মরণোত্তর দেহদানের পর জাহাঙ্গীর আলম ম‍্যাক্স নলেজ আনোয়ার গণ গ্রন্থাগার ‘ প্রতিষ্ঠাতা করে শিক্ষাক্ষেত্রে এক বিরল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন।, Md Jahanggir Alam

আমার বাবা পৃথিবীর সেরা বাবা। পাবলিক লাইব্রেরী প্রতিষ্ঠার জন্য আমার বাবা আমাদের এলাকার চার রাস্তার মোড়ে বাজারের সাথে মেইনরোড সংলগ্ন প্রায় আনুমানিক নয় লক্ষ টাকার তিন শতাংশ জমি লাইব্রেরির নামে লিখে দিতে রাজী হয়েছে। একইস্থানে আমি দেবো দুই শতাংশ। মোট পাঁচ শতাংশ জমির উপর আমরা খুব শিঘ্রই পাবলিক লাইব্রেরী প্রতিষ্ঠা করতে যাচ্ছি।
আমাদের দেশের অসংখ্য ধনী মানুষ আছে যারা মসজিদ মাদ্রাসা মন্দির নির্মাণের জন্য জমি দান করে কিন্তু মানুষের মধ্যে সত্যিকারের জ্ঞানের আলো ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য ও সুস্থ মানসিকতা চর্চা ও মানবিক হিসাবে মানুষকে গড়ে তোলার জন্য তেমন কেও রাজী হয় না লাইব্রেরী প্রতিষ্ঠার জন্য জমি দান করতে।

জাহাঙ্গীর আলম

আমার অনেক দিনের স্বপ্ন আমাদের এলাকায় একটা লাইব্রেরী প্রতিষ্ঠা করা। কিন্তু জমি দানের বেলায় কাওকে খুজে না পেয়ে অবশেষে বাবাকে বললাম। বাবা আমার বলা মাত্রই রাজী হয়ে গেল লাইব্রেরীর জন্য জমি দিতে। আমার স্বপ্নের কথা শুনে বাবা বললো,” সকলের বই পড়ার জন্য পাবলিক লাইব্রেরী প্রতিষ্ঠা করা, এটা তো ভালো কাজ। আমি আর কদিনই বা বাচবো! জমি তো সঙ্গে করে কবরে নিয়ে যাবো না আমি । যদি জমিটা দিয়ে ভালো কাজ হয় তাহলে তো ভালোই। তুই পাবলিক লাইব্রেরী প্রতিষ্ঠা কর জমি আমি দেবো।”

জাহাঙ্গীর আলম

বাবার কথা শুনেই এতোবড় বয়সেও বাবাকে জড়িয়ে ধরলাম আনন্দে।
আমার বাবা আমার মতো। একেবারেই সহজসরল। প্যাচগোছ বোঝেনা একদম। সাদামাটা জীবনযাপন করে। রাস্তায় রাস্তায় ভ্যানগাড়ী চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করে ও আমার নতুন মায়ের সঙ্গে তার নিজস্ব মফস্বল শহরের বাসায় থাকে।
আমার মায়ের নাম আনোয়ারা। পাবলিক লাইব্রেরীর নামকরণ আমার মায়ের নামে ও ম্যাক্স নলেজ ভাইয়ের নামের সঙ্গে মিল রেখে ‘ ম্যাক্স নলেজ আনোয়ার গণ গ্রন্থাগার ‘ রাখা হয়েছে।

জাহাঙ্গীর আলম

কিছু কাগজপত্র ঠিক করেই খুব শিঘ্রই পাবলিক লাইব্রেরী উদ্বোধন করতে যাচ্ছি আমরা।
আপাতত পনেরোটা বই নিয়ে যাত্রা শুরু করছি। পনেরোটা বইয়ের মধ্যে কিছু বই Taslima Nasrin্যাডামের লেখা।
একদিন আসবে যেদিন পনেরো লক্ষ বইয়ের কালেকশন থাকবে আমাদের এই প্রতিষ্ঠা করা লাইব্রেরীতে এই বিশ্বাস আমার আছে।
যাইহোক এই পাবলিক লাইব্রেরী সুন্দর করতে বড় করে ও মানুষের মধ্যে সত্যিকারের জ্ঞানের আলো ছড়িয়ে দিতে মৃত্যুর আগ পযর্ন্ত কাজ করে যাবো। যে সকল বন্ধুরা আমাদের লাইব্রেরী প্রতিষ্ঠা করতে পাশে থাকবেন প্রত্যেককেই জানাই অগ্রিম শুভেচ্ছা ভালোবাসা ও অভিনন্দন।
ইচ্ছা থাকলে উপায় হয় জাহাঙ্গীর আলম এলিট শ্রেণীর সমাজের চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে কিভাবে একের পর এক উন্নয়ন কার্যক্রম বাস্তবায়ন করা যায় সে ইতিমধ্যে সমাজে অনেকগুলো উন্নয়ন কার্যক্রম করে যাচ্ছে।
আমরা তার ফেসবুক পেইজের মাধ্যমে দেখতে পাই উন্নয়ন কার্যক্রম গুলো দেখতে পাই প্রথমে সে এলাকায় রাস্তাঘাট মেরামত করে এবং ডিপ টিউবওয়েল স্থাপন করেন এরপর নিজের জীবন দিয়ে মরণোত্তর দেহ দান করে এবং এখন সর্বশেষ লাইব্রেরী প্রতিষ্ঠা করেছেন।

Leave a Reply