্বী করে তােলে। এ শিক্ষা ব্যক্তি ও দেশকে বেকারত্বের অভিশাপ থেকে মুক্তি দেয়। দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও দারিদ্র্যবিমােচনে সক্রিয় ভূমিকা পালন করে। কর্মমুখী শিক্ষায় দক্ষ জনশক্তিকে আমরা বিদেশে পাঠিয়ে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করতে পারি। বর্তমান বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে আমাদের দেশেও কর্মমুখী শিক্ষাব্যবস্থাকে শিল্প, বিজ্ঞান, কারিগরি উন্নয়ন ও অগ্রগতি সাধনের উপযােগী করে তােলা অনিবার্যভাবে প্রয়ােজনীয় হয়ে পড়েছে।

The necessity of career-oriented education: Necessary education is needed to develop human intellect and thinking. Therefore, people should take the education that is able to play an effective role in the development of their economic and social life. Due to illiteracy and the unplanned biblical education system in Bangladesh, about one and a half crore people are unemployed. In order to get rid of this predicament, it is necessary to introduce a life-oriented and earning-oriented work-oriented education system in a planned and scientific way. Career-oriented education creates many opportunities for self-employment. Oil the person by bubbling. This education frees the individual and the country from the curse of unemployment. Plays an active role in the economic development and poverty alleviation of the country. We can earn a lot of foreign exchange by sending skilled manpower abroad for vocational education. In keeping pace with the present world, oil has become indispensable in our country as well by making the work-oriented education system useful for industrial, scientific, technological development and advancement.

See also  (৫টি রচনা) আমার জীবনের লক্ষ্য রচনা

দ্বিমুখী শিক্ষা ও বৃত্তিমূলক শিক্ষা:
আমাদের দেশের শিক্ষা ব্যবস্থাপনায় বহুমুখী শিক্ষা কার্যক্রম প্রচলিত আছে। প্রশ্ন উঠতে পারে,
বৃত্তিমূলক শিক্ষাকে এত গুরুত্ব দিলে দেশে কি শুধু কারিগরই হবে প্রধান জনবল? প্রকৃতপক্ষে এ প্রশ্নের উত্তর থেকেই সূত্রপাত ঘটেছে দ্বিমুখী শিক্ষা বা বহুমুখী শিক্ষার। একজন ছাত্রের মেধা ও মনন অন্য ছাত্রটি থেকে আলাদা। মেধার দিক থেকে যে ছাত্রের
অবস্থান অত্যন্ত নিম্ন পর্যায়ের তার পক্ষে মহাকাশ বিজ্ঞান বা সমুদ্র বিজ্ঞান বুঝে ওঠার কথা নয়। তেমনিভাবে পদার্থ বিজ্ঞানে মেধা এবং প্রবল আগ্রহ আছে এমন ছাত্র নে যাবে কাঠমিস্ত্রি হবার জন্য। সেজন্যেই মেধা ও যােগ্যতার নিরিখে পছন্দ মােতাবেক পাঠ গ্রহণের সুযােগ আছে আমাদের দেশে। অপেক্ষাকৃত কম মেধাবীদের বাঁচতে হবে, তাদেরও চাই কর্ম, চাই জবিকার নিশ্চয়তা। তাই বহুমুখী শিক্ষা পরিবেশের মধ্য থেকে কেউ কেউ বৃত্তিমূলক শিক্ষায় নিজেকে দক্ষ করে জীবিকা নির্বাহ করবে সেটাই স্বাভাবিক। শিক্ষাগ্রহণে অর্থনৈতিক বিষয়টিও ম গুরুত্বপূর্ণ নয়। অর্থ না থাকলে আজকাল উচ্চশিক্ষা গ্রহণও সহজসাধ্য ব্যাপার নয়। তাই অপেক্ষাকৃত কম খরচে বৃত্তিমূলক শিক্ষাগ্রহণ করে দেশ ও জাতির জন্য দক্ষ জনশক্তি হওয়াও কম গৌরবের বিষয় নয়।

Bilateral education and vocational education:
Multipurpose education activities are prevalent in the education management of our country. The question may arise,
If vocational education is given so much importance, will only artisans be the main manpower in the country? In fact, the answer to this question is the origin of two-way education or multifaceted education. The talent and thinking of one student is different from that of another. That student in terms of merit
The position is very low level for him to understand space science or ocean science. In the same way, students who have talent and strong interest in physics can be taken to become carpenters. That is why in our country there is an opportunity to take lessons according to one’s choice in terms of merit and ability. Relatively less meritorious people have to live, they also want action, they want job security. Therefore, it is natural for some people to make a living by enabling themselves in vocational education in a multi-faceted learning environment. Economic issues are also not important in education. Without money, getting a higher education is not easy. Therefore, it is no less a matter of pride to have a skilled manpower for the country and the nation by getting vocational education at a relatively low cost.

বৃত্তিমূলক শিক্ষার মূল্যায়ন:
বৃত্তিমূলক শিক্ষা গ্রহণের মধ্য দিয়ে একজন ছাত্র কেবল পুঁথিগত দিক থেকেই অভিজ্ঞতা অর্জন করে না। বরং ব্যবহারিক বিষয়েও তার দক্ষতা অর্জনের সুযােগ থাকে। দেশীয় শিল্পকারখানাতে ব্যবহারিক কাজে দক্ষ জনশক্তির অনেক চাহিদা রয়েছে। ফলে আত্মকর্মসংস্থান নিয়ে তাকে ভাবতে হচ্ছে না। পাশাপাশি দেশের বাইরেও রয়েছে কারিগরি জ্ঞানের দক্ষ জনশক্তির ব্যাপক চাহিদা। উন্নত বিশ্বে সাধারণ একজন ইলেক্ট্রিশিয়ানের বেতনও সন্তোষজনক। বিদেশে দক্ষ জনশক্তি পাঠিয়ে দেশ আজ প্রচুর রেমিটেন্স পাচ্ছে প্রকৃতপক্ষে দেশের বাইরে বৃত্তিমূলক বা কারিগরি শিক্ষার যথাযথ মূল্যায়ন হচ্ছে বলেই ।

Evaluation of Vocational Education:
Through vocational education, a student does not only gain experience from the biblical side. On the contrary, he has the opportunity to acquire skills in practical matters as well. There is a great demand for skilled manpower in practical work in domestic industries. As a result, he does not have to think about self-employment. Besides, there is a huge demand for skilled manpower outside the country. The salary of an ordinary electrician in the developed world is also satisfactory. By sending skilled manpower abroad, the country is getting a lot of remittances today because in fact vocational or technical education is being properly evaluated outside the country.

বৃত্তিমূলক শিক্ষার বিস্তার:
যুগ বাস্তবতার কথা বিবেচনা করে বৃত্তিমূলক শিক্ষার সম্প্রসারণ জরুরি। প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষার স্তরে কুটিরশিল্প ও সুপ্রচলিত হস্তশিল্পের শিক্ষা দান আবশ্যিক করা প্রয়ােজন যেন তার মাধ্যমে ছাত্ররা এক একটি বৃত্তিতে আত্মনিয়ােগের পথ পায় । বর্তমানে মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের জন্য কিঞিৎ পাঠ ব্যবস্থা থাকলেও তা সন্তোষজনক নয় কারু কলেজ, টেকনিক্যাল কলেজ, কমার্শিয়াল কলেজসহ বৃত্তিমূলক নানা প্রতিষ্ঠান সম্প্রসারণ করা প্রয়ােজন। সেই সাথে প্রয়ােজন। কলকারখানায় কর্মরত অদক্ষ জনবলকে আধুনিক প্রশিক্ষণে প্রশিক্ষিত করে তাদের পেশাগত মানােন্নয়ন করা।

Expansion of vocational education:
Expansion of vocational education is necessary considering the realities of the age. At the level of primary and secondary education, it is necessary to teach cottage industries and handicrafts so that the students can find a way to become self-employed in one scholarship after another. At present, although there is a limited lesson system for secondary level students, it is not satisfactory. It is necessary to expand various vocational institutions including Karu College, Technical College and Commercial College. With the need. To improve the professional skills of the unskilled manpower working in the factories by training them in modern training.

প্রচলিত শিক্ষাব্যবস্থা: আমাদের দেশে আগেও যে শিক্ষা ব্যবস্থা ছিল বর্তমানেও সেই প্রচলিত শিক্ষাব্যবস্থা রয়ে গেছে। গতানুগতিক গ্রন্থগত বিদ্যা আমাদের মস্তিষ্কে চেপে বসেছে এবং আমরা এখনও সেই ব্রিটিশদের কেরানী বানানোর শিক্ষা নিয়ে বেঁচে আছি। বর্তমান বিশ্ব আধুনিক প্রযুক্তি ও কলাকৌশল আবিষ্কার করছে অথচ আমরা এর থেকে অনেক পিছিয়ে আছি। তাই এই প্রচলিত শিক্ষা ব্যবস্থার পাশাপাশি কর্মমুখী শিক্ষার প্রবর্তন করা হলে বেকারত্বের হার কমবে এবং অর্থনৈতিক উন্নতি সম্ভব হবে তদুপরি জীবনযাত্রার মানে ব্যাপক উন্নতি সাধিত হবে।

Conventional education system: The conventional education system that existed in our country before is still there. Traditional bibliography is ingrained in our brains and we are still living with the teaching of making those British clerks. The present world is discovering modern technology and techniques but we are far behind. Therefore, the introduction of vocational education along with the conventional education system will reduce the unemployment rate and economic development will be possible, as well as the meaning of living will be greatly improved

See also  (৫টি রচনা) বৃক্ষরােপণ অভিযান রচনা

বিশ্বের অন্যান্য দেশের শিক্ষাব্যবস্থা: বিশ্বের উন্নত দেশগুলোর প্রতি লক্ষ্য করলে দেখা যায় যে, তাদের শিক্ষা ব্যবস্থা পরিকল্পিত ও কর্মমুখী। কর্মমুখী শিক্ষাব্যবস্থা চালু করার ফলে আজ আমেরিকা, জাপান, ব্রিটেন, ফ্রান্স প্রভৃতি দেশ নিজেদের জীবনমানকে সুপ্রসন্ন করেছে। তারা আজ কর্মের মন্ত্রে দীক্ষিত হয়ে নিজেদের ভাগ্য বদলে নিয়েছে। এই বিজ্ঞানভিত্তিক কর্মমুখী শিক্ষা চালু করে তারা আজ উন্নতির শিখরে আরোহণ করেছে।

Education system of other countries of the world: Looking at the developed countries of the world, it is seen that their education system is planned and action oriented. Today, the United States, Japan, Britain, France and other countries have improved their quality of life as a result of the introduction of work-oriented education system. Today, they have changed their destiny by being immersed in the mantra of action. They have reached the pinnacle of development today by introducing this science-based career-oriented education.

উপসংহার: কর্মমুখী শিক্ষার ক্রমবর্ধমান বৃদ্ধির ফলে আত্মকর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হচ্ছে। এটি জীবিকার সন্ধানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। বর্তমানের তরুণ সমাজকে এই গঠনমূলক ও কর্মমুখী শিক্ষা প্রদানের মাধ্যমে উৎসাহ সৃষ্টি এবং তা বাস্তবায়নের জন্য দরকার উপযুক্ত সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনা।

Conclusion: The increasing growth of vocational education is creating opportunities for self-employment. It plays an important role in earning a living. Encouraging today’s young society through this constructive and action-oriented education and the need for appropriate far-reaching plans to implement it.

কর্মমুখী বা বৃত্তিমূলক শিক্ষা রচনা type 2

ভূমিকা : শিক্ষা মানুষের সুপ্ত সম্ভাবনার বিকাশ ঘটায়। জীবন ও জীবিকার ক্ষেত্রে তাকে সামর্থ্য ও দক্ষতা অর্জনে সহায়তা করে। বিজ্ঞানের নব নব আবিষ্কার ও সামাজিক, অর্থনৈতিক, সাংস্কৃতিক অগ্রগতির ফলে মানব জীবনের নিত্যনতুন কর্মদিগন্ত খুলে গেছে। ফলে বংশানুক্রমিক পেশাগত বৃত্তি অবলম্বন করে নিশ্চিত জীবনযাপনের দিন ফুরিয়ে গেছে। বরং নিত্যনতুন যে কর্মদিগন্ত উন্মোচিত হচ্ছে তার সঙ্গে বিশেষায়িত শিক্ষার যোগ হয়ে পড়েছে অপরিহার্য। এই কারণে আধুনিক বিশ্বে সাধারণ শিক্ষার চেয়ে কর্মমুখী শিক্ষা ক্রমের অধিকতর গুরুত্ব লাভ করছে।

সংজ্ঞা ও গুরুত্ব : কর্মমুখী শিক্ষা হচ্ছে জীবিকা অর্জনের জন্যে সম্ভাব্য পেশাগত কর্মের সঙ্গে সম্পর্কিত শিক্ষা। মানুষের জীবনযাত্রার ধরন ও বৈশিষ্ট্যের ব্যাপক পরিবর্তন এবং জীবন ও জীবিকার ক্ষেত্রে ক্রমবর্ধমান প্রতিযোগিতার ফলে কর্মমূখী শিক্ষার গুরুত্ব ও চাহিদা বাড়ছে। এককালে অফুরন্ত প্রাকৃতিক সম্পদের মধ্যে বাস করে বাংলাদেশের মানুষ সুখে জীবন কাটিয়েছে। বৃত্তি বা পেশাগত শিক্ষা নিয়ে তাকে ভাবতে হয় নি। বংশানুক্রমিক পেশা অবলম্বন করেই জীবিকা নির্বাহ করেছে। কিন্তু এখন সে দিন আর নেই। জনসংখ্যা এখন বেড়েছে বিপুলভাবে। তার প্রচন্ড চাপ পড়েছে সীমিত সম্পদের ওপর। ফলে বৈজ্ঞানিক ও কারিগরি অগ্রগতিকে কাজে লাগিয়ে আমাদের দেশে নব নব কর্মসংস্থান ও অগ্রগতির পথে অগ্রসর না হলে জাতীয় জীবনে নেমে আসবে অনিবার্য সংকট।আর তার জন্যে দরকার নিত্যনতুন কর্ম, বৃত্তি ও পেশার সঙ্গে জড়িত কর্মমুখী শিক্ষা। কিন্তু দুঃখের বিষয় দেশে এখনও সেই ইংরেজ আমলে প্রবর্তিত প্রচলিত শিক্ষা পদ্ধতিতে কেরানি তৈরির উপযোগী সাধারণ শিক্ষার প্রাধান্যই রয়ে গেছে। ফলে স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় ডিঙিয়ে যারা বের হচ্ছে কর্মমুখী শিক্ষায় শিক্ষিত না হওয়ায় তাদের ব্যাপক অংশেই বেকারত্বের অভিশাপ বয়ে বেড়াচ্ছে এবং প্রচন্ড হতাশায় জীবনের ওপর আস্থা হারাচ্ছে। এই কারণে যতই দিন যাচ্ছে কর্মমুখী বা বৃত্তিমূলক শিক্ষার গুরুত্ব সবাই উপলব্ধি করছে। বিশ শতকের শেষ দশকে আমাদের দেশে কর্মমুখী শিক্ষার গুরুত্ব বিশেষভাবে উপলব্ধি করা গেছে। এটা এখন স্পষ্ট যে, বর্তমান বাস্তবতায় কর্মমুখী বৃত্তিমূলক শিক্ষার প্রসার অপরিহার্য হয়ে উঠেছে। তা দেশের অগ্রগতি সাধনে যেমন কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে তেমনি দেশে এবং দেশের বাইরে কর্মসংস্থানের মাধ্যমে বেকারত্ব মোচনেও ফলপ্রসূ অবদান রাখতে সক্ষম। এতে বহু পরিবার অশান্তির হাত থেকে বাঁচতে পারে। এই শিক্ষার প্রসার ঘটলে সাধারণ ও উচ্চ শিক্ষার ক্ষেত্রে অনভিপ্রেত ভিড় হ্রাস পাবে। তাছাড়া কর্মমুখী শিক্ষা স্বকর্ম সংস্থানের নানা সুযোগ সৃষ্টি করতে পারে এবং তা ফলত দেশের অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা রক্ষায় ও দারিদ্র্য দূরীকরণে কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে। কর্মমুখী শিক্ষা কেবল নতুন নতুন কর্মস্থানের সুযোগ তৈরি করে না, কৃষি, শিল্প ও বাণিজ্যের নানা ক্ষেত্রে ইতিবাচক ভূমিকা রেখে দেশের উন্নয়ন ও অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি নিশ্চিত করতে পারে। সেদিক থেকে কর্মমুখী শিক্ষা জাতির অর্থনৈতিক বুনিয়াদ রচনায়ও ফলপ্রসূ ভূমিকা পালন করতে পারে। কর্মমুখী শিক্ষা স্বাধীন পেশা গ্রহণে ব্যক্তির আস্থা গড়ে তোলে, তাকে স্বাবলম্বী করে তোলে এবং এভাবে বিপুল সংখ্যক বেকারত্বের হাত থেকে জাতিকে বাঁচায় এবং পরমুখাপেক্ষী অবস্থায় অভিশাপ থেকে রক্ষা করে। বিজ্ঞানের বিস্ময়কর উন্নতির যুগে কর্মমুখী শিক্ষা তাই আমাদের দেশের মতো উন্নয়নশীল দেশেও অনিবার্যভাবে প্রয়োজনীয় হয়ে পড়েছে।

কর্মমুখী শিক্ষার স্বরূপ : কর্মমুখী শিক্ষা যান্ত্রিক শিক্ষা নয়। জীবনমুখী শিক্ষার পরিমন্ডলেই তার অবস্থান। পরিপূর্ণ ও সামগ্রিক জীবনবোধের আলোয় বিচার করা হয় কর্মমুখী শিক্ষার ভূমিকাকে। কর্মমুখী শিক্ষা নিঃসন্দেহে কারিগরি ও বৃত্তিমূলক জনশক্তি সৃষ্টি করতে চায় কিন্তু তার মানবিক গুণাবলির বিকাশের দিকটিও উপেক্ষিত থাকতে পারে না। এদিক থেকে কর্মমুখী শিক্ষার লক্ষ ত্রিমুখী: ক. জ্ঞান জিজ্ঞাসা সৃষ্টিতে : জ্ঞান-বিজ্ঞানের অর্জনের সঙ্গে শিক্ষার্থীর পরিচয় ঘটানো, অজানাকে জানার আগ্রহ সৃষ্টি এবং সুপ্ত গুণাবলির বিকাশ ঘটানো। খ. মূল্যবোধ সৃষ্টি : শিক্ষার্থীকে নৈতিক, সামাজিক, ধর্মীয় এবং মানবিক-সাংস্কৃতিক মূল্যবোধে উজ্জীবিত করা এবং গণতন্ত্রমনা, যুক্তিবাদী, বিজ্ঞানমনস্ক নাগরিক হিসেবে তাকে গড়ে তোলা। গ. কাজে উৎসাহ সৃষ্টি : কর্মমুখী, জীবনসম্পৃক্ত, বৃত্তিমূলক, উপার্জন মনষ্ক জনশক্তি গড়ে তোলা। এই গুরুত্বপূর্ণ তিনটি লক্ষ অর্জন করতে পারলে বাড়তি জনশক্তি হবে জনসম্পদ আর তা না হলে, আংশিক কর্মমুখী শিক্ষা মানুষকে তৈরি করবে মানবিক মূল্যবোধ বিসর্জিত নিছক যন্ত্রে। কর্মমুখী শিক্ষার বিদ্যমান সুযোগ : আমাদের দেশে এখনও কর্মমুখী শিক্ষার ব্যাপক সম্প্রসারণ ঘটে নি। ফলে প্রচলিত পন্থায় কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিগ্রি নিয়ে লাখ লাখ উচ্চ শিক্ষিত যুবক-যুবতী বেকারত্বের চরম অভিশাপ নিয়ে দুশ্চিন্তা ও হতাশায় নিমর্জিত। অথচ উন্নত দেশগুলোর শিক্ষিত জনগোষ্ঠীর অধিকাংশই কারিগরি, বৃত্তিমূলক ও পেশাভিক্তিক শিক্ষায় শিক্ষিত। এমনকি এশিয়ার দক্ষিণ কোরিয়া, মালয়েশিয়া, হংকং, সিঙ্গাপুর, থাই্যোন্ড, ইন্দোনেশিয়া, শ্রীলঙ্কা ইত্যাদি দ্রুত উন্নয়নশীল দেশে কর্মমুখী শিক্ষা যথেষ্ট গরুদুত্ব পেয়েছে। আমাদের প্রতিবেশী দেশ ভারতে শিক্ষিত জনগোষ্ঠীর ৫ শতাংশ কর্মমুখী শিক্ষায় শিক্ষিত। আর বাংলাদেশে এ হার ১ শতাংশেরও কম। এর কারণ আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থায় কর্মমুখী শিক্ষার প্রতি অনভিপ্রেত উপেক্ষা। এমনকি সাম্প্রতিককালে নতুন নতুন বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা, অনেক কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয় কলেজে উন্নীতকরণের যে পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে তাতেও কর্মমুখী শিক্ষার দিকটি যথেষ্ট উপেক্ষিত হয়েছে। এর ফলে অনিবার্যভাবে শিক্ষিত বেকারের সংক্যা আও বাড়ছে। অথচ যদি বৃত্তিমূলক শিক্ষার ক্ষেত্র সম্প্রসারণ করা হতো তবে অনেক তরুণ জীবন-জীবিকার নিশ্চিত অবলম্বনকে আশ্রয় করে সুখ-শান্তিময় ভবিষ্যৎ রচনা করতে সক্ষম হতো।

See also  (৫টি রচনা) দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি ও তার প্রতিকার রচনা

কর্মমুখী শিক্ষা প্রসারের প্রচেষ্টা : বাংলাদেশে কর্মমুখী শিক্ষার ক্ষেত্র যে একেবারে উন্নয়ন হয় নি তা নয়। বৃত্তিমূলক কারিগরি শিক্ষার কার্যক্রম ক্রমেই সম্প্রসারিত হচ্ছে। দেশে বিভাগ ও জেলা ভেদে প্রকৌশল, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি এবং কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হচ্ছে। ২২টি মেডিকেল কলেজ ও ১টি ডেন্টাল কলেজের মাধ্যমে চিকিৎসাবিদ্যা শিক্ষা সম্প্রসারিত হয়েছে। এছাড়াও ৪টি প্রকৌশল ইনস্টিটিউট, অনেকগুলো পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট ও ভেকেশনাল ট্রেনিং ইনস্টিটিউট, লেদার টেকনোলজি কলেজ, টেক্সটাইল টেকনোলজি কলেজ, গ্রাফিক আর্ট ইনস্টিটিউট ইত্যাদির মতো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানও রয়েছে। বেসরকারিভাবে প্রতিষ্ঠিত ছোটখাটো কারিগরি প্রতিষ্ঠান দেশে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে ও হচ্ছে। তবে সব মিলিয়ে বৃত্তিমূলক শিক্ষার যে সুযোগ এখন বিদ্যমান তা যে বিপুল জনসংখ্যার তুলায় একেবারে নগণ্য তা বলাই বহুল্য।তবে জাতির বৃহত্তর স্বার্থে বৃত্তিমূলক শিক্ষার প্রসার ঘটানোর জন্য সাম্প্রতিককালে সরকার মাধ্যমিক শিক্ষা স্তরেই কর্মমুখী শিক্ষা প্রদানের ব্যবস্থা গ্রহণ করে এই কার্যক্রমকে বেগবান করার উদ্যোগ নিয়েছেন। কারণ, মাধ্যমিক শিক্ষার ভিত্তিতেই গড়ে ওঠে দেশের শিক্ষিত জনশক্তি। ইতমধ্যে মাধ্যমিক শিক্ষাস্তরে কর্মমুখী শিক্ষা প্রসারে যেসব পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে সেগুলো হলো : কৃষিবিজ্ঞান ও গার্হস্থ্য বিজ্ঞানকে বাধ্যতামূলক করণ, পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে ডাবল শিফট চালু, স্কুল ও মাদ্রাসায় নবম ও দশম শ্রেণিতে বেসিক ট্রেড কোর্স চালু, ১৯৯৫ সাল থেকে সাধারণ শিক্ষা ও ভোকেশনাল শিক্ষা সমন্বয়ে এস. এস. সি. শিক্ষাব্যস্থা চালু, মাধ্যমিক স্তরে ব্যবসা ব্যবস্থাপনা শিক্ষাব্যবস্থা চালু ইত্যাদি।

কর্মমুখী শিক্ষাক্রম বাস্তমায়নের সমস্যা ও সুপারিশ : কর্মমুখী শিক্ষাক্রম বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে ব্যবস্থাপনাও অবকাঠামোগত সুযোগ-সুবিধার যথেষ্ট ঘাটতি রয়েছে। প্রয়োজনীয় শিক্ষক, অন্যান্য লোকবল, শিক্ষা উপকরণ সরবরাহ, আর্থিক ব্যয় সংকুলানের ব্যবস্থা ইত্যাদি ক্ষেত্রেও প্রকট সমস্যা বিধ্যমান। শিক্ষকদের গুণগত মান উন্নয়নের জন্যে প্রশিক্ষণের প্রয়োজনীয়তাও অনস্বীকার্য। এসব সমস্যা মোকাবেলার জন্যে নিম্নলিখিত পদক্ষেপগুলো গ্রহণ করা প্রয়োজন: ১. কর্মমুখী শিক্ষাব্যবস্থা চালু ও প্রসার করার জন্য প্রয়োজনীয় সংখ্যক ও মানসম্পন্ন প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত শিক্ষক নিয়োগ নিশ্চিত করা।২. বৃত্তিমূলক ও কারিগরি শিক্ষার জন্যে শিক্ষা উপকরণ সরবরাহ করার জন্যে প্রয়োজনীয় ব্যয় বরাদ্দ।৩. কর্মমুখী শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনার জন্য শিক্ষকদের ভোকেশনাল শিক্ষক প্রশিক্ষণ কেন্দ্র স্থাপন এবং৪. বৃত্তিমূলক শিক্ষা, কারিগরি এবং কম্পিউটার বিজ্ঞান শিক্ষা কার্যক্রমে উৎসাহ তৈরির জন্যে জাতীয় প্রচার মাধ্যমে সৃজনশীল কার্যক্রম প্রচার।

উপসংহার: আমাদের দেশ বাড়তে থাকা বেকার সমস্যাসহ সামাজিক কুসংস্কার, জনসংখ্যা সমস্যা, রাজনৈতিক অস্থিরতা, শিক্ষাঙ্গনে সন্ত্রাস ইত্যাদি সমস্যায় জর্জরিত। এই প্রকট সমস্যা কাটিয়ে ওঠার অন্যতম প্রচেষ্টা হিসেবে তরুন সমাজকে উপযুক্ত গঠনমূলক ও কর্মমুখী শিক্ষা প্রদান অত্যন্ত কার্যকরী হবে। এ কাজে ব্যাপক উৎসাহ সৃষ্টি এবং তা বাস্তমায়নের জন্যে দরকার উপযুক্ত বাস্তব ও সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনা এবং প্রয়োজনীয় দক্ষ জনবল। তাহলেই এ মহৎ প্রয়াস জাতীয় জীবনে ইতবাচক ফল বয়ে আনতে সক্ষম হবে। একই রচনা আরেকটি বই থেকে সংগ্রহ করে দেয়া হলো:ভূমিকা : বাংলাদেশের বর্তমান প্রেক্ষাপটে কারিগরি শিক্ষার গুরুত্ব অসীম। সাধারণভাবে আমাদের দেশে শুধু সাধারণ শিক্ষায় ছাত্র-ছাত্রীরা পাস করে যাচ্ছে ফলে বেকারত্বের সংখ্যা দিন দিন বেড়েই যাচ্ছে। কারিগরি শিক্ষায় শিক্ষিত হলে সরকারি চাকুরী না হলেও তারা বেকার থাকবে না। শিক্ষা সমাপ্তির পর তারা নির্দিষ্ট কাজে লেগে জাতি গঠনে এগিয়ে আসতে সাহায্য করবে।

Type 3

শিক্ষার প্রকারভেদ : সাধারণ অর্থে শিক্ষা দু’প্রকার-(ক) সাধারণ শিক্ষা(খ) কারিগরি শিক্ষা।

কারিগরি শিক্ষা কি? : কর্মমুখী শিক্ষা বা কারিগরি শিক্ষা বলতে আমরা সেই শিক্ষাকে বুঝি যা ব্যক্তিকে সংশ্লিষ্ট বৃত্তিমুখী করে তোলে। অর্থাৎ কারিগরি শিক্ষা একজন শিক্ষর্থীকে বাস্তব জীবনক্ষেত্রে একটি বিশেষ পেশার উপযোগী করে তার জীবিকা অর্জনে সহায়তা করে। শিক্ষার মাধ্যমে মানুষ সম্পদ লাভ করে, শিক্ষা মানুষের চিত্তের মুক্তি ঘটায়। জীবনের জন্য উভয়ই প্রয়োজন। কারিগরি শিক্ষা এ প্রয়োজন মেটাতে গভীরভাবে সাহায্য করে।

কারিগরি শিক্ষার বিভিন্ন স্তর : ইঞ্জিনিয়ারিং ও বিভিন্ন বৈজ্ঞানিক বিষয়ে জ্ঞান লাভ ও যন্ত্রপাতির ব্যবহার এবং নির্মাণের বিদ্যা, ক্ষুদ্র যন্ত্রগুলোর উৎপাদন ইত্যাদি বিষয়ে শিক্ষা বলতে আমরা কারিগরি শিক্ষা বুঝিয়ে থাকি। একদিক থেকে চিকিৎসা বিজ্ঞানও বর্তমান যুগে কিছুটা বৈজ্ঞানিক কারিগরি শিক্ষার মধ্যে পড়ে। কারণ এখানেও যন্ত্রপাতির প্রচলন রয়েছে। শিক্ষাকে জীবনমুখী করার লক্ষ্যে জাতীয় শিক্ষাক্রমে যথেষ্ট পরিমার্জনা করা হচ্ছে। দেশে প্রকৌশল বিজ্ঞান, প্রযুক্তি ও কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীরা লেখাপড়া করছে। দেশে অনেক চিকিৎসা মহাবিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। আছে অনেকগুলো পলিটেকনিক ইন্সটিটিউট ও ভোকেশনাল ট্রেনিং ইন্সটিটিউট। এছাড়া লেদার টেকনোলজি, টেক্সটাইল ইন্সটিটিউট, গ্রাফিক আর্টস ইন্সটিটিউট এবং এ ধরনের আরও অনেক ট্রেনিং ইন্সটিটিউট।

বাংলাদেশে কারিগরি শিক্ষার আবশ্যিক বিষয়সমূহ : আমাদের মত এমন দরিদ্র দেশে বড় বড় শিল্প-কারখানা ব্যাপকভাবে গড়ে তোলার সুযোগ নেই। তাই এখানে ক্ষুদ্র ও কটির শিল্প প্রতিষ্ঠা করে দেশের বিপুল জনসংখ্যাকে কাজের উপযোগী করে গড়ে তোলা যায়। উচ্চ শিক্ষার সুযোগ থেকে বঞ্চিত দরিদ্র ও মেধাহীনদের কুটির শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলোতে বিভিন্ন হাতের কাজ শেখানো যেতে পারে। পাটের ব্যাগ তৈরি, নানা রকম কাগজের ফুল তৈরি, হস্ত ও মৃৎজাত শিল্প, চামড়া, স্ক্রীন প্রিন্ট, বাটিক, ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কশপের কাজ, টিভি, রেডিও, ভিসিপি, ভিসিআর, ফ্রিজ, এয়ারকন্ডিশনিং, বই বাঁধাই, অফসেট মুদ্রণ, কম্পিউটার ইত্যাদি শিখে আজকাল বেশ স্বাচ্ছন্দ্যে জীবন যাপন করা যায়। এছাড়া কাঠমিস্ত্রী, রাজমিস্ত্রী, ইলেকট্রিক মিস্ত্রী, সেনিটারী ফিটিংস, ড্রাইভিং, হোটেল ম্যানেজমেন্ট ইত্যাদিও বৃত্তিমূলক শিক্ষা হিসেবে গ্রহণ করলে সাধারণ চাকরিজীবীর চেয়ে অনেক ভালভাবে জীবন-যাপন করা যায়।

কারিগরি শিক্ষার কার্যকারিতা : সাধারণ শিক্ষা গ্রহণ করে শিক্ষিত বেকারের সংখ্যাই বৃদ্ধি পাচ্ছে। আবার লব্ধ শিক্ষাকে কাজে না লাগিয়ে অন্য কোন পেশা অবলম্বন করে শিক্ষাকে অর্থহীন প্রমাণ করা হচ্ছে। তাই সাধারণ শিক্ষার প্রতি আগ্রহ কমিয়ে কারিগরি শিক্ষার প্রতি অনুরাগ দেখাতে হবে। দেশে বিভিন্ন পেশার মধ্যে মূল্য ও মর্যাদার যথেষ্ট পার্থক্য বিদ্যমান থাকায় শিক্ষিত লোকের দৃষ্টি থাকে উচ্চ মর্যাদার দিকে। তদুপরি বর্তমান বিজ্ঞানের যুগে কারিগরি শিক্ষা ছাড়া অর্থনৈতিক উন্নতি সম্ভব নয়। যন্ত্র বিজ্ঞানের এ প্রসারের যুগে আমাদের দেশেও কারিগরি শিক্ষার ব্যাপক প্রবর্তন করা উচিত।

শিল্পোন্নয়ন : অর্থনৈতিক উন্নতির জন্য প্রয়োজন দ্রুত শিল্পায়ন। প্রকৃত শিল্পায়নের জন্য আবার প্রয়োজন কারিগরি শিক্ষা। কারিগরি জ্ঞান না থাকলে কল-কারখানা পরিচালনার কোন যোগ্যতাই জন্মাতে পারে না। তাই সর্বাগ্রে দেশের যুবক যুবতীদের বেশি সংখ্যায় কারিগরি শিক্ষা গ্রহণ করতে হবে।

প্রয়োজনীয়তা : পুঁথিগত বিদ্যা বাস্তব জীবনে কর্মক্ষেত্রের অনুপযোগী, যে কারণে জাতিগতভাবে আমরা অগ্রসর হতে পারিনি। শিক্ষার মাধ্যমে মানুষ যদি জনশক্তিতে রূপান্তরিত না হয় তাহলে জাতির অগ্রগতি হয় না। জাতীয় জীবনে সমৃদ্ধি আসে না। তাই বর্তমানে বিশেষভাবে প্রয়োজন কারিগরি শিক্ষার।

উপসংহার : আমাদের দেশের অর্থনৈতিক সংকটের মূলে রয়েছে বিপুল জনগোষ্ঠী। এ অবস্থায় এ বিপুল জনসংখ্যাকে জনশক্তিতে রূপান্তরিত করতে পারলে সমস্যা মোকাবিলা করা সম্ভব হবে। কারিগরি শিক্ষার ব্যাপক সম্প্রসারণ করে দক্ষ জনশক্তি গড়ে তোলা যায় এবং তা বিদেশে রপ্তানি করে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রাও অর্জন করা যায়। সর্বোপরি কারিগরি শিক্ষা জাতিকে দিতে পারে আত্মকর্মসংস্থানের উপায়।

উপরে কর্মমুখী শিক্ষা রচনা বা বৃত্তিমূলক শিক্ষা রচনা দিয়ে দিয়েছি আশা করি আপনাদের উপকার হয়েছে।

 

কর্মমুখী শিক্ষা বা বৃত্তিমূলক শিক্ষা,বৃত্তিমূলক শিক্ষা কি?, কর্মমুখী শিক্ষার প্রয়োজনীয়তা, কর্মমুখী শিক্ষা অনুচ্ছেদ বৃত্তিমূলক শিক্ষা কি, কর্মমুখী শিক্ষা উক্তি কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষার গুরুত্ব, দক্ষ জনশক্তি তৈরিতে কর্মমুখী শিক্ষা, শিক্ষা রচনা কর্মমুখী শিক্ষা, ব্যবস্থা ভোকেশনাল ব্যাখ্যা কর,”বৃত্তিমূলক বা কর্মমুখী শিক্ষা” রচনা,বৃত্তিমূলক শিক্ষার/কর্মমুখী শিক্ষা (প্রবন্ধ রচনা),Vocational education or vocational education,What is vocational education, vocational education and training, vocational education and training in australia, Importance of vocational education, vocational education and training pdf, vet vocational education and training, vocational education and training uk, vocational education and training challenges

Leave a Reply