আট বছরের ভাইয়ের কোলে দু্ই বছরের ভাইয়ের নিথর দেহ

সাদা কাপড়ে ঢাকা দেহের থেকে বাইরে বের হয়ে রয়েছে হাতটুকু। মাথাটা পরম যত্নে রাখা কোলের ওপর। ২ বছরের ভাইয়ের দেহ এভাবেই নিয়ে দেয়ালে হেলান দিয়ে শূন্য দৃষ্টিতে তাকিয়ে রয়েছে আট বছরের শিশু গুলশন। ভারতের মধ্যপ্রদেশের মোরেনা শহরের এই ছবিটা যেন চরম অসহায়তার এক দলিল। খবর আনন্দবাজার ও এনডিটিভি। প্রতিবেদনে বলা হয়, মোরেনা শহরে এক স্থানীয় সাংবাদিকের ক্যামেরায় এক শিশুর এমনই অসহায়তার ছবি ধরা পড়েছে। এই দৃশ্য দেখে স্থানীয়রা পরিচয় জানতে চাইলে ওই শিশু জানায়, তার নাম গুলশন। তার কোলে যে দেহটি রয়েছে, সেটি তার দু’বছরের ভাই রাজার। কিছুক্ষণ আগেই হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়েছে। খবরে বলা হয়, দু’বছরের সন্তানের চিকিৎসা করাতে অম্বার বদফ্রা গ্রাম থেকে মোরেনা জেলা হাসপাতালে এসেছিলেন বাবা পুজরাম জাটভ। সঙ্গে এনেছিলেন বড় ছেলে গুলশনকেও।

ধর্ম অবমাননার গুজব ছড়িয়ে আর শিক্ষককে লাঞ্চিত করলে গুজব রটনাকারীর বিচার হবে? Dulal Chowdhury

গ্রামের হাসপাতালে চিকিৎসা করানো যায়নি। তাই শহরের জেলা হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়েছিল ছোট ছেলেকে। তারপরেও বাঁচানো যায়নি তাকে। ছোট ছেলের মৃত্যুর পর তার দেহ নিয়ে গ্রামে ফিরে যাওয়ার সময় বাবা পুজরাম দেখেন, যে অ্যাম্বুলেন্সটি তাদের নিয়ে এসেছিল, সেটি ফিরে গিয়েছে। জেলা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে অ্যাম্বুলেন্স চেয়েও পাননি তিনি। ফলে ছেলের দেহকে কাপড়ে মুড়ে হাতে নিয়েই হাসপাতাল ছাড়তে হয় পুজরামকে।

পুজরাম বলেন, হাসপাতালের ঠিক বাইরে একটি অ্যাম্বুলেন্স দাঁড়িয়ে ছিল। চালককে নিয়ে যেতে বলেছিলাম। কিন্তু ও দেড় হাজার টাকা চাইছিল। অত টাকা দেয়া আমার পক্ষে সম্ভব নয়। তাই রাস্তায় বেরিয়ে গাড়ি খুঁজছিলাম। রাস্তার এক পাশে গুলশনকে বসিয়ে তার কোলে ছোট ছেলের দেহ রেখে নিজে গাড়ি খুঁজতে বেরিয়েছিলেন পুজরাম। তারপরেই গোটা বিষয়টি স্থানীয়দের নজরে আসে। পুলিশ জানায়, এক স্থানীয় থানায় খবর দেন। এরপরেই পুজরামদের গ্রামের ফেরানোর ব্যবস্থা করা হয়। জেলা হাসপাতালে পাঠানো হলে শেষমেশ সেখান থেকেই অ্যাম্বুলেন্স দেয়া হয় তাদের।

Leave a Reply