Deprecated: Function WP_Dependencies->add_data() was called with an argument that is deprecated since version 6.9.0! IE conditional comments are ignored by all supported browsers. in /home/amadersa/public_html/wp-includes/functions.php on line 6131
চারবার অকৃতকার্য হয়েও বিসিএস ক্যাডার হলেন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার তৃপ্তি

চারবার অকৃতকার্য হয়েও বিসিএস ক্যাডার হলেন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার তৃপ্তি

অনেকেই অবজ্ঞা করে বলত- জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়েছিস; বিসিএসে হবে না, হলেও ভালো কোনো ক্যাডার হতে পারবি না। কিন্তু তাদের কথায় হাল ছাড়িনি, হতাশ হইনি। মানুষের অবজ্ঞা ও নেতিবাচক কথাগুলো অনুপ্রেরণা হিসেবে নিয়েছি। হাল না ছেড়ে চেষ্টা চালিয়ে গেছি। শেষ পর্যন্ত নিজেরকাঙ্ক্ষিত লক্ষ্য অর্জন করতে সক্ষম হয়েছি।’ এভাবেই কথাগুলো বললেন বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিসের (বিসিএস) ৩৮তম ব্যাচের শিক্ষা ক্যাডারে নিয়োগের জন্য সুপারিশপ্রাপ্ত শিক্ষক আলেয়া জাহান তৃপ্তি।

চারবার অকৃতকার্য হয়ে পঞ্চ’মবার স্বপ্নপূরণ হয়েছে তার। তৃপ্তির বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌর শহরের দাতিয়ারা এলাকায়। চার ভাই-বোনের মধ্যে তৃপ্তি সবার বড়। বাবা মো. আলমগীর ভূঁইয়া ঢাকায় বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন। মা আফরোজা খানম গৃহিণী। পরিবারের বড় সন্তান হওয়ায় দায়িত্বটা একটু বেশি তৃপ্তির। ছোটবেলা থেকে পড়ালেখার প্রতি ভীষণ মনোযোগী তৃপ্তির স্বপ্ন ছিল শিক্ষক হওয়ার। পড়ালেখায় তাকে উৎসাহ জুগিয়েছেন বাবা-মা। ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি কলেজ থেকে অনার্স এবং ইডেন মহিলা কলেজ থেকে মাস্টার্স পড়া তৃপ্তি শিক্ষাজীবন শেষ করে শিক্ষকতা পেশায় যু’ক্ত হন। প্রথমে তিনি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার একটি বেসরকারি কলেজের প্রভাষক হিসেবে যোগ দেন। শিক্ষকতার পাশাপাশি সাংগঠনিক নানা কর্মকা’ণ্ডে নিজেকে সম্পৃক্ত করেন। বর্তমানে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান অঙ্কুর-অন্বেষা বিদ্যাপীঠের ভাইস প্রিন্সিপাল হিসেবে নিযু’ক্ত তৃপ্তি। বিসিএস শিক্ষকতা ও সাংগঠনিক

২৩ বছরে ১১ শিশুর মা, নিতে চান ১০০ সন্তান! ক্রিস্টিনার

কর্মকা’ণ্ডের ফাঁকে নিজের লক্ষ্যে পৌঁছানোর জন্য বিসিএস পরীক্ষার প্রস্তুতি নিতে থাকেন তিনি। তৃপ্তি ৩৪, ৩৫, ৩৬ ও ৩৭তম বিসিএসে অংশ নিয়ে অকৃতকার্য হন। মন খা’রাপ হলেও হাল ছাড়েননি, মনোবল দৃঢ় রেখে চেষ্টা চালিয়ে গেছেন তৃপ্তি। দিনে কর্মব্যস্ত সময় পার করা তৃপ্তি বিসিএসের পড়াশোনা করেছেন মধ্যরাত থেকে ভোর রাত পর্যন্ত। পরীক্ষার কয়েক মাস আগে থেকে রাত জেগে পড়াশোনা করেছেন তৃপ্তি। কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছতে পেরে আত্মতৃপ্ত তৃপ্তি বলেন, মে’য়েদের পদে পদে বৈষম্যের শিকার হতে হয়। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ে বিসিএস ক্যাডার হওয়ার ইচ্ছা পোষণ করার কারণে আমা’র অনেক কাছের

৩৭ বছরের নারীকে বিয়ে করলেন ৯০ বছর বয়সী আইনজীবী

মানুষও আমাকে নিয়ে উপহাস করেছেন। কিন্তু আমা’র পরিবার বরবারই সাহস জুগিয়ে গেছে। চারবার বিসিএস পরীক্ষায় অংশ নিয়ে অকৃতকার্য হয়েছি। কোনোবারই প্রিলিতে পাস করতে পারিনি। বিসিএসের প্রথম ধাপ পার হতে না পারায় খুব খা’রাপ লাগতো। কিন্তু মনে জেদ ছিল আমাকে লক্ষ্যে পৌঁছাতে হবে। তৃপ্তি আরও বলেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কৃতী সন্তান মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদফতরের সাবেক মহাপরিচালক ফাহিমা খাতুনকে দেখে শিক্ষকতা পেশার প্রতি আমা’র ঝোঁক বেড়ে যায়। সেজন্য বিসিএস ক্যাডার হওয়ার জন্য মনে জেদ চেপে বসে। আমি অন্য ছে’লে-মে’য়েদের মতো ভালো কোনো পাবলিক

বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে পারিনি, কোচিং করার সুযোগও পাইনি। বিসিএসের জন্য যা কিছু করেছি, সবকিছুই নিজে নিজে। মানুষের নেতিবাচক কথাগুলো আমি সবসময়ই অনুপ্রেরণা হিসেবে নিয়েছি। তবে আমা’র শিক্ষক ওসমান গণি সজীব আমাকে অনেক সহযোগিতা করেছেন। তিনি বলেন, ৩৮তম বিসিএস পরীক্ষা দিয়েছি ২০১৭ সালের ডিসেম্বরে। পরীক্ষার আগে কয়েক মাস সারারাত পড়াশোনা করেছি। দিনে সময় পেতাম না বলে রাত জেগে পড়েছি। আমা’র বাবা-মা চেয়েছেন প্রশাসন ক্যাডার হতে।

‘এত ভিড়ের পৃথিবীতে নতুন জন্ম কাঙ্ক্ষিত নয়’, নাম না করে অন্তঃসত্ত্বা পরীমণিকে তোপ তসলিমার

কিন্তু আমা’র ধ্যান-জ্ঞান ছিল শিক্ষা ক্যাডারে। যদিও বাবা-মায়ের কথা রাখতে গিয়ে ফরমে প্রথম পছন্দ হিসেবে প্রশাসন ক্যাডার দিয়ে দ্বিতীয় পছন্দ দিয়েছিলাম শিক্ষা ক্যাডার। তৃপ্তি বলেন, আমি মনে করি প্রশাসনসহ অন্য ক্যাডারের চাকুরেরা কাজের বাইরে কিছুই করতে পারেন না। কিন্তু একজন শিক্ষক তার মনের সৃজনশীলতাকে দেশ ও জাতির কল্যাণে কাজে লাগাতে পারেন। অনেক মানুষের মনে জায়গা করে নিতে পারেন। মানুষ গড়ার কারিগরের এমন পেশায় যু’ক্ত হতে পেরে আমি গর্বিত। তৃপ্তির বাবা মো. আলমগীর ভূঁইয়া বলেন, পড়ালেখার প্রতি প্রবল আগ্রহ ছিল তৃপ্তির। সারারাত জেগে পড়াশোনা করেছে।

অবশেষে ক’ষ্টের ফল পেয়েছে আমা’র মে’য়ে। এজন্য সৃষ্টিক’র্তার কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। তৃপ্তির শিক্ষক ওসমান গণি সজীব বলেন, ভালো’ভাবে পড়াশোনা করলে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাস করা শিক্ষার্থীরাও বিসিএস ক্যাডার হতে পারে। প্রতিবারই জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক শিক্ষার্থী বিসিএসে উত্তীর্ণ হয়। তৃপ্তি ছা’ত্রী হিসেবে খুবই মেধাবী। সাংগঠনিক কর্মকা’ণ্ডে সমানভাবে পারদর্শী। তার এ সাফল্যে শিক্ষক হিসেবে আমি খুবই আনন্দিত।

Leave a Reply