লোহাগড়ায় মোহাম্মদকে নিয়ে কটূক্তির গুজব ছড়িয়ে হিন্দুদের বাড়ি, দোকানপাট এবং মন্দিরে উগ্রপন্থীদের তাণ্ডব

নড়াইলের লোহাগড়ায় ইসলাম ধর্মের প্রবর্তক নবী মোহাম্মদকে নিয়ে ফেসবুকে কটূক্তি করা হয়েছে বলে গুজব ছড়িয়ে স্থানীয় হিন্দু ধর্মালম্বীদের উপর সাম্প্রদায়িক হামলা, হিন্দুদের ঘর বাড়ি, দোকান এবং মন্দিরে অগ্নি সংযোগ ও লুটপাট করছে স্থানীয় উগ্রপন্থী মুসলমানরা। মুহাম্মদকে নিয়ে কটূক্তির অভিযোগে উত্তেজিত জনতা স্থানীয় একটি বাজারের ৬টি দোকান ভাঙচুর ও লুটপাট করেছে বলে জানা গেছে। এ সময় তারা একটি মন্দিরে আগুন ধরিয়ে দেয়। এ ছাড়া ৪টি বাড়িঘর ও এর আসবাবপত্র ভাঙচুর করে নগদ টাকাসহ স্বর্ণের গহনা লুট করে নিয়ে যায় বলে অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয় সুত্রে জানা যায়, দিঘলিয়া গ্রামের সাহাপাড়ার অশোক সাহার ছেলে আকাশ সাহা ফেসবুকে মোহাম্মদকে নিয়ে কটূক্তি করেছে বলে পরিকল্পিতভাবে গুজব ছড়ায় স্থানীয় উগ্রপন্থী মুসলমানদের একটি চক্র। বিষয়টি স্থানীয় ধর্মান্ধদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়লে শুক্রবার সন্ধ্যায় তৌহিদী জনতার ব্যানারে আকাশের গ্রেফতার ও ফাঁসীর দাবিতে মানববন্ধন করে।

 

পরে উগ্রপন্থীদের একটা অংশ দিঘলিয়া বাজারের নিত্য দুলাল সাহা, অনুপ সাহা, অশোক সাহা, সনজিদ সাহার মুদি দোকান এবং গোবিন্দ কুণ্ডু ও গৌতম কুণ্ডুর মিষ্টির দোকান ভাঙচুর ও লুটপাট করে। এ ছাড়া সাহাপাড়ার গৌরসাহা, চায়না রানী সাহা, বিপ্লব সাহার বাড়িঘর ও আসবাবপত্র ভাঙচুরসহ এবং স্বর্ণলংকার ও নগদ টাকা নিয়ে যায়। তারা নাড়ূ গোপালের বসতঘরে আগুন ধরিয়ে দেয় এবং লুটপাট করে। এছাড়া এই সন্ত্রাসীরা রাত ৯টার দিকে আখড়াবাড়ী সার্বজনীন পূজামণ্ডপে আগুন ধরিয়ে দেয়। লোহাগড়া থানা পুলিশ, ডিবি পুলিশ, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ও রাজনৈতিক নেতারা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করেন।

কোটালীপাড়ায় বটি দিয়ে স্বামীকে কুপিয়ে হত্যার দায় স্বীকার করেছেন স্ত্রী

পরে রাত সাড়ে ৯টার দিকে র‌্যাব-৬-এর একটি দল এবং নড়াইলের পুলিশ সুপার প্রবীর রায় ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন। লোহাগড়ার ইউএনও আজগার আলী এক ফেসবুক স্টাটাসে জানান, “ধর্মীয় অবমাননার দায়ে অভিযুক্ত আকাশের বাবা অশোককে পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়েছে এবং তার ছেলের বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে”। স্থানীয় অন্যান্য সূত্র থেকে জানা গেছে, সাম্প্রাদায়িক মুসলমানদের একটা চক্র এখনও স্থানীয় হিন্দুদের বাড়িঘরে লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ অব্যাহত রেখেছে। ঐ এলাকার সকল হিন্দুরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে। প্রশাসন ও আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকে তাঁদের নিরাপত্তার কোন ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে না বলে অভিযোগ করেছেন তাঁরা।

Source: anweshan

Leave a Reply