Deprecated: Function WP_Dependencies->add_data() was called with an argument that is deprecated since version 6.9.0! IE conditional comments are ignored by all supported browsers. in /home/amadersa/public_html/wp-includes/functions.php on line 6131
১০ বছর বয়সী কন্যা সন্তান পরিবারের হাল ধরতে সুবিশাল নারিকেল পাড়ার মতো

১০ বছর বয়সী কন্যা সন্তান পরিবারের হাল ধরতে সুবিশাল নারিকেল পাড়ার মতো ভয়ঙ্কর পেশা বেছে নিয়েছে | স্কুল ছাত্রী বরিশালের স্মৃতি আক্তার

বয়স মাত্র ১২। এই বয়সে কৈশোরের দুরন্তপনায় মেতে থাকার কথা, কিন্তু ভাগ্য তাকে সেই সুযোগ দেয়নি। এর বদলে ঝুঁকি নিয়ে গাছ থেকে নারকেল পাড়ার কাজ করে উপার্জন করতে হচ্ছে তাকে। মাত্র চার-পাঁচ মিনিটেই সুউচ্চ নারকেলগাছে চড়তে পারে সে। বিস্ময়কর এই গেছো বালিকার নাম স্মৃতি আক্তার।

Read More: মা হলেন অভিনেত্রী নুসরাত, বাবা হয়নি কেউ | নুসরাতের সন্তানের নাম যশরত!

বরিশালের গৌরনদী উপজেলার উত্তর পালরদী গ্রামের আনোয়ার হাওলাদারের মেয়ে স্মৃতি।স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বাবা, মা, স্ত্রী ও চার সন্তান নিয়ে আট সদস্যের পরিবার দিনমজুর আনোয়ার হাওলাদারের। করোনা পরিস্থিতির আগে টেনেটুনে হলেও সংসার চলছিল, কিন্তু করোনার কারণে আনোয়ার হাওলাদারের উপার্জন একেবারে তলানিতে। এই অবস্থায় বাবার পাশে দাঁড়ানোর ইচ্ছা পোষণ করে মেজো মেয়ে স্মৃতি।

আগে থেকেই বিভিন্ন গাছে চড়তে ভালো লাগে তার। আর সেটাকেই উপার্জনের হাতিয়ার হিসেবে বেছে নিয়েছে স্মৃতি। সরু ও পিচ্ছিল হওয়ায় নারকেলগাছে চড়তে অনেকেই ভয় পায়, কিন্তু স্মৃতি সহজেই নারকেলগাছে চড়তে পারে।

আর তার এই গুণটিকেই লুফে নিয়েছে এলাকাবাসী। যত বড় নারকেলগাছ হোক না কেন—সেখান থেকে চার-পাঁচ মিনিটেই নারকেল পেড়ে নিয়ে আসতে পারে স্মৃতি। বর্তমানে প্রতিদিন ছোট-বড় চার-পাঁচটি নারকেলগাছে ওঠে সে। এ জন্য গাছপ্রতি গড়ে ১০০ টাকা করে নেয়।

এতে প্রতিদিন গড়ে তার আয় হয় ৪০০-৫০০ টাকা। শুধু এই উপার্জনেই থেমে থাকেনি স্মৃতি। চারটি গরু ও ছয়টি ছাগল লালন-পালন করে সে। অন্যদিকে সংসারের অভাব মেটাতে অসুস্থ মা খাদিজা বেগম কাঁথা সেলাই করেন। এদিকে দীর্ঘদিন পর আবার স্কুল খুলতে যাচ্ছে। করোনার আগে নিয়মিত স্কুলে গেলেও আগামী দিনে হয়তো বা সেই ভাগ্য হবে না স্মৃতির। কারণ তার এই আয়ের পথ বন্ধ হলে আট সদস্যের সংসার চালাতে হিমশিম খাবেন মা-বাবা।

তবে ভাই-বোনদের সুশিক্ষিত করার স্বপ্ন দেখে স্মৃতি।গত বুধবার কথা হয় স্মৃতি আক্তারের সঙ্গে। নারকেলগাছে চড়ার মতো ঝুঁকিপূর্ণ কাজ করার ব্যাপারে জানতে চাইলে স্মৃতি জানায়, মা-বাবার কষ্ট তার সহ্য হয় না। মা-বাবাকে একটু সহায়তা করতেই এমন কাজ বেছে নিয়েছে সে। তা ছাড়া স্মৃতি বিশ্বাস করে, ছেলেরা যে কাজ করে—তা চেষ্টা করলে মেয়েরাও করতে পারে। ভবিষ্যতে একটি গরুর খামার করার স্বপ্ন দেখছে স্মৃতি।

Read More: বাংলাদেশের সেরা মেডিকেল কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় Top Private Medical Colleges in Bangladesh সরকারি মেডিকেল কলেজ

স্মৃতি আক্তারের মা খাদিজা বেগম বলেন, ‘ও আমার মেয়ে না, ছেলের চেয়েও বেশি। আমরাও ওর কাজ দেখে অবাক হয়ে যাই। নারকেলগাছে শখের বশে উঠতে গিয়ে এখন তা আয়ের পথ হিসেবে বেছে নিয়েছে। তবে আমরা এখন উঠতে নিষেধ করি, কিন্তু কৌতূহলী মানুষের কারণে ওকে প্রতিদিনই কোনো না কোনো নারকেলগাছে উঠতে হয়।’

স্মৃতির দাদি নিলুফা বেগম বলেন, ‘ঘরের মধ্যে আমরা তিনটা মানুষ অসুস্থ। চাইছিলাম গরু কয়টা বেইচা দিম, কিন্তু ওর জন্য পারিনি। ওর ইচ্ছা, এই গরু দিয়া অনেক বড় খামার করবে।’

উত্তর পালরদী গ্রামের বাসিন্দা ব্যবসায়ী কাবিল গাইন বলেন, ‘মেয়েটি খুবই ভালো। অভাবের সংসারে মা-বাবাকে সহায়তা করছে। তবে তার কাজটা কিছুটা ঝুঁকিপূর্ণ। আমি চাই, মেয়েটি পড়াশোনাটা চালিয়ে যাক। এ অবস্থায় তার পরিবারের পাশে দাঁড়াতে স্থানীয় প্রশাসনের সুদৃষ্টি কামনা করছি।’

Leave a Reply