টাঙ্গাইলের বাসাইলে দ্বিতীয় শ্রেণিতে পড়া স্কুলছাত্রীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের পর হত্যার ঘটনায় তিনজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। গ্রেফতারের পর আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে আসামিরা। আসামিরা ওই স্কুলছাত্রীর নাচে আকৃষ্ট হয়ে পরিকল্পিতভাবে তাকে ধর্ষণের পর হত্যা করে বলে স্বীকার করেছে। পরে বিষয়টি ধামাচাপা দিতেই মায়ের ওড়না দিয়ে লাশটি ফ্যানের সাথে ঝুলিয়ে রাখে। সোমবার বিকেলে তাদের আদালতে পাঠানো হয়। এর আগে এ নিয়ে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন টাঙ্গাইল পিবিআই-এর পুলিশ সুপার সিরাজ আমিন। নিহত স্কুলছাত্রী (৯) বাসাইল উপজেলার ভাটপাড়ার একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দ্বিতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিল। এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে গ্রেফতাররা হচ্ছে – বাসাইল উপজেলার ভাটপাড়া গ্রামের স্বপন মণ্ডলের ছেলে গোবিন্দ মণ্ডল (১৯), আনন্দ মণ্ডলের ছেলে চঞ্চল চন্দ্র মণ্ডল (১৭) এবং লালিত সরকারের ছেলে বিজয় সরকার (১৬)। রোববার (৫ জুন) উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়।
এ বছর থেকেই বাদ প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী
টাঙ্গাইলের কোর্ট ইন্সপেক্টর তাবীর আহমেদ রাত সাড়ে ৮টায় নয়া দিগন্তকে বলেন, বিকেল ৩টার দিকে আসামিদের আদালতে আনা হয়। পরে তারা নিজেদের দোষ স্বীকার করে ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেয়।
সাভারে দুর্ঘটনায় পরমাণু শক্তি কমিশনের বিজ্ঞানীসহ নিহত ৪
টাঙ্গাইলের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট রুমি খাতুন রাত ৮টা পর্যন্ত তাদের জবানবন্দি রেকর্ড করেন। পরে আসামি গোবিন্দকে টাঙ্গাইল জেলা কারাগারে এবং অপর দুই আসামি চঞ্চল ও বিজয়কে গাজীপুরের কিশোর সংশোধনাগারে পাঠানোর দির্দেশ দেন।
‘হিরো আলমকে থামান, কেউ ওর নামে মামলা করেন’
পিবিআই-এর এসপি সিরাজ আমিন বলেন, ওই শিশুটির নাচ দেখে তার বাড়ির আশেপাশের গোবিন্দ মণ্ডল, চঞ্চল চন্দ্র মণ্ডল ও বিজয় সরকার আকৃষ্ট হয়। গত ২৬ মে সকালে শিশুটির মা তার ভাইকে নিয়ে পাশের একটি ক্যাডেট একাডেমিতে যান। এই সুযোগে আসামিরা মেয়েটির ঘরে ঢুকে দরজা বন্ধ করে পালাক্রমে ধর্ষণের পর তাকে হত্যা করে। পরে বিষয়টি ধামাচাপা দিতে তার মায়ের ওড়না দিয়ে ফ্যানের সাথে লাশ ঝুলিয়ে রাখে।
গোপালগঞ্জের সেই ৫৮ ছাত্রী পরীক্ষা দিতে পারেনি
তার মা বাড়িতে এসে মেয়েকে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখে চিৎকার শুরু করেন। স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে প্রথমে বাসাইল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে পাঠিয়ে দেন। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে ঢাকায় রেফার করা হয়। সাভার এনাম মেডিক্যালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ২৯ মে তার মৃত্যু হয়। গত ৪ জুন ময়নাতদন্তের রিপোর্টে ধর্ষণের আলামত পাওয়া গেলে শিশুটির বাবা বাসাইল থানায় মামলা করেন। ভিকটিমের মা বলেন, আমার মেয়েকে যারা অমানবিকভাবে হত্যা করেছে তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হিসেবে ফাঁসি দাবি করছি। যাতে পরবর্তীতে আর কোনো মায়ের কোল এভাবে খালি না হয়।