যে কারণে মেঝেতে বসার অভ্যাস করা ভালো

আরামদায়ক চেয়ার রেখে মেঝেতে বসা কষ্টকর। তবে দীর্ঘায়ু পেতে এই অভ্যাস করা যেতেই পারে।

 

কারণ ‘দি ওয়ার্ল্ড’স লঙ্গেস্ট লিভিং পপুলেশন’য়ের ওপর করা গবেষণা থেকে জানা যায়, আরামদায়ক চেয়ারে বসার চেয়ে মেঝেতে বসা শরীরের জন্য বেশি উপকারী।

 

পৃথিবীর যেসব অঞ্চলের মানুষের জীবন দীর্ঘ তাদের ‘ব্লু জোন’ হিসেবে আখ্যায়ীত করে যুক্তরাষ্ট্রের ভৌগোলিক বিশেষজ্ঞ ড্যান বুয়েটনার বলেছেন, “জাপানের ওকিনাওয়াতে বসবাসকারী লোকেরা তাদের বাড়িতে ন্যূনতম আসবাবপত্র রাখে, তাই স্বাভাবিকভাবেই তারা বেশিরভাগ সময় মেঝেতে বসে থাকে এবং এর স্বাস্থ্য সুবিধাগুলি স্পষ্ট।”

 

ওয়েলঅ্যান্ডগুড ডটকম’য়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে এই বিশেষজ্ঞের বরাত দিয়ে আরও জানানো হয়, বিশ্বের ইতিহাসে দীর্ঘজীবী মহিলারা ওকিনাওয়াতে বসবাস করতেন।

 

ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা থেকে বুয়েটনার বলেন, “এর পেছনে মেঝেতে বসা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। দেখা গেছে এর ফলে দৈনিক ৩০ থেকে ৪০ বার গড়ে ‘স্কোয়াট’ বা ওঠবস করা হয়ে থাকে।”

 

মেঝে থেকে আসন গেড়ে বসা অবস্থায় কোনো কিছুর সাহায্য ছাড়া উঠে দাঁড়ানো সুস্থতা ও দীর্ঘায়ুর লক্ষণ।

 

ইউরোপিয়ান জার্নাল অব প্রিভেন্টিভ কার্ডিওলজি’তে প্রকাশিত এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, যারা দিনে কমপক্ষে পাঁচ থেকে ছয় বার এমন ওঠা-বসা করে তাদের আয়ু অন্যদের তুলনায় দীর্ঘ।

 

গবেষণার প্রধান গবেষক, ক্লাউডিও গিল আরাউজো বলেন, “দীর্ঘায়ুর জন্য অ্যারোবিক ফিটনেস সুপরচিত। তবে গবেষণায় দেখা গেছে, এটা দেহের নমনীয়তা, পেশির শক্তি, শক্তি ও শরীরের ওজনের অনুপাত এবং দৈনিক কার্যক্ষমতা ইত্যাদি আয়ুর ওপর প্রভাব রাখে।”

 

 

বার বার মেঝে থেকে উঠতে একাধিকবার মূলপেশিতে টান পড়ে এবং তা দৃঢ় হয়। ফলে বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে নিচে পড়ে যাওয়ার প্রবণতা হ্রাস পায় যা বয়স ৬৫’র ওপরের মৃত্যু ঝুঁকির অন্যতম কারণ।

 

এটা কঙ্কালের স্বাস্থ্য, পেশির ভারসাম্য এবং সুষ্ঠু ভর বজায় রাখতে সাহায্য করে বলে জানান, যুক্তরাষ্ট্রের ‘বডি অ্যালাইনমেন্ট’ বিশেষজ্ঞ লরেন রক্সবার্গ।

 

অনেকেই দীর্ঘসময় নিয়ে চেয়ারে বসে কাজ করেন।

 

রক্সবার্গের মতে, “চেয়ারে বসার চাইতে মেঝেতে পা ভাঁজ করে বসা হাড়কে সুদৃঢ় করে। মূল স্থায়িত্ব শক্তি বাড়ায়, নমনীয়তা বজায় রাখে এবং সামগ্রিক নড়াচড়ায় সহায়তা করে।”

 

মেঝেতে বসলেও বসার ধরনের দিকে মনোযোগ দিতে হবে। ঝুঁকে বসা বাড়তি চাপ সৃষ্টি করে। ফলে পিঠে ব্যথা হতে পারে। আর খেয়াল রাখতে হবে দেহের ভর যেন নিতম্বের ওপরে পড়ে। এতে গোড়ালি ও পায়ে চাপ কম পড়বে।

 

তার মতে, মেঝেতে বসার সবচেয়ে ভালো উপায় হল একটা কুশন, ভাঁজ করা কম্বল বা নরম কোনো তোষোকের ওপরে বসা। এতে নিতম্ব আরামে থাকবে।

 

সুস্থ থাকতে সারাদিন মেঝেতে বসে থাকার প্রয়োজন নেই। বরং বসার জন্য নিচু আসবাব ব্যবহার করা বা ঘর নিজে পরিষ্কার করার মাধ্যমেও সুস্থ থাকা যায় বলে জানান, রক্সবার্গ।

 

 

তিনি বলেন “দীর্ঘায়ু, নমনীয় ও কার্যক্ষম থাকতে সারাদিন ক্রমাগত দেহ ভঙ্গী পরিবর্তন করা প্রয়োজন।”

 

দীর্ঘক্ষণ মেঝেতে বসে কাজ করা, বড় স্কোয়াট ইত্যাদি রক্ত সঞ্চালন, রক্ত প্রবাহ, শক্তি বৃদ্ধি, স্থিতিস্থাপকতা বাড়ায়।

 

তাই কাজের পাশাপাশি মেঝেতে উঠে বসে কাজ করা সুস্থ থাকতে আয়ু বাড়াতে সহায়তা করে।

 

আরও পড়ুনবলিউড নায়িকাদের নামের তালিকা ২০২২

Leave a Reply