ব্যক্তিস্বার্থের ঊর্ধ্বে উঠে সবাই মিলে একসাথে কাজ করলে সফলতা আসবে । দুলাল চন্দ্র চৌধুরী

আমি আত্মসমালোচনা করতে চাই। আমরা বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক কর্মচারীবৃন্দ সবসময় হীনমন্যতায় ভূগী।এতগুলো শিক্ষক সংগঠন থাকা সত্বেও আমরা আমাদের দাবি আদায় করতে পারিনি।এটা আমাদের লজ্জার বিষয়। এর চেয়েও লজ্জার বিষয় ৫% ইনক্রিমেন্ট ও বৈশাখী ভাতা প্রাপ্তির কৃতিত্ব নিয়ে টানাটানি করা।কেউ বলে আমার সংগঠনের প্রান পুরুষ অমুক সাহেব এসব করেছেন। যারা এ কথা বলেন তাদের লজ্জা করেনা?কোন কিছুর কৃতিত্ব সংগঠন বাদ দিয়ে ব্যাক্তির নামে প্রচার করেন।তাও আবার সংগঠনের সভাপতির নাম বললেও মানা যায়।

তাও নয়, যার নাম বলেন তিনি হলেন দলের সাধারণ সম্পাদক। আমি বিনয়ের সাথে ঐ সকল শিক্ষক নেতাদের কাছে জানতে চাই,আপনার দলের সভাপতিকে?তার নাম তো কেউ বলেন না।আমরাও জানিনা।মাঝে মাঝে শুনি ঐ প্রান পুরুষ কয়েকটি দলের সমন্বয় গঠিত জাতীয় শিক্ষক কর্মচারী ফ্রন্টের প্রধান সমন্নয়ক । আমার প্রশ্ন কয়েকটি দল নিয়ে গঠিত একটি জোটের সমন্বয়কারী হিসাবে দলগুলোর সভাপতি না হয়ে একটি দলের সাধারণ সম্পাদক কিভাবে হয়? আর হতে পারে যদি ঐ সবদলগুলো ঐ ব্যাক্তির আজ্ঞাবহ হয়।তবে আমার জানা মতে ঐ ব্যাক্তি কোন দিন শিক্ষকদের দাবি নিয়ে কোন আন্দোলন কর্মসূচি দেয়নি।তবে আমি এটাও জানি ঐ ভদ্রলোক স্বাধীনতার পক্ষের ১০টি শিক্ষক সংগঠন নিয়ে গঠিত জাতীয় শিক্ষক কর্মচারী সংগ্রাম কমিটির ১১ দফা দাবি নিয়ে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে আহুত শিক্ষক সমাবেশ বাতিল করার জন্য তাদের বিরুদ্ধে জামাত শিবির ও বি এন পি অভিধা যুক্ত করেছিল।

কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে জাতীয় শিক্ষক কর্মচারী সংগ্রাম কমিটিকে সমাবেশ করার অনুমতি দেওয়া হয় নাই। বরং জাতীয় শিক্ষক কর্মচারী ফ্রন্টের প্রধান সমন্নয়ক আসাদুল হক সহ দুইশতাধিক শিক্ষক নেতাকে গ্রেফতার করে শাহাবাগ থানায় নিয়ে আসা হয়। তখন সারা বাংলাদেশ থেকে হাজার হাজার শিক্ষক কর্মচারীবৃন্দ সমাবেশে আসার জন্য ঢাকার উদ্দেশ্য রওনা হয়েগেছে। এমন সময় প্রস্তাব আসে সমাবেশ বন্ধ করার। কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব সে প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেন। তার পরে সরকারের পক্ষ থেকে জাতীয় প্রেসক্লাবে এক ঘন্টার সমাবেশ করার প্রস্তাব দেওয়া হয়।শিক্ষক নেতৃবৃন্দ উক্ত প্রস্তাব মেনে নিলে রাত ১টার সময় শিক্ষক নেতাদের শাহাবাগ থানা থেকে মুক্তি দেওয়া হয়।পরের দিন প্রেসক্লাবের সামনে হাজার হাজার শিক্ষকের শান্তিপূর্ণ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সেই সমাবেশের ধারাবাহিকতায় ঐ বছরের ১৭ সেপ্টেম্বর তৎকালীন শিক্ষামন্ত্রী মহোদয় সকল দলের শিক্ষক নেতাদের নিয়ে তার কার্যালয়ে একটি সভা করেন সেখানে ৫% ইনক্রিমেন্ট দেওয়ার নীতিগত সিদ্ধান্ত হয়। তবে ঐ সভায় জোরালো ভাবে বলা হয়েছিল কোন কিছুর বিনিময়ে আমরা ৫% ইনক্রিমেন্ট নিব না।তখন একটা প্রস্তাব ছিল অবসর ও কল্যাণে যে ৬% কর্তন করা তার পরিবর্তে ১০% কর্তন করা হবে বিনিময়ে ৫% ইনক্রিমেন্ট দেওয়া হবে।একটি শিক্ষক সংগঠন বাদে সকল শিক্ষক সংগঠন উক্ত প্রস্তাব প্রতাখ্যান করেন।

আজ সেই শিক্ষক সংগঠনের নেতা বৈশাখী ভাতা ও ৫%ইনক্রিমেন্ট আদায়ের হোতা হয়ে যায়। এটা যারা বলেন আপনাদের লজ্জা হওয়া উচিত। আর একটি সংগঠন বলে তাদের লাগাতার অনশনের জন্য বৈশাখী ভাতা ও ৫% ইনক্রিমেন্ট পেয়েছি। এ সব বাদ দিয়ে শিক্ষকদের জন্য কাজ করুন ইতিহাস আপনাদের মূল্যায়ন করবে।আজ যারা শিক্ষকদের শতভাগ উৎসব ভাতা প্রাপ্তির জন্য কাজ করে যাচ্ছে তাদের সকলকে ধন্যবাদ। বাংলাদেশ মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রধান পরিষদের পক্ষ থেকে ৬৪ টি জেলায় জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে মাননীয় শিক্ষামন্ত্রীর নিকট স্মারক লিপি প্রদান করা হয়েছে। আমরা বাংলাদেশ মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রধান পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটি মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মহোদয় মাধ্যমে মাননীয় শিক্ষামন্ত্রী মহোদয় নিকট স্মারক লিপি প্রদান করেছি। আমাদের কর্মসূচিগুলো দৃশ্যমান।অন্য কোন শিক্ষক সংগঠনের পক্ষ থেকে স্মারক লিপি প্রদান করা হয়নি।প্রেসক্লাবে আবেদন দিলে হবে না। প্রেসক্লাব থেকে আবেদন নিয়ে আপনার আবেদন কর্তৃপক্ষ অনুমোদন দিবে না।আবেদন যথাযথ কর্তৃপক্ষের নিকট দিতে হবে। তাই আমরা শিক্ষামন্ত্রী কেই স্মারক লিপি প্রদান করেছি।আজ সংসদে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। তবে আমাদের জাতীয় পার্টির নেতাকে দিয়ে নয় আওয়ামী লীগ এর নীতি নির্ধারনী এম,পি মহোদয়দের দিয়ে সংসদে উত্থাপন করতে হবে । জাতীয় পার্টির নেতাকে দিয়ে সংসদে উত্থাপন করার বিষয়টিতে কৃতিত্ব কার সেই বিষয় নিয়ে টানাটানি শুরু হয়েছে। এগুলো বাদ দিন।সবাই মিলে যার যার অবস্থান থেকে কাজ করি।

দুলাল চন্দ্র চৌধুরী
প্রধান শিক্ষক ইস্কাটন গার্ডেন উচ্চ বিদ্যালয় ও সাংগঠনিক সম্পাদক

বাংলাদেশ মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রধান পরিষদ।

Leave a Reply