Deprecated: Function WP_Dependencies->add_data() was called with an argument that is deprecated since version 6.9.0! IE conditional comments are ignored by all supported browsers. in /home/amadersa/public_html/wp-includes/functions.php on line 6131
বাজারে ভোজ্য তেলের সরবরাহ হঠাৎ কম

বাজারে ভোজ্য তেলের সরবরাহ হঠাৎ কম

দেশের ভোজ্য তেলের বাজারে অস্থিরতা দেখা দিয়েছে। রাজধানীর বিভিন্ন বাজারে ভোজ্য তেলের সরবরাহ কমে গেছে। পাঁচ লিটারের বোতলজাত সয়াবিন দুষ্প্রাপ্য হয়ে উঠেছে। খুচরা বিক্রেতারা বলছেন, তাঁরা অর্ডার দিয়েও চাহিদামতো তেলের সরবরাহ পাচ্ছেন না।

গতকাল রাজধানীর বাজার ঘুরে দেখা গেছে, বেশির ভাগ দোকানেই পর্যাপ্ত সয়াবিন তেল নেই। বেশির ভাগ দোকানি জানান, সয়াবিন তেল নেই। এক লিটার ও দুই লিটারের বোতল কিছু থাকলেও পাঁচ লিটারের কোনো সয়াবিন সরবরাহ করা হচ্ছে না। বাজারজাতকারী কম্পানিগুলো চাহিদামতো সরবরাহ না করায় সয়াবিন তেলের এই সংকট তৈরি হয়েছে বলে পাইকারি ও খুচরা বিক্রেতারা দাবি করছেন।

রাজধানীর মোহাম্মদপুর হাউজিং সোসাইটি কাঁচাবাজারের ইসমাইল জেনারেল স্টোরের মালিক মো. খোরশেদ আলম কালের কণ্ঠকে বলেন, দুই সপ্তাহ ধরে তেল সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানগুলো চাহিদামতো তেল দিচ্ছে না। ছোট বোতলের তেল সামান্য কিছু পেলেও পাঁচ লিটার তেলের সরবরাহ বন্ধ আছে। কয়েকটি ব্র্যান্ডের ডিস্ট্রিবিউটররা তাঁদের অন্য পণ্যের (চিনিগুঁড়া চাল, সরিষার তেল) অর্ডার নিলেও সয়াবিন তেলের অর্ডার নিচ্ছেন না।

রাজধানীর বনানী কাঁচাবাজারের নিউ জিয়া স্টোরের মালিক জিয়াউল হক বলেন, ‘বাজারে তেল নেই বললেই চলে। আমরা বারবার তেল চেয়েও পাচ্ছি না। ডিস্ট্রিবিউটররা আমাদের বলছেন তেলের দাম বাড়বে বলে সরবরাহ কম। ’ তিনি জানান, বিভিন্ন ব্র্যান্ডের দুই লিটারের বোতলজাত সয়াবিন তেল ৩৩৫ টাকায়, এক লিটারের তেল ১৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। সপ্তাহখানেক আগে তিনি পাঁচ লিটারের বোতলজাত সয়াবিন ৮০০ টাকায় বিক্রি করেছেন। এখন পাঁচ লিটারের তেল পাওয়া যাচ্ছে না।

রাজধানীর মৌলভীবাজারের বড় তেল ব্যবসায়ী ও বাংলাদেশ পাইকারি ভোজ্য তেল ব্যবসায়ী সমিতির সহসভাপতি মোহাম্মদ আলী ভুট্টো গতকাল কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘মৌলভীবাজারে সয়াবিন তেলের সরবরাহ কম। তেল সরবরাহ করে কম্পানিগুলো। তারা চাহিদার তুলনায় ঠিকমতো সরবরাহ দিচ্ছে না। এ কারণে বাজারে তেলের সংকট দেখা দিয়েছে। রমজানের আগে এই পরিস্থিতি ভোগাতে পারে। ’

ইউক্রেনে আটকে পড়া জাহাজের নাবিক আসিফুলের আকুতি

দেশে প্রয়োজনের তুলনায় অনেক বেশি নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য মজুদ রয়েছে বলে জানিয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি। গত বুধবার সচিবালয়ে আন্ত মন্ত্রণালয়ের এক বৈঠক শেষে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, সয়াবিন তেলের দাম লিটারে ১২ টাকা বাড়ানোর প্রস্তাব নাকচ করেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। এখনই সয়াবিন তেলের দাম বাড়ানো যাবে না। সামনে রমজান মাস।

ভোজ্য তেল সরবরাহকারী কম্পানিগুলো জাহাজ সময়মতো না পৌঁছানো, বিশ্ববাজারে উচ্চমূল্যসহ নানা কারণে চাহিদামতো তেল সরবরাহ করতে পারছে না। তবে সিটি গ্রুপের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বলছেন উল্টো কথা। তাঁদের দাবি, মিল থেকে পর্যাপ্ত তেল সরবরাহ করা হচ্ছে।

সিটি গ্রুপের পরিচালক (করপোরেট ও রেগুলেটরি অ্যাফেয়ার্স) বিশ্বজিৎ সাহা কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘আমাদের কোনো সরবরাহ সংকট নেই। যত পণ্য লাগে, আমরা তা দিচ্ছি। আড়াই হাজার টন আমরা প্রতিদিন সরবরাহ করছি। ’

সংকটের কারণে জানতে চাইলে একাধিক বড় বিক্রেতা নাম প্রকাশ না করে বলেন, ‘অসাধু ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট কম্পানিগুলোর কাছ থেকে বেশি বেশি তেল নিয়ে বাড়তি দামের আশায় মজুদ করছে। ’

অভিযান শুরু হচ্ছে

একটি ওয়েবসাইট হতে পারে আপনার সারা জীবনের স্থায়ী উপার্জন। দেখুন কিভাবে।

এমন পরিস্থিতিতে বাজারে সয়াবিনসহ নিত্যপণ্য অতিরিক্ত দামে বিক্রি ঠেকাতে যৌথ অভিযানে নামছে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর। অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এ এইচ এম সফিকুজ্জামান বলেন, ‘আমরা যৌথ অভিযানে নামব। আমরা জড়িতদের খুঁজে বের করব। আমরা একদম রুট লেভেলে গেছি। কোথায় ম্যানুপুলেট হচ্ছে, ডিলার-মিলার, সাপ্লাইয়ার সবাইকে আমরা শনাক্ত করছি। ’

বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশনের (বিটিটিসি) তথ্য বলছে, বছরে দেশে ২০ লাখ টন ভোজ্য তেলের চাহিদা রয়েছে। বন্দরের তথ্য থেকে দেখা যায়, ২০২১ সালে দেশে ২৭ লাখ ৭১ হাজার টন ভোজ্য তেল আমদানি হয়েছে। অর্থাৎ দেশে তেলের মজুদ ও সরবরাহ পর্যাপ্ত।

কুমিল্লায় মূল্য মুছে বেশি দামে বিক্রি : কুমিল্লা নগরীতে সয়াবিন তেলের দাম স্বাভাবিক রাখতে অভিযান চালিয়েছে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর। গতকাল দুপুরে নগরীর বাদশাহ মিয়ার বাজার ও স্টেশন রোড এলাকায় অভিযান চলাকালে দেখা যায়, বোতলের গায়ে থাকা মূল্য মুছে ইচ্ছামতো দামে সয়াবিন তেল বিক্রি করা হচ্ছে। এ সময় এক ব্যবসায়ীকে ১৫ হাজার টাকা জরিমানা করে ৩৪ লিটার সয়াবিন তেল জব্দ করা হয়।

তেলের সঙ্গে গুঁড়া মরিচ-চা বাধ্যতামূলক : সয়াবিন তেল বাজারজাতকারী কম্পানিগুলো এক সপ্তাহ ধরে বরিশালের খুচরা দোকানে তেল সরবরাহ করেনি। হাতে গোনা যে দু-একটি কম্পানি সরবরাহ করছে, তা-ও চুক্তি সাপেক্ষে। আর সেই চুক্তি হচ্ছে, একটি কম্পানির তেলের সঙ্গে মরিচের গুঁড়ার প্যাকেট নিতে হবে। আরেকটি কম্পানির তেলের সঙ্গে বাধ্যতামূলক করা হয়েছে চা-পাতার প্যাকেট।

Leave a Reply