Deprecated: Function WP_Dependencies->add_data() was called with an argument that is deprecated since version 6.9.0! IE conditional comments are ignored by all supported browsers. in /home/amadersa/public_html/wp-includes/functions.php on line 6131
জন্মতারিখের প্রমাণ ছাড়া জন্মনিবন্ধন করা যাবে না

জন্মতারিখের প্রমাণ ছাড়া জন্মনিবন্ধন করা যাবে না

জন্মনিবন্ধন নিয়ে সাধারণ মানুষের ভোগান্তি দীর্ঘদিনের। আশার খবর হলো- জন্মনিবন্ধনের ঝামেলা কমাতে গত ১ আগস্ট থেকে নতুন নির্দেশনা জারি করেছে রেজিস্ট্রার জেনারেলের কার্যালয়। এখন থেকে জন্মতারিখের যে কোনো একটি প্রমাণপত্র থাকলেই জন্মনিবন্ধন করা যাবে। তবে সংশ্নিষ্ট রেজিস্ট্রার জেনারেলের কার্যালয় জন্মনিবন্ধনের নতুন প্রক্রিয়াকে ‘সহজ’ দাবি করলেও আদতে ভোগান্তি রয়েই গেছে।

গত বছরের ১ জানুয়ারি থেকে জন্মনিবন্ধনের ক্ষেত্রে বেশ কিছু বিধিনিষেধ আরোপ করেছিল সংশ্নিষ্ট কর্তৃপক্ষ। যেমন- সন্তানের জন্মনিবন্ধন করতে আগে মা-বাবার জন্মনিবন্ধন সনদ নিতে হতো। ওই সনদ নিতে গিয়ে স্থায়ী ও বর্তমান ঠিকানার প্রমাণপত্রসহ সংযুক্ত করতে হতো আরও অনেক কিছু। বেশি বিপাকে পড়ত মা-বাবা বিচ্ছেদ হওয়া সন্তানরা। এসব প্রমাণপত্র জোগাড় করতে না পারায় তাদের জন্মনিবন্ধন করাটা কঠিন হয়ে উঠেছিল। এসব শর্তের কারণে জন্মনিবন্ধন কার্যালয়গুলোতে গড়ে ওঠে অসাধু চক্র। উৎকোচ ছাড়া নিবন্ধন করা যাচ্ছিল না।

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ৮১তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ

অবশ্য রেজিস্ট্রার জেনারেল মির্জা তারেক হিকমত বলেন, বিভিন্ন শর্তের কারণে জন্মনিবন্ধন করতে গিয়ে সাধারণ মানুষকে ভোগান্তিতে পড়তে হতো। এসব শর্ত দেওয়ার উদ্দেশ্য ছিল দেশের সব মানুষের জন্য একটি শক্তিশালী ডাটাবেজ তৈরি করা। সেটা করতে গিয়ে জন্মনিবন্ধন নিয়ে একটি দুর্নীতিবাজ চক্রও গড়ে ওঠে। এখন পদ্ধতিটা এমন করা হয়েছে, যে কেউ চাইলে সব তথ্য জন্মনিবন্ধনের সময় দিয়ে রাখতে পারবে। এতে করে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য সুবিধা হবে। কেউ পুরোটা দিতে না চাইলে জন্মের একটি মাত্র প্রমাণপত্র যেমন টিকার কাগজ বা হাসপাতালের ছাড়পত্র দিয়েও সন্তানের জন্মসনদ নিতে পারবেন।

আপনার এলাকায় কখন হবে লোডশেডিং, যেভাবে জানবেন

যেভাবে নিবন্ধন: রেজিস্ট্রার জেনারেলের কার্যালয়ের ওয়েবসাইটে (http://www.orgbdr. gov.bd/) ঢুকে ‘আমাদের সেবা’ আইকনে ক্লিক করলেই প্রথমে ‘জন্মনিবন্ধন’ নামের একটি সেবা ট্যাব আসবে। সেটাতে ক্লিক করলেই আসবে একটি আবেদন ফরম। সেটা পূরণ করে ডাউনলোড করে প্রিন্ট দিয়ে সিটি করপোরেশনের আঞ্চলিক কার্যালয়, পৌরসভা বা ইউনিয়ন পরিষদের সংশ্নিষ্ট শাখায় গেলেই যে কেউ জন্মনিবন্ধন সনদ পেয়ে যাবেন। তবে এ ক্ষেত্রে জন্মের উপযুক্ত প্রমাণপত্র উপস্থাপন করতে হবে।

 

প্রচারণা নেই: সন্তান পৃথিবীতে আসার পর তার বাস্তব জীবন শুরু হয় জন্মনিবন্ধনের মাধ্যমে। জন্মনিবন্ধনের গুরুত্ব দেশবাসীকে জানাতে কখনোই প্রচারণা চালায়নি রেজিস্ট্রার জেনারেলের কার্যালয়। গত ১ আগস্ট থেকে নতুন নির্দেশনা জারি হলেও গণমাধ্যমে সেটার কোনো বিজ্ঞপ্তি দেয়নি প্রতিষ্ঠানটি। নিজস্ব ওয়েবসাইটে একটি বিজ্ঞপ্তি দিয়েই দায় সেরেছে কর্তৃপক্ষ।

ফলে স্থানীয় সরকারের যেসব কর্মী নিবন্ধন কাজের সঙ্গে যুক্ত তাঁরাও অনেকে জানেন না নতুন এই নির্দেশনা। এক সপ্তাহ পেরিয়ে গেলেও যাঁরাই জন্মনিবন্ধনের জন্য সিটি করপোরেশন বা পৌরসভার সংশ্নিষ্ট দপ্তরে যাচ্ছেন তাঁদের কাছেও আগের মতোই পুরোনো কাগজপত্র দাবি করছেন নিবন্ধনকর্মীরা। এ ব্যাপারে রেজিস্ট্রার জেনারেল মির্জা তারেক হিকমত জানান, তাঁদের জনবল সংকট। প্রধান কার্যালয়ে বড়জোর ২০ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী আছেন। তাঁদের অনেকেই আবার কাজ বোঝেন না।

 

মা-বাবা বিচ্ছেদ হওয়া সন্তানরা পাবেন ছাড়: নতুন নিয়মে মা-বাবা যে কারোর জন্মনিবন্ধন থাকলে সন্তানের জন্মনিবন্ধন করা যাবে। সে ক্ষেত্রে শুধু বর্তমান ও স্থায়ী ঠিকানা এবং সন্তানের জন্মের একটি প্রমাণপত্র- যেমন টিকার কার্ড বা হাসপাতালের ছাড়পত্রের কপি দিতে হবে। মির্জা তারেক হিকমত বলেন, অন্তত একটি প্রমাণপত্র না থাকলে হয় না। তার পরও বিশেষ ক্ষেত্রে এ ব্যাপারেও ছাড় দেওয়ার সুযোগ রাখা হয়েছে। সে ক্ষেত্রে স্থানীয় সরকারের যিনি জন্মনিবন্ধনের ফরম পূরণ করেন তাঁকে বিষয়টি জানাতে হবে। তিনি তাঁর ইউজার আইডি দিয়ে ওয়েবসাইটে আবেদনপত্র পূরণ করে দেবেন।

দুর্নীতি বন্ধে উদ্যোগ নেই: জন্মনিবন্ধন সনদ প্রক্রিয়া সহজ করার নির্দেশনা জারির পরও দুর্নীতি খুব একটা বন্ধ হবে বলে মনে করছে না খোদ রেজিস্ট্রার জেনারেলের কার্যালয়। কারণ হিসেবে মির্জা তারেক হিকমত বলেন, ওয়েবসাইটে ঢুকে নিজে না করে দালালের মাধ্যমে আবেদন করাটা মানুষের অভ্যাসে পরিণত হয়েছে। অথচ ওয়েবাসাইটে ঢুকে আবেদন করার সময় যখন যে প্রমাণপত্র চায়, সেটা অ্যাটাচ (যুক্ত) করে দিলেই কিন্তু আরেকজনের কাছে ফরম পূরণের জন্য যেতে হয় না।

ওয়েবসাইটের দুর্বলতা: অসংখ্য মানুষের অভিযোগ, রেজিস্ট্রার জেনারেলের কার্যালয়ের ওয়েবসাইটে ঢুকে কেউ জন্মনিবন্ধন লিঙ্কে ঢুকতে গেলেই তাঁরা ব্যর্থ হচ্ছেন। এমনকি সংশ্নিষ্ট কার্যালয়ে গেলেও তাঁদের বলা হচ্ছে সার্ভার ডাউন। সাইটে ঢুকলে ইংরেজিতে লেখা আসছে, ‘দিস সাইট ক্যান নট বি রিচড’। এরপর বলা হচ্ছে ‘রিলোড’। রিলোড বাটনে ক্লিকের পরও কাঙ্ক্ষিত আবেদন ফরম পাওয়া যাচ্ছে না। এ প্রতিবেদকও ওয়েবসাইটে ঢুকে বিভিন্ন সময় চেষ্টা করেও এ চিত্র পান। এ ব্যাপারে মির্জা তারেক হিকমত বলেন, সার্ভারটিতে একসঙ্গে বেশি মানুষ হিট করলেই সমস্যা হয়। এটা আরও আধুনিক করার চেষ্টা চলছে।

Leave a Reply