লবঙ্গ মসলা হিসেবে সকলের পরিচিত। লবঙ্গের বৈজ্ঞানিক নাম সিজিজিওমোরোমেটাম। লবঙ্গ গাছের ফুলের কুড়িকে শুকিয়ে তৈরি করা হয়। লবঙ্গকে লং বলেও ডাকা হয়। লবঙ্গের সুগন্ধের মূল কারণ ‘ইউজেনল’ নামের যৌগ। এটি লবঙ্গ থেকে প্রাপ্ত তেলের মূল উপাদান, এবং এই তেলের প্রায় ৭২-৯০% অংশ জুড়ে ইউজেনল বিদ্যমান। এই যৌগটির জীবাণুনাশক এবং বেদনা নাশক গুণ রয়েছে।
লবঙ্গের তেলের অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হলো অ্যাসিটাইল ইউজেনল, বেটা-ক্যারোফাইলিন, ভ্যানিলিন, ক্র্যাটেগলিকঅ্যাসিড, ট্যানিন, গ্যালোট্যানিক অ্যাসিড, মিথাইল স্যালিসাইলেট, ফ্ল্যাভানয়েড, ইউজেনিন, র্যা ম্নেটিন, ইউজেনটিন, ট্রি-টেরপেনয়েড, ক্লিনোলিক অ্যাসিড, স্টিগ্মাস্টেরল, সেস্কুইটার্পিন।
১০০ গ্রাম লবঙ্গে ৬৫ গ্রাম কার্বোহাইড্রেট, ৬ গ্রাম প্রোটিন, ১৩ গ্রাম টোটাললিপিড, ২ গ্রাম সুগার, ২৭৪ কিলো-ক্যালোরি শক্তি ও ৩৩ গ্রাম ডায়েটারিফাইবার থাকে।
খনিজের মধ্যে ক্যালসিয়াম, আয়রন, ম্যাগনেশিয়াম, ফসফরাস, পটাশিয়াম, সোডিয়াম, জিঙ্ক –কমবেশি সবই আছে। আর ভিটামিনের মধ্যে উল্লেখযোগ্য বি-৬, বি-১২, সি, এ, ই, ডি, কে, থায়ামিন, রাইবোফ্লাভিন, নিয়াসিন, ফোলেট রয়েছে। এই সব যৌগের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট বৈশিষ্ট্য আছে।
লবঙ্গের গুণাগুণ শুধু রান্নাতেই নয়, তার বাইরেও আছে। সুস্বাস্থ্যে জন্য লবঙ্গ নানা ভাবে আমাদের উপকারে আসে। গবেষণায় বারবার প্রমাণিত, রোগ নিরাময়ে লবঙ্গের যথেষ্ট কার্যকারিতা রয়েছে।
লবঙ্গে ম্যাঙ্গানিজ থাকায় মস্তিষ্কের বিভিন্ন কাজকর্ম সুষ্ঠু রাখতে ও হাড় শক্ত করতে এই উপাদান খুব জরুরি। ম্যাঙ্গানিজের একটি উৎকৃষ্ট উৎস হল লবঙ্গ। লবঙ্গে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট থাকে, যা ফ্রি র্যাডিকলস কমাতে সাহায্য করে। লবঙ্গের একটি উপাদান হল ইউজেনল, যা প্রাকৃতিক অ্যান্টি- অক্সিডেন্ট হিসেবে কাজ করে।
প্রত্যেক দিন ব্যক্তির রাতে ঘুমানোর আগে ১টি লবঙ্গ ও ১ গ্লাস গরম পানি পান করলে বিভিন্ন ধরনের রোগের থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে সহজেই। লবঙ্গ হজম প্রক্রিয়া উন্নত করতে সাহায্য করে। যেমন- গ্যাস, বমিভাব এবং বদহজমের মতো অনেক সমস্যায় লবঙ্গ খুব উপকারী। এছাড়াও লবঙ্গ প্রতিদিন খেলে গলায় সংক্রমণ হাত থেকে রেহাই পাওয়া যায়। বুকের জমে থাকা কফ বের হয়ে যায়। হজম, পিত্তবিনাশকারী, হাঁপানি, জ্বর, বদহজম, কলেরা, মাথাব্যথা, হাঁচি এবং কাশির মতো রোগেও এটি বিশেষ উপকারী।
লবঙ্গের আর একটি উপাদান হল নাইজেরিসিন। বিভিন্ন পরীক্ষায় দেখা গিয়েছে, এই উপাদানের জন্যই রক্ত থেকে শর্করা বিভিন্ন কোষে পৌঁছে দেওয়া, ইনসুলিন উৎপাদনকারী কোষগুলির কার্যক্ষমতা বাড়ানো ও ইনসুলিন নিঃসৃত হওয়ার পরিমাণ বাড়ানোর মতো কাজ ভালো ভাবে হয়। তাই মধ্য মাত্রার ডায়াবিটিস নিয়ন্ত্রণে লবঙ্গ ভালো কাজে দেয়। লো-বোন মাস এমন একটি অবস্থা, যা বয়োজ্যেষ্ঠদের মধ্যে অস্টিয়োপোরোসিসের ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়। কয়েকটি পরীক্ষায় দেখা গিয়েছে, লবঙ্গের উপাদান হাড়ের জোর ও বোন ডেনসিটি বাড়াতে সাহায্য করে।
দাঁতের ব্যথা কমায়। লবঙ্গ দাঁতের ব্যথা দূর করে। মাড়ির ক্ষয় নিরাময় করে। লবঙ্গতে উপস্থিত অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি উপাদান শরীরে প্রবেশ করার পর এমন কিছু বিক্রিয়া করে যে নিমেষে দাঁতের যন্ত্রণা কমে যায়। প্রায় সব টুথপেস্টের কমন উপকরণ এই লবঙ্গ।
বমি বমি ভাব দূর করে লবঙ্গ। ট্রেনে বা বাসে যাওয়ার সময় যদি মাথা ঘুরতে থাকে ও বমি এসে যায়, তাহলে মুখে একটি লবঙ্গ রেখে সেই রস চুষলে বমি ভাব ও মাথা ঘোরা কমে যাবে। গর্ভবতী মায়েরা সকালের বমিবমি ভাব দূর করতে লবঙ্গ চুষতে পারেন। লবঙ্গের সুগণ্ধ বমিবমি ভাবদূর করে।
লবঙ্গ সর্দি–কাশি ও ঠাণ্ডা লাগা কমায়। সর্দিকাশির মহৌষধ হিসেবে লবঙ্গ বহু বছর ধরেই ব্যবহৃত হয়ে আসছে। লবঙ্গ চিবিয়ে রস গিলে খেলে বা লবঙ্গ মুখে রেখে চুষলে সর্দি, কফ, ঠাণ্ডা লাগা, অ্যাজমা, গলাফুলে ওঠা, রক্ত পিত্ত আর শ্বাস কষ্টে সুফল পাওয়া যায়।
মাথা ব্যথা ও মাথা যন্ত্রণা কমায়: ধোঁয়া, রোদ এবং ঠান্ডার জন্য শ্লেষ্মা বেড়ে নানা ধরনের মাথা ব্যথা বা মাথার রোগ দেখা দিতে পারে। মাথা ব্যথা কমাতে লবঙ্গের উপকারিতা অপরিসীম।
লবঙ্গ কামোদ্দীপক ও যৌন রোগে উপকারি। লবঙ্গ কামোদ্দীপক। এর সুবাস অবসাদ দূর করে, শরীর ও মনের ক্লান্তি ঝরিয়ে দেয়। যৌন শক্তি বৃদ্ধি করে।
প্রচণ্ড স্ট্রেস ও উৎকণ্ঠা কমায়। এক টুকরো লবঙ্গ মুখে ফেলে চুষে চুষে খেয়ে ফেলুন। পান করতে পারেন লবঙ্গের চাও। মেজাজ ফুরফুরে হয়ে উঠবে।
রক্ত পরিশোধন করতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে। লবঙ্গ শরীর থেকে ক্ষতিকর উপাদানগুলো সরিয়ে রক্তকে পরিশোধন করতে ভূমিকা রাখে। রক্তকে পরিস্কার করে।
লবঙ্গ হজম ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। হজমে সহায়তা করে এমন এনজাইমনিঃসরণের মাধ্যমে এবং অ্যাসিড ক্ষরণের মাধ্যমে লবঙ্গ আমাদের হজম ক্ষমতা সক্রিয় করে তোলে। এরাফ্লাটুলেন্স, গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা, ডিসপেপসিয়া এবং নসিয়া কমাতে সাহায্য করে। এটি শরীরের রক্ত প্রবাহেরও উন্নতি ঘটায়।
ডায়াবেটিস রোগকে নিয়ন্ত্রণে রাখে লবঙ্গ। ডায়াবেটিসে আক্রান্ত ব্যক্তির শরীরে প্রয়োজনীয় ইনসুলিন তৈরি হতে পারে না। গবেষণায় পাওয়া গেছে যে, লং এর রস শরীরের ভিতরে ইনসুলিন তৈরিতে সাহায্য করে ও কর্মক্ষমতা বাড়িয়ে দেয়, এবং রক্তে সুগারের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখে।
আর্থ্রাইটিসের যন্ত্রণা কমায়। লবঙ্গে উপস্থিত অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি উপাদান আর্থ্রাইটিসের প্রকোপ কমাতে সাহায্য করে। প্রসঙ্গত, জয়েন্টপেইন কমানোর পাশাপাশি পেশির ব্যথা, হাঁটুতে, পিঠে বা হাড়ের ব্যথা এবং ফোলা ভাব কমাতেও এই ঘরোয়া ঔষধটি বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে।
ক্যানসার প্রতিরোধ করে লবঙ্গ। বিশেষ করে ব্রেস্ট ক্যানসার, ওভারিয়ান ক্যানসার প্রতিরোধ করে থাকে।
আমাদের সকলের অতিপরিচিত একটি ভেষজ মসলার নাম লবঙ্গ। সব ধরনের রান্নার স্বাদ আনতে এর ব্যবহার অতুলনীয়। অনেকেই বলেন লবঙ্গ খেলে কি হয় বা উপকারিতা কি এসব বিষয় নিয়ে আজকে আলোচনা করা হবে। এটি আফ্রিকা, এশিয়া, ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চলের দেশগুলোতে ঝাল এবং মিষ্টি জাতীয় খাবার তৈরিতে ব্যবহার করা হয় থাকে।
কয়েক হাজার বছর আগে থেকেই রোম, সিরিয়া, চীন, আফ্রিকাতে এর সন্ধান পাওয়া যায়। লবঙ্গ আধুনিক সময়ে সবার প্রথমে ইন্দোনেশিয়ার মালুকু দ্বীপপুঞ্জে পাওয়া যায়। এখান থেকে ডাচ্ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির মাধ্যেমে লবঙ্গ সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়েছে।
এই চিরসবুজ লবঙ্গ গাছের ফুলের কুঁড়িকেই লবঙ্গ বা লং বলা হয়। এর বৈজ্ঞানিক নামঃ Syzygium aromaticum. এই মসলা টি রান্নার স্বাদ বাড়ানোর পাশাপাশি এশিয়া ও আফ্রিকার অনেক দেশেই এখনো ঔষধি উপাদান হিসেবে বিশেষ ভাবে ব্যবহার করা হয়। এর ভেতর রয়েছে ‘ইউজেনল’ নামের একটি যৌগ উপাদান, যা এর সুগন্ধের মূল কারণ।
এর ভেতরে রয়েছে ৭২ থেকে ৯০ শতাংশই ইউজেনলে ভরপুর। লবঙ্গের ভেতরে থাকা যৌগ উপাদানটি জীবাণু ও ব্যথানাশক হিসেবে কাজ করে। এটিতে আরও রয়েছে ক্যারিওফিলিন নামের আরেকটি যৌগ যা একধরনের অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল উপাদান।
খালিপেটে লবঙ্গ খেলে পেতে পারেন আশ্চর্য উপকার,
কী কী সুফল পাবেন, জেনে নিন
১. রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে – লবঙ্গে উপস্থিত ভিটামিন সি ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট শ্বেত রক্তকণিকা বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। ফলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধ পায় ও এটি শরীরকে যে কোনও রোগ বা সংক্রমণ থেকে লড়তে সাহায্য করে।
২. খাবার হজমে উপযোগী – সকালে লবঙ্গ খেলে পাচন সংক্রান্ত যে কোনও সমস্যার সমাধান সম্ভব হয়। লবঙ্গ পাচক উৎসেচকের ক্ষরণ বৃদ্ধি করে। এর ফলে কোষ্ঠকাঠিন্য ও বদহজমের মতো পাচন সমস্যা রোধ করা যায়। লবঙ্গ ফাইবার সমৃদ্ধ হওয়ায় পাচনতন্ত্রের স্বাস্থ্যের জন্যও উপযোগী।
৩. লিভারের কার্যকরিতা বৃদ্ধি করে – লিভার শরীরকে ডিটক্স করে। আবার ব্যক্তির দ্বারা ব্যবহৃত ওষুধকে মেটাবলাইজ করে। লিভারের কার্যকরিতার জন্য নিয়মিত লবঙ্গ খাওয়া উচিত। এতে ইউজেনল থাকে, যা লিভারের কার্যকরিতা উন্নত করতে সাহায্য করে থাকে।
৪. দাঁতের ব্যথা দূর করে – দাঁতের ব্যথা দূর করার জন্য সাধারণত লবঙ্গের তেল লাগানো হয়ে থাকে। দাঁতের ব্যথা কম করতে লবঙ্গ খেতে পারেন। এতে ক্ষণিকের জন্য স্বস্তি পেতে পারেন।
৫. মাথা ব্যথা থেকে মুক্তি দেয় লবঙ্গ – লবঙ্গে ইউজেনলে এনালজেসিক ও অ্যান্টি ইনফ্লেমেটারি গুণ থাকে, যা মাথাব্যথা কমাতে কার্যকর। এক্ষেত্রে এক গ্লাস দুধের সঙ্গে লবঙ্গের পাউডার খান। মাথায় লবঙ্গের তেল লাগালেও স্বস্তি পেতে পারেন।
৫. হাড়ের জন্য উপযোগী – লবঙ্গে উপস্থিত ফ্ল্যাভনয়েডস, ম্যাঙ্গানিজ ও ইউজেনল হাড়ের জন্য উপকারী। লবঙ্গ খেলে হাড়ের ঘনত্ব বৃদ্ধি পায়।
৬. গ্যাসের সমস্যা দূর করে – গ্যাস ও কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে মুক্তি পেতে সকালে খালি পেটে এক গ্লাস জলে লবঙ্গের তেল মিশিয়ে পান করুন।
৭. সর্দি-কাশি থেকে মুক্তি – সর্দি-কাশির কারণে গলা চুলকালে মুখে একটি লবঙ্গ রেখে নিন। এর ফলে সর্দি-কাশি এবং গলা ব্যথা কমে।
৮. মুখের দুর্গন্ধ দূর করে- পায়রিয়া অথবা অনেকক্ষণ খালি পেটে থাকার ফলে মুখে দুর্গন্ধ হয়ে থাকে। দুর্গন্ধ দূর করার জন্য ৪০-৪৫ দিন পর্যন্ত নিয়মিত সকালে মুখে লবঙ্গ চেপে রাখুন।
জেনে নিন লবঙ্গ খেলে কি হয় ও লবঙ্গ তেলের উপকারিতা
দাঁতের নানা সমস্যার সমাধানে
ইতিহাস থেকে জানা যায় যে, তিন শতক খ্রিষ্টপূর্ব চীনে যখন হান রাজবংশের শাসন চলছে, সেই সময় নাকি সেখানকার রাজ্যসভায় মুখের ভেতর লবঙ্গ রেখে প্রবেশ করতে হতো। কারণ, এতে নাকি মুখের দুর্গন্ধ দূর করে। বিশেষ করে আমাদের এই উপমহাদেশে দাঁতে সামান্য ব্যথা হলেই দাদি–নানিরা লবঙ্গ খেতে পরামর্শ দেন। এটা খেলে নাকি ব্যথার উপশম হয়। তবে নানা রকমের পরীক্ষা–নিরীক্ষা করার পর এর আসল সত্যতা মিলেছে।
একটি গবেষণা গারে গবেষনা করার জন্য ৪০ জন দাত রোগী নিয়ে করা ২১ দিনের গবেষণায় সবাইকে লবঙ্গ, টি ট্রি ওয়েল এবং তুলসী মিশ্রিত ভেষজ মাউথওয়াশ ব্যবহার করতে দেওয়া হয়। কিন্তু এই ৪০ জনের সবাই দাঁতের কোনো না কোনো সমস্যায় ভুগছিলেন। গবেষণার ২১ দিন পর দেখা যায়, দাঁতের সমস্যা, যেমন দুর্বল মাড়ি, দুর্গন্ধ, প্ল্যাক সবকিছুই প্রায় সেরে গিয়েছে। এরপর থেকে দন্ত্য ডাক্তারগণ বেশির ভাগ সময়রোগীদের ঔষধ খাওয়ার পাশাপাশি লবঙ্গ, লবঙ্গ চা অথাব কাচা লবঙ্গ খাওয়ার অধিক পরামর্শ দিয়ে থাকেন।
খাদ্যে বিষক্রিয়া সারাতে
অনেক সময় দেখা যায় যে,অনেকেই অস্বাস্থ্যকর খাবার খেয়ে মাঝেমধ্যে বিষক্রিয়ার সম্মুখীন হন। এমতো অবস্থা হলে লবঙ্গ খেলে দ্রুতই উপকার পাওয়া যায়। আমরা আগেই জেনেছি যে লবঙ্গে বিদ্যমান ইউজেনল একটি শক্তিশালী অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল উপাদান রয়েছে। খাদ্যে বিষক্রিয়া কোলাই, স্টেপটোকক্কাস, স্ট্যাফিলোকক্কাস ব্যাকটেরিয়া ধবংস করে সহায়তা করে।
ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে লবঙ্গ
লবঙ্গে একধরনের নাইজেরিসিন নামের একটি যৌগ উপাদান রয়েছে। এক গবেষণায় দেখা গিয়েছ, যে মানুষের শরীরের ইনসুলিন রেজিস্ট্যান্স কমাতে বেশ কার্যকারী ভূমিকা পাল করে থাকে। এই নাইজেরিসিনের জন্যই রক্ত থেকে শর্করা বিভিন্ন কোষে পৌঁছে দেওয়া, যা ইনসুলিন উৎপাদনকারী কোষগুলোর কার্যক্ষমতা বাড়ানো ও ইনসুলিন নিঃসৃত হওয়ার পরিমাণ বাড়ানোর মতো কাজ ভালোভাবে হয়। এজন্য ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে লবঙ্গ খাওয়া যেতে পারে।
ক্যানসার প্রতিরোধে
লবঙ্গ খেলে অ্যান্টি–অক্সিডেন্টের পরিমান বাড়ে। লবঙ্গে থাকা ইউজেনল একটি শক্তিশালী অ্যান্টি–অক্সিডেন্ট, এটি ভিটামিন ই–এর চেয়ে পাঁচ গুণ বেশি কার্যকরভাবে শরীরে ফ্রি র্যাডিকেলের ফলে অক্সিডেটিভ দ্রুত্ব ক্ষতি থামাতে সক্ষম। আর এই অক্সিডেটিভ ক্ষতির কারণে ক্যানসার হয়ে থাকে। তাই লবঙ্গ বেশি বশি করে খাওয়ার পরামর্শ দেন চিকিৎসাকরা।
হাড়ের স্বাস্থ্য রক্ষায়
বেশির ভাগ সময় দেখায় যায় যে হাড়ের কম ঘনত্ব এমন একটি অবস্থায়, এটি বয়স্কদের অস্টিওপরোসিস রোগের ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়। কয়েক টি গবেষণায় পাওয়া গিয়েছে, যে ইউজেনল হাড়ের ঘনত্ব বাড়িয়ে এটি মজবুত করতে সহেতা করে। কিন্তু ক্যালসিয়ামের মতো এটিও হাড়ের স্বাস্থ্যের জন্য বিশেষ উপকারী। আবার ম্যাঙ্গানিজের উৎকৃষ্ট উৎস হলো লবঙ্গ।
আলসার নিরাময়ে লবঙ্গ
বেশির ভাগ দেখা যায় ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণ এবং স্ট্রেস বা জীনগত কারণে পেপটিক আলসার বা পাকস্থলীর আলসার হয়ে থাকে। আর এই লবঙ্গ দিয়ে তৈরি অ্যাসেনশিয়াল ওয়েল গ্যাসট্রিক মিউকাসের উৎপাদনে সাহায্য করে থাকে। আলসার নিরাময়ে বা পাকস্থলীকে সংক্রমণের হাত থেকে দ্রুত্ব রক্ষা করতে ঢাল হিসেবে কাজ করে এই মিউকাস।
লবঙ্গের পুষ্টি গুণাগুন ও উপাদান
লবঙ্গ গবেষনায় দেখা গিয়েছে যে ১ চামচ গুঁড়া লবঙ্গতে রয়েছে ১ গ্রাম কার্বোহাইড্রেট, ১ গ্রাম ফাইবার, ৬ ক্যালরি, দৈনন্দিন চাহিদার ৩ শতাংশ ভিটামিন সি, ২ শতাংশ ভিটামিন কে এবং ৫৫ শতাংশ ম্যাঙ্গানিজ। এতে কিছু পরিমাণ ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম ও ভিটামিন ই–ও রয়েছে। এতে আরও রয়েছে সামান্য ক্যারোটিন পিগম্যান্ট, যা ভিটামিন এ–তে রুপান্তরিত হয়।
লবঙ্গ খাওয়া নিয়ম
আমরা জানি লবঙ্গ মসলা ও ঔষধি হিসেবেও বেশি ব্যবহৃত হয়। আপনি যদি লবঙ্গের অন্যান্য উপকারিতা ভালোভাবে পেতে চান। তাহলে প্রতিদিন অন্তত এক কাপ লবঙ্গের চা খেতে পারেন। অথাবা কাচা চিবিয়েও খেতে পারেন তাতেও উপকার পাবেন। লবঙ্গের চা বানানোর পদ্ধতি খুবই সহজ।
আপনাকে যা করতে হবে এক কাপ পানিতে ৬-৭টি লবঙ্গ দিয়ে কিছুক্ষণ জ্বাল দিলেই হবে লবঙ্গের চা তৈরি হবে। এই চা সর্দি–কাশি হলেও খেতে পারেন এতে বেশ উপকার পাবেন। এ ছাড়া সামান্য লবণ দিয়ে চিবিয়ে খেতে পারেন। তবে উচ্চ রক্তচাপের কোনো সমস্যা থাকলে খাওয়া যাবে না।
লবঙ্গ চা কিভাবে বানাতে হয়
লবঙ্গ দিয়ে চা বানানোর জন্য প্রথমে পরিমাণ মতো লবঙ্গ নিয়ে বেঁটে বা থেতো করে নিতে হবে। এরপর আপনি যতোটুকু চা খাবেন সেই লবঙ্গের গুঁড়ো এক কাপ বা আপনার পরিমাণ মতো পানিতে মিশিয়ে নিতে হবে। এরপর মিনিমাম ৫-১০ মিনিট পানি গুলো ফুটিয়ে নিতে হবে।
এরপর দেখবেন পানি টা ফুটতে শুরু করেছে, তখন তাতে হাফ চামচ চা পাতা ঢেলে দিবেন। তারপর কিছু সময় অপেক্ষা করে পানি ছেঁকে নিলেই ব্যাস লবঙ্গ চা তৈরি। বেশির ভাগ যারা চিকিৎসা বিজ্ঞান নিয়ে চর্চা করেন তাদের মতে প্রতিদিন দুবার করে লবঙ্গ চা খাওয়া শুরু করেল শরীরে সতেজ হতে শুরু করে।
লবঙ্গ থাকা নানা ধরনের উপাদান ফাইবার, আয়রন, ম্যাঙ্গানিজ, ভিটামিন কে, ক্যালসিয়াম, ম্য়াঙ্গানিজ সহ আরও ওনেক উপকারি উপাদান শরীরের উপকার করে। তাই এই চা খাওয়া অনেক উপকার রয়েছে।
লবঙ্গ চায়ের উপকারিতা
(ক) দেহের অন্দরে প্রদাহের মাত্রা হ্রাস পায়: আমরা জানি নানা কারণে অনেক সময়ই আমাদের শরীরের অন্দরে প্রদাহ বা ইনফ্লেমেশন রেট এমন ভাবে বেড়ে যায় যে একাধিক গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গের উপর খারাপ প্রভাব পরে থাকে। এর ফলে স্বাভাবিকভাবেই শরীরে নানা রোগ দেখা দিতে শুরু করে।
আর এমনটা কিন্তু যে কারও সঙ্গে হতে পারে। কিন্তু যদি চান আপনার সঙ্গে না ঘটুক, তাহলে নিয়মিত লবঙ্গ চা খেতে ভুলবেন না যেন। কারণ আপনার শরীরে অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি উপাদানের মাত্রা বৃদ্ধি পেতে শুরু করে। এর ফলে প্রদাহের মাত্রা বৃদ্ধি পাওয়ার আর কোনও ভয় থাকবে না।
(খ) রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকে: বাংলাদেশে দিন দিন ডায়বেটিস এর সংখ্যা বাড়েই চলছে। এক পরিসংখ্যান অনুযায়ী সরকারি এবং বেসরকারি গত এক দশকে আমাদের দেশে যে হারে ডায়াবেটিস রোগীর সংখ্যা বেড়েছে। এতে করে আমাদের দেশ সারা বিশ্বের মধ্যে ডায়াবেটিস ক্যাপিটালে পরিণত হয়েছে।
কিন্তু সবথেকে ভয়ের বিষয় হল প্রতি বছর নতুন করে এই মারণ রোগে যারা আক্রান্ত হচ্ছেন, এদের মধ্যে বেশিরভাগেরই বয়স ৪০ এর নিচে। এই রকম পরিস্থিতিকে যুব সমাজদের সুস্থ রাখতে পারে একমাত্র লবঙ্গ চা। সুতরাং লবঙ্গের মধ্যে থাকা এই প্রকৃতিক উপাদানটি ভিতরের উপস্থিত নিগেরিয়াসিন, শরীরে প্রবেশ করার পর ইনসুলিনের কর্মক্ষমতাকে এতটাই বাডড়িয়ে দেয় যে রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণের বাইরে যাওয়ার সুযোগই পায় না।
(গ) জ্বরের চিকিৎসায় কাজে আসে: এই লবঙ্গে চায়ে থাকা ভিটামিন কে এবং ই, রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থাকে এতটাই শক্তিশালী করে দেয় যে শরীরে উপস্থিত ভাইরাসেরা সব মরে যায়। এর ফলে ভাইরাল ফিবারের প্রকোপ কমতে সময় লাগে না। যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বেরে যাওয়ার পর সংক্রমণে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কাও কমে যায়।
((ঘ) দাঁতের ব্যাথা নিমেষে কমে যায়: আমরা আগেই জেনেছি লবঙ্গতে উপস্থিত একধরনের অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি উপাদান যা শরীরে প্রবেশ করার পর। এমন ভাবে বিক্রিয়া করে যে নিমেষে দাঁতের যন্ত্রণা কমে যায়। এখন থেকে দাঁতে অস্বস্তি বা মাড়ি ফোলার মতো ঘটনা ঘটলে এক কাপ লবঙ্গ চা খেয়ে নেবেন। এতে অনেক উপকার পাবেন।
(ঙ) হজম ক্ষমতার বৃদ্ধি করে: অনেক সময় মানুষের যখন বয়স বেশি হুয় তখন এই ধরনের সমস্যা গুলো দেখা যায়। সেই ক্ষেত্রে কেউ যদি লাঞ্চ বা ডিনারের আগে লবঙ্গ দিয়ে বানানো এক কাপ গরম চা খেয়ে নেয়। এতে করে তার হজমে সহায়ক অ্যাসিডের ক্ষরণ বেড়ে যাবে। এর ফলে মানুষের পেটের দিকে রক্ত প্রবাহেরও উন্নতি ঘটতে শুরু করে। এতে খাবার হজম হতে বেশি সময় লাগে না। আবার অনেকের কম ঝাল-মশলা জাতীয় খাবার খেলেও বদ-হজম হয়ে থাকে। বিশেষ করে তারা এই লবঙ্গ চা পান করে একবার ট্রাই করতে পারেন। এভাবে কেউ যদি নিয়মিত লবঙ্গ চা পান করলে উপকার পাওয়া যাবে, তা আমি আল্লাহর উপর ভরসা রেখে হলফ করে বলতে পারি।
(চ) ত্বক সংক্রমণের চিকিৎসা: আপনার যদি কোনও ধরনের ত্বকের সংক্রমণ হয়। সেই ক্ষতস্থানে লবঙ্গ চা লাগাতে ভুলবেন না। দেখবেন কষ্ট কমতে একেবারে সময়ই লাগবে না। বিশেষ করে লবঙ্গে উপস্থিত ভোলাটাইল অয়েল শরীরে উপস্থিত টক্সিক উপাদানদের বের করে দেয়। একই সাথে জীবাণুদেরও ধবংষ করে ফেলে। এর ফলে সংক্রমণজনিত কষ্ট কমতে একেবারেই সময় লাগে না।
(ছ) সাইনাসের প্রকোপ কমে: আপনি কি মাঝে মধ্য়েই সাইনাসের আক্রমণ ভুক্তে হয়? তাহলে তো এই প্রতিবেদন টি আপনার জন্যই লেখা। সুতরাং আপনি কি যানেন লবঙ্গ যে এই ধরনের সমস্যা দূর করতে কাজে আসতে পারে। সে বিষয়ে কি জানা ছিল আপনার? চিকিৎসাকরা বলেন এই লবঙ্গের ভেতরে থাকা একধরনের প্রকৃতিক উপাদানটি শরীরে উপস্থিত ইগুয়েনাল নামে একটি উপাদান যা সাইনাসের কষ্ট কমাতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। একই সাথে আয়ুর্বেদ বিশেষজ্ঞরা এখন এই ধরনের রোগের চিকিৎসায় লবঙ্গ ব্যবহারের উপরই ভেশির ভাগ ভরসা করে থাকেন।
লবঙ্গ তেল কোথায় পাওয়া যায়
এই তেল অনেক উপকারি একটি তেল। এটি বাংলাদেশের বিভিন্ন আয়ুর্বেদিক ঔষধি দোকানে পাওয়া যায়। কিন্তু এই তেলে দাম অনেক বেশি।
লবঙ্গ তেলের উপকারিতা
এই লবঙ্গ তেলে উপস্থিত গুণাগুণের জন্য এটি স্বাস্থ্যের জন্য খুব উপকারী। এর উপকারিতা বলে শেষ করা যাবে না। তার মধ্যে কিছু উপকারিতার কথা নিচে তুলে ধরা হল।
- ক্যান্সার থেকে বাঁচতে লবঙ্গের তেল কার্যকারিতা পাওয়া যায়।
- রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে এই লবঙ্গ তেলের ক্ষমতা অনেক গুন বেশি।
- সংক্রমণের চিকিৎসায় এই তেল অনেক কার্যকারি।
- হার্টের স্বাস্থ্যের উন্নতিতে লবঙ্গের তেল উপকারিতা রয়েছে।
- বমি বমি ভাব কমাতে এই লবঙ্গের তেল সেবন করলে বমি বমি ভাব দূর হয়।
- মানসিক চিন্তা থেকে মুক্তিতে লবঙ্গের বিশেষ সুগন্ধের জন্য এটি মানসিক চাপ বা অবসাদ দূর করতে ব্যবহার করা হয়।
- বদহজম থেকে মুক্তিতে বা পাচন তন্ত্রের সমস্যায় সমাধানে লবঙ্গ তেলের উপযোগিতা রয়েছে।
- অনেক সময় কানের ব্যথা নিরাময়ে বা কানের ব্যথা থেকে মুক্তি পেতে লবঙ্গ তেল ব্যবহার করা যায়।
- পেটের সমস্যায় বা পেট ব্যথা হলে লবঙ্গ তেল সেবন করলে দ্রুত্ব ভালো হয়ে যায়।
- কলেরা রোগের চিকিৎসায় দেখা গেছে যে এই রোগে লবঙ্গ তেল বেশ কার্যকরী।
- ত্বকের পরিচর্যায় লবঙ্গ এর তেল অনেক উপকারি।
- চুলের স্বাস্থ্য রক্ষায় চুলে লবঙ্গ তেলের ব্যবহার চুল পড়া কম করতে সাহায্য করে এবং চুলের বৃদ্ধিতে সহায়তা করে। লবঙ্গ তেলে থাকা ইউজেনাল চুলের বিকাশে সাহায্য করে।
লবঙ্গ তেল কীভাবে ব্যবহার করবেন?
জেনে নিন বিভিন্ন উপায়ে লবঙ্গ তেলের ব্যবহার করা যায়। সুতরাং নীচে সেই উপায়গুলো উল্লেখ করা হলো।
যদি আপনার ক্লান্তি ও মাথাব্যথায় মনে হয় তাহলে লবঙ্গ তেলের ব্যবহার করলে আরামদায়ক।
অনেক সময় ব্যথা হয়, আর কানের ব্যথায় তিলের তেলের সঙ্গে লবঙ্গ তেল মিশিয়ে হাল্কা গরম করে কানে দিলে ব্যথা নিরাময় হয়। কারণ, লবঙ্গ তেলের মধ্যে ছত্রাকনাশক গুণ থাকে। আবার দাদ জাতীয় এবং ত্বকের সমস্যায় ত্বকে লবঙ্গএর তেল ব্যবহার করা হয়।
যদি নখে ছত্রাক সংক্রমণ হলে প্রভাবিত জায়গায় লবঙ্গ তেল ব্যবহার করা যেতে পারে। এতো অনেক উপকার পাওয়া যায়। মানুষের মুখের মাড়ির ব্যথা নিরাময়ে কয়েক ফোঁটা লবঙ্গ তেল ব্যবহার করলে ব্যথা নিরাময় হয়। অথবা জায়গায় ব্যথা হচ্ছে সরাসরি সেখানেও লাগাতে পারেন এমনি কি উষ্ণ গরম পানি এবং কয়েক ফোঁটা লবঙ্গ তেল মিশিয়ে গার্গল করলে ব্যথা দূর হয় যায়।
আমরা তো ইতিমধ্যে লবঙ্গের তেল এর ব্যবহার সম্পর্কে, কিছু উপায় তো জানা হয়েই গেল, তাহলে এবার দেখে নিন বাড়িতে বসে কীভাবে সহজেই লবঙ্গ তেল সহজে বানাবেন যায়।
লবঙ্গ তেল বানানোর পদ্ধতি
পথমেই বলে রাখি বাজার থেকে আমরা সহজেই লবঙ্গ তেল পেয়ে যেতে পারি। তবে তার গুণগত মান নিয়ে সন্দেহ থেকেই যায়। এর জন্য আপনারা ঘরেই একদম বিশুদ্ধ লবঙ্গ তেল বানিয়ে নিতে পারেন। নিজের বাড়িতে লবঙ্গ তেল বানানোর সঠিক পদ্ধতি নীচে আলোচনা করা হলো।
প্রয়োজনীয় সামগ্রী:
- ১ চামচ লবঙ্গ
- ৯০ মিলিগ্রাম অলিভ অয়েল
- ১ টি খালি টি ব্যাগ বা সুতির কাপড়
পদ্ধতি
- প্রথমে লবঙ্গগুলো খালি টি ব্যাগে ঢেলে নিন। এরপর একটা পাত্রে অলিভ ওয়েল নিন।
- এই অলিভ অয়েলে লবঙ্গ ভর্তি টি ব্যাগ ডুবিয়ে দিন এবং হালকা আঁচে গরম করতে থাকুন। প্রায় ৪৫ মিনিট পর্যন্ত গরম হতে দিন।
- গরম করার পর পাত্রে মজুত তেল একটা ছোট কাঁচের জারে রাখুন আর লবঙ্গ ভর্তি ব্যাগটিও ওই জারেই এক সপ্তাহের জন্য রেখে দিন। এক সপ্তাহ পর আপনি পেয়ে যাবেন বাড়িতে প্রস্তুত বিশুদ্ধ লবঙ্গ তেল। লবঙ্গ তেল অনেকদিন পর্যন্ত সংরক্ষণ করবেন কীভাবে?
- এই লবঙ্গ তেল বানানোর সময় কোন তেলের সাথে মিশিয়ে বানানো হচ্ছে সেটার ওপর নির্ভর করে ওই তেল কতদিন পর্যন্ত সংরক্ষিত রাখতে পারবেন? যতদিন পর্যন্ত সেই তেল খারাপ হবে না, ততদিন পর্যন্ত লবঙ্গ তেলও ভালো থাকবে। এছাড়া লবঙ্গ তেলের জারের মুখ অ্যালুমিনিয়ামের ফয়েল পেপার দিয়ে শক্ত করে বেঁধে ঠাণ্ডা জায়গায় রাখলে এই তেল প্রায় তিনমাস পর্যন্ত সংরক্ষণ করা যায়।
লবঙ্গ তেলের অন্যান্য উপকারিতা
লবঙ্গ এর তেলে একধরনের অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল ও অ্যান্টি ফাংগাল গুণে ভরপুর হওয়ায় এই তেলের ব্যবহার বা উপযোগীতা বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিভিন্ন সমস্যার সমাধানে করা হয়ে থাকে। তাই লবঙ্গ তেলের অন্যান্য উপকারিতা সম্পর্কে য়াজ জেনে নেয়া যাক।
কীটনাশক হিসেবে:এই লবঙ্গ এর তেল কীটনাশক হিসেবেও ব্যবহার করা হয়। এটি মোমবাতি তৈরির সময় এই তেল ব্যবহার করা হয়, কারণ এর গন্ধে থাকে কীট পতঙ্গ তাড়ানো একধরনের বিষ এটি তারাতে সাহায্য করে থাকে। কেউ যদি এই কাজ তি করে, রাতে শোয়ার আগে একবার কয়েক ফোঁটা লবঙ্গ তেল বিছানায় ছিটিয়ে দিলে কীট পতঙ্গ বিছানায় আর আসে না।
প্রসাধনী হিসেবে:এই লবঙ্গের তেল বিভিন্ন প্রসাধনী সামগ্রীতে তেও লবঙ্গ তেলের ব্যবহার করা হয়। দেখা যায় বাজারে অনেক লবঙ্গ তেল যুক্ত প্রসাধনী। আবার স্ক্র্যাব, ক্রিম, লোশন তৈরি করতে এটি ব্যবহার করা হয়।
সাবান ও সুগন্ধি হিসেবে:এই লবঙ্গের তেলে থাকা দারুণ গন্ধ এবং আয়ুর্বেদিক ও অ্যান্টিসেপটিক গুণের জন্য লবঙ্গ তেল সাবান এবং সুগন্ধি তৈরিতে বিশেষ ভাবে ব্যবহৃত হয়।
অ্যারোমাথেরাপিতে:অনেক সময় এই অ্যারিমাথেরাপিতে লবঙ্গ তেলের ব্যবহার করা হয়। যাতে কোন সমস্যা না হয়। আবার এটি ম্যাসাজের তেল হিসেবে অনেক সময় এই তেল ব্যবহার করা হয়।
লবঙ্গ তেল ব্যবহারের আগে সাবধানতা
ইতিপূর্বে আমরা জেনেছি যে, লবঙ্গ তেলের বহু উপকারিতা রয়েছে। তবে না জেনে এই তেলের ব্যবহার করলে কিন্তু তার পরিণাম খুব খারাপ হতে পারে। নিচে লবঙ্গ তেল ব্যবহারের আগে কোন কোন বিষয়ে আপনাদের সতর্ক থাকতে হবে তা আলোচনা করা হলো।
- বিশেষ করে গর্ভবতী মহিলাদের ক্ষেত্রে এই তেল ব্যবহারের আগে ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া একান্তই প্রয়োজন। নতুবা ক্ষতি হতে পারে।
- লবঙ্গের তেল ছোট বাচ্চাদের থেকে সবসময় দূরে রাখুন। এই তেল ছোট বাচ্চা খেলে মারাক্তক ক্ষতি হতে পারে।
- বিশেষ করে যেসব মহিলা বাচ্চাদের বুকের দুধ খাওয়ান তারা এই তেল ব্যবহারের আগে সতর্ক থাকুন। অথবা ডাক্তারের পরামর্শ নিন।
যদি এই লবঙ্গ তেল ব্যবহারের পর কোনো রকম অস্বাভাবিকতা দেখা দিলে, তৎক্ষণাৎ এই তেলের প্রয়োগ বন্ধ করতে হবে এবং ডাক্তারের পরামর্শ নিন।
লবঙ্গ তেলের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া
এই লবঙ্গ তেলের উপকারিতার যেমন অনেক, তেমনি এর পাশাপাশি পার্শ্ব প্রতিক্রিয়াও রয়েছে। আমরা তো জান এই লবঙ্গ তেল নিজ গুণে সমৃদ্ধ তাই উপকারিতাও প্রচুর। তবে অতিরিক্ত মাত্রায় প্রয়োগে করলে ক্ষতিকারক প্রভাব পরবে। তাহলে কি কি লবঙ্গ তেলের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া রয়েছে তা সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।
- এই লবঙ্গ তেল অতিরিক্ত মাত্রায় কেউ যদি সেবন করে তাহলে কোমার মত পরিস্থিতি হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
- এই লবঙ্গ তেলের মধ্যে থাকে ইউজেনাল, এটির জন্য খুব বেশি পরিমাণে এর সেবনে অ্যালার্জি বা অন্যান্য টক্সিক প্রভাব দেখা দিতে পারে।
- এই লবঙ্গ তেলের জন্য রক্তে শর্করার পরিমাণ কমে যেতে পারে। সুতরাং মধুমেহ রোগীদের এই তেলের ব্যবহার সাবধানে করতে হবে।
- এই লবঙ্গ তেল বাচ্চারা খেলে বাচ্চাদের দেহে সমস্যার সৃষ্টি হতে পারে। এমন কি লিভার ড্যামেজ হয়ে যাওয়ার সম্ভব্যবনা থাকে। এর ফলে ভারসাম্য নষ্ট হয়ে যায়।
লবঙ্গ চাষ পদ্ধতি
বীজ দ্বারা চাষাবাদ
লবঙ্গ বীজ থেকে চাষ করা হয়। ভালো বীজ বপণের জন্য লবঙ্গ বাছাই করার ক্ষেত্রে যে বিষয়টি বেছে নিতে হবে। তাহলে আপনাকে একটি বিষয় জানতে হবে, একবার অঙ্কুরিত হয়ে গেলে আপনি আর প্রতিস্থাপন করতে পারবেন না। এই চারা প্রতিস্থাপন করতে সক্ষম হতে, কমপক্ষে 30 সেন্টিমিটার উচ্চতায় পৌঁছানোর জন্য অপেক্ষা করতে হবে।
এই চারার পরবর্তী প্রক্রিয়া হিসাবে যে উদ্ভিদটি চাষাবাদ করতে সক্ষম হবে এবং প্রয়াসে এটি অর্জন করতে হবে। প্রতি বছরের তুতে বাধ্যতামূলকভাবে সার প্রয়োগ করতে হবে। এবং নিয়মিত পানি দিতে হবে।
আর একটি বিষয় লক্ষ রাখতে হবে, যে এই গাছের চাষ করে কয়েক মাস যত্ন ও রক্ষণাবেক্ষণের মাধ্যমে সম্ভব হবে না। তবে এটি একটি শক্তিশালী পর্যাপ্ত গাছ হতে প্রায় ৩ বছর সময় নেয়। এই জন্য এটি চাষ করে নিজেকে জোর দিতে। তাহলেই সাফল্য লাভ করা সম্ভব্য।
বিশেষ করে চাষের প্রথম বছরগুলিতে বেশি সেচের প্রয়োজন হয়। কিন্তু একটি শক্তিশালী এবং স্বাস্থ্যকর গাছ অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ্।
রোপণ সময়:
লবঙ্গ বসন্তে বীজ দ্বারা। পারলাইট 30% মিশ্রিত সর্বজনীন সংস্কৃতি স্তর সহ নার্সারিতে সরাসরি বপন iকরতে হয়। লবঙ্গ বীজ ঠান্ডা এবং তুষারের সংবেদনশীল।
সার প্রয়োগ:
লবঙ্গের গাছের বাগানে ফাঁকে জৈব বা কম্পোস্ট সার ৫০ কেজি দিতে হবে এবং প্রতি বছর বর্ষার শুরুতে একটি একক ডোজ হিসাবে প্রয়োগ করতে হবে নিম্ন হারে। ইউরিয়া ১১০ গ্রাম, অজৈব সার ৪০ গ্রাম, সুপার ফসফেট ৮০ গ্রাম প্রাথমিক প্রথম ধাপে প্রয়োগ করতে হবে।
কীটপতঙ্গ:
লবঙ্গের গাছে লক্ষণ অনুযায়ী সুনির্দিষ্ট কীটনাশক বা রাসায়নিক সার বা ঔষধ প্রয়োগ করতে হবে।
ফসল:
লবঙ্গের ফুলের কুঁড়ি সংগ্রহ করা হয় এবং সেগুলো রোদে শুকানো হয়।
সতর্কতা
ইতিপূর্বে আমরা জেনেছি যে লবঙ্গের ইউজেনলের গুণাগুণ অনস্বীকার্য। কিন্তু এটি মাথায় রাখবেন, ইহা বেশ টক্সিক একটি উপাদান। যা অতিরিক্ত লবঙ্গ খেলে মানুষের যকৃতের ক্ষতি হতে পারে। এর কারণে নিয়ন্ত্রিত মাত্রায় খেতে হবে। যে সব শিশু ১৫ বছরের নিচের এদের কে লবঙ্গ বা এর চা থেকে দূরে রাখুন নতুবা মারাক্তক ক্ষতি হতে পারে।
Read More: হ্যাল এলরড 10টি বানী হ্যাল এলরড 10টি বানী
কালিদাস গোপাল ভাঁড় খনার জনপ্রিয় বচন ধাঁধাঁ 1000 শালি দুলাভাই এর রসের ধাঁধা সমগ্র ডাউনলোড PDF
মজার তথ্য ✓ হাসির জোকস ✓ বাংলা হট জোকস ✓ বুদ্ধির ধাধার বই সমগ্র ডাউনলোড PDF
Most Popular Downloads:
Adobe Premiere Pro CC
TechSmith Camtasia Studio 8.6.0
TechSmith snagit
Download and Install Explaindio Video Creator For FREE 2021
ProShow Producer 9 Full with Crack
Download and Install Sparkol VideoScribe FREE
Download and Install Edius Pro For FREE
Top Popular Downloads:
Top Maltimedia Media Player Download
wondershare-filmorago-Free download
বাণী চিরন্তণী all Quotes 1000 TOP POPULAR DOWNLOADS.pdf
Tutorial html blog code all.pdf
Himu Ebong Harvard Ph.D. Boltu Bhai By Humayun Ahmed [2011] PDF Downloads
বিখ্যাত লেখক ও মণীষীদের নির্বাচিত ৩০০০ টি [বাংলাঃ ১২০০ English 1800 ] বানী বা উক্তি সমূহের বাংলা বই বা ই-বুক বা PDF [ কম্পিউটার + মোবাইল ভার্সন ]
বাণী চিরন্তণী all Quotes 1000 TOP POPULAR DOWNLOADS.pdf
আরও পড়ুন: Stephen Hawking Biography
বন্ধুরা, এই পোস্টে আমরা আপনাকে পোস্টটি সম্পর্কে বলেছি। আশা করি আপনি এই পোস্টটি পছন্দ করবেন।
আপনার এই পোস্টটি কেমন লেগেছে, মন্তব্য করে আমাদের জানান এবং এই পোস্টে কোনও ত্রুটি থাকলেও আমরা অবশ্যই এটি সংশোধন করে আপডেট করব।
Biography, Famous Quotes ও উক্তি সমূহ লেখাটি ভালো লেগে থাকলে বন্ধুদের সাথে শেয়ার করো। এই ধরনের লেখার নিয়মিত আপডেট পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজটি ফলো ।
ডেইলি নিউজ টাইমস বিডি ডটকম (Dailynewstimesbd.com)এর ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব ও ফেসবুক পেইজটি ফলো করুন করুন।
Subscribe to the Daily News Times bd.com YouTube channel and follow the Facebook page.
উক্ত আর্টিকেলের উক্তি ও বাণীসমূগ বিভিন্ন ব্লগ, উইকিপিডিয়া এবং .. রচিত গ্রন্থ থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে।
তথ্যসূত্র: Wikipedia, Online
Sourc of : Wikipedia, Online
ছবিঃ ইন্টারনেট
দৃষ্টি আকর্ষণ এই সাইটে সাধারণত আমরা নিজস্ব কোনো খবর তৈরী করি না.. আমরা বিভিন্ন নিউজ সাইট থেকে খবরগুলো সংশ্লিষ্ট সূত্রসহ প্রকাশ করে থাকি.. তাই কোনো খবর নিয়ে আপত্তি বা অভিযোগ থাকলে সংশ্লিষ্ট নিউজ সাইটের কতৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করার অনুরোধ রইলো। ধন্যবাদ সবাইকে।
লবঙ্গ বেশি খেলে কি হয়, লবঙ্গ খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা, লবঙ্গ খাওয়ার নিয়ম, লবঙ্গ অপকারিতা, গোলমরিচ লবঙ্গ খেলে কি হয়, লবঙ্গ ও মধু রাতে লবঙ্গ খাওয়ার উপকারিতা, খালি পেটে লবঙ্গ খাওয়ার উপকারিতা,.benefits of cloves sexually eating, raw cloves daily, fertility benefits of cloves, sexually benefits of eating cloves, at night how much cloves is safe, benefits of cloves to a woman, clove benefits for men, cloves benefits for skin