মুজিব শতবর্ষে প্রধানমন্ত্রীর উপহার আশ্রায়ন প্রকল্পের গৃহ নির্মান ও বিতরনে অনিয়ম এবং দূর্নীতি দায় কার?

মুজিব শতবর্ষে প্রধানমন্ত্রীর উপহার আশ্রায়ন প্রকল্পের গৃহ নির্মান ও বিতরনে অনিয়ম এবং দূর্নীতি দায় কার? মুজিব শতবর্ষে গ্রামীণ জনপদের গৃহহীন মানুষের মধ্যে আধাপাকা গৃহ নির্মাণ করে বিতরণ করা নিঃসন্দেহে একটি প্রসংশনীয় উদ্যোগ। গৃহহীনে গৃহ দিলে আমি থাকি ঘরে। এ রকম একটি মহৎ উদ্যোগ তার জন্ম শতবর্ষে নেওয়া অত্যন্ত সময়োপযোগি কাজ হয়েছে।

সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙ্গালী জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলার নিরন্ন মানুষের অন্ন দেওয়ার জন্য,গৃহহীন মানুষকে গৃহ দান,শোষিত বঞ্চিত মানুষের মুখে হাঁসি ফুটানোর জন্য আজীবন লড়াই করেছেন।

তার ডাকে সারা দিয়ে শোষিত বঞ্চিত নিরন্ন মানুষগুলো মুক্তি যুদ্ধে ঝাপিয়ে পরেছিল। বিজয় অর্জন না হওয়া পর্যন্ত নিজের জীবন বাজি রেখে যুদ্ধ চালিয়ে গেছেন। বিজয় তারা ছিনিয়ে এনেছে। স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের জন্ম হয়েছে। তার প্রধান হয়েছে তাদের প্রিয় নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। তার কাছে এই শোষিত বঞ্চিত নিরন্ন মানুষগুলোর চাহিদাও অনেক। আর এটাই স্বাভাবিক। রাষ্ট্র ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হয়ে তিনি মনোযোগ দিলেন দেশ গড়ার দিকে।

যে কথা দিয়ে এ শোষিত বঞ্চিত মানুষগুলোকে মুক্তি যুদ্ধে নামিয়ে ছিলেন শুরু হয় সেই কথা রক্ষার কার্যক্রম। নিরন্ন মানুষের মুখে অন্ন দেওয়ার লড়াই, গৃহহীন মানুষকে গৃহ দেওয়ার লড়াই, লড়াই শুরু হয় সোনার বাংলা বিনির্মাণের। কিন্তু তার স্বপ্নে সোনার বাংলা গড়ার পূর্বেই তাকে বিপদগামী সেনা সদস্যদের হাতে নির্মমভাবে জীবন দিতে হল।স্বাধীনতা বিরুধী গ্রুপ শুধু তাকে মেরে খান্ত হননি।তার সাথে তার পরিবারের সকলকে নির্মমভাবে হত্যা করে। বিদেশে অবস্থান করার প্রানে বেঁচে যান দুই বোন। অনেক চরাই উতরাই পেরিয়ে তার বড় কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা আজ প্রধানমন্ত্রী। তিনি তার বাবার অসমাপ্ত কাজ সমাপ্ত করবেন এটাই স্বাভাবিক। তিনি তাই করছেন। নিরন্ন মানুষের মুখে অন্ন তুলে দিচ্ছেন। শোষিত বঞ্চিত মানুষের মুখে হাঁসি ফুটানোর চেষ্টা করে যাচ্ছেন।তাই তো সারা জীবন যিনি গৃহহীন মানুষের গৃহের কথা চিন্তা করেছেন। কিন্তু বাস্তবায়ন করে যেতে পারে নাই। তার অসমাপ্ত কাজ সমাপ্ত করার মানসে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী

জননেত্রী শেখ হাসিনা মুজিব শতবর্ষে আশ্রায়ন প্রকল্পের মাধ্যমে গৃহহীন মানুষের মধ্যে আধাপাকা গৃহ নির্মাণ করে বিতরণ করা ব্যবস্থা করেছে। তা ভিতরে বাইরে অনেকেরই সয্য হওয়ার কথা নয়। তারা ভালো কাজ কোন দিন নিজেরা করবেনা অন্যকেও করতে দেব না।আমি ভিতর ও বাইরের বিরোধিতা বলতে স্বাধীনতা বিরুধী চক্রকেই বুঝাতে চেয়েছি। স্বাধীনতার পক্ষের কোন লোক এ কাজের বিরোধিতা করতে পারেনা তাহলে প্রশ্ন আসে পারে তাহলে ভিতরে কারা? সহজ উত্তর স্বাধীনতা বিরুধী যে গ্রুপটি আওয়ামী লীগ এর মধ্যে ডুকে পরেছে তারা।আর বাইরে যে কারা তা বোঝানোর দরকার আছে বলে মনেহয় না। যারা সারাক্ষণ আওয়ামী লীগ ভালো মন্দ যাই করুক বিরোধিতা করেই।তাই প্রকল্প হাতে নেওয়ার সাথে সাথে এটাকে কিভাবে বিতর্কিত করা যায় ভেস্তে দেওয়া যায় তার চেষ্টা করছেন। যার ফল এখন আমরা দেখতে পাচ্ছি। তারা চুন থেকে পান খসলেই রব তুলে গেল গেল সব গেল। আমি প্রথমই বলে রাখি কোন প্রকার দূর্নীতির আমি নই। আওয়ামী লীগ এর সকল ভালো কাজে সর্মথন দিব কিন্তু খারাপ একটি কাজের পক্ষে আমায় পাবেন না। প্রথমেই যারা নানা ভাবে এ প্রকল্প গ্রহনের বিরুধীতা করে আসছেন তাদের এ বিষয় কথা বলা উচিত না।তবে আমরা যারা ভালো কাজের প্রসংশা করেছি , তারা কিন্তু এ কাজের অনিয়ম বা দূর্নীতি নিয়ে প্রশ্ন করবই।

মুজিব শতবর্ষের আশ্রায়ন প্রকল্পের অনেকগুলো কাজের মধ্যে ২২টি জেলার ৩৬ টি উপজেলার গৃহ নির্মানে অনিয়ম এবং দূর্নীতির অভিযোগ প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে জমা পরেছ।সংখ্যাটা একেবারে কম নয়। কম বেশি যাইহোক আমরা একটি দূর্নীতির অভিযোগ আসলেও তার সুষ্ঠ তদন্ত চাই। সকল কাজের জবাবদিহিতা চাই। কেউই আইনের উর্ধ্বে নয়।তবে বাকী যে ৪২৪ উপজেলার গৃহ নির্মাণ কাজের সফলতাকে প্রশ্ন বৃদ্ধ করাও ঠিক হবে না।কারণ একাজের নকশা ও বরাদ্দ এক হলেও নির্মাণ কাজের ঠিকাদার, প্রকৌশলী, ততত্তাবধানে যারা ছিলেন তারা ভিন্ন ভিন্ন ব্যাক্তি।

তাই যাদের কাজে ত্রুটি ধরা পরছে তাদের তিরস্কার দেওয়ার সাথে সাথে যারা ভালো করেছে তাদের ধন্যবাদ দিতে হবে। আমরা ভালো ভাবে যারা প্রকল্পের কাজ সম্পন্ন করেছে তাদের ধন্যবাদ জানিয়ে অনিয়মের কারণ খুঁজে বের করার চেষ্টা করছি। সব উপজেলায় একই ধরনের সমস্যা দেখা দিয়েছে এমন নয়। সমস্যাগুলোর ধরনও ভিন্ন ভিন্ন । কোন জায়গায় স্থান নির্বাচনের সমস্যা। কোন জায়গায় প্রক্কলিত ব্যয় নিয়ে কথা উঠেছে।কোথাও প্রকৌশলীর অনিয়মের কথা আসছে। কোথাও ইউ,এন,ও সাহেবের দূর্নীতির কথা উঠেছে।কোথাও অফিস সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারের স্বেচ্ছাচারী মনোভাবের কথা উঠেছে।অনেক ঠিকাদার আবার স্থানীয় রাজনৈতিক নেতাদের চাঁদাবাজির কথাও বলেছেন। এখানে একটিবারও উচ্চ পর্যায়ের রাজনৈতিক নেতাদের নাম আসে নাই। কোন উচ্চ পর্যায়ের আমলাদের নামও আসে নাই। আবার যাদের নাম আসছে তারা কেউ অশিক্ষিত নয়।তাদের কারোরই বেঁচে থাকার জন্য এ দূর্নীতি করতে হয় নাই।যারা এ দূর্নীতি করেছে তারা জ্ঞানপাপী অর্থলোভী। নিজের জীবন বাঁচানোর জন্য এ অর্থ তারা চুরি করেন নাই। তারা প্রত্যেকই বিবেকবান, আমাদের অনেকর চেয়ে বেশি পড়াশোনা করেছে। কোন দিন আনে দিন খাওয়া মানুষ এ কাজ করে নাই। সবই শিক্ষিত আমাদের দেশের শিক্ষা ব্যবস্থায় এবং স্ব স্ব ক্ষেত্রে মহিমান্বিত। যারা তুলনামূলক দূর্বল শিক্ষা দিক্ষায় তারা তো প্রকৌশলী হতে পারি নাই।আমরা তাদের সাথে প্রতিযোগিতা করে বি.সি.এস অফিসার হতে পারি নাই।তারা আমাদের তুচ্ছতাচ্ছিল্য করে, করতেই পারে। করুক আমাদের আপত্তি নেই। আপনারা যা করেছেন তার জন্য তো আপনাদের সারা জীবনের অর্জন মিছে হয়ে গেল। এত দিনের গর্ব আপনাদের সব ধুলায় মিশে গেল।এদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। তার আগে আমাদের সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে।

এ দূর্নীতি সাথে যারা জড়িত তাদেরকে আমেরিকা, রাশিয়া, চীন বা ভারত আমাদের দেশে পাঠায় নি।তারা কেউ আমাদের ভাই, কারো বাবা,কারো চাচা,কারো বন্ধু, কারো সখের পতি, কারো আবার বাবা জীবন। এরা কেউ চোরের মতো পালিয়ে বেড়ায় না।তারা আমাদের সমাজে বুক ফুলিয়ে ঘুরে বেড়ায়। সমাজে তারা অনেক সম্মানও পায়।সমাজে সম্মান পাওয়ার জন্য যে টাকা দরকার সেটা তার আছে। তার অবৈধ ভাবে অর্জিত টাকার ছিটেফোঁটা দিলেই সমাজ তার পক্ষে যাবে। কাকে কত দিতে হবে তারা ভালো করেই জানে।কোথায় কত টাকা দিলে অনায়াসে ভালো মানুষ হওয়া যায় সেটা তাদের জানা। তারা কেউ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান করার জন্য টাকা খরচের করেনা। ইহকাল তো ভালোই গেল তবে পরকালের জন্য কিছু করা। তাই শুরু করে ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান গড়ার। সে যাই করুক তার জন্য জবাব দিহিতা করতে হবে না। চলবে………….

দুলাল চন্দ্র চৌধুরী সাংগঠনিক সম্পাদক বাংলাদেশ মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রধান পরিষদ।

আরও পড়ুন: ২০১৮ সালের এম পিও নীতিমালা ও ২০২১ সালের এম পিও নীতিমালার কিছু দূর্বল দিকের তুলনামূলক আলোচনা পর্ব ০১

 

ডেইলি নিউজ টাইমস বিডি ডটকম (Dailynewstimesbd.com)এর ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব ও ফেসবুক পেইজটি ফলো করুন করুন।

Leave a Reply