নিধিরামের দুই পূত্র সুবোধ অবোধ নাম।
সুবোধ বালক ভীষন চতুর অবোধ বোকারাম।
নিধিরামের চিন্তা ভারি, জীবন রবি পাটে।
অবোধ বোকার দুস্চিন্তায়, দিবা-নিশি কাটে।
ভেবে চিন্তে জমি-জমা, করেদিল ভাগ।
দুভাইয়ে মধ্য আর থাকলোনা বিবাদ।
ভিন্ন ভাতে বাপ খুশি,ছাড়ে নিধি হাপ।
ক’দিন পর অক্কা পেল, দু’ভাইয়ের বাপ।
বাকি ছিল আমগাছ, ছিলো পালের গাভি
ওটাও ভাগ করতে হবে, দু ভাইয়ের দাবি।
ভাগের বোঝা দাদার সোজা, ছেড়ে দিল ভার।
মৃদু হেসে সুবোধ ভাবে, করবো বাজিমাত।
গাছের নিলাম মাঝের উপর, গাভির মাঝের পিছে।
সমান ভাগ করব ভাই, ভাবিসনে তুই মিছে।
আমি হলাম সুবোধ বালক, সরল আমার মন।
আমার মত সঠিক বন্টন করবে কোন জন?
কম্বল কি হবে দাদা,বুঝাইয়া মোরে বলো?
রাতের বেলা আমার হবে,দিনে হবে তোরও।
দাদার মধুর বচন শুনে ভরে বোকার মন।
পাড়ায় ঘুরে বোকা করে ভাগের বর্নন।
পাড়ার কাকা শুনে বলে, ওরে বোকা থাম।
দাদার ভাগের নিরপেক্ষতার তুই দিবি প্রমাণ।
পাকা আমের আশে দাদা ওঠে আম গাছে।
কুড়াল দিয়ে গাছ কাটবি তোর ভাগের সিদে।
কম্বলটিকে জলে ভিজে সন্ধ্যায় দিবি জমা।
শীতের ঠকঠকানিতে দাদা পাবে বড় মজা।
দোহন করবে গাভি তখন মাথায় দিবি ঝোকা।
বুঝতে দাদা পারবে তখন সত্যি কি তুই বোকা!
পাড়ার কাকার কথা মত যেই করল কাজ।
বড় ভাইয়ের মাথায় তখন পড়ল জোরে বাজ।
দেখলো দাদা গাছে উঠে খাচ্ছে আম পাড়ি।
কুড়াল দিয়ে কোপ মারল গাছের কান্ডের গুড়ি।
প্রানো ভয়ে সুবোধ বলে থামরে ভাই থাম।
অর্ধেক আম তোর হবে অর্ধেক আমার।
আমার ভাগে যা করি ভাই, ক্ষতি কিবা তাতে?
লবন ছিটে দেইনি দাদা তোমার বাড়া পাতে।
দুধ দোহনে সুবোধ যখন ধরল হাতে বাটি।
অবোধ তখন গাভির মাথায় জোরে মারে লাঠি।
গাভি মারে জোরে চাটি, ছুটল হাতের বাটি।
সুবোধ বলে ওরে ভাই, ছুটছে দাঁতের পাটি।
সুবোধ বলে ওরে অবোধ ধরছি তোর হাত।
যা আছে ভাই সব দুজনার সমান করবো ভাগ।
স্বার্থপরের স্বার্থের চিন্তা সদা থাকে মনে।
মিষ্টি কন্ঠে কথা বলে, গরল থাকে প্রাণে।
হিতাহিত জ্ঞান থাকেনা তার, লোকে যাহা বলে।
আর্তের স্বার্থ রক্ষা পায় ভাই, স্বর্থপরই ফোটে।।
৷৷ ৷ ৷৷৷৷৷৷৷৷৷৷৷৷৷৷৷৷ (সমাপ্ত) ///////////////////////