অনুপ্রেরণামূলক ভাষণ | Motivational Speaker মোটিভেশনাল স্পিকার || হয়ে উঠুন নিজেই নিজের Motivational Speaker!

“ইচ্ছা থাকলে উপায় হয়” এমন প্রবাদ আমরা ছোটবেলা থেকেই শুনে আসছি। নিজেকে নিজে মোটিভেটেড করার জন্য সবচেয়ে প্রয়োজনীয় জিনিসটা হচ্ছে, কোনো কিছু অর্জনের তীব্র ইচ্ছা।

তবে শুধু ইচ্ছা থাকলেই হবে না, সেই ইচ্ছাকে বাস্তবায়ন করার জন্য আরো তিনটা জিনিস মেনে চললে আপনি নিজেই হয়ে উঠতে পারবেন নিজের মোটিভেশনাল স্পিকার; আত্নবিশ্বাস, মনোযোগ এবং সুষ্ঠু দিক নির্দেশনা। আজকে এই তিনটা বিষয় কীভাবে মেনে চলা যায় তা নিয়েই বিস্তারিত দেখব।

১। ভয়কে জয় করুন

আমাদের সবচেয়ে বড় সমস্যা হচ্ছে, আমরা “কী চাই” এর থেকে বেশি গুরুত্ব দেই “কী চাই না” তাতে। মনে করুন, আপনি কাউকে কিছু উপহার দিতে চান। আপনার মাথায় নিজের অজান্তেই সবার আগে আসবে যে, সে যদি এটা পছন্দ না করে?

কিন্তু, আপনি এটা কখনো ভাববেন না যে সে এটা পছন্দ করার কথা। এই নেতিবাচক ভয়টাকে জয় করতে হবে। এমন ভয়ের মাঝে থাকলে আপনি তো কোনো সুফল পাবেনই না বরং এই ভয়টাই ধীরে ধীরে আপনাকে হতাশায় ডুবিয়ে অতিষ্ট করে তুলবে।

২। লক্ষ্য নির্ধারণ এবং তা অর্জনের চেষ্টা করুন

নেতিবাচক ভয়টাকে মাথা থেকে দূরে সরিয়ে দেয়ার পরের ধাপ হচ্ছে সবকিছুকে ইতিবাচক দৃষ্টিতে দেখা। “আমি পরীক্ষায় খারাপ করতে চাই না” এমনটা না ভেবে, ঠিক করুন যে, “আমি পরীক্ষায় ভাল করতে চাই”।  এখন আপনার কাজ হচ্ছে, পরীক্ষায় ভাল করার জন্য কী কী করতে হবে তা ঠিক করে ফেলা এবং সে অনুযায়ী কাজ করা।

৩। এক সময় একটা জিনিসে মনোযোগ দিন

আপনি যদি একসাথে অনেকগুলো কাজ করার সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেন, তাহলে কোনো কাজই ঠিক মত করা হবে না তাই এক সময় একটা কাজকেই প্রাধান্য দিন, তার প্রতিই রাখুন আপনার সব মনোযোগ।

একটা কাজ শেষ হলেই পরবর্তী কাজে হাত দিন। দরকার হলে একটা কাজকেই ছোট ছোট ভাগে ভাগ করে নিন। একটা ভাগ শেষ হলে তবেই পরবর্তী ভাগে হাত দিন।

 

আরও পড়ুন: সদগুরু জাগ্গি বাসুদেব জীবনী

৪। সব কাজকে আনন্দময় করে তুলুন

নিজের কথা চিন্তা করুন, যেই কাজটা দিনের পর দিন আপনাকে ক্লান্ত করে তুলছে, তাকে বাদ দিয়ে দিন। যদি বাদ দিতে না পারেন, তবে কাজ করার ধরণটাকে বদলে ফেলুন। যেমনটা শুরুতে বলেছিলাম, ইচ্ছা থাকলে উপায় হয়।

আপনি ফিট থাকতে চান কিন্তু জিম করার ইচ্ছা একেবারেই নেই? অ্যারোবিক্স করুন! সবকিছুরই একটা না একটা বিকল্প রয়েছে।

৫। পড়াশোনা করুন

আপনার ইচ্ছা যদি হয় অনেক বড় লেখক হবার, তাহলে বিখ্যাত লেখকদের জীবনী পড়ুন। তারা কীভাবে এত বড় হয়েছে, লেখক হবার জন্য তারা কী কী বাধার সম্মুখীন হয়েছে তা সম্পর্কে জানুন। তাঁদের জীবনীর সাথে নিজেকে তুলনা করে দেখুন আপনি বর্তমানে কোথায় অবস্থান করছেন।

৬। নিজেকে পুরষ্কৃত করার ব্যবস্থা করুন

ভাগ্য যে সবসময় আপনাকে পুরষ্কৃত করবে, এমনটা না। তাই সবকিছু ভাগ্যের উপর না ছেড়ে দিয়ে, ছোট ছোট লক্ষ্যগুলো যখন অর্জিত হবে তখন নিজেই নিজেকে পুরষ্কৃত করার ব্যবস্থা করুন। যেমন ধরুন, আপনি কালকের পরীক্ষার জন্য একটা অধ্যায় শেষ করেছেন? এক কাপ কফি বানিয়ে খান।

 

৭। গ্লাসের খালি অংশটা না দেখে, ভরা অংশটা দেখুন

জীবনে কী পাননি তা নিয়ে হতাশাগ্রস্ত না হয়ে, বরং কী পেয়েছেন তার জন্য কৃতজ্ঞ থাকুন। যখনই মনে হবে যে, ইশ! আমার যদি এটা থাকত! তখনই মনে করবেন যে, আমার এটা নেই কিন্তু, ঐটা তো আছে!

দরকার হলে একটা তালিকা করুন জীবনে কী কী পেয়েছেন, কী কী অর্জন করেছেন তার। এরপরও যখনই শূন্যতা অনুভব করবেন, ঐ তালিকাটা পড়ে নিবেন।

৮। জানুন কোথা থেকে শুরু করবেন

আগে ঠিক করুন কী করতে চান আপনি। এরপর কোথা থেকে শুরু করবেন তাও ঠিক করে ফেলুন। মনে করুন, আপনি হাতখরচের জন্য একটা পার্টটাইম চাকরি করতে চান, তাহলে বিডিজবস কিংবা ফেসবুকের গ্রুপের মাধ্যমে আপনার যোগ্যতা এবং আগ্রহের উপর ভিত্তি করে চাকরি খোঁজা শুরু করে দিন।

ছোট ছোট ঘটনাগুলো নিয়ে বারবার চিন্তা না করে তিলকে তিলই থাকতে দিন

৯। থাকুন সবসময় ইতিবাচকতার মাঝে

পৃথিবীতে আশাবাদী মানুষদের থেকে নিরাশাবাদী মানুষের সংখ্যা নিরাশাজনকভাবে অনেক বেশি। আপনি যদি আজকে দশজন মানুষের সামনে ঘোষণা করেন যে, আপনি আজ থেকে সবসময় খুশি খুশি থাকবেন, অন্তত দুইজন মানুষ আপনাকে বোঝাবে যে কেন আপনি খুশি থাকতে পারবেন না।

এ ধরণের মানুষের থেকে একটু দূরে দূরে থাকাই শ্রেয়। তবে, কিছু সময় আবার আপনার ভেতরে ভাল কিছু করার জেদ চাপানোর জন্য এই ধরণের মানুষই অনেক কাজে আসে।

১০। শুরুটা হোক ছোট

আমি কোটিপতি হব- শুরুতেই এমন একটা লক্ষ্য নির্ধারণ না করে বরং শুরুতে ছোট কিছু নিয়ে চিন্তা করুন। যেমন, আমি এ মাসে অন্তত দশ হাজার টাকা উপার্জন করব। তাহলে আপনার উপর চাপ কম পড়বে এবং আপনি সহজে সন্তুষ্ট হতে পারবেন।

ঠিক এভাবে দিনের শুরুটাও ছোট ছোট কাজ দিয়ে করুন এবং আস্তে আস্তে বড় কাজে হাত দিন। এতে করে ওয়ার্ম আপ হবে। খুব প্রয়োজন ছাড়া দিনের শুরুটাই বড় কোনো কাজ দিয়ে করতে যাওয়াটা খুব একটা ভাল সিদ্ধান্ত না।

১১। কল্পনা করুন

“Little Miss Shunshine” মুভিটাতে শুরুতেই দেখা যায় অলিভ, মিস আমেরিকা কনটেস্ট ফুটেজ থেকে নিজেকে ঐ জায়গায় কল্পনা করতে থাকে। এভাবে অবসরে আপনিও যদি আপনার লক্ষ্যটা নিয়ে কল্পনা করেন যে, একবার লক্ষ্য অর্জন করতে পারলে অবস্থাটা কেমন হবে তাহলে দেখবেন লক্ষ্যার্জনের জন্য কাজ করার স্পৃহা আরো কত বেড়ে গেছে।

 

১২। সবকিছু নিয়ে উত্তেজনাটা রাখুন

আপনার সাথে যা কিছুই হোক না কেন, তা নিয়েই অনেক উত্তেজিত থাকুন। আর যেহেতু রেগুলার জিনিসগুলো নিয়ে বারবার উত্তেজিত হওয়া যায় না তাই মাঝে মাঝেই নতুন কিছু করার চেষ্টা করুন। রেগুলার কাজগুলোকেও পারলে অন্যভাবে করার চেষ্টা করুন।

১৩। Sharing is Caring!

খুশির খবর সবাইকে বললে যেমন খুশি বেড়ে যায়, তেমনি দুঃখের খবরগুলো শেয়ার করলে দুঃখটা কমে যায় তাই খবর যাই হোক না কেন, নিজের মাঝে চাপা না রেখে মানুষকে জানান।

১৪। ছোট ব্যাপারগুলো ছোটই থাকুক

ছোট ছোট ঘটনাগুলো নিয়ে বারবার চিন্তা না করে তিলকে তিলই থাকতে দিন, তাল বানানোর দরকার নেই।

 

Leave a Reply