মুসলিম অধ্যুষিত দেশ বনাম নাস্তিক অধ্যুষিত দেশ

গত ৩০ দিনে পৃথিবীব্যাপী সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের ওপর ভিত্তি করে দেশের হুমকির সূচক (সিটিআই) শীর্ষক একটি তালিকা তৈরি করা হয়েছে। তালিকাটি হচ্ছে সব চাইতে ভয়ংকর রাষ্ট্রের তালিকা। যে সব দেশে বসবাস করা যে কোন মানুষের জন্যেই আতঙ্কের।

তালিকায় সবার ওপরে উঠে আসায় সবচেয়ে ভয়ংকর রাষ্ট্র হয়েছে ইরাক। শীর্ষ ১০টি ভয়ংকর রাষ্ট্রের তালিকা হচ্ছে-
১) ইরাক (৯৭% মুসলিম)
২) নাইজেরিয়া (৫৯.৭ মুসলিম, ৪০.৩% খ্রিষ্টান) ,
৩) সোমালিয়া (৯৯.৮% মুসলিম),
৪) আফগানিস্তান (৯৯% মুসলিম),
৫) ইয়েমেন (৯৯% মুসলিম),
৬) সিরিয়া (৯০% মুসলিম) ,
৭) লিবিয়া (৯৭% মুসলিম),
৮) পাকিস্তান (৯৮% মুসলিম),
৯) মিসর ( ৯০% মুসলিম)
১০) কেনিয়া (৮২.৫% খ্রিষ্টান, ১১.১ মুসলিম) ।

উপরের সবগুলো দেশেই দুর্নীতির মাত্রা ব্যাপক, প্রায় দেশগুলোই দুর্নীতিতে শীর্ষস্থানে রয়েছে। এসব দেশে ভয়াবহ মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা ঘটে প্রতিদিন। নারী, ধর্মীয় সংখ্যালঘু, আদিবাসী, সমকামী, এরা কেউই সাধারণ মানবিক অধিকারটুকু ভোগ করেন না।অনেকগুলো দেশেই নাস্তিকদের প্রকাশ্যে হত্যার উদাহরণ রয়েছেনারীদের প্রকাশ্যে পাথর মারার উদাহরণ হয়েছেসমকামীদের গাছে ঝুলিয়ে হত্যার উদাহরণ রয়েছে। এমনকি একই ধর্মের মধ্যেও ভয়াবহ যুদ্ধ, হত্যা, বোমা হামলার ঘটনা ঘটে। মেয়েদের স্কুলে বোমা মারা থেকে শুরু করে বিধর্মীদের হত্যা করে তাদের স্ত্রী কন্যাকে যৌনদাসী হিসেবে ব্যবহারের উদাহরণ অসংখ্য। মেয়েরা ধর্ষিত হলেও ভয়ে তা গোপন করে, সেগুলো প্রকাশ করতে চায় না। কারণ ঘটনা জানাজানি হলে শরীয়া আইনে তাদের ওপরেই শাস্তি প্রয়োগের ঘটনা অসংখ্য। সামাজিক অসম্মানের বিষয় তো রয়েছেই। সমাজ ধর্ষিতাদেরই খারাপ চোখে দেখে। এই লিস্টে সুদান, কঙ্গো এবং সৌদি আরবও যুক্ত হতে পারে। সৌদি আরব, ইরান সহ কয়েকটি দেশে প্রকাশ্যে অন্য ধর্ম পালনে রাষ্ট্রীয়ভাবেই নানান বাধা দেয়া হয়।

অপরদিকে পৃথিবীর শীর্ষ নাস্তিক অধ্যুষিত দেশগুলো হচ্ছে,

১) সুইডেন ৮৫%
২) ভিয়েতনাম ৮১%
৩) ডেনমার্ক ৮০%
৪) জাপান ৭৬%
৫) নরওয়ে ৭২%
৬) চেক রিপাবলিক ৬১%
৭) ফিনল্যান্ড ৬০%
৮) ফ্রান্স ৫৪%
৯) জার্মানি ৪৯%
১০) হাঙ্গেরি ৪৮%

উপরের দেশগুলোতে ধর্মীয় সংখ্যালঘু, নারী, আদিবাসী, সমকামীরা সামান্য কিছু উদাহরণ বাদ দিলে বেশীরভাগ ক্ষেত্রেই সমান অধিকার ভোগ করেন। এই সকল দেশে যে সকল মুসলমান বসবাস করেনতারা মুসলিম হবার কারণে কোন নির্যাতনের শিকার হন না। মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা এসব দেশেও ঘটে, ধর্ষণ থেকে শুরু করে ধর্মীয় বিভেদ ও বর্ণবাদের প্রভাব এসব দেশেও রয়েছে, তবে তার বিরুদ্ধে বেশিরভাগ মানুষই সোচ্চার।

অন্তত আইনগতভাবে বেশিরভাগ দেশই ধর্ম নিরপেক্ষ এবং সকলের সমান অধিকারে বিশ্বাসী। এসব রাষ্ট্রগুলো সকল ধর্মের মানুষকে সমান মর্যাদা ও অধিকার দিতে বাধ্য। কোন নাস্তিক এসব দেশে কোন ধার্মিকের চাইতে বিন্দুমাত্র বেশি অধিকার ভোগ করে না। ধার্মিক হবার কারণে কাউকে হত্যা করার উদাহরণ পাওয়া যায় না, ধার্মিকদের বিরুদ্ধে কোন ব্লাসফেমি আইনও নেই। বরঞ্চ অনেকগুলো দেশে নাস্তিকদের ট্যাক্সের টাকায় ধার্মিকগণ তাদের ধর্ম পালন ও ধর্মপ্রচার করে থাকেন।

Leave a Reply