সন্তান কথা শোনে না? জেনে নিন করণীয়

স্কুল থেকে প্রায়ই আপনার সন্তানের নামে অভিযোগ আসে? শিক্ষক-অভিভাবক বৈঠকে গেলেও একই অবস্থা। প্রতিবেশীরাও আপনার সন্তানের দুষ্টুমিতে নাজেহাল। বাড়িতেও কারোর কথা শোনে না। কিছু বললে পাল্টা উত্তর দেয়। বকলেও কোনও কাজ হয় না। আর শাসন করলে তো আরও মুশকিল। চিৎকার, চেঁচামেচি করে বাড়ি মাথায় তোলে।

আসলে বাড়িতে শিশু থাকলে এমন ঝামেলায় পড়তে হয় কমবেশি অনেক বাবা-মাকেই। আর শিশুকে বকে বা শাসন করে সবসময় ঠিক-ভুল শেখানো যায় না। শিশুরা দুষ্টুমি করবে এটাই স্বাভাবিক। অনেক সময় আপনার কথা শুনতে চাইবে না, আপনি যা বলবেন তার উল্টোটা করবে। তবে আপনার দায়িত্ব হলো তাতে যেন অন্য কারো ক্ষতি না হয় সেদিকে খেয়াল রাখা। এ বিষয়ে মনোরোগ বিশেষজ্ঞ সুমাইয়া ইসলাম জানালেন কিছু পরামর্শ।

১। প্রথমে আপনাকে শিশুর জেদের মাত্রা বুঝতে হবে। সব শিশু এক রকম হয় না। কাউকে বকা দিলে সে বুঝে যায়, কেউ আবার বকা শুনে আরও জেদি হয়ে ওঠে। সন্তানকে বোঝানোর সময় আপনি কেমন আচরণ করছেন তাও ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ। আপনি যদি রেগে বকাবকি করেন বা সন্তানের জেদের কাছে হেরে যান, তাহলে তার কথা না শোনার প্রবণতা বেড়ে যাবে। তাই আপনাকে সাবধানী হতে হবে। মাথা ঠান্ডা রেখে শিশুকে বোঝানোর চেষ্টা করুন। আপনি যদি নিজের সিদ্ধান্তের ওপর স্থির থাকেন তাহলে শিশু বুঝবে কান্নাকাটি বা চিৎকার করে কোনও লাভ হবে না।

২ সন্তান যদি কথা না শোনে তাহলে অতিরিক্ত সমালোচনা করতে যাবেন না বা অন্য শিশুর সঙ্গে তুলনা করবেন না। তাকে বোঝান যে আপনি তার ব্যবহারে কষ্ট পেয়েছেন। আমরা শিশুদের যতটা অবুঝ ভাবি, ওরা ততটা অবুঝ হয় না। তার ব্যবহারে আপনি কষ্ট পাচ্ছেন এটা জানার পর হয়তো আপনার কথা মতো চলার চেষ্টা করবে।

৩। সন্তান যতই অবাধ্য হোক, গায়ে হাত তুলে শাসন করতে যাবেন না। অন্য কোনও শারীরিক শাস্তি না দেওয়াও ভালো। এসবে আপনার সন্তান আরও জেদি ও রাগী হয়ে যেতে পারে।

৪। সন্তানের ব্যবহারে সবসময় অসন্তুষ্টি প্রকাশ করবেন না বা ভুল খুঁজতে যাবেন না। বরং ইতিবাচক কথা বলুন। যেমন যদি সে কোনও ভালো কাজ করে তাহলে প্রশংসা করুন। ছোটখাটো উপহারও দিতে পারেন। তাহলে পরবর্তীতে ভালো কাজ ও ভালো ব্যবহারে উদ্বুব্ধ হবে শিশু।

৫। আপনাকে নিজের ব্যবহারে সচেতন হতে হবে। কারণ সন্তান আপনাকে দেখেই শিখবে। সুতরাং সন্তানের কাছে ভালো রোল মডেল হওয়ার চেষ্টা করুন।

Leave a Reply