“স্বাস্থ্য বিধি মেনে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার দাবি এখন সার্বজনীন  ” দুলাল চন্দ্র চৌধুরী প্রধান শিক্ষক ইস্কাটন গার্ডেন উচ্চ বিদ্যালয় ও সাংগঠনিক সম্পাদক

“স্বাস্থ্য বিধি মেনে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার দাবি এখন সার্বজনীন  ”

“স্বাস্থ্য বিধি মেনে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার দাবি এখন সার্বজনীন  ” দুলাল চন্দ্র চৌধুরী প্রধান শিক্ষক ইস্কাটন গার্ডেন উচ্চ বিদ্যালয় ও সাংগঠনিক সম্পাদক
“স্বাস্থ্য বিধি মেনে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার দাবি এখন সার্বজনীন  ” দুলাল চন্দ্র চৌধুরী প্রধান শিক্ষক ইস্কাটন গার্ডেন উচ্চ বিদ্যালয় ও সাংগঠনিক সম্পাদক

২০১৯সালে ডিসেম্বরে চীনের হুপেই প্রদেশের উহান নগরীতে কোভিড – ১৯ সংক্রমণ শুরু হয়। প্রথম দিকে যিনি এভাইরাস সম্পর্কে ধারণা দেন তার কথা কেউ বিশ্বাস করতে চায়নি।সংক্রমণের হার বৃদ্ধি পাওয়ায় চীনের পুরো স্বাস্থ্য ব্যবস্থা ভেঙে পরে।সারা পৃথিবী চীন থেকে নিজেকে আলাদা করে ফেলে। চীন তার নিজ দেশের মধ্যে এক প্রদেশে থেকে অন্য প্রদেশে সংক্রমণ ঠেকাতে লকডাউন ঘোষণা করে।এ লকডাউনের মধ্যে বাংলাদেশ কিছু শিক্ষার্থী সেখানে আটকা পড়ে।তাদের কে বাংলাদেশ  সরকার বিশেষ বিমানে করে দেশে ফিরিয়ে নিয়ে আসেন।

চীনের এ ভয়াবহ অবস্থার পরেও আমরা সংক্রমণ ঠেকাতে  যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে সমর্থ হইনি। যতটুকু গ্রহণ করা হয়েছে তাও সভ্য নাগরিক হিসাবে তা আমরা মান্য করিনি ।আমাদের ভাইরাসের সংক্রমণের সম্পর্কে তেমন ধারণাই ছিল না। অনেকের ধারণা ছিল চীন থেকে আমাদের দেশে এ ভাইরাসের সংক্রমণের পূর্বে ভাইরাস আমাদের বিজ্ঞানের কাছে পরাস্ত হবে। উন্নত দেশগুলো যখন করোনার সংক্রমনে দিশে হারা তখনও আমরা আমাদের জনসাধারণকে সচেতন করতে পারি নাই। পূর্ব প্রস্তুতির যথেষ্ট সময় পাওয়ার পরেও আমরা সেই মাত্রায় প্রস্তুতি নিয়ে রাখিনি এটা আমাদের ব্যর্থতা। এদায় আমাদের মাথা পেতে নিতে হবে।

আমাদের দেশে ৮ মার্চ ২০২০খ্রি. করোনা রোগী সনাক্ত হয়। সারা দেশ তখন জাতীয় শিশু দিবস ও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্ম শতবার্ষিকী এবং স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠান পালনের প্রস্তুতি চলছিল ।সংক্রমণ শুরু হওয়ার সাথে সাথে প্রায় সর্বমহল থেকেই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করার দাবি উঠে।শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলি সরকারি নির্দেশনার অপেক্ষায় ছিলেন। পাশাপাশি তারা সমান তালে জাতীয় অনুষ্ঠানগুলো উজ্জাপন করার প্রস্তুতি  নিচ্ছিলেন। শিক্ষা মন্ত্রণালয় নিজ উদ্যোগে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করতে পারেনা।তার জন্য স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সুপারিশ প্রয়োজন। শিক্ষা মন্ত্রণালয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সুপারিশের অপেক্ষায় ছিল।স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সুপারিশ পাওয়া সাথে সাথে ১৬মার্চ ২০২০খ্রি.১৭ মার্চ থেকে ৩১মার্চ পর্যন্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করা হয়। পরিস্থিতি অস্বাভাবিক আকার ধারণ করায় সরকার বাধ্য হয়ে সংক্রমণ ঠেকাতে ২৫ মার্চ২০২০ থেকে  লকডাউন ঘোষণা করেন।

সংগত কারনেই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বন্ধ প্রলম্বিত হয়।শিক্ষা মন্ত্রণালয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ৩১ মার্চ পর্যন্ত বন্ধ ঘোষণার সময় আমার মনেহয় তাদের ধারণাই ছিল না যে এই বন্ধ আরো বৃদ্ধি পেতে পারে। বাস্তবে তা বৃদ্ধি পেয়েছে ফলে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্তাব্যাক্তিরা একটু হলেও সমস্যায় পরে যান।এই দীর্ঘ সময় শিক্ষার্থীরা কীভাবে শিক্ষার সাথে যুক্ত থাকবে সে বিষয় কোন  নির্দেশনা দেওয়া হয় নাই। মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক  মার্চের শেষ দিকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রধানদের পরিপত্র দিয়ে জানিয়ে দেন যে zoom cloud apps বা অন্য যে apps ব্যবহার করে ঘরে বসে ক্লাস নেওয়া যায় সেই apps এর মাধ্যমে অনলাইন ক্লাস নিতে হবে। তখন সারা দেশে লকডাউন চলার কারণে প্রতিষ্টান প্রধানবৃন্দ এ নির্দেশনা অনুযায়ী অনলাইন ক্লাস নেওয়া ব্যবস্থা গ্রহণ করতে সমর্থ হয়নি। না পারার যুক্তি সংগত অনেক কারণ আছে।

এক নম্বর কারণ শিক্ষকবৃন্দ এ বিষয় প্রশিক্ষিত ছিল না। দ্বিতীয়ত শিক্ষকদের অনেকেই মনে করেন এটা একটি সাময়িক সমস্যা। এ সমস্যা সমাধানের পরে শিক্ষার্থী শিক্ষায় যেটুকু পিছিয়ে যাবে আমরা তা পুষিয়ে  দিতে পারব। আগে জীবনে বাঁচাই পরে শিক্ষার্থীদের শিক্ষা গ্রহণ বা প্রদান করা যাবে। বিষয়টি মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মহোদয়  বুঝতে পেরে পূনরায় ৩০ এপ্রিল ২০২০খ্রি.  একই প্রজ্ঞাপন জারি করে অনলাইন ক্লাস নেওয়ার নির্দেশনা দেন। এবারের প্রজ্ঞাপন পেয়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রধানগন শিক্ষকদের নিয়ে ভার্সুয়াল সভা করে ঘরে বসে অনলাইন কার্যক্রম পরিচালনা করার ব্যবস্থা গ্রহণ  করেন। জুলাই মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে মার্চ, এপ্রিল, জুন থেকে ১৩ জুলাই পর্যন্ত যতগুলো অনলাইন ক্লাস নেওয়া হয়েছে তার মাসওয়ারী ক্লাস সংখ্যা এবং গৃহীত ক্লাসের লিংক জেলা শিক্ষা অফিসারের মাধ্যমে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের অফিসে পাঠানোর নির্দেশনা আসে।

অনলাইন ক্লাসের পাশাপাশি অনেক স্কুল শিক্ষার্থীদের পড়াশোনা কথা বিবেচনা করে অনলাইন স্কুল পরিচালনা করছে।এমন কী অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান অনলাইন পরীক্ষা যথারীতি চালিয়েছন।শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কাছে এ তথ্য ছিল যে সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানzoom cloud apps বা অন্য কোন apps ব্যবহার করে ঘরে বসে ক্লাস নিতে সমর্থ হবে না।অনেক প্রতিষ্ঠনে নেটওয়ার্ক নেই। অনেক শিক্ষকের বাড়িতে ইন্টারনেট নেই। তাই এ ব্যবস্থায় তারা শতভাগ শিক্ষার্থীদের পড়াশোনা আওতায় নিয়ে আসাতে পারবে না। তাই মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর “আমার ঘরে আমার স্কুল” শিরোনামে, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা অধিদফতর “ঘরে বসে শিখি” শিরোনামে,মাদ্রাসা শিক্ষাবোর্ড “আমার ঘরে আমার মাদ্রাসা” শিরোনামে এবং কারিগরি শিক্ষা বোর্ড “”ঘরে বসে কারিগরি শিক্ষা” শিরোনামে বাংলাদেশ সংসদ টেলিভিশনে পাঠদান কার্যক্রম পরিচালনা করছেন।সাথে সাথে বাংলাদেশ সংসদ টেলিভিশন এর পাঠদানের রুটিনের সাথে স্ব স্ব স্কুলের অনলাইনেই ক্লাস রুটিনের সমন্নয় করতে বলেছেন।

নিঃসন্দেহে এ সকল পদক্ষেপ প্রসংশার দাবি রাখে। সার্বিকভাবে পর্যালোচনা করলে দেখা যায় শিক্ষক, অভিভাবক, শিক্ষার্থী, ম্যানেজিং কমিটি, শিক্ষা সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গ সকলেই নিরলস ভাবে চেষ্টা করে যাচ্ছেন করোনাকালীন শিক্ষা ব্যবস্থা অব্যাহত রাখতে।শিক্ষার্থীদেরকে শিক্ষার সাথে যুক্ত করে শিক্ষার গুণগত শিক্ষা নিশ্চিত করতে। এসকল আয়োজন তারই বহিঃপ্রকাশ বটে।শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও সম্মানিত অভিভাবকদের মাঝে এক শ্রেণির স্বার্থান্বেষী মহল,ঘোলা পানিতে মাছ শকারির দল ডুকে অযাচিত ভাবে ছাত্র শিক্ষক অভিভাবকদের মধ্যকার মধুর সম্পর্ককে বিষিয়ে  তোলার চেষ্টা করছেন।করোনার মধ্যেও যে সকল শিক্ষক প্রতিদিন অনলাইন ক্লাস নিচ্ছেন, শিক্ষার্থীদের ও অভিভাকদের সাথে ওভার টেলিফোনে  যোগাযোগ করেছেন। শিক্ষকবৃন্দ এতকিছু করার পরে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান শিক্ষার্থীর কাছে টিউশন বা মাসিক বেতন চাওয়াটা কী অপরাধ? কোন সচেতন অভিভাবক নিঃসন্দেহে অপরাধ  করবেনা।

অপরাধ মনে করছে তারাই যারা ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করতে চায়।শুধু করোনার সময় কেন? কোন স্বাভাবিক অবস্থায়ও কী কোন শিক্ষার্থীর টাকার জন্য পড়াশোনা বন্ধ হয়েছে? এমন কোন রেকর্ড কেউ দেখাতে পারবেন? আমি যতটুকু জানি এমন রের্কড কেউ দেখাতে পারবেনা।যারা এ বিশেষ পরিস্থিতিতে বেতন দেওয়ার সামর্থ নেই কিন্তু  নিজ সন্তানকে পড়াতে চান।তাকে বললব আপনি নিজে প্রতিষ্ঠান প্রধানের কাছে গিয়ে বলুন। তিনি অবশ্যই একটি ব্যবস্থা করে দিবেন। আর তা না করে সবাই মিলে আনন্দোলন শুরু করে দিবেন বেতন না দেওয়ার।তবেবেতন না দিলে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান চলবে কী ভাবে? তখন শিক্ষকবৃন্দ বাধ্য হবে স্কুল ছেড়ে যেতে। শিক্ষকদেরও সংসার আছে, ছেলে-  মেয়ে, বাবা মা এবং পরিবার আছে। তাদের পরিবার চলবে কীভাবে?

অনেক স্কুল অনলাইনে পরীক্ষা নিয়েছেন সে বাবদ পরীক্ষার ফি আদায় করেছেন। পরীক্ষার ফি আদায় করেছেন এ নিয়ে একশ্রেণির সুবিধাবাদি গ্রুপ আনন্দোলন শুরু করে দিল।পরীক্ষার ফি নেওয়া যাবে না। আমার তাদের কাছে জিজ্ঞেসা কেন পরীক্ষার ফি নেওয়া যাবে না?  স্বাভাবিক অবস্থায় পরীক্ষার ফি নেওয়ার  সময় তো কেউ প্রতিবাদ করেন নি।স্বাভাবিক অবস্থায় পরীক্ষা পরিচালনার জন্য আনুসঙ্গিক খরচ চালানোর জন্য ফি নেওয়া যদি বৈধ হয়।তবে এখন ঐ সকল খরচ ব্যতিত কীভাবে পরীক্ষা পরিচালনা করবে? যদি পরীক্ষার ফি না নিবে  তবে ঐ সকল ব্যয়িত অর্থ আসবে কোথা থেকে?  এই সকল প্রশ্ন আমার সচেতন মহলের কাছে রইল । অন্য দিকে  সুবিধাবাদিদের দল সব কিছুতে সুবিধা নিতে চেষ্টা করবেন। এর পরিনাম বেশি ভালো হবেনা। শিক্ষা মন্ত্রণালয় সার্বক্ষণিকভাবে শিক্ষার্থীদের পড়াশোনা আওতায় নিয়ে আসা সর্বাত্মক চেষ্টা করেছেন। আগষ্ট মাসে এসে পরিপত্র জারি করে পিছিয়ে পড়া শিক্ষার্থীদের কী ভাবে সহযোগিতা করা যায় সে বিষয়ে নির্দেশনা দিয়েছেন  ?   যেমন শ্রেনি শিক্ষক ও বিষয় শিক্ষকদের শিক্ষার্থীএবং অভিভাবকদের সাথে টেলিফোনে যোগাযোগ করতে বলেছেন ।

অভিভাবক ও শিক্ষার্থীদেরকে পড়াশোনা বিষয়ে শিক্ষকদের সাথে ফোনে যোগাযোগ করার জন্য উৎসাহিত করতে বলেছেন।এ সকল বিষয় শ্রেনি শিক্ষক ও বিষয় শিক্ষকবৃন্দ যথাযথবভাবে করছে কীনা তা দেখভাল করার দায়িত্ব দিয়েছেন প্রতিষ্ঠান প্রধান ও সহ প্রধানদের।সংসদ টেলিভিশনের পাঠদান ও স্ব স্ব প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন ডিভাইস ব্যবহার করে অনলাইন ক্লাসের সুবিধা যারা গ্রহণ করতে পারেনি।আমার মনে হয় তাদেরকে পড়াশোনা আওতায় নিয়ে আসার জন্য assignment এর মাধ্যমে মূল্যায়নের ঘোষণা দেন।সংক্ষিপ্ত সিলেবাস তৈরি করে ছয় সপ্তাহের একটি প্যাকেজ ঘোষণা করেন।যা নভেম্বর ২০২০ এর প্রথম সপ্তাহ  থেকে কার্যকর করা হয়।  assignment মধ্যমে মূল্যায়ন বিষয়টির সাথে আমাদের অভিভাবকদের অনেকই জ্ঞাত ছিলেন না। তারপরে আমি বলব এ পদ্ধতি শতভাগ শিক্ষার্থীকে পড়াশুনার সাথে সম্পৃক্ত করতে সক্ষম হয়েছে।এ জন্য  শিক্ষা প্রশাসন প্রসংশার দাবি রাখে। কিছু পরিপত্রের ক্ষেত্রে আরো একটু সচেতন হলে অনেক বিভ্রান্তি কেটে যেত।

প্রথমতঃ পরিপত্রের মাধ্যমে বলা হচ্ছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ যা প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার ঢালাউভাবে প্রচার করেছে।যে কারণে আমরা ঘরে বসে জানতে পারছি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ।তার মানে শিক্ষক কর্মচারী ও শিক্ষার্থী কারও স্কুলে যেতে হবে না।তাহলে জনমনে এ প্রশ্ন জাগাটাই স্বাভাবিক যে স্কুল বন্ধ থাকলে শিক্ষকবৃন্দ বাড়ি বসে বসে বেতন নিবে কেন? তখন এর প্রতিবাদ করার জন্য  জনগণ মাঠে আসতে পারে। এখানে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধের ঘোষণা যেভাবে প্রচার করেছে অনলাইন ক্লাস নেওয়া এবং সংসদ টেলিভিশনে প্রচারিত পাঠদান কার্যক্রম পরিচালনা বিষয় সেরূপ প্রচার হয়নাই।অনলাইন ক্লাস, পরীক্ষা, ফরনপূরন,রেজিষ্ট্রেশন এসব বিষয় পরিপত্র  আসে প্রতিষ্ঠান প্রধানের কাছে। এ কাজগুলো প্রতিষ্টানকে করতে হয়। এ সব মিডিয়াতে আসেনা।সাধারণ মানুষ কনফিউজড হয়ে যায়।এদুটো মিলে যদি প্রজ্ঞাপন এমন হতো যে করোনা ভাইরাস সংক্রমন রোধে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সরাসরি পাঠদান বন্ধ আছে। তবে বিভিন্ন  apps ব্যবহার করে অনলাইন ক্লাস,ফরমপূরণ, রেজিষ্ট্রেশনের মতো গুরুত্বপূর্ণ কার্যক্রম স্বাস্থ্য বিধি মেনে যথারীতি চলছে। এ সামান্য পরিবর্তনটুকু আমাদের শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কার্যক্রমকে আর সুন্দর করে তুলতে পারত।স্বার্থান্বেষী মহল আর কোন সুযোগ পেতনা।

কিন্তু এ ধরনের পরিপত্র জারি করায় আমরা তাদের কথা বলার  সুযোগ করে দিয়েছি। অনলাইন ক্লাস দেখার জন্য প্রয়োজনীয় ডিভাইসের অভাব,ইন্টারনেট নেই, সংসদ টেলিভিশনে পাঠদান  দেখার জন্য বাসায় টেলিভিশননেই,ডিভাইস নেই, Assignment  দেওয়ার জন্য খাতা কেনার টাকা নেই। এ সকল যুক্তি যে সবটাই মিথ্যে এমনটা নয়।অনেকর ঘরে এ সকল উপকরণ নেই। যে কারণে শিক্ষার্থী শিক্ষার সাথে যুক্ত নেই।তবে এ কথাও শোনা যাচ্ছে মোবাইলে ইন্টারনেট যুক্ত থাকা শিক্ষার্থীরা মোবাইলে  গেমস খেলাসহ অন্য সব খারা দিকে ঝুঁকে পরছে।সব মিলিয়ে করোনাকালে শিক্ষা ক্ষেত্রে যে ক্ষতি হয়েছে তা অপূরনীয়। তাই সর্বমহল থেকে যেমন একযোগে স্কুল বন্ধের দাবি আসছিল তেমনি ভাবে আজ স্কুল খুলে দেওয়ার দাবি  সর্বমহল থেকে আসছে। শিক্ষার ক্ষতি খালি চোখে ধরা পরার মত নয়।তবে প্রভাব আস্তে আস্তে প্রকাশিত হবে।তখন সময় অনেক পেরিয়ে যাবে।তাই আজ আমাদের দাবি শিক্ষার্থীদের পড়াশোনা কথা চিন্তা করে স্বাস্থ্য বিধি মেনে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া হউক। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে স্বাস্থ্য বিধি মানার শর্ত দিয়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার অনুমতি দেওয়া হউক।

স্বাস্থ্য বিধি মেনে যদি শপিং মল খোলা যায় এবংসেখানে যদি স্বাস্থ্য বিধি নিশ্চিত করা যায় তবে  শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দিলে শিক্ষকবৃন্দ শিক্ষার্থীদের সাস্থ্যবিধি মানাতে পারবেনা এটা আমি বিশ্বাস করিনা।কেন্দ্রীয় নির্দেশনা থাকবে শুধু স্বাস্থ্য মেনে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার অনুমতি দেওয়া হল। যে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান স্বাস্থ্য বিধি মানাতে অসমর্থ হবে তাদের প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেওয়া হবে। আরও একটি শর্ত হতে পারে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখাতে হবে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো নিজের সামর্থ অনুযায়ী শিক্ষার্থীদের স্কুলে নিয়ে আসবে।এর কৌশল নির্ধারণ ক্ষমতা  প্রতিষ্ঠান প্রধানকে দিতে হবে।

দুলাল চন্দ্র চৌধুরী
প্রধান শিক্ষক ইস্কাটন গার্ডেন উচ্চ বিদ্যালয় ও সাংগঠনিক সম্পাদক
বাংলাদেশ মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রধান পরিষদ।

Leave a Reply