একজন সুস্থ ও স্বাভাবিক নারীর ১০ টি লক্ষণ, হার্ট সুস্থ রাখার ৯ উপায়,নারীর স্বাস্থ্য সম্পর্কে যা জানা থাকা উচিত

নারীর স্বাস্থ্য সচেতনতা নারী স্বাস্থ্য সমস্যা, #নারীরস্বাস্থ্য টিপস আজীবন সুস্থ থাকার উপায়, সারা জীবন সুস্থ থাকার উপায় ,মানসিকভাবে সুস্থ থাকার উপায়, দীর্ঘদিন সুস্থ থাকার উপায়, কম ঘুমিয়ে সুস্থ থাকার উপায়,একজন সুস্থ ও স্বাভাবিক নারীর ১০ টি বৈশিষ্ট্য

নারীদের হার্ট সুস্থ রাখার ৯ উপায় পুরুষদের চেয়ে নারীদের হার্ট অ্যাটাক হয় কিছুটা দেরিতে, আরো বেশি বয়সে৷ তবে নারীদের ক্ষেত্রে এমটা নাকি ঘটে নাটকীয়ভাবে, যে জন্য তা সহজে বোঝা যায় না৷ তাই নারীর হৃদপিণ্ডকে সুস্থ রাখতে বিশেষজ্ঞদের দেয়া কিছু উপায় থাকছে ছবিঘরে৷

৩০ মিনিট ব্যায়াম বা হাঁটাচলা

হার্ট সুস্থ রাখার মূলমন্ত্র ব্যায়াম অথবা খেলাধুলা৷ তবে দেখা যায় চাকরি, সন্তান, সংসার – এ সব নানা কারণে মহিলাদের নিজের দিকে নজর দেবার সময় থাকে না৷ ফলে অবহেলিত হয় শরীরচর্চার দিকটা৷ অথচ হার্ট অ্যাটাক বা স্ট্রোকের ঝুঁকি কমাতে প্রতিদিন ৩০ মিনিট জোড়ে জোড়ে হাঁটলেই যথেষ্ট উপকার হয়৷ এ কথা বলেন আরেক মার্কিন ‘কার্ডিওলজিস্ট’ ডা. আন মেকলাফলিন৷ব্লাডপ্রেশার ও কোলেস্টোরল

নিয়ন্ত্রণে রাখা প্রতিটি নারীর উচিত নিয়মিত ব্লাডপ্রেশার মাপা এবং কোলেস্টোরল নিয়ন্ত্রণে রাখা, বিশেষ করে যাঁদের বয়স ৩৫ বছরের বেশি৷ এছাড়া প্রতি দু’বছর অন্তর শরীরের পুরো চেকআপ করানো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ৷ এর সঙ্গে সঙ্গে লক্ষ্য রাখতে হবে, শরীরের ওজন যাতে ঠিক থাকে, এমনটাই বলেন বিশেষজ্ঞরা৷

খাওয়া-দাওয়া

স্বাস্থ্যের কথা এলেই চলে আসে খাওয়া-দাওয়ার কথা৷ স্বাস্থ্যকর খাবার যে হৃদপিণ্ডকে সুস্থ রাখে, তা বলার অপেক্ষা রাখে না৷ যুক্তরাষ্ট্রের মাউন্ট সিনাই হাসপাতালের হৃদরোগ বিশেষেজ্ঞ ডা. বেথ অলিভার বলেন, ‘‘প্রতিদিন, প্রতিবেলায় বিভিন্ন রঙের ফল ও সবজি এবং যথেষ্ট পরিমাণে আঁশযুক্ত খাবার খান৷ মাংসের পরিবর্তে খান মাছ৷ তার সঙ্গে পানি, আপেল ও বিভিন্ন বাদাম বেশি করে খান আর কম খান চিনি, কফি বা চিনিযুক্ত পানীয়৷

নারীর স্বাস্থ্য সম্পর্কে যা জানা থাকা উচিত

* বয়স্কতার ছাপ প্রতিরোধের পরামর্শ মেনে চলুন বেঁচে থাকলে একজন নারীকে বৃদ্ধা হতেই হবে এটা অনিবার্য সত্য। এসময় শরীরে বয়স্কতার ছাপ পড়বেই। এটা প্রকৃতির স্বাভাবিক একটি প্রক্রিয়া। তবে অনেক নারী তরুণ বয়সেই বুড়িয়ে যায়। কিন্তু কেন এমনটা হয়? এর অন্যতম কারণ হলো অস্বাস্থ্যকর জীবনযাপন। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে পুষ্টিকর খাবার খেয়ে, নিয়মিত শরীরচর্চা করে ও নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করে অকাল বয়স্কতা প্রতিরোধ করা যেতে পারে।

ধূমপান ও মদপানের মতো বদভ্যাসগুলো পরিহার করতে হবে। মানসিক দুর্দশাও বয়স্কতাকে ত্বরান্বিত করে। মানসিক চাপ বা বিষণ্নতায় আচ্ছন্ন হলে থেরাপিস্টের পরামর্শ নিন। গবেষণায় পাওয়া গেছে, মন দুর্দশাগ্রস্ত হলেও শরীরও ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ত্বকের সৌন্দর্য ধরে রাখতে তথা বিভিন্ন রকম দাগ এড়াতে এবং ক্যানসারের ঝুঁকি কমাতে রোদে বের হওয়ার আগে সানস্ক্রিন মেখে নিন। ত্বকে অস্বাভাবিকতা লক্ষ্য করলে ডার্মাটোলজিস্টের কাছে যেতে হবে।

* যৌনজীবনকে সুস্থ রাখার উপায় অনুসরণ করুন নারী-পুরুষ উভয়ের ক্ষেত্রে সুস্থ যৌনজীবনের গুরুত্ব অনস্বীকার্য। এই জীবনের সুস্থতা ব্যতীত কাঙ্ক্ষিত আনন্দলাভ সম্ভব নয়। গোপনাঙ্গের সুরক্ষায় নারীকে পুরুষের চেয়ে বেশি সচেতন থাকতে হয়। এর অন্যতম কারণ হলো, নির্দিষ্ট সময়ান্তরে নারীর যৌনজীবনে ব্যাপক পরিবর্তন আসে।

দৌড়ানো কিংবা ভারী কোনো কাজ করার পর হার্ট বিটের অবস্থা খেয়াল করুন। যদি আপনার হার্ট বিট ৫-১০ মিনিটের মধ্যে স্বাভাবিক হয়ে যায় তবে বুঝবেন আপনি সুস্থ আছেন।

– খাবারের সময় যদি হঠাৎ একদিন পরিবর্তন হয় এবং এতে করে যদি আপনার বুক জ্বালাপোড়া এবং বাথরুমের কোনো সমস্যা না হয় তবে বুঝবেন আপনি সুস্থ আছেন। মাত্র ১ দিনের খাদ্যের সময়সূচী পরিবর্তনে বুকজ্বালাপোড়া হলে তা অসুস্থতার লক্ষণ।

– একজন সুস্থ নারী হিসেবে আপনার ১০টি বা এর কাছাকাছি পুশআপ করার ক্ষমতা থাকবে। পুশআপ করার অভ্যাস থাকলে আজই চেষ্টা করে দেখুন পুশআপ করতে পারেন কিনা।

* শরীরচর্চা করুন সক্রিয়তার দিক থেকে নারীরা পুরুষদের পেছনে পড়ে আছে। হয়তো একারণে রোগে নারী মৃত্যুর প্রধান কারণ হলো হৃদরোগ। বিশেষজ্ঞদের মতে, হৃদরোগ প্রতিরোধের সর্বোত্তম উপায় হলো শরীরচর্চা। শারীরিক সক্রিয়তা হৃদযন্ত্রকে শক্তিশালী করে তোলে। এটি মানসিক ও হাড়ের স্বাস্থ্যেও সহায়ক।

৩০ মিনিট করে প্রতিসপ্তাহে চারদিন শরীরচর্চার সূচি তৈরি করুন। শুরুতেই খুব কঠিন শরীরচর্চা করতে হবে এমনকোনো কথা নেই। অ্যারোবিক বা কার্ডিও এক্সারসাইজ দিয়ে শুরু করতে পারেন। এর মধ্যে হাঁটা, ধীরে দৌঁড়ানো, নাচ ও সাঁতার অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। এছাড়া আরো অনেক শরীরচর্চা রয়েছে যা হৃদযন্ত্রকে প্রভাবিত করতে পারে।

একঘেয়েমি এড়াতে একেক সময় একেক শরীরচর্চা করতে পারেন। সর্বোচ্চ স্বাস্থ্য ও ফিটনেসের জন্য কেবল কার্ডিও যথেষ্ট নয়। কার্ডিওতে অভ্যস্ত হওয়ার পর এর পাশাপাশি স্ট্রেংথ ট্রেইনিং করা উচিত। কার্ডিও বা অ্যারোবিক এক্সারসাইজ হৃদযন্ত্র, ফুসফুস ও সংবহনতন্ত্রকে সুস্থ রাখবে। অন্যদিকে স্ট্রেংথ ট্রেইনিং পেশি গঠন করবে, বিপাক বাড়াবে ও হাড়কে মজবুত করবে। এই ধরনের শরীরচর্চা সেসব নারীদের জন্য বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ, যাদের মাসিক চক্রের স্থায়ী সমাপ্তি ঘটেছে।

* সুষম খাবার খান স্বাস্থ্যকর জীবনযাপনের মূল ভিত্তি হলো পুষ্টিকর খাদ্যতালিকা।নারীর সার্বিক সুস্বাস্থ্যের জন্য ওজনকে নিয়ন্ত্রণে রেখে সুষম খাবার খেতে হবে। পুষ্টিকর খাবার খাওয়ার পাশাপাশি অস্বাস্থ্যকর খাবার এড়িয়ে চলতে হবে। খাদ্যতালিকায় বেশি করে সতেজ ফল, শাকসবজি, গোটা শস্য, বিনসের মতো ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার, মাছ, কম চর্বির মাংস, বাদাম/বীজ/অলিভ অয়েলের মতো স্বাস্থ্যকর চর্বি ও কম চর্বির দুগ্ধজাত খাবার রাখুন।

সুষম খাদ্যতালিকার অনুসরণ ওজন নিয়ন্ত্রণের মূল ভিত্তি হিসেবে কাজ করে। এর বিপরীতে মানহীন খাবার খেলে ওজন বেড়ে যায়। বহুবিধ রোগের ঝুঁকি কমাতে ওজনকে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। গবেষণায় দেখা গেছে- স্থূলতায় ক্যানসার, ডায়াবেটিস, হৃদরোগ ও অন্যান্য রোগের ঝুঁকি উপরের দিকে ওঠে। নিয়মিত ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার খেলে পেট দীর্ঘসময় ভরা থাকে, যার ফলে অস্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়ার প্রবণতা কমে যায়। এভাবে ওজন নিয়ন্ত্রণে থাকে ও সুস্থ জীবনযাপন সম্ভব হয়।

* প্রয়োজনীয় ভিটামিন গ্রহণ করুন নারীর বয়স ও স্বাস্থ্য বিবেচনায় মাল্টিভিটামিন সাপ্লিমেন্ট সেবনের প্রয়োজন হতে পারে। কোনো ভিটামিন সাপ্লিমেন্ট সেবনের পূর্বে চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়া ভালো। তবে স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা পুষ্টিকর খাবার খেয়েই শরীরে প্রয়োজনীয় ভিটামিন যোগানোর পক্ষপাতী।

শরীরের জন্য যেসব পুষ্টি প্রয়োজন তা পেতে খাদ্যতালিকায় বৈচিত্র্যতা আনুন, যেমন- নানা রঙের ফল ও শাকসবজি খেতে পারেন। বিভিন্ন ধরনের স্বাস্থ্যকর খাবার খেলে কেবল ভিটামিন নয়, মিনারেল ও ফাইবারের চাহিদাও মিটবে। নারী জীবনের পর্যায় অনুসারে কিছু পুষ্টির ওপর প্রাধান্য দিতে হবে, যেমন- গর্ভবতী নারীদের ফোলেট, আয়রন, ক্যালসিয়াম, ডিএইচএ, আয়োডিন ও ভিটামিন ডি সমৃদ্ধ খাবার খাওয়া উচিত।

একজন সুস্থ স্বাভাবিক নারীর সাধারণ অবস্থায় হার্টবিট রেট হবে ৬৫-৭০ বা এর কাছাকাছি। সুস্থ আছেন কিনা জানতে চাইলে আজই পরীক্ষা করে দেখুন।

– একজন সুস্থ দেহের নারীর প্রস্রাবের রঙ হালকা হলুদ হয়। এতে বোঝা যায় কিডনি সুস্থ রয়েছে এবং দেহে পরিমান মতো পানি রয়েছে।

সুস্থ দেহের অধিকারী নারীর ওজন উচ্চতা অনুযায়ী আদর্শ ওজনের ৫ কেজি কম বেশি হতে পারে, কিন্তু এর বাইরে নয়। এবং এই ওজনের তারতম্য অনেক কম ঘটবে। অর্থাৎ খুব হঠাৎ ওজন বেড়ে যাওয়া এবং হঠাৎ ওজন কমে যাওয়ার মতো ঘটনা ঘটবে না।

– মাসিকের সময়সূচী থেকে একজন নারীর সুস্থতা নির্ণয় করা যায়। যদি প্রতি ২৮-৩০ দিন পর পর মাসিকের সময়সূচী নির্দিষ্ট থাকে তাহলে বুঝে নেবেন আপনার শারীরিক সুস্থতা বজায় আছে (বছরে ১ বার সময়সূচী পরিবর্তিত হতে পারে)।

– যদি ছোটোখাটো কাটাছেঁড়া হলে রক্ত পড়া ২/৩ মিনিটের মধ্যে বন্ধ হয় এবং ক্ষত স্থান দ্রুত শুকিয়ে যায় তবে বুঝবেন আপনার রক্তে কোনো সমস্যা নেই এবং আপনি সুস্থ দেহের অধিকারী একজন নারী।

– চুলের দিকে লক্ষ্য করুন ভালো করে। চুলের মসৃণতা খেয়াল করুন এবং চুল পড়ার হারের প্রতি নজর রাখুন। চুল মসৃণ থাকলে এবং দিনে ১০০ চুল পড়লে বুঝে নেবেন আপনি সুস্থ আছেন। যদি চুল রুক্ষ থাকে এবং চুল পড়ার মাত্রা বেড়ে যায় তবে বুঝবেন আপনার দেহে ভিটামিনের অভাব রয়েছে।

– ডাক্তার এবং স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে একজন সুস্থ দেহের নারী এলার্ম এবং অন্য কারো সাহায্য ছাড়াই প্রতিদিন সকালে প্রায় একই সময়ে ঘুম থেকে উঠতে পারেন এবং ঘুমের সময়কাল ৬-৮ ঘণ্টা ব্যপী হয়। এর থেকে কম বা বেশি ঘুম অসুস্থতার লক্ষণ।

পুরুষের সঙ্গে সহবাসের ক্ষেত্রে নারীকে যৌন স্বাস্থ্যের সুরক্ষায় বিশেষ সচেতন থাকতে হয়, যেমন- যৌনবাহিত রোগ প্রতিরোধ, উপযুক্ত জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি গ্রহণ বা পরিবার পরিকল্পনা এবং নিয়মিত প্রজননাঙ্গের ডাক্তারি পরীক্ষা। নারীদের যৌনাকাঙ্ক্ষা কমে গেলে, সহবাসের সময় চূড়ান্ত যৌনসুখ পেতে ব্যর্থ হলে, পুরুষের আদর-সোহাগে যথেষ্ট প্রতিক্রিয়া না হলে, যৌনাঙ্গে প্রাকৃতিক পিচ্ছিলতা কমে গেলে এবং সহবাসের সময় অস্বস্তি বা ব্যথা করলে চিকিৎসকের সঙ্গে কথা বলা উচিত। সুস্থ যৌনজীবনের গুরুত্ব কেবল আনন্দলাভের মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই। গবেষণায় পাওয়া গেছে- যেসব নারী যৌনজীবন নিয়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছে তাদের হৃদরোগ, রক্তনালীর রোগ, উচ্চ রক্তচাপ ও হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি পুরুষদের তুলনায় কম ছিল।

* গর্ভস্থ বাচ্চার যত্ন নিন গর্ভবতী নারীর সঠিক প্রস্তুতি সুস্থ সন্তান জন্মদানের সম্ভাবনা বাড়ায়। এমনকি প্রেগন্যান্সি টেস্টের পূর্বেই ভবিষ্যৎ বাচ্চার স্বাস্থ্যকে সুরক্ষিত রাখার জন্য উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ নেয়া যায়। মূলত গর্ভবতী নারী নিজের যত্ন নেয়ার মাধ্যমেই ভবিষ্যৎ বাচ্চার যত্ন নিয়ে থাকেন। গর্ভাবস্থায় অস্বাস্থ্যকর অভ্যাসগুলো পেটের বাচ্চাকে ঝুঁকিতে রাখতে পারে, যেমন- অ্যালকোহল সেবন ও ধূমপান। কেবল তা নয়, এসব অভ্যাসে গর্ভবতী নারীও জটিলতায় ভুগতে পারেন।

তাই এসময় নিজের ও সন্তানের ক্ষতি করতে পারে এমন অভ্যাসগুলো পরিহারের চেষ্টা করা উচিত, বিশেষ করে গর্ভধারণ প্রচেষ্টার পূর্ব থেকেই বাজে অভ্যাস ছাড়তে পারলে সবচেয়ে ভালো হয়। গর্ভাবস্থায় পুষ্টিকর খাবার খেলে ও অস্বাস্থ্যকর খাবার বর্জন করলে সুস্থ সন্তান জন্মদানের সম্ভাবনা বাড়বে। এসময় খাদ্যতালিকায় পুষ্টির ভারসাম্য না থাকলে ও কিছু পুষ্টিকর খাবার বেশি পরিমাণে না খেলে বাচ্চার সঠিক বিকাশসাধন ব্যাহত হতে পারে।

চিকিৎসকে প্রিনাটাল ভিটামিন লিখে দিলে তাও সেবন করা উচিত। গর্ভকালে অলসভাবে বসে থাকা উচিত নয়, এসময়টাতেও শারীরিক সক্রিয়তার গুরুত্ব রয়েছে। এসময় আপনাকে স্ট্রেংথ ট্রেইনিং করতে পরামর্শ দেয়া হচ্ছে না, কিন্তু আপনি হালকা শরীরচর্চা করতে পারেন। গর্ভবতী নারীর জন্য কিছু আদর্শ শরীরচর্চা হলো- সাঁতার, হাঁটা, ধীরে দৌঁড়ানো, সিঁড়ি আরোহন ও ইনডোর সাইক্লিং।

* আদর্শ মা হোন এটা একটি সাধনার বিষয়। একজন আদর্শ মা শিশুর শারীরিক স্বাস্থ্য ও মানসিক বিকাশসাধন উভয়দিকে খেয়াল রাখেন। আদর্শ মা হতে গেলে অপরের সাহায্যও প্রয়োজন। বন্ধুবান্ধব ও পারিবারিক সদস্যদের সঙ্গে সদ্ভাব বজায় রাখুন। অসুস্থ বাচ্চাকে চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যাওয়া অথবা সন্তানের কোথাও ঘুরতে যাওয়ার আবদার মেটাতে এর প্রয়োজন রয়েছে। আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্ন করে আদর্শ মা হওয়া কঠিন, কারণ এটা সন্তানের মানসিক বিকাশসাধনের পথে অন্তরায় হয়ে দাঁড়ায়। আত্মীয়স্বজন ও বন্ধুবান্ধবের সাপোর্ট বা সাহায্য যে সবসময় পাবেন এমনটাও আশা করবেন না, কারণ তাদেরও সুবিধা-অসুবিধা রয়েছে। একারণে বাচ্চা লালনপালন সংক্রান্ত কোনো অনলাইন কমিউনিটি বা সোশ্যাল গ্রুপে যোগ দিতে পারেন। সেখানে প্রশ্ন করলে প্রয়োজনীয় পরামর্শ পেতে পারেন। এছাড়া মানসিক সমস্যায় আচ্ছন্ন হলে থেরাপিস্টের পরামর্শ নিতে পারেন, কারণ নিজের মন-মানসিকতা ভালো না থাকলে সন্তানের সঙ্গে খারাপ আচরণের ঝুঁকি রয়েছে।

* স্তনের স্বাস্থ্য সম্পর্কে সচেতন থাকুন নারীদের মধ্যে অন্যতম সর্বাধিক প্রচলিত ক্যানসার হলো স্তন ক্যানসার। পরিবারের কারো স্তন ক্যানসারের ইতিহাস থাকলে আপনারও ক্যানসারটি বিকাশের উচ্চ ঝুঁকি রয়েছে। ইউনাইটেড স্টেটস প্রিভেন্টিভ সার্ভিসেস টাস্ক ফোর্স ৫০ থেকে ৭৪ বছর বয়সি নারীদের প্রতি দুই বছরে ম্যামোগ্রাম স্ক্রিনিং করতে পরামর্শ দিয়েছে। আবার অনেক চিকিৎসক ও স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, বয়স ৪০ হলেই প্রতিবছর একবার ম্যামোগ্রাম করা উচিত। কিন্তু স্তন ক্যানসারের পারিবারিক ইতিহাস থাকলে চিকিৎসক আরো আগে থেকে ম্যামোগ্রামের পরামর্শ দিতে পারেন। এছাড়া একজন নারী নিজেও স্তন পরীক্ষা করতে পারেন। এক্ষেত্রে স্তনে কোনো অস্বাভাবিক লক্ষণ দেখলে চিকিৎসকের কাছে যাওয়া উচিত।

* মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণ করুন ক্যারিয়ার, সন্তান প্রতিপালন, পরিবার, স্বেচ্ছা সেবা ও অন্যান্য কাজ। এভাবে একজন নারী অনেক দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে মানসিক চাপের সাগরে হাবুডুবু খান। এর ফলে কেবল চুলই পাকে না, স্বাস্থ্য সমস্যার ঝুঁকিও বাড়ে। অত্যধিক মানসিক চাপে রক্তচাপ বেড়ে যায়, পেটে সমস্যা হয়, পিঠ ব্যথা করে, ঘুমের সমস্যা হয় ও পেটে মেদ জমে। থেরাপি, প্রার্থনা, ধ্যান, যোগব্যায়াম বা তাই চি ও শরীরচর্চার মতো শিথিলায়ন পদ্ধতি অবলম্বনে মানসিক চাপ কমানো যায়।

* স্বাস্থ্যের প্রচলিত ঝুঁকি সম্পর্কে জানুন নারী-পুরুষ উভয়ের জীবনে বহুবিধ স্বাস্থ্য সমস্যা লক্ষ্য করা গেছে। কিন্তু এমনকিছু সমস্যা রয়েছে যা পুরুষদের তুলনায় নারীদের বেশি হয়, যেমন- হৃদরোগ/হার্ট অ্যাটাক, স্ট্রোক ও প্রস্রাবতন্ত্রের সংক্রমণ।

হার্ট অ্যাটাকের পর পুরুষের চেয়ে নারী মৃত্যুর হার বেশি। উচ্চ রক্তচাপ, উচ্চ কোলেস্টেরল, তামাক বা ড্রাগসের ব্যবহার, ডায়াবেটিস, স্থূলতা ও অটোইমিউন ডিসঅর্ডারে হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি বাড়ে।উচ্চ রক্তচাপ, উচ্চ কোলেস্টেরল, জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি, গর্ভাবস্থা ও হরমোন রিপ্লেসমেন্ট থেরাপি নারীদেরকে স্ট্রোকের ঝুঁকিতে রাখে। নারীদের মূত্রনালীর দৈর্ঘ্য কম বলে ব্যাকটেরিয়া সহজেই মূত্রাশয়ের সংস্পর্শে এসে সংক্রমণ তৈরি করে। নারীদের মধ্যে অধিক প্রচলিত আরেকটি সমস্যা হলো অস্টিওআর্থ্রাইটিস বা জয়েন্টের ক্ষয়।

এর বাইরেও নারীদের অন্যান্য প্রচলিত স্বাস্থ্য সমস্যার ঝুঁকি সম্পর্কে জ্ঞানার্জন করা উচিত। ঝুঁকি সম্পর্কে জানলে রোগ ও সংক্রমণ প্রতিরোধ সম্ভব হয়। রোগ বা সংক্রমণ প্রতিরোধের একটি কার্যকরী উপায় হলো ধূমপান বর্জন। যারা ধূমপান করেন তাদের কাছেও থাকা যাবে না, কারণ এটাও নিজে ধূমপান করার মতো ক্ষতিকারক হতে পারে।

মুখ ও দাঁতের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে পারলে অনেক রোগের ঝুঁকি কমে যাবে। দিনে দুইবার দাঁত ব্রাশ করলে কেবল ক্যাভিটি ও মাড়ির রোগ প্রতিরোধ হয় না, হৃদরোগের ঝুঁকিও কমে। কোনো রোগ আছে কিনা শনাক্ত করতে বছরে একবার শারীরিক পরীক্ষা করানো উচিত।

 

ডেইলি নিউজ টাইমস বিডি ডটকম (Dailynewstimesbd.com)এর ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব ও ফেসবুক পেইজটি ফলো করুন করুন।

Leave a Reply