‘দুনিয়াটা এখন আজব জায়গা, যে কেউ যে কোনো বিষয়ে জ্ঞান দিতে পারে’

ফ্রান্সে শুরু হয়েছে বিশ্ব চলচ্চিত্রের অন্যতম প্রভাবশালী আসর ‘কান চলচ্চিত্র উৎসব ২০২২’। এই আসরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বায়োপিক ‘মুজিব’-এর ট্রেলার। সেই অনুষ্ঠানে যোগ দিতে এখন ফ্রান্সের উপকূলীয় শহরে আছেন নুসরাত ইমরোজ তিশা। মঙ্গলবার (১৭ মে) রাতের একটি ফ্লাইটে সেখানে গেছেন তিনি।

এই সফরে তিশার সঙ্গে রয়েছে চার মাসের মেয়ে ইলহাম। মেয়েকে দেখাশোনার জন্য সঙ্গে রয়েছেন এই অভিনেত্রীর স্বামী জনপ্রিয় নির্মাতা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী। কিন্তু ‘বেবিসিটার’ হিসেবে ফারুকীর ফ্রান্স যাওয়া নিয়ে নেটিজেনরা নানা মন্তব্য করেছেন।

এতে মানসিকভাবে আহত হয়েছেন এ নির্মাতা। শুরুতে বিষয়টিকে তেমন পাত্তা না দিলেও বুধবার বিকেলে এ নিয়ে দীর্ঘ একটি স্ট্যাটাস দিয়েছেন ফারুকী। সেখানে এই নির্মাতা লেখেন, ‘আমি অনলাইনে ছড়ানো কথাবার্তার উত্তর দেওয়া বন্ধ করছিলাম অনেক আগে। কারণ এইটা হইলো সময় এবং এনার্জি নষ্টের মোস্ট প্যাথেটিক ওয়ে। এর ভালো দিক হচ্ছে জীবন শান্ত সুন্দর হয়।

আর একটা খারাপ দিক হচ্ছে, অনেক আজাইরা কথা বারবার উচ্চারিত হইতে হইতে সত্যের মতো রূপ ধারণ করে। আজকে এই বিষয়টা নিয়া বলতেছি কারণ এখানে আমার মেয়ে জড়িত। যখন আপনাকে কেউ বুঝিয়ে দেবে আপনি আপনার মেয়ের জন্য যথেষ্ট করছেন না, তখন কেমন রাগ লাগতে পারে বলেন?’ যে কেউ যেকোনো বিষয়ে জ্ঞান দিয়ে থাকেন উল্লেখ করে ফারুকী লেখেন, ‘‘বেবিসিটিং’ কথাটার জোক নিয়া ব্যাপারটা এত দূর গড়াইছে যে, কেউ কেউ আগ বাড়াইয়া শিক্ষাও দিচ্ছে যে বাচ্চা বড় করা মায়ের একা দায়িত্ব না।

আপনি পিতৃতান্ত্রিকতা থেকে বের হয়ে আসেন। আই মিন সিরিয়াসলি পিপল! দুনিয়াটা এক আজব জায়গা হয়ে গেছে। এখানে যে কেউ যে কোনো বিষয়ে জ্ঞান দিতে পারে। আমার ইনবক্স প্রিন্ট করলে এটা মোটামুটি একটা টেক্সটবুক হয়ে যাবে। আমাদের ঘরের ভেতর কি হয়, বাচ্চা বড় করার ক্ষেত্রে কার কি রোল-এসব না জেনেই আমরা শিক্ষকের ভূমিকায় বসে যাই। ’’ এতে যোগ করে তিনি লেখেন, ‘‘বাংলাদেশের অভিনেতা-অভিনেত্রীরা হলিউড বা বলিউডের মতো অর্থ বা সাপোর্ট সিস্টেম পায় না। ফলে একজন অভিনেত্রী মা হওয়ার পর তার কাজে ফিরতে অনেক সময় লাগে।

ঢাকায় আসছেন বলিউডের জনপ্রিয় অভিনেত্রী শিল্পা শেঠি

কিন্তু তিশা বেশি দিন কাজ থেকে দূরে থাকতে চাননি। আমিও চাই না তিশা কাজ থেকে দূরে থাকুক। ফলে ওর কোনো কাজ আসলে আমি আমার কাজ বন্ধ করে ইলহামকে অ্যাটেন্ড করতে চাই। কিন্তু মুশকিল হলো প্রোডাকশনগুলো এই বাড়তি হ্যাপা নেওয়ার জন্য খুব যে তৈরি তা বলা যাবে না। তারপরও কাজের বা ট্যুরের কথা আসলে, তিশা বলে, ‘আমাদের বেবিসিটার নিতে দিতে হবে। বেবিসিটারের জন্য ভ্যান বা টিকিট বা হোটেলের ব্যবস্থা করতে হবে যতদিন না ইলহাম কিছুটা শক্ত সামর্থ্য হচ্ছে।

রাজীব গান্ধীর হত্যাকারীকে মুক্তির নির্দেশ সুপ্রিম কোর্টের

’ আমি সব সময় হাসিমুখে বলি, বেবিসিটার কোঠায় আমাকে ইনক্লুড করো আর তা করে বলেই আমি যাচ্ছি। ’’ ওই পোস্টে পাল্টা প্রশ্ন করে ফারুকী লেখেন, ‘বাচ্চা বড় করার দায়িত্ব মায়ের একা এটা কোথায় পাইছেন? আমার আগের লেখাটা ধরে কেউ কেউ বলছে, কেন আপনি নিজেকে হেল্পিং হ্যান্ড বলছেন? ভাইরে ভাই, জীবনে কিছুটা বিনয় ভালো। আমি চব্বিশ ঘণ্টা বাচ্চাকে অ্যাটেন্ড করলেও সেটা বড় করতে রাজি না। আর চব্বিশ ঘণ্টা অ্যাটেন্ড করলেও আমার কাছে এই মুভির স্টারিং রোল অলওয়েজ মা। বাবা কেবল সাপোর্টিং রোলের ক্রেডিটই পাইতে পারে। ঈশ্বর আমাদের ধৈর্য দিন, আমিন।

Leave a Reply