গণিতের ভিত না গণিতের ভীতি? ঠিক করবেন আপনিই

 

গণিত, এই নামটার সঙ্গে যেন প্রীতি আর ভীতি একসঙ্গেই জড়িয়ে থাকে।

গণিত, এই নামটার সঙ্গে যেন প্রীতি আর ভীতি একসঙ্গেই জড়িয়ে থাকে। যিনি গণিত বোঝেন, তাঁর জীবনটা যেমন ধন্য ঠিক তেমনই তিনি বোঝে না, এই বিষয়টাই অসহনীয় তার জন্য| কেন এমন হয়? জীবনের অন্যান্য ক্ষেত্রে পারদর্শী হয়েও কেন অনেকের মনে গণিত ভীতি কাজ করে? আসুন দেখা যাক বিশেষজ্ঞরা এই বিষয়ে কী মতামত দিচ্ছেন।

ব্যারাকপুর রাষ্ট্রগুরু সুরেন্দ্রনাথ কলেজের ইলেকট্রনিক বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক সন্দীপ দে ও ডঃ প্রিয়দর্শী মজুমদার এবং ওড়িশার জগৎসিংপুরের সি.এন.সি.বি. অ্যাকাডেমি অফ সায়েন্স এন্ড টেকনোলজির পদার্থবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ডঃ শুভেন্দু পণ্ডার মতে, গণিতের ভিতটা তৈরি হয়ে যায় বা তৈরি করতে হয় ছোটোবেলা থেকেই। গাণিতিক মেধা আর যৌক্তিক বিশ্লেষণ বা লজিকাল অ্যানালাইসিস ক্ষমতাকে ছোটো থেকেই চর্চা করার প্রয়োজন।শিশুকে ছোটবেলা থেকেই গণিতে উৎসাহিত করতে হবে এবং এক্ষেত্রে শুধুমাত্র থিওরিটিকাল জ্ঞানের পরিবর্তে হাতেকলমে বিভিন্ন গাণিতিক পরীক্ষা যদি তার সামনে করে দেখানো যায় এবং তাকেও করতে দেওয়া যায়, তবে সে ধীরে ধীরে গণিত বিষয়টিতে আগ্রহী হবে।

অবশ্য কোনও কোনও বিজ্ঞানীর মতে, কিছুটা জিনগত বৈশিষ্ট্যও গাণিতিক মেধার জন্য দায়ী। বর্তমান পাঠ্যক্রম অনুযায়ী, একটি নির্দিষ্ট শ্রেণি পর্যন্ত গণিতের পাঠ বাধ্যতামূলক। এর পিছনে গুরুতর কারণও আছে। গণিতের প্রাথমিক পাঠের ধারণা না থাকলে জীবনে চলার পথে পদে পদে ধাক্কা খেতে হয়। তাই এটা সবার জন্য অবশ্যই জরুরি। পরবর্তী পর্যায়ে শুধুমাত্র ইচ্ছুক ও গণিতে দক্ষতাসম্পন্ন ছাত্রছাত্রীরাই বিষয়টি অধ্যয়ন করবে এটাই স্বাভাবিক।

গণিত, এই নামটার সঙ্গে যেন প্রীতি আর ভীতি একসঙ্গেই জড়িয়ে থাকে। (ছবি সৌজন্য লেখকদের প্রাপ্ত)

গণিতের

  • গণিত, এই নামটার সঙ্গে যেন প্রীতি আর ভীতি একসঙ্গেই জড়িয়ে থাকে।

গণিত, এই নামটার সঙ্গে যেন প্রীতি আর ভীতি একসঙ্গেই জড়িয়ে থাকে। যিনি গণিত বোঝেন, তাঁর জীবনটা যেমন ধন্য ঠিক তেমনই তিনি বোঝে না, এই বিষয়টাই অসহনীয় তার জন্য| কেন এমন হয়? জীবনের অন্যান্য ক্ষেত্রে পারদর্শী হয়েও কেন অনেকের মনে গণিত ভীতি কাজ করে? আসুন দেখা যাক বিশেষজ্ঞরা এই বিষয়ে কী মতামত দিচ্ছেন।

ব্যারাকপুর রাষ্ট্রগুরু সুরেন্দ্রনাথ কলেজের ইলেকট্রনিক বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক সন্দীপ দে ও ডঃ প্রিয়দর্শী মজুমদার এবং ওড়িশার জগৎসিংপুরের সি.এন.সি.বি. অ্যাকাডেমি অফ সায়েন্স এন্ড টেকনোলজির পদার্থবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ডঃ শুভেন্দু পণ্ডার মতে, গণিতের ভিতটা তৈরি হয়ে যায় বা তৈরি করতে হয় ছোটোবেলা থেকেই। গাণিতিক মেধা আর যৌক্তিক বিশ্লেষণ বা লজিকাল অ্যানালাইসিস ক্ষমতাকে ছোটো থেকেই চর্চা করার প্রয়োজন।শিশুকে ছোটবেলা থেকেই গণিতে উৎসাহিত করতে হবে এবং এক্ষেত্রে শুধুমাত্র থিওরিটিকাল জ্ঞানের পরিবর্তে হাতেকলমে বিভিন্ন গাণিতিক পরীক্ষা যদি তার সামনে করে দেখানো যায় এবং তাকেও করতে দেওয়া যায়, তবে সে ধীরে ধীরে গণিত বিষয়টিতে আগ্রহী হবে।

  • অবশ্য কোনও কোনও বিজ্ঞানীর মতে, কিছুটা জিনগত বৈশিষ্ট্যও গাণিতিক মেধার জন্য দায়ী। বর্তমান পাঠ্যক্রম অনুযায়ী, একটি নির্দিষ্ট শ্রেণি পর্যন্ত গণিতের পাঠ বাধ্যতামূলক। এর পিছনে গুরুতর কারণও আছে। গণিতের প্রাথমিক পাঠের ধারণা না থাকলে জীবনে চলার পথে পদে পদে ধাক্কা খেতে হয়। তাই এটা সবার জন্য অবশ্যই জরুরি। পরবর্তী পর্যায়ে শুধুমাত্র ইচ্ছুক ও গণিতে দক্ষতাসম্পন্ন ছাত্রছাত্রীরাই বিষয়টি অধ্যয়ন করবে এটাই স্বাভাবিক।

একজন সাধারণ মানুষের জীবনধারণের জন্য প্রাথমিক যোগ, বিয়োগ, গুণ, ভাগ ইত্যাদি ছাড়াও ব্যবহারিক বা সামাজিক সমস্যা সমাধানে পাটিগণিত, জ্যামিতি, পরিমিতি এই বিষয়গুলির প্রয়োগ সম্পর্কে স্বচ্ছ ধারণা থাকতে হবে। এই বিষয়গুলিকে বোঝার জন্য খুব বেশি মেধার প্রয়োজন নেই, তবে অবশ্যই ছোটোবেলা থেকে সঠিক সময় পাঠ্যক্রমের মধ্যে দিয়ে চর্চা করতে হবে। নিজের আয়, ব্যয়, সঞ্চয়ের হিসাব, ব্যাঙ্কের কাজ, রোজকার বাজার বা অন্যান্য কেনাকাটা – এই ধরনের রোজনামচায় যেমন পাটিগণিতের শিক্ষা কাজে লাগাতে হয়, ঠিক তেমনই বাড়ি, জমি কেনাবেচা বা মেরামত এই ধরনের কাজে জ্যামিতি ও পরিমিতির স্বাভাবিক জ্ঞান দরকার। আপনি নিজে হয়তো সুযোগ বা নির্দেশনার অভাবে সঠিকভাবে গণিতকে আয়ত্ত করে উঠতে পারেননি। তাতে কী? আপনার সন্তানকে নিয়ে গণিতের বিভিন্ন ছোটোখাটো পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার সঙ্গে সঙ্গে নিজেও গণিতকে ভালোবেসে ফেলুন।

তিনটি বিভিন্ন মাপের ফাঁকা পাত্র নিন, সবথেকে বড়োটি ছাড়া বাকি দুটি জলপূর্ণ করুন। এবার সেই দুই পাত্রের জল বড়ো পাত্রতে ঢেলে দিন, ব্যাস এই হয়ে গেল যোগফল। যদি পাত্রগুলির ভূমির ক্ষেত্রফল সমান থাকে আর আপনি উচ্চতা বরাবর নির্দিষ্ট দূরত্বে কিছু দাগ কেটে দেন, তাহলে এই পরীক্ষা দিয়ে যোগফলের মানও বের করে ফেলতে পারবেন। এবার বড়ো পাত্রের জল যে কোনও একটা ছোটো পাত্রে ঢেলে দিন। বাড়তি যেটুকু জল বড়োপাত্রে পরে রইল, সেটাই সংশ্লিষ্ট বিয়োগফল। গুণ বা ভাগ বোঝানোর জন্য পরীক্ষা করতে গেলে একটা বেশ বড়ো আকারের পাত্র আর অনেকগুলি হুবহু সমান আকারের ছোটো পাত্র নিয়ে নিন। বড়ো পাত্রটা ফাঁকা রাখুন আর ছোটোগুলো মুখ পর্যন্ত জলপূর্ণ করে নিন। এবার সবগুলি পাত্রের জল বড়ো পাত্রে ঢেলে ফেলুন। তার মানে একটা ছোটোপাত্রের যা আয়তন, তাকে ছোটোপাত্রের সংখ্যা দিয়ে গুণ করলে বড়োপাত্রের জল যে দাগ পর্যন্ত উঠেছে সেই পর্যন্ত আয়তনের সমান হচ্ছে।

ভাগ শেখাতে চান? তাহলে গুণফল বের করার জন্য যে পরীক্ষাটা করলেন, সেই পরীক্ষার পর বড়ো পাত্রে আরও কিছুটা অতিরিক্ত জল ঢেলে দিন। এবার সেই পাত্রের জল আবার সমান মাপের ছোটো পাত্রগুলিয় ঢেলে ফেলুন। ব্যাস, এবার যতগুলি ছোটোপাত্র ছিল, সেটা হল ভাগফল। আর বড়ো পাত্রে বাড়তি যেটুকু জল পরে রইল – সেটাই ভাগশেষ।

 

জ্যামিতি বা পরিমিতির সুন্দর ধারণা তৈরির জন্য আপনার সন্তানকে নিয়ে মেপে ফেলুন আপনার ঘরের চার দেওয়ালের ক্ষেত্রফল। আয়তক্ষেত্রাকার দেওয়ালগুলির ক্ষেত্রফল থেকে দরজা আর জানালার ক্ষেত্রফলগুলি বিয়োগ করে ফেলুন। তাহলেই আপনার দেওয়ালের সঠিক মাপ পেয়ে যাবেন। সাধারণত দেওয়াল প্লাস্টার করা বা রং করার খরচ প্রতি বর্গ ফুট হিসাবে হয়। তাই আপনি খরচের পরিমাণ নিজেই হিসাব করে ফেলতে পারবেন। আবার একটি ইটের আকার এবং আপনার দেওয়ালের বেধ জানা থাকলে এই পদ্ধতিতে আপনি নিজেই হিসাব করে ফেলতে পারবেন আপনার বাড়ি তৈরি করতে কতগুলি ইট লেগেছে।

এইরকম সহজ পরীক্ষার মধ্যে দিয়ে সন্তানের গণিত-ভীতি দূর করে তৈরি করে দিন তার গণিতের ভিত।

শিক্ষার্থীদের গণিত ভীতি দূরীকরণে শিক্ষকের ভূমিকা, গণিত ভীতি দূর করার উপায়, গণিত ভীতি কি, গণিত ভীতির কারণ, গণিতের ভয় জয় করবেন যেভাবে, বাচ্চাদের গণিত শিক্ষা, গণিত শিখনের লক্ষ্য

 

গণিত ভীতি কি,কেন হয়? এর বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা ও প্রতিকার

 

গণিত নিয়ে বসলেই “ধুর ছাই” বলে উঠে যাওয়া মানুষ কিংবা কোন বিষয়ে ক্লাস করতে সবচেয়ে বিরক্ত লাগে?এই প্রশ্নের উত্তরে গণিতের নাম উল্লেখ  করা মানুষের কমতি নেই। অথচ জীবনে চলতে ফিরতে গণিতের দরকার অপরিসীম। সময়ের ব্যাবধান, দুরত্ব পরিমাপ, অর্থের হিসাব, জায়গার জমির পরিমাণ, নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসের সঠিক ওজন মাপা ইত্যাদি কোন কাজে নেই গণিত একটু ভেবে দেখুন তো? তবুও এই গণিত নিয়েই যত ভয়! শিশু থেকে প্রাপ্তবয়স্ক সকলের মাঝেই এই ভীতি দেখতে পাওয়া যায়। কেবল আপনার আমার নয় বিশ্বের সকল প্রান্তেই রয়েছে এমন মানুষের ছড়াছড়ি। কিন্তু কেন হয় এটি? বিজ্ঞান কি বলে? চলুন জেনে নেই।

গণিত ভীতি কি?

ইংরেজিতে যাকে Math Anxiety বলে বাংলায় আমরা তাকে গণিত ভীতি বলি। Anxiety বলতে দুশ্চিন্তা বা উদ্বেগকে বোঝায়। তবে গণিত ভীতি বলতে সাধারণত গণিত বিষয়ে অধ্যয়নের সময়কার নার্ভাসনেসকে ও উদ্বেগকে বোঝায়। ১৯৭২ সালে কাউন্সেলিং স্যাইকোলজির এক জার্নালে শিক্ষাগত মনোবিজ্ঞানী  ফ্রাঙ্ক রিচার্ডসন এবং কাউন্সেলিং সাইকোলজিস্ট রিচার্ড সুইন গণিত ভীতিকে সংজ্ঞায়িত করতে গিয়ে বলেন,

গণিত ভীতি হলো সংকট এবং উদ্বেগের একটি মিশ্র অনুভুতি যা দৈনন্দিন জীবনে কিংবা পাঠ্যবইয়ের সংখ্যা সম্পর্কিত কোন সমস্যা সমাধানের সময় হয়ে থাকে।

এটি একটি টেনশন ও নার্ভাসনেসের মিশ্র অনুভুতি। গণিত ভীতিতে ভুগতে থাকা মানুষেরা নিজেদের মাঝে এতোটাই ভীত থাকে যে তারা গণিত বিষয়ক সমস্যা সমাধানের পদ্ধতি জানা থাকলেও তা নিয়ে সংশয়ে থাকে।

 

ম্যাথ টেস্ট ভীতি

কেন হয় গণিত ভীতি?

 

 

গণিতে কাঁচা কিংবা গণিতে দুর্বল এটি ছাড়াও গণিত ভীতির রয়েছে আরো অনেক কারণ। ভীতি বা উদ্বেগ তৈরি হয় নানান কিছু থেকে। আশেপাশের মানুষদের কথা বার্তা, ব্যবহার, মনোভাব ইত্যাদি ব্যাপারগুলো ভীতি জন্মের পেছনে অনেক বড় ভূমিকা পালন করে। বিজ্ঞানে এখনো গণিত ভীতির সঠিক কোন কারণ খুঁজে বের করতে পারেনি। তবে গবেষকরা গণিত ভীতির পেছনে দুইটি পরিস্থিতিকে দায়ী করেছেন।

প্রথমত গবেষকরা ধারণা করেন যেসকল বাচ্চাদের ছোটবেলায় সংখ্যা মনে রাখতে বা শিখতে বেগ পেতে হয় তাদেরই পরবর্তীতে গণিত ভীতি দেখা দেয়। যেহেতু গণিতের প্রায় সকল সমস্যায়ই সংখ্যা জড়িত সেহেতু এধরেনের শিশুরা গণিত বিষয়টিকে  ভয় পায় বা গণিত নিয়ে ভাবতে গেলে উদ্বেগের শিকার হয়। কেবল শিশুরা নয় প্রাপ্তবয়স্ক ব্যাক্তিরাও এর শিকার হন। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এ ভীতিতে ভোগা প্রাপ্তবয়স্করা গণিত সম্পর্কিত বিষয় ও ক্যারিয়ার এড়িয়ে যান।

দ্বিতীয়ত সামাজিক পরিবেশ অনেক সময় শিশু কিংবা প্রাপ্তবয়স্কের মনে উদ্বেগ সৃষ্টি করে। এক্ষেত্রে ব্যাক্তিটি গণিত বা অঙ্কটি সমাধান করার উপায় জানা সত্ত্বেও এক ধরণের ভয় বা দুশ্চিন্তার মাঝে থাকেন। এমনকি তারা এটিও বুঝতে পারেন তাদের এই দুশ্চিন্তা একদমই অমূলক কিন্তু তবুও তারা এই ভীতিতে ভোগেন।  ব্যাক্তির আশেপাশের পরিবেশ এক্ষেত্রে একটি বড় ভূমিকা পালন করে। মানুষের ঠাট্টা, তাচ্ছিল্য ,বাবা-মা ও শিক্ষকের বকা ঝকা ইত্যাদি শিশুর মনে ছোটবেলা থেকেই একধরণের ভীতির সৃষ্টি করে।

এছাড়াও আরো একটি কারণ হিসেবে সময় কে উল্লেখ করা যায়। অনেকের মতে ম্যাথ টেস্টের বাধাধরা সময় মানুষকে প্যানিক করে দেয়। ক্যালকুলেশন জানা সত্ত্বেও সময়ের স্বল্পতার জন্য অনেক ব্যাক্তি ম্যাথ সাবজেক্টটি এড়িয়ে যান কিংবা এতে খারাপ করেন।

 

গণিত ভীতির বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা

 

 

আমাদের মস্তিস্কে একটি অংশ রয়েছে যা বিভিন্ন ধরণের তথ্য প্রক্রিয়াজাত করে এই  অংশটিকে ওয়ার্কিং মেমোরি বলা হয়। তাৎক্ষনিক স্মৃতি ধরে রাখতে ও কোন কিছু স্মরণ রাখতে এটি ব্যবহৃত হয়। যেকোনো কাজ করার সময় এটির প্রয়োজন হয় সবচেয়ে বেশি। বলাবাহুল্য গণিতের ক্যালকুলেশনের সময় ওয়ার্কিংমেমোরির ব্যাবহার অপরিসীম। কেননা যখন কোন শিক্ষক আপানার সামনে গণিতের একটি সমস্যা পড়ে শোনান তখন আপনাকে সেই সমস্যার সবগুলো সংখ্যা ও গণিতটি সমাধান করার পুরো পদ্ধতিটি মেমোরিতে রাখতে হয়। অর্থাৎ ওয়ার্কিং মেমোরি ব্যাবহৃত হয়। গবেষকরা মনে করেন গণিত ভীতিতে ভোগা মানুষজন তাদের ওয়ার্কিং মেমোরির অনেকটা অংশই উদ্বেগ ও দুশ্চিন্তার জন্য ব্যবহার করেন ফলে ম্যাথের ক্যালকুলেশনের জন্য যথেষ্ট মেমোরি অবশিষ্ট থাকে না। যে কারনে প্রায়ই আমরা এই ভীতিতে আক্রান্ত মানুষদের গণিতে কাঁচা বা দুর্বল ভাবি। যারা গণিত ভীতির সম্মুখীন হন না তারা সহজেই তাদের ওয়ার্কিং মেমোরি ব্যবহার করতে পারেন।

 

গণিত ভীতির লক্ষণ

 

 

লক্ষণঃ

গণিত ভীতির থাকতে পারে অনেক রকমের লক্ষণ। উদ্বেগ ব্যাপারটি নানানভাবে প্রতিফলিত হতে পারে। ব্যাপারটি স্যাইকোলজিকাল, ইমোশনাল আবার মাঝে মাঝে ফিজিক্যাল একশনের মাধ্যমেও প্রকাশ পেয়ে থাকে। সচরাচর যে কয়েকটি আচরণ বা লক্ষণ থেকে গণিত ভীতির ধারণা করা হয় তা তুলে ধরা হল।

 

  • সংখ্যা সম্পর্কিত কোন সমস্যা শোনা মাত্রই প্যানিক করা তথা নার্ভাসনেস ও টেনশন অনুভব করা।
  • গণিত বিষয়ক কথা বার্তা এড়িয়ে যাওয়া।
  • ৯৭% শতাংশ আমেরিকানই মনে করেন তাদের গণিত ভীতি রয়েছে। বিশ্বে এধরনের মানুষের সংখ্যা নেহাত কম না হলেও প্রত্যেক গণিত ভীতিতে ভোগা মানুষ নিজেকে খুব একাকী মনে করেন। তারা ভাবেন কেবল তারা নিজেরাই এই সমস্যায় ভুগছেন।
  • “আমি গণিত ঘৃণা করি” , “আমি ম্যাথ বুঝি না,করতেও পারি না” , “ আমি গণিতে সবসময়ই খারাপ” এধণের নেতিবাচক কথা থেকেই শুরু হতে পারে গণিত বিষয়টির প্রতি ভীতি প্রদর্শন করা।
  • আত্মবিশ্বাস এর ঘাটতি অনুভব করা। এধরণের ব্যাক্তিরা গণিতের সমস্যার সমাধান জানার পরেও এক ধরণের আত্মবিশ্বাস এর ঘাটতি অনুভব করে।
  • গণিত ভীতির আরো একটি প্রভাব হল হলো হাল ছেড়ে দেওয়া। এক্ষেত্রে ব্যাক্তি ভেবেই বসেন যে তার পক্ষে কোনদিনও ম্যাথে ভালো করা সম্ভব নয়।

উপরোক্ত লক্ষণ গুলো কারো মাঝে থাকলে প্রাথমিক ভাবে ধারণা করা যায় ব্যাক্তিটি গণিত ভীতিতে আক্রান্ত।

 

গণিত ভীতির চক্র

প্রতিকারঃ

গণিত ভীতি প্রতিকারের নেই বাঁধাধরা কোন টেকনিক বা পদক্ষেপ তবে কিছু কিছু নিয়ম মেনে চললে এই ভীতি কমানো সম্ভব। যেমনঃ

  • উদ্বেগ বা ভীতি কমানোর কার্যকরী পদক্ষেপ হল যে সময়ে যে বিষয়ে এমনটি অনুভব হয় তা ডায়েরি বা কোন স্থানে লিখে ফেলা। এতে উদ্বেগ কমে যাওয়ার সম্ভবনা থাকে।
  • বাচ্চাদের বিভিন্ন স্তরের মেধার শিশুদের গ্রুপের সাথে মিশতে দিন। এতে তার জড়তা ও উদ্বেগ কমে যাওয়ার এবং আত্মবিশ্বাস বাড়ার সম্ভবনা থাকে অনেক বেশি।
  • শিশুকে গণিত বুঝতে আগ্রহী করে তুলুন গণিত মুখস্ত করতে নয়।
  • বাঁধাধরা সময়ের নিয়ম ভেঙে ম্যাথ শেখা। সময় নিয়ে বুঝে শুনে গণিতের টেস্টের আনসার দিন। প্রথমে সময় বেশি লাগলেও ধীরে ধীরে তা ঠিক হয়ে যাবে।
  • ম্যাথ শেখার অনুকূল পরিবেশ গড়ে তোলা। অর্থাৎ গণিতভীতিতে ভোগা ব্যাক্তিকে বকাঝকা বা ঠাট্টা তামাশা না করে তাকে গণিতের প্রতি আগ্রহী করে তোলা।
  • গণিত বিষয়ক ধাঁধা,কুইজ,বিভিন্ন ধরণের গণিত খেলায় অংশগ্রহণ করা।
  • এছাড়াও ভালো একজন শিক্ষক গণিতভীতি কমাতে অনেক সহায়ক।

গণিত বিষয়টি কারো কারো কাছে একটি ত্রাশের নাম, কারো কারো কাছে এটি আবার খুবই পছন্দের বিষয়। যাদের গণিত ভীতি না উল্টো গণিতপ্রীতি রয়েছে, তাদের অবশ্যই উচিত আশেপাশের গণিতভীতিতে ভোগা মানুষদের সাহায্য করা এবং সহযোগী মনোভাব গড়ে তোলা।

লেখাঃ প্রাণ জ্যোতি খানাম

 

 

আরও পড়ুন-স্বামীর পদবি ছেঁটে ফেললেন, বিচ্ছেদের পথে প্রিয়াঙ্কা?

আরও পড়ুন-কতগুলো Sentence-এর মধ্যে সঙ্গতি বা যৌক্তিক চলমানতা বজায় রাখার জন্য যেসব Word/words ব্যবহৃত হয় তাকে Linkers/ Sentence connector বলে।

আরও পড়ুন- Top Ten Motivational Speaker Biography || বিশ্বের শ্রেষ্ঠ ১০জন মোটিভেশনাল স্পিকারের জীবনী

আরও পড়ুন-রসুনের উপকারিতা ও ক্ষতিকর দিক সমূহ | রসুনের উপকারিতা ও অপকারিতা

 

Leave a Reply