Biography – Pinaki Bhattacharya – পিনাকী ভট্টাচার্য এর জীবনী A-Z বিস্তারিত

বিভিন্ন পত্রিকার রেফারেন্স সহ পিনেকি ভট্টাচার্য সম্পর্কে বিস্তারিত তুলে ধরা হলো

PINAKI BHATTACHARYA

বাংলাদেশ বিরোধী কর্মকাণ্ডের অভিযোগে প্যারিসে পিনাকী ভট্টাচার্যের বিরুদ্ধে মামলা

বাংলাদেশ বিরোধী কর্মকাণ্ডে লিপ্ত থাকার অভিযোগে লেখক ও ফেসবুক অ্যাক্টিভিস্ট পিনাকী ভট্টাচার্যের বিরুদ্ধে ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসে মামলা করা হয়েছে।

শুক্রবার স্থানীয় সময় বিকেল ৪টায় সর্ব ইউরোপিয়ান আওয়ামী লীগের কয়েকজন নেতা ফরাসি পুলিশের কাছে এই মামলা করেন।

এদের মধ্যে রয়েছেন সর্ব ইউরোপিয়ান আওয়ামী লীগের সভাপতি অস্ট্রিয়া প্রবাসী মানবাধিকারকর্মী, লেখক ও সাংবাদিক এম. নজরুল ইসলাম, সর্ব ইউরোপিয়ান আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মজিবুর রহমান, ফ্রান্স আওয়ামী লীগের সভাপতি এম এ কাশেম, সাধারণ সম্পাদক দিলওয়ার হোসেন কয়েছ ও সহ-সভাপতি মনজুরুল হাসান সেলিম।

প্যারিসের সর্ব ইউরোপিয়ান আওয়ামী লীগের সভাপতি এম. নজরুল ইসলাম জানিয়েছেন, ‘পিনাকী ভট্টাচার্য বাংলাদেশ বিরোধী অপতৎপরতায় লিপ্ত। এই তথাকথিত লেখক ফ্রান্সে বসে বাংলাদেশ, বাংলাদেশ সরকার, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও বঙ্গবন্ধু পরিবারকে নিয়ে বিভ্রান্তিকর মিথ্যা তথ্য দিয়ে মানুষকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছেন। তিনি বিভিন্ন অনলাইন পোর্টাল, ফেসবুক, ইউটিউব চ্যানেল, টুইটারসহ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এইসব অপপ্রচার অব্যাহত রেখেছেন।’

তিনি আরো বলেন, ‘একটি ঘৃণ্য চক্র অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির অপচেষ্টা করছে। পিনাকী ভট্টাচার্য এই চক্রের অন্যতম সদস্য। যুক্তরাজ্যের লন্ডনে বিএনপি নেতা তারেক রহমান এই চক্রের প্রধান। তাদের পেছনে আছে একাত্তরের পরাজিত শক্তি ও তাদের দোসররা। এই অপপ্রচারের জন্য তারা বিপুল পরিমাণ টাকা ঢালছে। আমরা অভিযোগ দায়ের করেছি এই জন্য যে, এ ধরণের অপপ্রচার আর চলতে দেয়া যায় না। আইনগতভাবেই এটা বন্ধ হওয়া দরকার। ফ্রান্সের মাটিতে বসে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে, এটা আমরা এই দেশের আইনের দৃষ্টিতে এনেছি।’

সূত্র : ইউএনবি

PINAKI BHATTACHARYA

Paris-based Bangladeshi citizen Pinaki Bhattacharya is a trained medical doctor. Born in 1967, he is the eldest son of Shyamal Bhattacharya, a cultural personality and former eminent teacher of Bogra District School. While Pinaki does not happen to practise medicine now, he runs a pharmaceutical business. Pinaki Bhattacharya is Paris-based Bangladeshi blogger and social activist. He is also an adjunct faculty member at American International University Bangladesh (AIUB). He teaches environmental toxicology there.

সুকুমার রায় জীবনী – Sukumar Roy Biography in Bengali

In his early days, Pinaki was involved in Leftist student movement. He has authored 18 books on Bangladesh’s political history and other topics. Now, he is a popular online activist. His Facebook profile is followed by over 200,000 people. He is also active on Twitter. His online write-ups on Bangladesh’s political history, society, current politics, persecution of the Rohingya in Myanmar and other related human rights-related issues in Bangladesh and neighboring countries are popular among students, fellow activists and others.

In 2018, Bangladesh launched an anti-drug campaign. The security forces shot dead the suspected drug traders in controversial “cross-fires”. Pinaki criticised the extrajudicial killing of the suspects during the operations. During the 2018 quota reform movement by senior students and the mass protests by school children demanding improved road safety, Pinaki wrote many Facebook posts and tweets some of which highlighted the reports of violent attacks on the non-violent protesters by pro-government groups.

Pinaki has long used Facebook, Twitter, and his blogs to criticize the current regime of Sheikh Hasina for its alleged corruption and human rights violations, including enforced disappearances and extrajudicial killings. His posts and tweets are often critical of the government in Bangladesh and the ruling party of Awami League. He received many online death threats.

On August 5, 2018, when the students were in demonstration demanding safe road in Bangladesh and internationally acclaimed photographer Shahidul Alam was arrested by police, military intelligence officials called up Pinaki and asked him to come down to their headquarters in Dhaka. The officials did not explain why they wanted to meet him. There are instances in which military intelligence officials in Bangladesh sent for many people known for their dissenting views. The intelligence officials threatened them with dire consequences if they did not stop criticising the government. Some even disappeared after they met the intelligence officials.

Pinaki did not go to meet the military intelligence officials that day and went into hiding. The intelligence officials raided the residence and office of Pinaki in Dhaka several times, apparently looking for him. They even placed his residence under round-the-clock surveillance. While he was in hiding in Bangladesh, the authorities placed a ban on his departure from the country. However, with the help of some friends, Pinaki managed to sneak out of the country and reached Bangkok in January 2019.

Two months later, he reached France where he has got a political asylum now. Based in Paris, Pinaki is pursuing higher studies at Sorbonne University.

Source: pinakibhattacharya

PINAKI BHATTACHARYA
pinaki
Pinaki Bhattacharya,Dr. Pinaki Bhattacharya

PINAKI BHATTACHARYA

Pinaki Bhattacharya,Dr. Pinaki Bhattacharyaপিনাকী ভট্টাচার্যের

PINAKI BHATTACHARYA

PINAKI BHATTACHARYA

দেশবিরোধী ষড়যন্ত্রে মত্ত পিনাকী ভট্টাচার্য

বিদেশে পালিয়ে আছেন পিনাকী ভট্টাচার্য। সেখানে বসেই তিনি বাংলাদেশবিরোধী ষড়যন্ত্র করছেন। কিন্তু কী এমন হয়েছে যে, তিনি বিদেশে বসেই দেশের বিরুদ্ধে উঠেপড়ে লেগেছেন?

ঔষধ শিল্প জগতে আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত এক জালিয়াতি করেছেন পিনাকী ও তার পপুলার ফার্মাসিটিক্যালস। ২০০৮ সালে পিনাকী ভট্টাচার্য পপুলারের মাধ্যমে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর এবং ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তরের কিছু দূর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের সাথে সিন্ডিকেট করে কয়েক কোটি টাকা লুটপাট করে।

লজ্জার ব্যাপার এই যে, পিনাকী ভট্টাচার্য ময়দা দিয়ে কালাজ্বরের ক্যাপসুল বানিয়ে কোটিপতি হন। সেই পিনাকী এখন সোশ্যাল মিডিয়ায় এসে নৈতিকতার শিক্ষা দেন।

ভারতের সেরা 30টি চোখের হাসপাতাল

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, অনলাইনে সাধু সেজে জনগণকে নৈতিকতার সবক দেওয়া এই পিনাকী ভট্টাচার্য একজন চিহ্নিত দুর্নীতিবাজ এবং বাংলাদেশের ওষুধ শিল্প জগতে আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত এক জালিয়াত।

সূত্র জানায়, দেশত্যাগের আগে পিনাকী পপুলারের চিফ অপারেটিং অফিসার হিসেবে কাজ করতেন পপুলার ফার্মাসিটিক্যালসে। ২০০৮ সালে ডা. পিনাকী ভট্টাচার্য পপুলারের মাধ্যমে জীবন রক্ষাকারী ওষুধ জালিয়াতি করে কয়েক কোটি টাকা লুটপাট করে। তার এই জালিয়াতির সাথে যুক্ত ছিল বিএনপি-জামায়াতের আমলে নিয়োগ পাওয়া স্বাস্থ্য অধিদপ্তর এবং ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তরের কিছু দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা। পিনাকীর এই অপকর্ম ব্রিটেনের টেলিগ্রাফ পত্রিকায়ও প্রকাশিত হয়েছিল।

এরই মধ্যে এই ঘটনা দেশবাসীসহ বিশ্ববাসীও জেনেছে। কিন্তু দুর্নীতির অভিযোগে দেশ থেকে পালিয়ে যাওয়া ব্যক্তির কাছ থেকে নৈতিক শিক্ষার ব্যাপারটা সুখকর নয়। কেননা এ ধরনের ব্যক্তির কাছ থেকে ভালো শিক্ষার চেয়ে কুশিক্ষাটাই বেশি পাবে সাধারণ মানুষ।

বিশিষ্টজনরা এধরনের অসাধু ব্যক্তিদের পরামর্শ ও বুদ্ধি নেয়া থেকে বিরত থাকতে বলেছেন। কেননা এতে সমাজে লাভের চেয়ে ক্ষতিই বেশি হবে। এধরনের অনৈতিক মানুষদের থেকে দূরে থাকাটাই বুদ্ধিমানের কাজ।

 

Hotel List in Khulna, bangladesh

বর্তমানে বাংলাদেশ থেকে নির্বাসিত আলোচিত কয়েকজনের মধ্যে পিনাকী ভট্টাচার্য একজন। আজকে তার এই পোস্টে তিনি দাবি করেছে, বাংলাদেশে ডিজিটাল সিকিউরিটি আইনের ভ্রুণ তৈরির পেছনে সামুরও অবদান ছিল। আইন তৈরির উদ্দেশ্য ছিল জামাতে ইসলামির টুঁটি চেপে ধরা ও মুক্তিযুদ্ধ ও যুদ্ধাপরাধের বিচারের বিরুদ্ধে বিরুপ সমালোচনা প্রতিহত করা।
আমি একজন নতুন ব্লগার হিসেবে প্রবীনদের কাছে এর সম্পর্কে জানতে চাচ্ছি যে এই আইন তৈরির পেছনে সামুর পক্ষ থেকে কোন ধরনের মতামত ছিল ও ডয়েচে ভেলের সাথে সামুর সম্পর্ক কি?
পিনাকী ভট্টাচার্য এর ফেসবুক পোস্ট হুবুহু
ব্রাত্য রাইসুর সুবাদে জানতে পারলাম ডিজিটাল সিকিউরিটি আইনের ভ্রুণ তৈরি করেছিলেন বাংলাদেশের বাম মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তির ব্লগারেরা আর মুরুব্বি হিসেবে ছিলেন সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী, আনিসুজ্জামান, মিডিয়া থেকে ছিলো প্রিয় ডট কমের জাকারিয়া স্বপন, প্রথম আলো ও সামহোয়ার ইন ব্লগ। এই সামহোয়্যারইন ব্লগকে পৃষ্ঠপোষকতা দিতো ডয়েচে ভেলে। সময়টা ২০১১ সাল। আল্লাহ বাচাইছে কারণ আমি তখনো এই ব্লগের জগতে ঢুকি নাই।
এখন প্রশ্ন হচ্ছে কেন তারা এই ধরণের একটা আইন করার ক্ষেত্রে উদ্যোগী ভুমিকা নিলো? তাদের যুক্তি ছিলো মুক্তিযুদ্ধ ও যুদ্ধাপরাধের বিচারের বিরুদ্ধে বিরুপ সমালোচনা প্রতিহত করা।
তাইলে উনারা এখন কান্দেন কেন? এই আদিপাপের দায় কেন তারা নেন না? কেন বলেন না এই কাম তো আমরাই আগ বাড়ায়ে করতে গেছিলাম জামায়াতরে শায়েস্তা করার (পড়ুন ইসলাম কুপানির) জন্য।
এখন প্রশ্ন হইতেছে, ইসলামকে কেন বাঙ্গু পোগোতিশিলদের কুপাইতে হয়? কারণ একটাই, প্রতিহিংসা।
প্রশ্ন করতে পারেন, কোন প্রতিহিংসা? মুসলমান কৃষকের কাছে জমিদারি হারানোর বেদনার প্রতিহিংসা। উঠতি ক্যাপিটালিজমের কাছে সামন্তবাদের পরাস্ত হওয়ার প্রতিহিংসা থেকেই দলে দলে জমিদার নন্দনেরা কমিউনিস্ট আন্দোলনে যুক্ত হয়। কিছু ব্যতিক্রম বাদ দিলে বেশীরভাগ জমিদার নন্দনদের মুলত একটাই কাজ ছিলো পোগতিশিলতার নামে ইসলাম বিদ্বেষ ফেরি করা। তাই কমিউনিস্ট আন্দোলনের মুল ভাব চিহ্ন হয়ে দাঁড়ায় নাস্তিকতার নামে দগদগে ইসলাম বিদ্বেষ।
একসময় কমিউনিজমের নৌকায় চাইপ্যা ইসলাম কুপাইছে, তারপরে সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে অনন্ত যুদ্ধের নৌকায় চাইপ্যা ইসলাম কুপাইছে, এখন যুদ্ধাপরাধের নৌকায় চাইপ্যা ইসলাম কুপায়। কমিউনিস্ট নামধারী জমিদার নন্দনদের অনন্ত জিঘাংসার চরিত্র বুঝতে না পারলে বাংলাদেশের রাজনৈতিক সংকট আপনি বুঝতে পারবেন না।
বাম রাজনীতির বয়ানগুলো গড়েই উঠেছে ইসলাম কুপানির বদ মতলব থেকে। খেয়াল করে দেখেন, রাজাকারের প্রতিচ্ছবির গায়ে ইসলামী পোষাক কারা পরিয়েছিলো? এখন সেই বাম বয়ানগুলোকে আপনি পরাস্ত করতে পারছেন কিনা তার উপরেই নির্ভর করবে আপনি আগামীর বাংলাদেশ গড়তে পারবেন কিনা? বাম বয়ানকে পরাস্ত করতে পারার ব্যর্থতাই আমাদের দুর্বলতা। এই বয়ানকে পরাস্ত করার লোক বাংলাদেশে বেশী নাই। তারা মনে করেছিলো আমি সেই কাজটা করছি নিষ্ঠার সাথেই, তাই আমাকে দেশ ছাড়া করেছে তারা। তাড়া করেছে ডিজিএফআই, কিন্তু গ্রাউন্ড তৈরি করেছে বামেরা।
একজন বামকে তখুনি বিশ্বাস করবেন, যখন সে তার ব্যক্তিগত স্বাচ্ছন্দ্যকে বলি দিয়ে লড়াইয়ের কাতারে দাঁড়িয়ে হাসিমুখে ভয়াবহ জুলুমের শিকার হচ্ছে। জুলুম হচ্ছে সেই কষ্টিপাথর যা দিয়ে ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে নিজের সততার পরীক্ষা দিতে হবে বামেদের। সেই বামকে ফ্যাসিবাদ শত্রু গণ্য করছে কিনা সেটাই তার সততার তার লড়াইয়ের আন্তরিকতার প্রমাণ। প্রমাণ নিয়ে তারপরে গ্রহণ করেন, তার আগে নয়।

PINAKI BHATTACHARYA

পিনাকী ভট্টাচার্য wikipedia, পিনাকী ভট্টাচার্য ধর্ম, পিনাকী ভট্টাচার্যের স্ত্রী, পিনাকী ভট্টাচার্য রকমারি, পিনাকী ভট্টাচার্য জন্ম, পিনাকী ভট্টাচার্য কি নাস্তিক, পিনাকী ভট্টাচার্য এর ধর্ম ,পিনাকী ভট্টাচার্য বয়স,Pinaki Bhattacharya,Dr. Pinaki Bhattacharya,Dr Pinaki Bhattacharya,‪Pinaki Bhattacharya, PhD,‪Pinaki Bhattacharya, PhD,Dr Pinaki Bhattacharya

 

তাঁর স্ত্রী সুকৃতি ভট্টাচার্য পেশায় গৃহিণী। দুই ছেলের মধ্যে লেখক পিনাকী ভট্টাচার্য বর্তমানে ফ্রান্সের প্যারিসে রাজনৈতিক আশ্রয়ে রয়েছেন। ছোট ছেলে অভ্র ভট্টাচার্য সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগে (সিপিডি) কর্মরত।

 

ফেসবুক এ্যাকটিভিস্ট পিনাকী ভট্টাচার্যের পাঁচ দিন ধরে খোঁজ নেই

বাংলাদেশে একজন লেখক এবং ফেসবুক এ্যাকটিভিস্ট পিনাকী ভট্টাচার্যের গত ৬ দিন ধরে কোন খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না, এবং তার পিতা বলছেন, একটি গোয়েন্দা সংস্থা তাকে ধরে নিয়ে যেতে পারে এই ভয়ে তিনি হয়তো আত্মগোপন করে আছেন।

পিনাকী ভট্টাচার্যের বাবা শ্যামল ভট্টাচার্য উত্তরাঞ্চলীয় বগুড়া শহরের একজন সাবেক শিক্ষক এবং সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব।

বিবিসি বাংলাকে টেলিফোনে তিনি বলেন, গত ৫ই আগস্ট তারা সবাই মিলে একটি পারিবারিক অনুষ্ঠানে নেত্রকোণা গিয়েছিলেন। সেখান থেকে ফেরার পর দিন থেকেই তার সাথে কোন যোগাযোগ করা যাচ্ছে না।

তিনি জানান, পিনাকী সম্প্রতি নিজেই ফেসবুকে এক পোস্টে লিখেছেন যে পরদিন তিনি অফিসে থাকার সময় বাংলাদেশের সামরিক গোয়েন্দা সংস্থা ডিজিএফআই-এর কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে একজন তাকে ফোন করেন।

“তাকে বলা হয়, আপনি আমাদের এখানে আসুন, আপনার সাথে কিছু কথা আছে। পিনাকী জবাব দেয়: আপনারাই বরং আমার অফিসে চলে আসুন, আমি খালি আছি” – জানান মি. ভট্টাচার্য।

“এর পর তারা আসার আগেই পিনাকী অফিস থেকে নেমে বেরিয়ে যায় এবং তার পর থেকে তার কোন সন্ধান পাওয়া যাচ্ছে না। সে আর বাড়ি ফেরে নি।” – বলেন তিনি।

“এর পর আমি আতঙ্কিত হয়ে দৈনিক প্রথম আলোতে আমি একটি চিঠি লিখি, তার সন্ধান এবং নিরাপত্তার আবেদন জানিয়ে প্রধানমন্ত্রীর কাছে অনুরোধ করি।” মি. ভট্টাচার্যের এ আবেদনের খবর রবিবার দৈনিক পত্রিকাটির অনলাইন সংস্করণে প্রকাশিত হয়েছে।

পিনাকী ভট্টাচার্যে পরিবারের অন্য সদস্যরা বলছেন, ৬ই আগস্ট বিকেলে সামরিক গোয়েন্দা বাহিনীর পরিচয় দানকারী দু’জন লোক পিনাকীর কর্মস্থল একটি ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানির অফিস ও বাসায় যান এবং তিনি কোথায় গেছেন তা জানতে চান।

নিখোঁজ হবার প্রায় ৫ দিন পর শনিবার ফেসবুকে পিনাকী ভট্টাচার্য একটি স্ট্যাটাস দেন।

এতে তিনি তার পিতার বিবৃতির উল্লেখ করে বলেন, এতে তার ‘প্রকৃত অবস্থা বিধৃত হয়েছে।’ তবে তিনি ‘এখনো নিরাপদে এবং সুস্থ আছেন’ বলে জানান।

ফেসবুকের ঐ পোস্টে পিনাকী ভট্টচার্য আরো লেখেন – “যারা আদালতের নির্দেশ ছাড়া, ওয়ারেন্ট ছাড়া আমাকে তাদের অন্ধকার অফিসে ঢুকিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করতে চান। ধরে নিয়ে যাবার জন্য আমার কর্মস্থলে আর বাসায় খোঁজ করতে আসেন। যারা হয়তো আমাকে গুম করে ফেলতে চান, …তারা মনে রাখবেন আমারও সন্তান আছে।”

তিনি বলেন, “আমাকে কেন ডি.জি.এফ.আই খুঁজবে? ডি.জি.এফ.আই-এর কাজ কি? যে ভদ্রলোক সেনাবাহিনীর মেজর পরিচয়ে ফোন করে তাদের অফিসে যাবার জন্য আমাকে ডেকেছেন, তার কথোপকথনের অডিও রেকর্ড আমার কাছে আছে। অভিন্ন মেজরের পরিচয়েই আমার বাসায় এবং কাজের জায়গায় আমার খোঁজে যাওয়া হয়েছিল।”

এ ব্যাপারে বিবিসি বাংলার পক্ষ থেকে আন্ত:বাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর বা আইএসপিআরের সাথে যোগাযোগ করা হলে তাৎক্ষণিক কোন প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায় নি।

তার পিতা শ্যামল ভট্টাচার্য বিবিসি বাংলাকে বলেন, এসব স্ট্যাটাস দেখে তিনি অন্তত এতটুকু নিশ্চিত হয়েছেন যে তার ছেলেকে কেউ ধরে নিয়ে যায় নি, তিনি আত্মগোপন করে আছেন।

তিনি আরো বলেন, সম্ভবত কাউকে ফোন করলেই তার অবস্থান জেনে ফেলবে এ ভয়েই তিনি কোথাও ফোন করছেন না, এমন কি তার স্ত্রীকেও তিনি ফোন করেন নি।

পিনাকী ভট্টাচার্য একাধিক বইয়ের লেখক, এবং ফেসবুকে একজন সক্রিয় এ্যাকটিভিস্ট – সমকালীন রাজনীতি ও সমাজ বিষয়ে যার বিভিন্ন মন্তব্য বেশ ব্যাপক পরিচিতি পেয়েছে।

সম্প্রতি নিরাপদ সড়কের দাবিতে বাংলাদেশের স্কুলকলেজের ছাত্রছাত্রীদের কয়েকদিনব্যাপী বিক্ষোভ নিয়েও তিনি একাধিক পোস্ট দিয়েছেন।

১২ অগাস্ট ২০১৮ source: bbc

ব্লগার ও অনলাইন এক্টিভিস্ট পিনাকী ভট্টাচার্য (Pinaki Bhattacharya) একজন চিকিৎসক। তার জন্ম ১৯৬৭ সালে। তিনি বগুড়া জেলা স্কুলের প্রাক্তন শিক্ষক এবং সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব শ্যামল ভট্টাচার্যের বড় ছেলে। চিকিৎসা বিদ্যায় পড়াশোনা করলেও বর্তমানে তিনি এ পেশায় যুক্ত নন। সফল উদ্যোক্তা ও ব্যবসায়ী হিসেবে পরিচালনা করছেন একটি ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানী। পিনাকী ভট্টাচার্য (Pinaki Bhattacharya) প্যারিসে বসবাসরত  একজন বাংলাদেশী ব্লগার এবং সোশ্যাল একটিভিস্ট হিসেবেই অধিক পরিচিত এবং সমাদৃত।

 

তিনি আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ-এর একজন এডজাংক্ট ফ্যাকাল্টি। সেখানে তিনি এনভারমেন্টাল টক্সিকোলজি পড়ান।

 

এক সময় বাম রাজনীতির সাথে জড়িত ছিলেন পিনাকী ভট্টাচার্য (Pinaki Bhattacharya)। বাংলাদেশের রাজনীতির ইতিহাস এবং অন্যান্য বিষয়ের উপর ১৮টি গ্রন্থ তিনি রচনা করেছেন । বর্তমানে তিনি একজন জনপ্রিয় অনলাইন একটিভিস্ট। ফেসবুকে তার দুই লক্ষেরও বেশি ফলোয়ার রয়েছে। টুইটারেও তিনি সক্রিয় আছেন। বাংলাদেশের ইতিহাস, সমাজ, চলমান রাজনীতি, মিয়ানমারের রোহিঙ্গা নিপীড়ন এবং বাংলাদেশসহ প্রতিবেশী দেশগুলোতে মানবাধিকার বিষয়ক তার অনলাইন লেখালেখি তরুণ ছাত্রসমাজ এবং অন্যান্যদের মাঝে সমাদৃত।

সন্তানকে এই ৭টি কথা প্রতিদিন একবার হলেও বলা উচিত

২০১৮ সালে বাংলাদেশে একটি মাদক বিরোধী অভিযান পরিচালিত হয়। এ অভিযানে সন্দেহভাজনদের বিচারবহির্ভূতভাবে হত্যা করা হয়। পিনাকী ভট্টাচার্য তীব্রভাবে এই বিচারবহির্ভূত হত্যার সমালোচনা করেন। সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদের আহূত কোটা সংস্কার আন্দোলন ও স্কুল ছাত্র-ছাত্রীদের নিরাপদ সড়ক আন্দোলনে দাবিতে পিনাকী ভট্টাচার্য ফেইসবুক এবং টুইটারেও ছিলেন সমান সোচ্চার। তার ফেসবুক এবং টুইটার পোস্টগুলোতে তৎকালীন আন্দোলনকারীদের উপর সরকারপন্থি গোষ্ঠীর আক্রমণের কথা স্পষ্ট করে তুলে ধরেন তিনি।

 

পিনাকী ভট্টাচার্য (Pinaki Bhattacharya) ফেসবুক, টুইটার এবং ব্লগের পোস্টগুলোতে বাংলাদেশে দীর্ঘদিন ধরে চলমান ক্ষমতাশীন সরকারের দুর্নীতি, মানবাধিকার লঙ্ঘন, অপহরণ এবং বিচারবহির্ভূত হত্যার সমালোচনা করে আসছেন। তাঁর পোস্ট এবং টুইটগুলি প্রায়শই বাংলাদেশের ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের সমালোচনা করে। অতি সাম্প্রতি তিনি অনলাইনে প্রাণনাশের হুমকির সম্মুখীন হয়েছেন একাধিকবার।

 

৫ আগস্ট ২০১৮। নিরাপদ সড়কের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন চলমান। শিক্ষার্থীদের নায্য আন্দোলন সমর্থন করায় আন্তর্জাতিকভাবে প্রশংসিত ফটোগ্রাফার শহিদুল আলমকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। ঠিক সেই সময়ে সামরিক গোয়েন্দা কর্মকর্তারা পিনাকীকে (Pinaki Bhattacharya) ঢাকায় তাদের সদর দপ্তরে ডেকে পাঠায়। কেন তাকে ডেকে পাঠানো হয়েছিল সেই বিষয়ে বিস্তারিত তারা কিছু বলেননি। নজির রয়েছে, সামরিক গোয়েন্দা কর্মকর্তারাবিরুদ্ধমত পোষণকারীদের দপ্তরে যাদের ডেকে পাঠায়, তারা সামরিক গোয়েন্দাদের সাথে দেখা করার পর তাদের  অনেককে আর খুঁজে পাওয়া যায়নি।

 

পরিস্থিতি বিবেচনায় গোয়েন্দা কর্মকর্তাদের সাথে দেখা করতে না গিয়ে আত্মগোপনে চলে যান পিনাকী। গোয়েন্দা কর্মকর্তারা একাধিকবার পিনাকীর বাসস্থান এবং অফিসে অভিযান চালিয়ে তাকে খুঁজেছিলেন। এমনকি তারা তাঁর বাসস্থানকে চব্বিশ ঘন্টা নজরদারির মধ্যে রাখেন।আত্মগোপনে থাকাকালীন কর্তৃপক্ষ তার দেশ ছাড়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে। এতে তাদের উদ্দেশ্য পরিস্কার হয়ে যায়। এসময় বন্ধুদের সহায়তায় দেশ ছাড়তে সমর্থ হন পিনাকী এবং ২০১৯-এর জানুয়ারীতে ব্যাংকক পৌঁছান। এর দু’মাস পরে তিনি ফ্রান্সে পৌঁছেন এবং বর্তমানে সেখানে তিনি এখন রাজনৈতিক আশ্রয়ে রয়েছেন । প্যারিসের সর্বোর্ণ ইউনিভার্সিটি তে এখন উচ্চতর পড়াশোনা করছেন তিনি।

পিনাকি ভট্টাচার্য এর
ইতিহাস জেনে নিন। কে এই পিনাকি ?
পিনাকীবাদ
লিখেছেন: পুলক ঘটক
আততায়ীর হাতে নিহত হওয়ার আগে গত ২৬ মার্চ ওয়াশিকুর বাবু লিখেছিলেন: “আজ বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবস। মোল্লা স্বাধীন, জঙ্গি স্বাধীন, ছাগু স্বাধীন, মুমিন স্বাধীন, দুর্নীতিবাজ স্বাধীন, রাজনৈতিক নেতা স্বাধীন, পাতি নেতা স্বাধীন, ধর্ষক স্বাধীন, সামরিক বাহিনী স্বাধীন, সুশীল সমাজ স্বাধীন, পিনাকী স্বাধীন, শফি হুজুর স্বাধীন, দলদাস স্বাধীন, গার্মেন্টস মালিক স্বাধীন, লঞ্চ মালিক স্বাধীন…
স্বাধীন নয় কৃষক-শ্রমিক,
স্বাধীন নয় কথিত সংখ্যালঘু-আদিবাসী,
স্বাধীন নয় মুক্তচিন্তার মানুষ,
স্বাধীন নয় মানুষ হতে চাওয়া মানুষগুলো…”
মৃত্যুর আগে “পিনাকী” নামে যে ব্যক্তিটির কথা ওয়াশিকুর উল্লেখ করে গিয়েছেন আজ তার কিছু কথা এখানে তুলে ধরব। তিনি ডাঃ পিনাকী ভট্টাচার্য্য (Pinaki Bhattacharya)। হত্যাকান্ডের পর দেশী বিদেশী অনেক মিডিয়ায় ওয়াশিকুরের লেখাটি উদ্ধৃত করা হয়েছে। কিন্তু পিনাকী ব্যক্তিটিকে চিহ্নিত করার উদ্যোগ নেয়া হয়নি।
ওয়াসিকুর বাবু তার জীবন দিয়ে প্রমাণ করে গেছেন, তিনি যা লিখেছিলেন তা সত্য। কথাগুলো লেখার মাত্র এক মাস ব্যবধানে ইসরামী জঙ্গীরা তার ঘারে ও মুখে চাপাতি দিয়ে কুপিয়ে মৃত্যু নিশ্চিত করে। অামরা যারা পিনাকীর সমালোচনা করছি তারা কেউ চিন্তার ক্ষেত্রে স্বাধীন নই। আমাদের ঘারের পেছনে পিনাকী বাহিনীর খর্গ ঝুলছে। কখন কার মাথা দেহ থেকে বিচ্ছিন্ন হবে বলতে পারি না। এই বাস্তবতায় স্বাধীন লেখক পিনাকীর প্রসঙ্গে লিখছি।
ডা: পিনাকী ইসলামী মৌলবাদের পক্ষে, মাদ্রাসা শিক্ষা বিশেষ করে কওমি মাদ্রাসার পক্ষে, সাম্প্রদায়িক মৌলবাদী দলগুলোর সাথে বাংলাদেশের বামপন্থী রাজনৈতিক দলগুলোর ঐক্য গড়ার পক্ষে। অনেক দিন থেকেই তিনি উগ্র সাম্প্রদায়িক চক্রকে সমর্থন দিয়ে যাচ্ছেন। বিতর্ক সৃষ্টির মাধ্যমে নিজের প্রচার বাড়ানো তার একটা কৌশল। ফেসবুকে তার ফ্রেন্ড ও ফলোয়ারদের ৯০ শতাংশ বিএনপি-জামাত-হেফাজত সমর্থক ও উগ্র মৌলবাদী। তার লেখায় যারা লাইক দেয় এবং মন্তব্য করে তাদের মধ্যে হাতে গোনা কয়েকজন চায়না বাম এবং বাকি সব উগ্র ইসলামপন্থী। তিনি যা লিখছেন তিনি নিজেই তা বিশ্বাস করেন না। তিনি কথনই লিখেননি যে তিনি ইসলামে বিশ্বাস করেন। অথচ তিনি প্যান ইসলামিজমকে প্রমোট করেন। নিজে ধর্ম বিশ্বাস করেন না, অথচ ধর্মীয় মৌলবাদকে সমর্থন দিয়ে নিয়মিত লেখা পোষ্ট করেন; ধর্মনিরপেক্ষতার বিরোধিতা করেন। এতে তার লাভ কি? নিজের বিশ্বাসের প্রতিকুল ধারণাকে মানুষ কখন প্রমোট করে? বিশেষ কোনও ফায়দা না থাকলে কেউ এরকম কাজ করতে পারেনা। দু’ধরণের মানুষ নিজের বিশ্বাসের বিপরিত কথা প্রচার করে। ১. অতিশয় দুষ্ট প্রকৃতির ধুরন্ধর মানুষ এবং ২. বিশেষ কোনও মহলের নিয়োজিত এজেন্ট। তিনি আসলে কার এজেন্ট? তার লেখাগুলো পড়লে বোঝা যায় তিনি যথেষ্ট পড়াশুনা করেন এবং বিতর্ক সৃষ্টির জন্য উদ্ভট সব তত্ত্ব হাজির করেন।
দুর্জন বিদ্বান হইলেও পরিত্যাজ্য। সর্পের মস্তকে মণি থাকিলেও তাহা কি ভয়ংকর নহে
১৮ সেপ্টেম্বর ডা: পিনাকী ফেসবুকে লিখেছেন: “স্যেকুলারিজম সমাজের সংকট মোচনের চাইতে আরো গভীর সামাজিক সংকট সৃষ্টি করেছে। সাব অল্ট্রান স্কুলের মতে ভারতবর্ষে স্যেকুলারিজম ফেইল করেছে। ভারতবর্ষে স্যেকুলারিজম মানে হয়ে উঠেছে সংখ্যালঘু তোষণ।”
বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধকে জামায়তি দৃষ্টিতেই তিনি বিচার করেন এবং ধর্মনিরপেক্ষতার বিরোধিতা করেন। গোলাম আজম যেভাবে বাঙালির স্বাধীকার আন্দোলনকে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার লড়াই হিসেবে ব্যাখ্যা করেছেন, একইভাবে পিনাকীও মুক্তিযুদ্ধ পূর্ববর্তী পুরো লড়াইটাকে কেবল গণতন্ত্রের লড়াই হিসেবে ব্যাখ্যা করেছেন। তিনি নানা বক্তব্যে এটা প্রতিষ্ঠিত করতে চান যে বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িকতা, মৌলবাদ কিংবা জঙ্গীবাদ কোনও সমস্যা নয়। জঙ্গীবাদ ও মৌলবাদী উত্থান শংকা নিয়ে আরিফ জেবতিকের একটি লেখার সমালোচনা করে তিনি লিখেছেন:
এই লেখাটাও একটা ভয়ংকর ভবিষ্যৎ চিত্র পাঠকের সামনে তুলে ধরে। পাঠক বিহ্বল হয়ে ভাবতে থাকে সর্বনাশ এই পরিনতি লেখা আছে আমাদের কপালে??!! …… মৌলবাদ নিয়ে ভয় আর আতংক তৈরির এই প্রজেক্টি খুব কার্যকর একটি অস্ত্র।
পহেলা বৈশাখ উদযাপনকে হিন্দুয়ানী সংস্কৃতি হিসেবে চিরকাল এর বিরোধিতা করে এসেছে উগ্র সাম্প্রদায়িক মহল। কিন্তু অসাম্প্রদায়িক বাঙালি কখনই মৌলবাদীদের এ প্রচারণা গ্রহণ করেনি। সাম্প্রদায়িক মৌলবাদীদের সেই প্রচারণাকে প্রণোদনা দেয়ার জন্য এক অদ্ভুৎ ‘স্যেকুলারিজমে ত্বত্ত হাজির করলেন পিনাকী ভট্টাচার্য্য। তিনি লিখলেন:
পহেলা বৈশাখকে স্যেকুলার রাখতে হবে। বিশেষ করে মঙ্গল শোভাযাত্রায় যে কোন ধরণের ধর্মীয় প্রতীক উপস্থাপন সচেতনভাবে বাদ দিতে হবে। ধর্মকে অ্যাপ্রিশিয়েট করাতে কোন সমস্যা নেই, কিন্তু যেই উৎসবে সব ধর্মের মানুষ অংশ নেয় সেই উৎসবে কোন বিশেষ ধর্মের প্রতীক কোন আরেকটি ধর্মের অনুসারীদের মনে যদি দ্বিধার জন্ম দেয় তবে সেটা আর স্যেকুলার থাকেনা। মঙ্গল শোভাযাত্রার আয়োজকরা এটা যত তাড়াতাড়ি বুঝবেন তত মঙ্গল।
শিয়া মসজিদে হামলার ঘটনায় নভেম্বরের ২৭ তারিখ তিনি একাধিক স্ট্যাটাস দেন। সেখানে এই হত্যাকান্ডের দায় থেকে ইসলামী জঙ্গীদের মুক্ত করার জন্য যুক্তি উপস্থাপন করেন। তিনি লিখেছেন,
শিয়াদের উপর হামলা হয়েছে, ব্লগারদের উপর হামলা হচ্ছে, নাস্তিকদের উপর হামলা হচ্ছে, হিন্দুদের মন্দির ভাঙছে। এভাবে বললে ক্রিমিন্যাল অফেন্সকে সাম্প্রদায়িক আর রাজনৈতিক রূপ দেয়া হয়। বলা উচিৎ মানুষের উপর হামলা হয়েছে, মানুষের উপাসনালয়ে হামলা হয়েছে, মানুষের ধর্মীয় উৎসবে হামলা হয়েছে। সারা পৃথিবীতে ভিক্টিমের কোন ধর্ম বা সম্প্রদায়ের পরিচয় নেই। একটাই পরিচয়ে সে নিহত হয় সেই পরিচয় মানুষের। …..অপরাধের সাম্প্রদায়িক পরিচিতিকরনকে রুখে দাঁড়ান।
মানুষ ভাল করেই জানে এই হামলা কোনও ডাকাত, ছিনতাইকারী কিংবা সাধারণ সন্ত্রাসীর হাতে হয়নি। যারা এসব করেছে তারা একটি মতাদর্শে বিশ্বাসী এবং তারা তাদের দর্শনকে প্রতিষ্ঠিত করার জন্য এগুলো করেছে। যারা মরেছে, তারা এবং তাদের প্রিয়জনরা ভাল করেই তাদের শত্রুপক্ষকে চেনে। সেই শত্রুপক্ষকে রক্ষা করতেই মরিয়া ডা: পিনাকী।
২২ সেপ্টেম্বর তিনি ফেসবুকে লিখেছেন:
বাংলাদেশ ব্যাংকের ভল্ট থেকে টাকা চুরি করে ধরা পড়েছে স্টেট ব্যাংক অব ইন্ডিয়ার কর্মকর্তা দীপক চন্দ্র দাশ। ধরা পরার পরে টাকা ফেরত নিয়ে চোরকে ছেড়ে দেয়া হয়। সমকাল পত্রিকা জানাচ্ছে, বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক শুভঙ্কর সাহার মধ্যস্থতায় দীপক চন্দ্র দাশকে ছেড়ে দেওয়া হয়। শুভঙ্কর সাহা কোন দায় থেকে দীপক চন্দ্র দাশকে বাঁচিয়ে দিয়েছেন? নিজ ধর্ম সম্প্রদায়ের মানুষ বলে, নাকি ভারতীয় ব্যাঙ্কের কর্মকর্তা বলে? এর উত্তর পাওয়া মুস্কিল, যদি চোরটি একজন ভারতীয় ব্যাঙ্কের মুসলিম কর্মকর্তা হতো তাহলে শুভঙ্কর সাহা তাকে বাঁচানোর চেষ্টা করতেন কিনা সেটায় আমার ঘোরতর সন্দেহ আছে।
দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের একজন পদস্থ কর্মকর্তার কাযের ন্যায্যতা কিংবা অন্যায্যতাকে তিনি বিচার করলেন তার সাম্প্রদায়গত পরিচয় দিয়ে। যদি ঘটনাটি ঘটে থাকে, তবে এই কাজে রাষ্ট্রের কোনও দায় ছিল কিনা, বাংলাদেশ ব্যাংকের গর্ভনরের কোনও ভূমিকা ছিল কিনা, বাংলাদেশ সরকার কিংবা ভারত সরকারের কোন স্তর থেকে বিষয়টিতে হস্তক্ষেপ হয়েছিল কিনা… ইত্যাদির কোনও কিছুতে না গিয়ে তিনি সাম্প্রদায়িক ধারণাকে উস্কে দেন। ডা: পিনাকী বিষয়গুলো বুঝে শুনেই এই কাজটি করেছেন। দেখা গেল তার ঐ লেখাটিতে ঐদিন তিন হাজার লাইক পড়েছে এবং পাঁচশ’র অধিক শেয়ার হয়েছে। যারা পছন্দ করেছেন, এবং উচ্ছসিত হয়ে লেখাটির উপর মন্তব্য করেছেন তাদের প্রোফাইলে চোখ বুলালেই পিনাকী ভট্টাচার্যের সমর্থকগোষ্ঠীর চিন্তা-চেতনার পরিচয় মেলে।
দেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়কে চাপের মুখে ফেলার জন্য ডা: পিনাকী মাঝে মধ্যেই ফেসবুকে হিন্দুদের বিরুদ্ধে সাম্প্রদায়িক উস্কানীমূলক লেখা পোষ্ট করেন। অন্যদের সাম্প্রদায়িক উস্কানীমূলক লেখাগুলোতে লাইক প্রদান করেন। তিনি হিন্দুধর্ম এবং হিন্দু ধর্মালম্বীদের কটাক্ষ্য করে লেখেন। হিন্দু ধর্ম নিয়ে কটাক্ষ্য ও সমালোচনা যুগে যুগে হয়ে আসছে এবং অসংখ্য বই আছে। শ্রীকৃষ্ণকে লম্পট হিসেবে চিহ্নিত করে সমালোচনা, নিবন্ধ, কবিতা এবং গান সম্ভবত: সবচেয়ে বেশী। আমি মনে করি এগুলো নিয়ে প্রত্যেকের নিজস্ব মতামত প্রকাশ করার অধিকার আছে। তবে বুঝতে হবে যে, বাংলাদেশে হিন্দুরা সংখ্যালঘু এবং সংকটগ্রস্ত। তাদের টার্গেট করার পেছনে ভিন্ন উদ্দেশ্য থাকে। হিন্দুদের মধ্য থেকে কাউকে যদি তাদের বিরুদ্ধে প্রপাগান্ডার কাজে ব্যবহার করা যায়, তাহলে মৌলবাদীদের কাজটি সহজ হয়।
ডা: পিনাকী প্রগতিশীল ও মুক্তচিন্তার লেখকদের ঘোর সমালোচক। অধ্যাপক হুমায়ূন আজাদ ও অধ্যাপক জাফর ইকবালকে তুচ্ছ তাচ্ছিল্ল করেন। জাফর ইকবালের ২০১৪ সালের মার্চ মাসে লিখিত “স্বাধীনতার ৪৪ বছর” শীর্ষক একটি কলামের প্রতিক্রিয়ায় ৩১ অগাস্ট ডা: পিনাকী বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের ভিত্তিমূল নিয়ে প্রশ্ন তুলেন। পিনাকী লিখেছেন:
গোল্ডেন কোশ্চেন হচ্ছে, মুক্তিযুদ্ধের ভিত্তিটা কী? … অসাম্প্রদায়িকতা মুক্তিযুদ্ধের ভিত্তি ছিল নাকি? কোথায় ছিল? নিশ্চয় কোন দফা, দাবী বা ঘোষণায় ছিল? সেটা কোথায়?আজকে মুক্তিযুদ্ধের চুয়াল্লিশ বছর পরে মুক্তিযুদ্ধের ভিত্তি একজন জাফর ইকবাল নতুন করে নির্মাণ করলে আমি সেটা মানতে বাধ্য কেন?
এর একটি চমৎকার জবাব দিয়েছেন ব্লগার নিঝুম মজুমদার। অনেকেই বিভিন্ন সময় তার লেখার জবাব দিয়েছেন। ডা: পিনাকীর প্রতিটি বক্তব্যের জবাব দেয়া, বা যুক্তি দিয়ে খন্ডন করা আমার এই লেখার উদ্দেশ্য নয়। আমার এই লেখার উদ্দেশ্য হল পিনাকী ও তার মতাদর্শের স্বরুপ উন্মোচন।
ভারত বিরোধীতা তার লেখার অন্যতম প্রতিপাদ্য। ১৯৭১ সালের গণহত্যার জন্য পাকিস্তানের প্রতি ঘৃণা প্রদর্শনের বিরোধিতা করেন। তিনি পাকিস্তানের সাথে বাংলাদেশের সম্পর্ক উন্নয়নের পক্ষে। গণহত্যার জন্য পাকিস্তানিদের দায়কে লঘু করার জন্য হাজার বছর পূর্বে সেন বংশের শাসকদের আমলে সংঘটিত গণহত্যার কাহিনী তুলে ধরেন এবং পাকিস্তানীদের সাথে সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার তাগিদ দেন।
“পাকিস্তানিদের আমি অবিশ্বাস করি, যখন তারা গোলাপ নিয়ে আসে, তখনও” হুমায়ুন আজাদের এই বক্তব্যের সমালোচনা করে জুলাইয়ের ২৫ তারিখ পিনাকী লিখেছেন: “এই ভয়াবহ রেইসিস্ট প্রবচন এক দীর্ঘস্থায়ী ক্ষত তৈরি করে চলেছে প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে”।
ফরহাদ মযহার যে পথে গেছেন ঠিক সেই পথই অনুবর্তন করছেন পিনাকী। ইদানিং তিনি বিএনপি সমর্থক ডাক্তারদের ফোরাম ড্যাবের সাথে ঘনিষ্টতা তৈরির চেষ্টা করছেন। গত ২৯ আগষ্ট ড্যাবের জাহিদ সাহেব এবং ডা: জাফরুল্লাহ চৌধুরীকে এক সেমিনারে আমন্ত্রণ করে নিয়ে যান এবং সেখানে তিনি নিজেই মূল প্রবন্ধ পাঠ করেছিলেন।
বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে অনন্যসাধারণ অবদানের জন্য জেনারেল জ্যাকবের মৃত্যুর পর মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের মানুষ যখন তার প্রতি শ্রদ্ধা দেখাচ্ছে তখন পিনাকী লিখলেন, “নাগরিক পরিচয়ে একজন ভারতীয়, ধর্ম পরিচয়ে একজন ইহুদী এবং পেশায় সামরিক অফিসার জেনারেল জ্যাকবকে বাংলাদেশীরা খুব পছন্দ করে বীরের সন্মান দেয়।” জ্যাকবের ইহুদী পরিচয় বড় প্রশ্ন হয়ে দাড়ালো হিন্দু পিনাকীর কাছে! কাল মার্কস ও আইনেস্টাইনের মত অসংখ্য মহাপুরুষ আছেন, যারা বংশ পরিচয়ে ইহুদী ছিলেন একথা আমাদের মনেই আসেনা। পিনাকীদের মনে আসে; কারণ এটাই তাদের পুজি, এটাই তাদের ব্যাবসা এবং এ নিয়েই তাদের রাজনীতি।
সর্বশেষ জানুয়ারীর ১৪ তারিখ, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় মাদ্রাসা ছাত্রদের আক্রমণকে জায়েজ করার যুক্তিতে তিনি লিখেছেন,
ওস্তাদ আলাউদ্দিনের স্মৃতিচিহ্ন বিজড়িত সঙ্গীত ভবন আক্রান্ত হওয়াকে যদি বর্বরতা বলেন তাহলে স্বীকার করুন, নকশাল আন্দোলনে রবীন্দ্রনাথ, ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের ভাস্কর্য ভেঙে আপনার কমরেডরাও বর্বরতা করেছে।
রবীন্দ্রনাথ ও ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের ভাস্কর্য ভেঙে ফেলার বিষয়টি আদৌ ঘটেছে কিনা আমি জানিনা। যদি ঘটে থাকে নি:সন্দেহে সেটা নকশালীদের বর্বরতাপূর্ণ কাজ। সেই কাজকে কে গ্রহণ করেছে? আমার অন্তত: জানা নেই। ঐ নকশালীরা আমাদের কমরেড না কি পিনাকীদের কমরেড? আসল সত্য কোনটা? পিনাকী’র কর্মকৌশলের বড় দিক হচ্ছে, তিনি নিজেকে বামপন্থী পরিচয়ে তুলে ধরার চেষ্টা করেন এবং কার্ল মার্কসের মত মহান তাত্ত্বিকের লেখা থেকে প্রতি নিয়ত উদ্ধৃতি দেন।
সুর সম্রাট ওস্তাদ আলাউদ্দিনের স্মৃতিচিহ্ণ এবং তার ব্যবহৃত সারোদটির ঐতিহাসিক,সাংস্কৃতিক এবং প্রত্নতাত্ত্বিক মূল্য কে না বোঝে? একজন শিক্ষিত সংস্কৃতিবান মানুষের কাছে এর গুরুত্ব অনেক। শিল্পী তার জীবন দিয়েও তার সৃষ্টিকে রক্ষা করতে চায়। সঙ্গত কারণেই ওস্তাদ আলাউদ্দিনের স্মৃতিচিহ্ন বিজড়িত সঙ্গীত ভবনে আক্রমণ চালিয়ে তার সরোদটি ভেঙ্গে ফেলায় দেশের সেক্যুলার ও সংস্কৃতিবান মানুষ আহত হয়েছে। এই আহত হওয়াকে কটাক্ষ করে পিনাকী লিখেছেন, “আহা, নিষ্প্রাণ বাদ্যযন্ত্রের জন্য বাংলাদেশের স্যেকুলারদের যত দরদ”!
বাদ্যযন্ত্রটি নি:সন্দেহে নিস্প্রাণ ছিল। কিন্তু সেটা সংস্কৃতির জন্য প্রাণ দায়ক। বামিয়ানের বুদ্ধ মুর্তীগুলো নিস্প্রাণ ছিল। কিন্তু প্রাণহীন সেই মুর্তীগুলোই ছিল হাজার বছরের ইতিহাসের জীবন্ত স্মারক। বাঙালীর মুক্তি সংগ্রামের এবং পাকিস্তানিদের গণহত্যার সপ্রাণ, সজীব, বীরত্বপূর্ণ ও হাহাকারময় স্বাক্ষ্য দিচ্ছে প্রাণহীন মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরটি। প্রাণহীন ও গুরুত্বহীন হিসেবে আখ্যা দিয়ে অন্যদের পুজামুর্তীগুলো ধ্বংস করার পক্ষে কেউ বিধান দিতেই পারেন। কিন্তু অন্যদের কাছে সেগুলি যে পুজামুতী !
প্রাণহীন বলেই তাজমহল ধ্বংস করে দেয়া যায় না। মানুষ “রূপহীন মরণেরে মৃত্যুহীন অপরূপ সাজে” সাজায়। এটাই সভ্যতা। মরণকেও “মৃত্যুহীন অপরুপ সাজে” সাজাতে পারে বলেই মানুষ সভ্য। এই সাজানোর কাজটিই শিল্পকলা। নিস্প্রাণ বলেই সভ্যতাকে ধ্বংস করে দেয়া যায় না। “কালস্রোতে ভেসে যায় জীবন যৌবন ধনমান।” তবুও মানুষ তার অন্তরবেদনা চিরন্তন করে রাখতে চায়। স্মৃতির তাজমহল কালের কপোলতলে শুভ্র সমুজ্জ্বল হয়ে থাকে। আমার মনে হয় “নিস্প্রাণ” তাজমহল রক্ষায় ভারত তার সর্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় শক্তি প্রয়োগ করতে কুন্ঠিত হবেনা। ভারতের উপর কখনও কোনও আক্রমণ হলে আগে এই প্রত্নসম্পদ রক্ষার জন্য তারা সেনা মোতায়েন করবে। হাজারও ভারতীয় জোয়ান প্রাণ দিতে প্রস্তুত আছে “নিস্প্রাণ” তাজমহল রক্ষা করার জন্য। ওস্তাদ আলাউদ্দিনের রেখে যাওয়া “নিস্প্রাণ” সারদ ও স্মৃতিস্থানসমূহ ধ্বংসের ক্ষেত্রে বাঙালির আবেগপূর্ণ অবস্থান থাকবে না?
সেদিনের ঘটনায় মাদ্রাসা ছাত্রদের নিরাপরাধ প্রমাণের জন্য পিনাকী লিখেছেন, “মাদ্রাসায় “আদব” শিক্ষা দেয়া হয়, সেই আদবের সংস্কৃতির সাথে যারা পরিচিত নন, তাঁরা মাদ্রাসার কালচার বুঝতে পারবেন না।” আমরা কি আসলেই সেই ”আদবের” সাথে পরিচিত নই? আমরা ভালভাবেই সেই ভয়াবহ আদবের সাথে পরিচিত।
শিক্ষাবিদদের মতে, বিদ্যমান মাদ্রাসা শিক্ষা ব্যবস্থা, বিশেষ করে কওমি মাদ্রাসাগুলো দেশের জন্য একটা ঝুকি। কওমি মাদ্রাসা তুলে দিয়ে গরীব পরিবারের ছেলেগুলোকে উন্নত শিক্ষা, উদার সংস্কৃতি ও জ্ঞানবিজ্ঞান চর্চার মাধ্যমে মানুষ করে তুলতে না পারলে দেশ ভয়াবহ সংকটে পরবে। কারণ আত্মনির্ভরশীল হওয়ার শিক্ষা না দিয়ে ভিক্ষুকে পরিণত করা হয় অনেক মাদ্রাসা ছাত্রকে। মসজিদ-মাদ্রাসা-এতিমখানার নামে, পাঠ্যপুস্তক এমনকি কোরাণ কেনার নামে তাদের দিয়ে ভিক্ষা করানো হয়। মাদ্রাসা পড়ুয়াদের বিনীত আদব কায়দা কেবল তাদের ভিক্ষাবৃত্তির সময়ই প্রকাশ পায়। নইলে, এই মাদ্রাসা পড়ুয়ারাই আফগানিস্তানে ক্ষমতা দখল করেছিল। সেখানে তারা তাদের আদব এবং “কালচার” রাষ্ট্রীয়ভাবেই প্রতিষ্ঠা করেছিল। কোনও মেয়ে একা রাস্তায় বের হলে তাকে পিটানো হত মাদ্রাসার কালচার ও আদব অনুযায়ী। আদবের পরাকাষ্ঠা হিসেবে তারা বামিয়ানের বৌদ্ধ মুর্তী ভেঙ্গেছে; হাজার বছরের সভ্যতার নিদর্শনগুলো গুড়িয়ে দিয়েছে। মাদ্রাসার কালচার বুঝি বলেই একে ভয় পাই। যে আদব তাদের শিক্ষা দেয়া হয় সেই আদব অনুযায়ী তারা চাপাতি হাতে তুলে নেয়, মানুষের গলা কাটে। মতিঝিল এলাকায় তাদের একদিনের দখলদারিত্বে তাদের যে আদব দেখেছি তা ভোলার কথা নয়। নাদিয়ার উপর আক্রমণের আদব ভোলার মত নয়। ভুলে যাইনা নিত্য
নুতন মৃত্যুগুলো। যে হত্যার আদর্শিক ভিত্তিকে সমুন্বত রাখার দায়িত্ব পালন করছেন পিনাকীরা।
৭১’এ বাঙালি হত্যার পেছনে মওদুদীর কি কোনও দায় আছে? একাত্তরের গণহত্যায় জামায়তে ইসলামী ও ইসলামী ছাত্রসংঘ লিপ্ত হয়েছিল কোন দর্শন ও আদর্শের ভিত্তিতে? বাঙালী নারীকে “গণিমতের মাল” হিসেবে পাক সেনাদের ভোগযোগ্য হওয়ার ফতোয়া ছিল কোন দর্শনের আলোকে? নিশ্চয় সেটা মওদুদীবাদ। আজকের দিনে লেখক-ব্লগার হত্যা, ভিন্ন চিন্তার মানুষকে হত্যা, পীরের মাজারে ও শিল্প-সংস্কৃতি অঙ্গনে হামলার পেছনেও একটি আদর্শিক বোধ ও দার্শনিক ভিত্তি কাজ করছে। ঘৃণ্য সহিংসতাকে নৈতিক, যৌক্তিক ও আদর্শিকভাবে গ্রহণযোগ্য করার জন্য এরপক্ষে একটি ন্যায্যতার দর্শন প্রতিষ্ঠা করার দরকার হয়। এই দায়িত্বটি পালন করছেন ডা: পিনাকী। তার ব্যাপারে তদন্ত হওয়া উচিৎ। পিনাকীবাদ = জঙ্গীবাদ।

পিনাকী ভট্টাচার্যের নুড ফাঁস করবে তার সাবেক প্রেমিকাতাঁর স্ত্রী সুকৃতি ভট্টাচার্য পেশায় গৃহিণী। দুই ছেলের মধ্যে লেখক পিনাকী ভট্টাচার্য বর্তমানে ফ্রান্সের প্যারিসে রাজনৈতিক আশ্রয়ে রয়েছেন। ছোট ছেলে অভ্র ভট্টাচার্য সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগে (সিপিডি) কর্মরত।

বিতর্কিত ব্লগার ও ফেসবুক কলামিস্ট পিনাকী ভট্টাচার্যের নুড ফাঁস করার হুমকি দিয়েছেন তারই এক সাবেক প্রেমিকা নাদিয়া ইসলাম। ফেসবুক জুড়ে মৌলবাদীদের তোষণকারী হিসেবে পিনাকী ভট্টাচার্য যথেষ্ট দুর্নাম কুড়িয়েছেন। বাংলাদেশের মুক্তমন ও মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের যে কাউকে যখন-তখন র এজেন্ট নামে আখ্যায়িত করার জন্য সাইবার বুলিংয়ের মামলাও হয়েছে পিনাকির নামে বে কয়েকবার। কিন্তু বাংলাদেশ ছেড়ে এসাইলাম নিয়ে জার্মানিতে অবস্থান করায় পিনাকীর বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেয়া যায় নি কখনোই।
এ সময় নিজের এক স্ত্রী থাকার পরেও একাধিক গার্লফ্রন্ডের সাথে লিভ-টুগেদারে জড়িত ছিল পিনাকী। তেমনই একজন বর্তমান প্রাগ প্রবাসী নাদিয়া ইসলাম। ইনিও ফেসবুকে নারীবাদি ব্লগার হিসেবে বেশ জনপ্রিয়। গত আগস্ট পরিমনী ইস্যুতে চয়নিকা চৌধুরীকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে, নাট্যনির্মাতা চয়নিকা চৌধুরীকেও র এজেন্ট বলে প্রপাগান্ডা চালায় পিনাকী। এতেই পিনাকীর সাবেক প্রেমিকা নাদিয়া ইসলাম পিনাকীর বিরুদ্ধে পোস্ট দেয়। এর প্রতিবাদের পিনাকী ভট্টাচার্য একটা ফেক ই মেইল দিয়ে নাদিয়া ইসলামকে প্রচ্ছন্ন হুমকি। তাতেই ক্ষেপে পিনাকীর নুড ফাঁসের হুমকি দিয়েছেন নাদিয়া ইসলাম। সরাসরি নাদিয়া ইসলামের ফেসবুক ওয়াল থেকে—
“গতকাল রাতে পিনাকী ভট্টাচার্য আমারে এই ই-মেইলখানি পাঠাইছেন।
তবে উনি যে পিনাকী না, তা প্রমাণে উনার বেশ কাঠখড়সিমেন্টবালু পুড়াইতে হইছে। ফেইক ই-মেইল এ্যাকাউন্ট খুলতে হইছে, ইচ্ছাকৃতভাবে বানান ভুল করতে হইছে, আঞ্চলিক ভাষায় কথা বলার চেষ্টা করতে হইছে, আসিফ মহিউদ্দীনের স্ত্রী কানিজ ফাতেমার ব্যবহার করা ‘স্কিৎজোফ্রেনিয়া’ টার্ম ব্যবহার কইরা নিজের পরিচয় নিয়া ধোঁয়াশা তৈরি করতে হইছে।
তবে আমি তো গাধা না। আমারে বোকা বানানো এত সোজা না।
so,
ডিয়ার পিনাকী।
এত ডরায়েন না। আপনার ন্যাংটা ছবি আমি ইন্টারনেটে ছাড়বো না। ছবি ছাইড়া দেয়ার ইচ্ছা থাকলে এতদিনে তা কইরা ফেলতাম, সন্দেহ নাই। আমি প্রতিহিংসাপরায়ণ হইলেও আপনি ঢাকার কোথায় কোথায় রক্ষিতা পালতেন তার নামধাম আপনার স্ত্রীর কাছে পাঠায়ে দিতাম। কিন্তু আমি প্রতিহিংসাপরায়ণ হবো কী কারণে? আপনি কি আমার প্রেমিক? নাকি আপনি আমারে বিয়ার প্রলোভনে ধর্ষণ করছেন? নাকি প্রেমের নামে- ঐ কী কয়- প্রতারণা করছেন যে আমার প্রতিহিংসাপরায়ণ হইতে হবে?
আপনার মতো ঢাকার বেশিরভাগ বিবাহিত পুরুষরা যে ঘরে বউ রাইখা আমাগো লগে প্রথমে ভগিনীবাণিজ্য … পরে ফুটুরফুটুর করেন, নিজেগো ধোনের ছবি পাঠান, নিকেতন উত্তরাতে রক্ষিতা পালেন, বে শ্যা বাড়িতে যান, ব্যবসায়িক পার্টনারদের মা গি সাপ্লাই দেন, ডাক্তারদের দিয়া নিজেদের অসুধ প্রেসক্রিপশানে লিখতে ব্যাংককে স্ট্রিপ ক্লাবে নিয়া গিয়া উনাগো ন্যাংটা নারীর নাচ দেখান- এইগুলি তথ্য আমরা সবাই জানি। এইসব তথ্যে ঢাকার পুরুষদের বাল ছিঁড়া যায় না।

আমি তাই এত কাঁচা কাজ করবো না। আমি শুধু আপনি কই থিকা তথ্য পান, উপর দিয়া আওয়ামী বিরোধিতা কইরা তল দিয়া আওয়ামী লীগ ও মোদির হিন্দুত্ববাদী রাজনীতির পক্ষে কীভাবে কাজ করেন, র-র কোন কোন এজেন্ডা বাস্তবায়ন করেন, এই নিয়া আলাপ দেওয়া শুরু করবো। কারণ যারে তারে যখন ইচ্ছা র বানানোর কুৎসিত খেলা ‘আপনি’ শুরু করছেন।
আমি না।
আর তাই। আমি একা থাকি না দোকা থাকি, তাই নিয়া আপনার মাথা না ঘামাইলেও চলবে। কারণ আমি আপনার মতো শুধুমাত্র সন্তানের মুখের দিকে তাকাইয়া সম্পত্তি ভাগ হওয়ার ভয়ে একটা অনৈতিক মিথ্যাচারের কুৎসিত বাণিজ্যিক সম্পর্কে থাকার চাইতে একলা থাকারে শ্রেয় বইলা ভাবি।
আপনি তাই আমারে নিয়া না ভাইবা বরং ভাবেন শা. আ. বা কা. শা. আপাদের পরিচয় আপনার স্ত্রীর কাছে পৌছাইলে আপনি কয়দিন এইসব মিথ্যাচারের কোভার্ট এফেয়ারস চালায়ে বউয়ের সাথেও সোনা বাবু জান …. তে পারবেন। কতদিন পাসপোর্টের পাতা উনার কাছেও গোপন রাখতে পারবেন।
তাই বংশ আর রক্ত ….. না।
আপনার জন্য শুভকামনা।

পিনাকী ভট্টাচার্য: ওষুধের নামে ময়দা বেচে কোটি টাকা লোপাটের কারিগর

।। ডাঃ জাহিদুর রহমান ।।

বাংলাদেশের ওষুধ শিল্প জগতে আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত এক জালিয়াতের নাম পিনাকী ভট্টাচার্য এবং পপুলার ফার্মাসিটিক্যালস। ২০০৮ সালে পিনাকী ভট্টাচার্য পপুলারের মাধ্যমে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর এবং ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তরের কিছু দূর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের সাথে সিন্ডিকেট করে কয়েক কোটি টাকা লুটপাট করে। রাজনৈতিক অস্থিরতার কারনে বিষয়টি নিয়ে তখন তেমন কোন আলোচনা হয়নি।

পিনাকী ভট্টাচার্য

লজ্জার ব্যাপার যেই পিনাকী ভট্টাচার্য কালাজ্বরের ক্যাপসুলে ময়দার দলা পুরে কোটিপতি হয়েছে, তার কাছ থেকেই আজকে আমাদের সবার নৈতিকতার সবক নিতে হয়।

২০০৮ সালের মে মাসে কালাজ্বর নির্মূলের লক্ষ্য নিয়ে তৎকালীন সরকারের পক্ষ থেকে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সারা দেশে কালাজ্বরে আক্রান্ত রুগিদের মধ্যে বিনামূল্যে পপুলারের তৈরি ক্যাপস্যুল মিল্টেফস (মিল্টেফসিন) বিতরণ শুরু করে। ঋণ হিসেবে টাকাটা দেয়ার কথা ছিল ডব্লিউএইচওর, কিন্তু শর্ত ছিল যেসব ওষুধ কেনা হবে, সেগুলো আন্তর্জাতিক মানের হতে হবে এবং উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের ঐ ওষুধ উৎপাদনের কমপক্ষে ২ বছরের অভিজ্ঞতা থাকা লাগবে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর টেন্ডার দিলে তাতে আবেদন করে দুটো কোম্পানি, একটি জার্মানির ইটার্না জেন্টারিস অপরটি বাংলাদেশের পপুলার। প্রথমটির তৈরি মিল্টেফসিন ছিল মানসম্মত, পরীক্ষিত, উৎপাদনের অভিজ্ঞতাও ছিল ২ বছরের বেশি। তারপরও কোন এক রহস্যময় কারনে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর পপুলারের তৈরি মিল্টেফসিন কেনে, যাদের এই ওষুধ তৈরির কোন পুর্ব অভিজ্ঞতা ছিল না। পরবর্তিতে পরীক্ষা করে এও দেখা যায় যে, পপুলারের মিল্টেফসের মধ্যে মিল্টেফসিনেরই কোন অস্থিত্ব নাই। এরকম মোটা দাগের দূর্নীতি দেখে ডব্লিউএইচও তাদের ঋণ দেয়া বন্ধ করে দেয়। শুধুমাত্র পপুলারকে কাজ পাইয়ে দেয়ার জন্য স্বাস্থ্য অধিদপ্তর আবারও টেন্ডার ডাকে এবং ২ বছরের অভিজ্ঞতার শর্তটি তুলে নেয়।

সরকার ৫ কোটি টাকার কালাজ্বরের ক্যাপসুলের নামে ময়দার দলা কিনে পপুলারের কাছ থেকে এবং পপুলারের পক্ষ থেকে পুরো বিষয়টি দেখভাল করে প্রতিষ্ঠানটির চিফ অপারেটিং অফিসার এবং আজকের সুশীল ছাগু সমাজের প্রতিনিধি পিনাকী ভট্টাচার্য। দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে কয়েকশো রুগিকে পপুলারের তৈরি মিল্টেফসিন ফুল ডোজে খাওয়ানোর পরও তাদের জ্বর কমেনি, পরীক্ষা করে তাদের সবার দেহেই আবার কালাজ্বরের জীবাণু পাওয়া গিয়েছিল। অথচ জার্মানির তৈরি একই ওষুধ খেয়ে আগের সব রুগি সুস্থ হয়ে উঠেছিল।

জেনেশুনে জীবন রক্ষাকারী কোন ড্রাগ নিয়ে মানুষের সাথে এরকম প্রতারণা করা পিনাকীর মত অমানুষের পক্ষেই সম্ভব। মান কিছু কম হতে পারে, তাই বলে ক্যাপসুলের মধ্যে কোন ড্রাগই থাকবে না? পিনাকী ভট্টাচার্য অবশ্য তখনও তার স্বভাবসুলভ ভন্ডামি দিয়ে প্রমাণ করার চেষ্টা করে যে পপুলারের ওষুধ মানসম্মত। অথচ ডব্লিউএইচও নেদারল্যান্ড থেকে পরীক্ষা করিয়ে প্রমাণ করে পপুলারের তৈরি কালাজ্বরের মিল্টেফস ক্যাপসুল সম্পূর্ণভাবে মিল্টেফসিনবিহীন!

অবস্থা বেগতিক দেখে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর শেষ পর্যন্ত ২০০৮ সালের ১১ সেপ্টেম্বর পপুলারের মিল্টফস ক্যাপসুল সরবারহ বন্ধ করে এবং এই ওষুধের সব ধরনের উৎপাদন এবং বিক্রয় নিষিদ্ধ ঘোষনা করে।

আমদের স্মরণশক্তি খুবই দুর্বল, তাই আমরা এই জঘণ্যতম অন্যায়ের বিস্তারিত জানতে চাই। জানতে চাই, পরবর্তিতে পিনাকী ভট্টাচার্যসহ পপুলার ফার্মা এবং এর সাথে জড়িত সরকারি কর্মকর্তাদের কী শাস্তি হয়েছিল? আমরা জানতে চাই, পপুলার থেকে প্রায় সাড়ে ৫ কোটি টাকার প্রায় ৪৫ হাজার মিল্টেফস ক্যাপসুলের কি পরিণতি হয়েছিল? কালাজ্বরের রুগিদের যে ওষুধের নামে ময়দার দলা খাওয়ানো হয়েছিল, তার দায়িত্ব কে নিয়েছিলেন? এ বিষয়ে কি বর্তমান সরকারের কিছুই করার নেই? দুদকের ক্ষমতা নেই মাত্র ৯ বছর আগের দুর্নীতির তদন্ত করার? নাকি তখনই মনগড়া তদন্ত প্রতিবেদনের মাধ্যমে পিনাকী গং এত বড় দূর্নীতি করেও আইনের হাত থেকে ফসকে গিয়েছিল?

আর কারো কাছে না হোক, ডব্লিউএইচও ও টেলিগ্রাফ পত্রিকার কাছে অবশ্যই পিনাকী ভট্টাচার্য এবং পপুলারের যাবতীয় অপকর্মের দলিলপত্র আছে। সেগুলো কি আবার সামনে নিয়ে আসার কোন উপায় নেই?

Leave a Reply