Deprecated: Function WP_Dependencies->add_data() was called with an argument that is deprecated since version 6.9.0! IE conditional comments are ignored by all supported browsers. in /home/amadersa/public_html/wp-includes/functions.php on line 6131
বাড়িতে গ্যাস সি’লিন্ডার থাকলে এই ১০টি ভুল কখন’ই করবেন না

বাড়িতে গ্যাস সি’লিন্ডার থাকলে এই ১০টি ভুল কখন’ই করবেন না

এলপিজি বা সিলিন্ডারের গ্যাস আমাদের অনেকের বাড়িতেই ব্যবহৃত হয় রান্নার কাজে। প্রতিদিনের জীবনে অনেকের জন্যই এটি দরকারি। কিন্তু অসাবধানতার কারণে মাঝেমধ্যে এলপিজি সিলিন্ডার বিস্ফোরণ ঘটে। এতে ভয়াবহ দুর্ঘটনা ঘটতে পারে, এমনকি প্রাণহানিও।

১) গ্যাস সিলিন্ডারের সঙ্গে যে রবার পাইপটি থাকে, সেটিতে ‘আইএসআই’ ছাপ থাকা বাধ্যতামূলক। কিন্তু তার সঙ্গে আরও একটি বিষয় খেয়াল রাখুন, গ্যাসের পাইপটি যেন দৈর্ঘ্যে এক থেকে দেড় ফুটের বেশি লম্বা না হয়। সে ক্ষেত্রে পাইপ পরীক্ষার সময়ে অসুবিধা হবে।

২) রেগুলেটেরর নজলটি যাতে পাইপ দিয়ে ভাল করে কভার করা থাকে, তা লক্ষ্য রাখুন। গরম বার্নারের সঙ্গে যাতে গ্যাসের পাইপ কোনও ভাবে লেগে না থাকে, তা খেয়াল রাখুন।

৩) পাইপটি নিয়মিত ভিজে কাপড় দিয়ে পরিষ্কার করুন, কিন্তু ভুলেও সাবান জল ব্যবহার করবেন না। ২ বছর অন্তর অবশ্যই পাইপটি বদলে ফেলুন।

৪) পরিষ্কার রাখার জন্য গ্যাসের পাইপটিকে কোনও রকমের কাপড় বা প্লাস্টিক জাতীয় জিনিস দিয়ে মুড়ে রাখবেন না। সে ক্ষেত্রে পাইপ ফেটে গেলে বা লিক হলে ধরা পড়বে না।

৫) গ্যাস লিক হচ্ছে বুঝতে পারলে বাড়ির কোনও ইলেক্ট্রিক অ্যাপ্লায়েন্স অন করবেন না। ওভেন, রেগুলেটর বন্ধ করে জানলা, দরজা খুলে দিন।

৬) গ্যাস লিক করার পরে যদি কিছু ক্ষণের মধ্যে গন্ধ বন্ধ না হয়, তাহলে গ্যাস ডিস্ট্রিবিউটরের অফিস বা হেল্পলাইন নম্বরে ফোন করুন (১৯০৬)। সিলিন্ডার থেকে রেগুলেটর আলাদা করে দিয়ে সিলিন্ডারের মুখে সেফটি ক্যাপও পরিয়ে দিতে পারেন।

৭) খালি সিলিন্ডার থেকে গ্যাসের রেগুলেটর খোলার সময় আশেপাশে কোনও মোমবাতি, প্রদীপ জাতীয় জিনিস যাতে না জ্বলে, তা খেয়াল রাখুন।

৮) একটি ঘরে দু’টি সিলিন্ডার রাখার জন্য অন্তত ১০ বর্গফুট জায়গা থাকা জরুরি। এমন জায়গায় সিলিন্ডার রাখবেন না যেখানে সহজেই তা অতিরিক্ত গরম হয়ে যেতে পারে।

৯) সিলিন্ডারের উপররে কখনওই কোনও কাপড়, বাসন ইত্যাদি রাখবেন না।

১০) গ্যাসের ওভেনটি সব সময়ে সিলিন্ডারের অন্তত ছয় ইঞ্চি উপরে রাখুন। ওভেনের উপর যাতে সরাসরি হাওয়া না লাগে, সেদিকে লক্ষ্য রাখুন।

এলপিজি সিলিন্ডারের গ্যাস লিক হতে পারে বিভিন্ন কারণে। হোস পাইপ, রেগুলেটর, গ্যাস ভাল্ব ইত্যাদি থেকে হতে পারে লিক। গ্যাস লিক হলেই বিপত্তি। এ গ্যাস নিশ্বাসের সঙ্গে ফুসফুসে প্রবেশ করে।

ফুসফুসে প্রবেশ করার পর তা অক্সিজেন ও কার্বন ডাইঅক্সাইড এক্সচেঞ্জে (অদলবদলে) বাধা দেয়। এতে দম বন্ধ হওয়ার সমস্যা হতে পারে। ফলে শরীরে অক্সিজেনের ঘাটতি দেখা দেয়। অক্সিজেনের ঘাটতিতে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয় মস্তিষ্ক। মাথা ঝিমঝিম করে, মাথা খালি খালি লাগে, অজ্ঞান হওয়ার সমস্যা হয়।

যেহেতু সিলিন্ডারের গ্যাস খুব বেশি চাপে তরল করে প্রবেশ করানো হয়, তাই এটির বিস্ফোরণও খুব মারাত্মক হয়। এর বিস্ফোরণ হলে শক ওয়েভ ছড়িয়ে পড়ে। এ শক ওয়েভ শরীরের যে অংশে লাগে, সে অংশের ব্যাপক ক্ষতি হয়। অনেক সময় প্রাণহানির ঘটনাও ঘটে। সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয় ফুসফুস। ফুসফুসে রক্ত জমা হতে পারে; সম্পূর্ণ ফুসফুস ছিন্নভিন্ন হতে পারে। প্রাণহানির ঘটনা ঘটে কয়েক মুহূর্তের মধ্যে।

এত বেশি শক্তি উৎপন্ন হয় যে ওই সময় আশপাশে থাকা লোকদের হওয়ায় ভাসিয়ে অনেকদূরে ছিটকে ফেলতে পারে। এতে ভেঙে যেতে পারে হাড়। মাথায়ও আঘাত লাগতে পারে।

সিলিন্ডারের গ্যাস খুব বাজে গন্ধযুক্ত। লিক হলে খুব উৎকট গন্ধ ছড়িয়ে পড়ে। তাই এমন উৎকট গন্ধ পেলে আগুন তো জ্বালাবেন না, উল্টো বাসার বিদ্যুৎ লাইন বন্ধ করে দিন। প্রয়োজনে মেইন সুইচ বন্ধ করুন। দেশলাই, মোমবাতি বা আগুনের অন্য কিছু জ্বালানো যাবে না কোনোভাবেই। ঘরের দরজা-জানালা খুলে বাতাস যাতায়াতের ব্যবস্থা করুন। সিলিন্ডারের রেগুলেটর বন্ধ করুন। সেফটি ক্যাপ লাগান।

যদি সিলিন্ডার বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে, তাহলে আক্রান্তদের খোলা জায়গায় নিতে হবে, যেখানে বাতাস চলাচলের ব্যবস্থা আছে। আক্রান্তদের দ্রুত হাসপাতালে নিতে হবে। কারণ, অক্সিজেন দেওয়ার দরকার হতে পারে।

সিলিন্ডারের গ্যাস যদি শরীরের কোথাও লাগে, ২০ মিনিট ধরে পানি দিয়ে দ্রুত ধুয়ে ফেলুন। কাপড়ে লাগলে কাপড়গুলো খুলে ফেলুন।

যদি চোখে লাগে, তাহলে পানির ঝাপটা দিয়ে চোখ ধুয়ে ফেলুন। শরীরে আগুন লাগলে দ্রুত কাপড় খুলে ফেলুন। মাটিতে গড়াগড়ি দিন। পুড়ে গেলে দ্রুত হাসপাতালে নিন। যদি শরীরে ফোস্কা পড়ে, তা তুলে ফেলবেন না। হাসপাতালে নিয়ে যান দ্রুত।

সিলিন্ডারের গ্যাস লিক থেকেই কিন্তু মূল সমস্যা। তাই সিলিন্ডার লিক হচ্ছে কি না, তা নিয়মিত পরীক্ষা করতে হবে। এটা করার জন্য পানিতে সাবানের গুঁড়া মিশিয়ে ফেনা তৈরি করুন। এবার ফেনা হস পাইপ, রেগুলেটর, ভাল্ব ইত্যাদিতে লাগান। যদি দেখেন সাবান-পানির ফোঁটা বড় হচ্ছে, তাহলে বুঝবেন লিক হচ্ছে গ্যাস। দ্রুত ব্যবস্থা নিন।

সিলিন্ডার উচ্চ চাপ ও তাপের এলাকায় রাখবেন না। রান্না তুলে দিয়ে অন্য কাজে যাবেন না। এতে খাবারে আগুন ধরে সিলিন্ডার বিস্ফোরণ হতে পারে।

রান্না করার সময় কাপড় নিয়ে সাবধান হন। কারণ, কাপড়ে আগুন লেগে পুড়ে যেতে পারে। তাই সাবধান।

Leave a Reply